সুর তবু লেগেছিল
আশীষ লাহিড়ী
বয়সে আমার
চেয়ে বারো বছরের ছোটো অমিত প্রায়ই রসিকতা করে বলত, 'আশীষ দা, আপনার জীবনী আমিই
লিখব।' কে যে কার জীবনী লেখে!
গত পনেরো বছর ধরে অমিত আমার প্রতিবেশী ও সঙ্গী ছিল। ওই সময়ে আমাদের বাড়ির প্রত্যেকটি বিপদে ও আনন্দের মুহূর্তে প্রথম সঙ্গী অমিত। অপারেশনের জন্য নার্সিং হোমে ভর্তি, সহায় অমিত। মাঝ রাত্তিরে যন্ত্রণায় গোঙাচ্ছি, খবর পেয়ে সোজা ডাক্তার সঙ্গে নিয়ে হাজির অমিত। বাড়িতে কোনো কারণে একলা রয়েছি, আমার পছন্দসই খাবার কিনে নিয়ে হাজির অমিত। আমি বাইরে আছি, গৃহিণীর কোনো অসুবিধে হচ্ছে কিনা, খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা করবে অমিত।
বলার কথা এইটাই যে ও শুধু আমার জন্যই এ কাজটা করত তা নয়। স্কুলের কোনো মাস্টারমশাই একটু অসুবিধের মধ্যে আছেন, খবর পেয়েই ছুটে হাজির অমিত। পুরোনো কোনো কমরেড, যাঁর সঙ্গে এখন ওর রাজনীতি আদপেই মেলে না, তাঁর অসুখের জন্য নিজে টাকা দিচ্ছে, চাঁদা তুলছে অমিত। এবং এই তালিকায় শুধু বুদ্ধিজীবীরাই ছিলেন তা নয়: ছিলেন গৃহ পরিচারিকা, রিকশাচালক কিংবা ছোটো দোকানদারও। আর শুধু আর্থিক সাহায্য নয়, ব্যক্তিগত হাজারো সমস্যায় অমিত বন্ধুদের পাশে হাজির, এমনকী পারিবারিক সমস্যা সমাধানেও। ব্যক্তি অমিতের এই বিশেষ গুণটা আমার কাছে উজ্জ্বল হয়ে থাকবে। সে ছিল দুর্গতর নিশ্চিত আশ্রয়, মুশকিল আসান।
অমিত বরাবরই ভালো ছাত্র। বালিগঞ্জ গভর্নমেন্ট স্কুলের মাস্টারমশাইরা ওর কাছে অনেক ভালো ফলের ভরসা করতেন। কিন্তু স্কুল জীবনের উঁচু ক্লাস থেকে ও বিপ্লবী মতাদর্শে দীক্ষিত হয়েছিল। তাই মাস্টারমশাইদের সে-আশা সবটা পূরণ হয়নি। ওর ইচ্ছে ছিল বাংলা সাহিত্য নিয়ে পড়বে। স্কুলে পড়তেই দেওয়াল পত্রিকাতে হাত পাকিয়েছিল। কিন্তু ডাক্তার পিতার মত মেনে ও শেষ পর্যন্ত বিজ্ঞানের পথেই হাঁটে। জয়েন্ট এন্ট্রান্সে খুব ভালো রেজাল্ট করে যাদবপুরে ভর্তি হয় ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে। সেখানেই ওর রাজনৈতিক সক্রিয়তা পরিপক্বতা পায়। সে সময়কার ছাত্র রাজনীতির অভিজ্ঞতা– তার ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুটো দিকই– ওর সারা জীবনের পাথেয় হয়েছিল। পরে যখন কিছুটা আশাহত হয়ে সক্রিয় ছাত্র-রাজনীতি থেকে সংসার জীবনে চলে আসে, তখনও ওই রাজনীতির সদর্থক মূল্যবোধগুলো ওর মনের পরতে পরতে সম্পৃক্ত হয়ে রয়ে গিয়েছিল। তাই সংসারী মানুষ হিসেবেও সে বেশ অন্যরকম ছিল।
যাদবপুরের ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ভালো ছাত্র অমিত খুব প্রিয় ছিল সদ্যপ্রয়াত শঙ্খ ঘোষের। তখন ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রদের বাংলা পড়তে হত; শঙ্খবাবু সেই অর্থে ওর 'স্যার।' স্যার ওকে ছড়া লেখায় উৎসাহিত করতেন, ওদের সাহিত্যসভায় সভাপতি হতেন। সেই উৎসাহে জীবনভর ও ছড়া লিখে গেছে। এমনকী 'উৎস মানুষ' পত্রিকার বর্তমান সংখ্যাতেও ওর একটি ছড়া আছে।
নিজে বিজ্ঞানের ভালো ছাত্র হিসেবে অমিত ছাত্র-রাজনীতির সঙ্গে বিজ্ঞান আন্দোলনকে মেলানোর প্রয়াস পেয়েছিল। স্কুল জীবনেই ও নিজ উদ্যোগে যোগাযোগ করেছিল সমর বাগচী মহাশয়ের সঙ্গে। বহু বছর পর সেই কৃতজ্ঞতা সমরবাবুকে জানিয়ে ও তৃপ্তি পেয়েছিল। যাদবপুরে থাকাকালীন নিরন্তর বিজ্ঞানচর্চা আর সেই বিদ্যাকে মানুষের কাছে নিয়ে যাওয়ার পথসন্ধান, এ দুটোই সে চালিয়ে যেত সমানে। রাজনীতি সে-কাজে বাধা হত না, বরং জোগাত প্রণোদনা। 'আলমা মাটার' যাদবপুর নিয়ে তার অহংকারের শেষ ছিল না। আইনস্টাইনকে নিয়ে প্রদর্শনী, নানারকম আলোচনা সভা, এই সবের আয়োজনে মস্ত ভূমিকা থাকত তার। এরই মধ্য দিয়ে বক্তা অমিতের বিকাশ ঘটে। চমৎকার বাংলায়, পরিচ্ছন্ন যুক্তিপ্রয়োগে বক্তব্য পেশ করত সে। মধুর বাচনভঙ্গি ও চেহারার গুণে বন্ধুরা– বন্ধুনীরাও- ওকে 'মিষ্টি' বলে ডাকত। তাদের কাছে ওটাই ছিল অমিতের ডাকনাম। ইদানীং মাঝে মাঝে বলত, সেই সময়কার পুরোনো নথিপত্র, ইশতেহার প্রভৃতি সংগ্রহ করে রাখছে সে, ওই পর্বের ইতিহাস লেখবার প্রস্তুতি হিসেবে।
শুধু বক্তা অমিতের নয়, সংগঠক অমিতেরও তালিম ওই ছাত্র আন্দোলন/বিজ্ঞান আন্দোলন মারফত। যে কোনো সভা এত গুছিয়ে চালাত সে! এমনকী সিঙাড়া আর চা ঠিক কটা আনতে হবে, আনতে দেরি হলে কাকে পাঠাতে হবে, এসবের প্ল্যান-এ/প্ল্যান-বি সে আগে থেকেই ভেঁজে রাখত। কালিন্দীতে পাঁচতলায় তার একটি ছোট্টো আস্তানা ছিল; সেখানে আকাশঘর নাম দিয়ে খোলা ছাদে অনেকগুলি অনুষ্ঠান সে একা চালিয়েছিল। সুকুমার রায়, বিজ্ঞান ও কবিতা, রবীন্দ্রনাথের গান, কী-না থাকত সেইসব উজ্জ্বল আড্ডায়। একবার তুমুল বৃষ্টিতে সেই খোলা ছাদের আড্ডা ভেসে যাবার উপক্রম। অমিত তড়িঘড়ি লেক টাউনের একটি সভাঘরে নিয়ে গেল সেই আড্ডাকে– সিঙাড়া ও চা সমেত।
ওই রাজনীতির সূত্রেই তার প্রণয় ও পরিণয় ঈশিতার সঙ্গে, যে ওর মৃত্যুর মাস দেড়েক আগে প্যাঙ্ক্রিয়াসের ক্যানসারে গত হয়েছে। ঈশিতার মৃত্যুতে অমিতের বাঁধভাঙা কান্না এখনো কানে বাজে। জানিয়েছিল, সুবিনয় রায়ের 'আমার ভুবন তো আজ হল কাঙাল' গানেই ওর মনের কথাটি ঠিকঠাক প্রকাশ পেয়েছে। শুদ্ধ অনর্গল আবেগ ওর ব্যক্তিত্বের প্রধান অঙ্গ ছিল; সে-আবেগের উন্মোচনে কোনো দ্বিধা ছিল না তার। এমনকী করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১৪ এপ্রিল ডিসান হাসপাতালে ভর্তি হবার পরেও সেই আবেগ নিয়েই ও সিক্ত কণ্ঠে কন্যা কোজাগরীর ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা প্রকাশ করেছিল।
গত বছর পনেরো ধরে তার মন দেশের ইতিহাসের দিকে ঝুঁকেছিল। এক, ওর পূর্বপুরুষদের জন্মস্থান বাঁকুড়ার ইতিহাস; দুই, দেশজ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ইতিহাস। বাঁকুড়ার প্রায়-বিস্মৃত কিন্তু অবিস্মরণীয় মানুষ যোগেশচন্দ্র রায় বিদ্যানিধি হয়ে উঠেছিলেন ওর আদর্শ। দেশের মাটিতে শক্ত করে শিকড় পুঁতে কী করে দেশের নিজস্ব প্রযুক্তি-ঐতিহ্যকে জাগিয়ে তোলা যায়, কী করে সে-প্রযুক্তিকে আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে তোলা যায়, এবং সবচেয়ে বড়ো কথা, কী করে তাকে ব্যবহার-বান্ধব করে সহজে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়, এইটা তার প্রধান ভাবনা হয়ে উঠেছিল। বাঁকুড়ার মানুষজনকে নিয়ে, বাঁকুড়ার সংস্কৃতি নিয়ে, বিশেষ করে যোগেশচন্দ্র রায় বিদ্যানিধিকে নিয়ে অজস্র পরিকল্পনা মাথায় ঘুরপাক খেত তার। তার জন্য অকাতরে টাকা ও শ্রম খরচ করতে বাধত না। কতজনকে যে অমিত ওই উন্মাদনায় মাতিয়েছিল!
একদিকে একেবারে মাটির মানুষদের সাহচর্য, অন্যদিকে অগ্রসর প্রযুক্তির মধ্যে একটা মজবুত সেতু বাঁধতে পেরেছিল অমিত। একক মাত্রা-র পাঠকরা জানেন, কম্পিউটার-প্রযুক্তির আধুনিকতম দিকগুলো নিয়ে সে কতখানি ওয়াকিবহাল ছিল, এবং সেই জ্ঞানকে তার নিজস্ব নির্ভার সুখপাঠ্য গদ্যে পাঠকের মনের মধ্যে কত অনায়াসে সেঁধিয়ে দিতে পারত।
কার্ল মার্কস-এর দুশো তিন-তম জন্মদিনে প্রয়াত অমিতের কছে আমার ব্যক্তিগত ঋণের কথা বলে এই স্মরণ-লেখা শেষ করব। বছর বিশেক আগে অবধি যোগেশচন্দ্র রায় বিদ্যানিধি সম্পর্কে আমি কেবল এইটুকু জানতাম যে তিনি ‘শব্দকোষ’-এর সংকলক এবং রাজশেখর বসুর পরম শ্রদ্ধাভাজন। তারপর, ২০০৫/৬ নাগাদ ওরই সৌজন্যে হাতে এল যোগেশচন্দ্রর আত্মচরিত। তারপর তারই সৌজন্যে কলকাতার কলেজ স্ট্রিট কফি হাউসের তিনতলায় বই-চিত্র সভাঘরে ২২ অক্টোবর ২০১১ যোগেশচন্দ্র স্মরণে কলকাতার প্রথম সভা হয়। অমিতেরই উদ্যোগে ২০১৯-এর ২০ অক্টোবর যোগেশচন্দ্রর জন্মদিনে অরুণ ঘোষ, রণজিৎ সরখেল, চিত্ররথ গুহ, প্রবীর মুখোপাধ্যায় ও তারক গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে আমাদের বাঁকুড়া যাত্রা এবং যোগেশচন্দ্রর নিজস্ব পরিকল্পনায় বানানো ঐতিহাসিক ‘স্বস্তিক’ বাড়িটি দেখবার সুযোগ লাভ।
বাঁকুড়ায় যোগেশচন্দ্র রায় বিদ্যানিধির জন্মদিনে তাঁর বাড়ির সামনে অমিত চৌধুরী ও যোগেশচন্দ্র-র পৌত্র আনন্দ
কুমার রায়, ২০ অক্টোবর ২০১৯। আলোকচিত্র: প্রবীর মুখোপাধ্যায়
যোগেশচন্দ্র-র বাড়িতে তাঁর নিজের রচিত সংস্কৃত শ্লোকের খোদাই-ফলক
অমিত আমার বাকি জীবনের সঙ্গী হয়ে রইল। অনুজদের স্মৃতিচারণ সততই দুঃখের। কিন্তু অমিতের স্মৃতির সঙ্গে দুঃখ ব্যাপারটা খাপ খায় না। তাই 'কী পাইনি'-র বদলে বলতে ইচ্ছে করছে:
মাঝে মাঝে বটে ছিঁড়েছিল তার
তাই নিয়ে কেবা করে হাহাকার -
সুর তবু লেগেছিল বারে বার
মনে পড়ে তাই আজি।
মন ছুঁয়ে গেল। আমারও স্কুল ওই বালিগঞ্জ। পুনর্মিলনীতে দেখা হয়েছে, কথা হয়েছিল,আমাদের অঙ্কের মাস্টারমশাই সুনীলবাবু স্বখেদে বলতেন,অমিত তুই কিছুই করলি না। সুনীলবাবু নিশ্চিতরূপে ভুল ছিলেন। কিছু করা - মানে কি, তার অন্য সংজ্ঞা তৈরি করে গেলেন অমিতদা
ReplyDeleteলেখায় যেন ছবি আঁকা প্রয়াতের। স্মৃতিচারণ হৃদয় ছুঁয়ে যায়
ReplyDeleteঅমিতদা সম্পর্কে কতকিছু জানতে পারলাম । ওনাকে আমার অন্তরের শ্রদ্ধা জানাই ।
ReplyDeleteব্যক্তিগত পরিচয় ছিল না, তবু এই অসাধারণ স্মরণলেখ পড়ে মন ভারাক্রান্ত হয়ে গেল। সত্যিই এমন মানুষ সতত বেঁচে থাকেন স্মরণমননের মধ্য দিয়ে।
ReplyDeleteখুবই শকিং। অন্তরের শ্রদ্ধা।
ReplyDeleteসত্যি, আশীষ বাবুর লেখায় শ্রীযুক্ত অমিত বাবুকে নতুন ভাবে জানলাম। বিজ্ঞান চেতনায় ঋদ্ধ অমিত বাবু ঐতিহ্যের সঙ্গে আধুনিকতার এক অসামান্য মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। অমিত বাবুকে আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা।
ReplyDeleteখুব ভালো লাগলো অনুজের প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা সহ এই স্মৃতিচারণ।ওর সাথে ছাত্রাবস্থায় পরিচয় হয়েছিলো যাদবপুর ডি এস এফ্ সূত্রে। বহুদিন পর আবার ওকে লেখা লেখির মধ্যে পেয়েছিলাম একক মাত্রায়।ব্যক্তিগত যোগাযোগ ছিলো না। একটা কথা ওর সম্পর্কে মনে আছে মিষ্টভাষী অথচ দৃঢ়চিত্ত।
ReplyDeleteঅমিতের মত বন্ধু ও অকৃত্রিম শুভানুধ্যায়ীকে এভাবে হারাতে হবে ভাবিনি। তবু এটাই বাস্তব।আশিশবাবু চেনা অচেনা অমিতের যে ছবি এঁকেছেন সেটা তাঁর পক্ষেই সম্ভব। বড়ো কোমল কিন্তু বড়ো কঠিন সত্যি ।
ReplyDeleteঅসাধারণ লাগলো... মনের গভীরতাকে ছুঁয়ে গেল। আমি আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকেও জানি অমিতদা খুব ভালো মনের একজন মানুষ ছিলেন। অসাধারণ ব্যক্তিত্বের মানুষ ছিলেন। এত তাড়াতাড়ি যে আমরা অমিতদাকে হারাবো তা কিছুতেই ভাবতে পারছি না। গতকাল থেকে মনটা বিষাদগ্রস্ত হয়ে রয়েছে।
ReplyDeleteThis comment has been removed by the author.
ReplyDeleteতাহারে ভভুলিব বলো কেমনে?
ReplyDeleteঅমিতের যাদবপুরের classmate হিসেবে ওকে কাছ থেকে দেখার সুবাদে এই লেখার মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা ছবিটি মন ছুঁয়ে গেল।
ReplyDeleteসত্যি সিংহ হৃদয় মানব। আমার বস ছিলেন। অনেকের আশা, ভরসার জায়গা ছিলেন।খুব মিস করব।
ReplyDeleteযেখানেই থাকুন ভালো থাকবেন স্যার। খুব মিস করবো আপনাকে ॥
ReplyDeleteকোনভাবেই ভাবতে পারছি না, নিতে তো পারছিই না- অমিতদা নেই। আমার বন্ধু, শুভার্থী, মেন্টর পার্থ দেবনাথের কল্যাণে দুইদিন দেখা হয়েছিল অমিতদা'র সঙ্গে। আমার ফিলাডেলফিয়ার গরীবখানায়ও এসেছিলেন খানিকক্ষণের জন্য। তারমধ্যেই কতো বিষয়েই না কথা হয়- রাজনীতি, বিজ্ঞান, এপার বাঙলা ওপার বাঙলা- সর্বোপরি আমাদের প্রিয় বাঙলা ভাষার সুখ-দুঃখ। কথা হয়েছিল- এবার কলকাতা গেলে অবশ্যই অমিতদা-র সঙ্গে দেখা হবে, আড্ডা হবে। কোথাও আড্ডা হবে অমিতদা। প্রাণে থাকুন, ধ্যানে থাকুন।
ReplyDeleteখুবই ভালো লিখেছেন, অমিতের কারণে কাল আমার ঠিক ঘুম হয় নি।
ReplyDeleteএত প্রাণবন্ত স্মৃতিচারণে অনিবার্য বিমর্ষতা কিছুটা কাটলো। মনটা যেন একটু শান্ত হোলো। শ্রী আশীষ লাহিড়ী অমিতদা সম্পর্কে স্বল্প পরিসরে যা বোঝাতে পারলেন, চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে আমার কাছে। অমিতদার সাথে যখনই দূরভাষে বা সাক্ষাতে আলাপচারিতা হয়েছে, দীর্ঘস্থায়ী হয়েছে অন্তত একঘন্টা। শুধু ওনার কথা বলার ধরন এবং তথ্যসমৃদ্ধ বস্তুনিষ্ঠ অথচ সরস বিশ্লেষণে সময় কিভাবে পেরিয়ে যেত বুঝতে পারতাম না। নিরলস অক্লান্ত আর এত সদর্থক স্বচ্ছ মনের মানুষ ছিলেন অমিতদা, প্রকৃতই শিক্ষনীয়।
ReplyDeleteঅমিতের সঙ্গে আমার পরিচয় 1977 সালে। তখন আমরা 'মাটির কাছে' বলে একটা পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। তখন ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। ডিএসএফের একজন সক্রিয় কর্মী। তারপর রাজনীতিতে যোগাযোগ। আশির দশক থেকে নিয়মিত যোগাযোগ কমে গেলেও নানান সভা সমিতিতে দেখা হতো। 2010 সালে আমি তথ্যপ্রযুক্তি দপ্তরে যোগ দেওয়ার পর কর্মসূত্রে যোগাযোগ নিয়মিত হয়। অমিত কিন্তু তার তৎকালীন কর্মক্ষেত্র সি-ড্যাক কলকাতার বেড়ে ওঠায়, তার নিজের অবদান ও পরিশ্রমের জন্য যথেষ্ট গর্বিত ছিল। কলকাতার এই শাখাটি যাতে সুনামের সঙ্গে কাজ করতে পারে তার জন্য অমিতের চেষ্টার অন্ত ছিল না।
ReplyDeleteঅমিতের মতো অমায়িক সর্বদা হাসিমুখ মানুষ বিরল। আমার সঙ্গে কত রকম বিষয়ে কথা হত তা বলার নয়। অমিতের ফোন মানে কম করে আধ ঘন্টা। আমরা এক সঙ্গে অনুষ্টুপ পত্রিকার তথ্যপ্রযুক্তি সংখ্যা বের করার কাজে হাত দেওয়ার পরে এই ফোনালাপ আরও বেড়ে গেছিল। আর কোনদিন সেই ফোন আসবে না, তা ভাবতে পারছি না।
Era porkey apono korey
ReplyDeleteAponarey por
Bahire bnashiro robey
Chere jai ghor.
Bhalobashe sukhe dukhe
Byatha sohey hashimukhe
Moronero kore choro
Jibano nirbhar
Being a classmate at Jadavpur University (I am from Dhaka-Bangladesh) had a goodtime. Amit visited Bangladesh a year back and was supposed to visit very soon but he left for his heavenly abode. May the Almighty rest his soul in eternal peace. AMEN.....
ReplyDeleteAbu Jaffar....Dhaka Bangladeh
ReplyDeleteAmiter sathe amar porichoy ur ghanisthatha ju te porar samay theke.bandhu pranabes er marfat.se samay chatra disha Patrika beroto.sekhane amra jukto chilam.er por joga jog khin haye chilo.kintu boi Chitra abar dekha.kichu anusthane jayar amantran.amit er ei chale jayata mene nite kosto hachha.ashis dar pratibedon pore amit er ei bahumukhi kajer khoj pelam.ei samay amit er na thakata khub khati.
এই অসাধারণ স্মৃতি চারণ থেকে ঋদ্ধ হলাম। এমন চারিত্রিক বৈশিষ্টের মানুষ মেলা সত্যিই দুর্লভ। আন্তরিক শ্রদ্ধা জানাই।
ReplyDeleteঅসাধারণ, ঈশিতা,অমিত কেউ নেই অবিশ্বাস্য।
ReplyDeleteঅমিতদাকে নিয়ে আশীষ দার স্মৃতিচারণ গতকাল পড়েছিলাম । ছবির মতো সুন্দর করে সাজানো স্মরণলেখটি পড়ে মনটা খুবই ভারাক্রান্ত হয়ে গেছিল । মেসেজ পাঠাতে কালকে আর ইচ্ছা হলো না । অমিতদার সাথে আমার ব্যক্তিগত পরিচয় ছিল না । লেখার সূত্রেই তাকে জানি মানে একক মাত্রার লেখক হিসেবে চিনি ওনাকে । তবে বইচিত্র গ্যালারিতে একবার উনি আমার সাথে অনেকক্ষণ কথা বলেছিলেন । উনি নিজেই যেচে আমার সাথে আলাপ করেছিলেন । তখনি ওনার সাথে কথা বলে বুঝেছিলাম মানুষটি বড় মিষ্টি, অমায়িক ব্যবহার । তারপরে একক মাত্রার সঙ্কটকালেও সংগঠক হিসেবে ওনার ভূমিকা যথেষ্ট চোখে পড়েছিল । ভাল লাগত ওনাকে। এইভাবে হঠাৎ করে চলে যাওয়ায় খুবই খারাপ লেগেছে, লাগছে । আরো বেশি করে খারাপ লাগার কারণ ওনার এই কাজের ব্যপ্তি। আসলে ভালো মানুষজনের বহুমুখী কাজের কতটুকুই বা আমরা জানতে পারি !!!! অধিকাংশই লোকচক্ষুর আড়ালে থেকে যায় । আসলে যারা কাজ করে তারা কোন নাম-যশ এসবের জন্য তো কাজ করে না;-- কাজের আনন্দেই আড়ালে থেকে অনবরত কাজ করে যান । অন্তরের গভীর শ্রদ্ধা রইল ওনার জন্য। 🙏🏼🌹♥️
ReplyDelete১৯৮২-৮৩ সাল নাগাদ অমিতদার সাথে একসাথে ছাত্র সংগঠনের কাজ করেছি। 'আহ্বান' নামে একটি পত্রিকা বের করতাম আমরা। অমিতদার লেখার হাত ছিল চমৎকার। এই লেখাটি থেকে অমিতদার জীবন ও ভাবনার অনেক দিক জানতে পারলাম। মাঝে একবার টেলিফোনে যোগাযোগ হয়েছিল। আফশোষ হচ্ছে কেন দেখা করলাম না!
ReplyDeleteখুব ভালো লাগলো অমিত চৌধুরীর জীবনী. খুব কষ্ট হোলো দুনিয়া ছেড়ে চলে গেছেন জেনে. আর খুবই রাগ হচ্ছে কোভিডে গেছেন জেনে! এই অকারণ মৃত্যু হয়তো বা এড়ানো যেতো!
ReplyDeleteউনি যেখানেই থাকুন শান্তিতে থাকুন!🙏
অমিত, তোমাকে জানাই আমার ভালোবাসা আর আন্তরিক অভিবাদন!
ReplyDelete