Monday 30 December 2013

January 2014 Issue Just Released


'একক মাত্রা'র জানুয়ারী ২০১৪ সংখ্যা প্রকাশ পেল। 
প্রচ্ছদ ও ভেতরের ছবি এঁকেছেন অতীন বসাক।

সুচিপত্র 

Tuesday 17 December 2013

On Abhee Dutta Mazumdar

More to Science than Research

by Tushar Chakraborty

Professor Abhee Dutta Mazumder passed away on 15th December 2013 at the age of 45. He was suffering from cancer detected at a very advanced stage. Professor Dutta Mazumder was one of the most distinguished Scientist and Activist of our time. He used to enjoy doing both and thus became a major mover and shaker in long stagnating West Bengal . A brilliant student, he completed his PhD from Saha Institute of Nuclear Physics (SINP) in 1998 . After doing post doctoral work in Canada, he returned to join SINP as a faculty in the High Energy Physics Division. His achievement in the field of High Energy Physics is outstanding. But, at the same time, the desire to change the living condition, culture and intellectual horizon – which reached near collapse situation in West Bengal and India in recent time – led him to form several organizations and platforms to fight back such degeneration. Forum Against Monopolistic Aggression (FAMA) was one such platform. As a good analyst, writer , orator and organizer, Professor Abhee Dutta Mazumder led protest movements against SEZ, Chemical hub, Nuclear Power Plants, GM food and agriculture and FDI based programmes of mal-development. Soon, Abhee became a powerful weapon of mass attraction! He could destroy strongly held and popular myths by presenting facts and evidence, in these protest movements. Actually, very well knew the trick, how to do meaningful challenging work in an apparently effortless way. Through all such struggle, he developed a great understanding of the society, and identified his role in it.

A wide spread misconception is that, scientists are naturally loner. But, outstanding scientists in most path-breaking areas require outstanding social skills as illustrated by Professor Abhee Dutta Mazumder and others. Both Science and activism needs maintaining trustful relationship with wide varieties of people and personalities, particularly the young ones. By doing this skilfully, Professor Abhee Dutta Mazumder earned the trust and love of so many friends, colleagues, comrades - both young and old .

In a very difficult time, we lost an exceptional friend, leader, teacher and helmsman who showed us that there is more to science than doing only research . He left his wife Mala, a noted physicist, his very young daughter and ailing father. We too share their grief and loss .

Thursday 12 December 2013

On Sexual Rights

সমপ্রেম  অপরাধ ?

হিন্দোল  ভট্টাচার্য

কী অদ্ভুত এক রায় দিয়েছে সুপ্রীম কোর্ট। বলে কিনা- প্রাকৃতিক নিয়ম বিরোধী যে কোনো সম্পর্কই অপরাধ ! আর সেই সুবাদে সমকামিতাও অপরাধ। অর্থাৎ, কোনও  দুজন মানুষ একে অপরকে ভালবাসবে তা ঠিক করে দেবে রাষ্ট্র! আমাদের দেশ কি এখনো অস্কার ওয়াইল্ড-এর সময়ে পড়ে আছে? আমার কিছু প্রশ্ন আছে। এই ভারতবর্ষ তো প্রকৃতিকে তাহলে খুব প্রাধান্য দেয় দেখছি। তাহলে নির্বিচারে প্রকৃতিকে ধ্বংস করে কেন? কেন নর্মদায় বাঁধ  দেওয়া হয়? কেন তেহরিতে বাঁধ দেওয়া  হয়? কেন অরণ্য ধ্বংস করা হয়? পুকুর বুজিয়ে বাড়ি ওঠে? জমি অধিগ্রহণ করে জমির উর্বরতা নষ্ট করা হয়? এমন কিছু কারখানা বজায় থাকে যা বায়ু দূষণ করে, জল দূষণ করে? প্রাকৃতিক সাম্য নষ্ট করে? আর তার বিরুদ্ধে আন্দোলনগুলিকেও দমিয়ে রাখা হয়? এসব প্রশ্নের কোনো উত্তর সুপ্রীম কোর্ট দেবেন কি? মনে হয় না।
এবার আসা যাক সম্পর্কের ক্ষেত্রে। ভারতবর্ষ নাকি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র যেখানে সাম্য মৈত্রী ও স্বাধীনতায় মূল মন্ত্র। বুঝলাম। তো এই সাম্য, মৈত্রী ও স্বাধীনতা কাদের নিয়ে? জনগণকে নিয়ে। নিশ্চই ভারতের কতিপয় ক্ষমতালোভী রাজনীতিবিদ এবং আইনবিদদের নিয়ে নয়। অর্থাৎ ক্ষমতাকাঠামোকে নিয়ে নিশ্চই গণতন্ত্র নয়। তাদের জন্য একমাত্র মৌলিক অধিকার থাকবে আর জনগনের কোনো মৌলিক অধিকার থাকবে না এ কথা নিশ্চই কোথাও বলা নেই। কিংবা এ কথা হয়ত ভারতবর্ষের সংবিধানের অলিখিত নিয়মগুলির মধ্যে পড়ে। আমরা তা জানি না। মনে করি আমরা এক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বসবাস করি যেখানে সাম্য, মৈত্রী ও স্বাধীনতার সত্যি কোনো মানে আছে।
কিন্তু হায়! তা যে নেই, সে বিষয়ে ভারতের জনগণ আর কত প্রমাণ পাবেন কে জানে? এই রায় একটা উদাহরণ, যার কারণে সমপ্রেমী যারা, তাদের যেমন মাথার চুল খাড়া হয়ে যেতে বাধ্য, তেমন যারা সমপ্রেমী নন, তাদেরও খুব স্বস্তিতে থাকার কারণ নেই। কারণ এই রায় স্পষ্ট বলছে ব্যাক্তির কোনো স্বাধীনতা নেই এই দেশে। একজন ব্যাক্তি কী পরবেন, কী পড়বেন, কাকে ভালবাসবেন, কার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করবেন, কার সঙ্গে করবেন না, সে সব ঠিক করবে আমাদের দেশের বৃহৎ  গণতন্ত্র। ঠিক করে দেবে বিভিন্ন ধর্মের মুখপত্ররা, রাজনীতিবিদেরা, শাসকেরা, আইনপ্রণেতারা এবং বিচারকেরা। কিন্তু কেন?
ভারতীয় সংবিধানের প্রিয়াম্ব্ল এবং সেই সংবিধানকে আশ্রয় করে গড়ে ওঠা এই ৩৭৭ ধারা আইন তো পরস্পর বিরোধী। প্রথমত প্রাকৃতিক নিয়মকে সম্পূর্ণ ভাবে বুঝতে পারার এক তীব্র অহমিকা রয়েছে এই রায়ে। 'বিষম'-টাই সত্য এবং 'সম'-টা সত্য নয় এবং প্রাকৃতিক নয় এই সত্যে কীভাবে তারা এলেন জানিনা। দ্বিতীয়ত, ব্যাক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করে তারা ব্যাক্তির মৌলিক অধিকারকে খণ্ডন  করছেন যা ভারতীয় সংবিধান বিরোধী। তৃতীয়ত, ব্যাক্তির ব্যাক্তিগত জীবনকে রাষ্ট্র যখন নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করে, তবে কি গণতন্ত্র বলে কোনো কিছুর অস্তিত্ব আদৌ থাকে? না কি তা স্বৈরতন্ত্রে পর্যবসিত হয়ে যায়? তাহলে কি এই ইসুতে এটা প্রমানিত হলো না, যে এই দেশে সংবিধানের মৌলিক অধিকারের নাম করে সাম্য, মৈত্রী ও স্বাধীনতার নাম করে এক  চরম অসাম্য, চরম অমৈত্রী এবং চরম পরাধীন এক 'শাসক-তন্ত্র' চলছে? যার সঙ্গে গণতন্ত্রের দূরত্বই আছে?
প্রায় দেড়শ বছর আগে দি পিকচার অফ ডোরিয়ান গ্রে লেখার অপরাধে অস্কার ওয়াইল্ডকে কারারুদ্ধ করা হয়েছিল এবং সমপ্রেমী হওয়ার অপরাধে অস্কার ওয়াইল্ড-এর মৃত্যও হয়। কিন্তু সে সব দেশে সমপ্রেম নিষিদ্ধ নয়। প্রাকৃতিক নিয়মের বিরুদ্ধও নয়। প্রাকৃতিক নিয়ম তো এই দেশে এক, ওই দেশে আরেক হতে পারে না। প্রাকৃতিক নিয়ম যখন বলছি, তখন তা সর্বজনীন। ইউনিভার্সাল। আজ নিউটন-এর ল তো ভারতে এক বা ইংল্যান্ড-এ এক হতে পারে না। কিংবা  জেনারেল থিওরি অফ রিলেটিভিটি ভারতে এক বা জার্মানিতে আরেক! তার মানে প্রাকৃতিক নিয়ম সারা বিশ্বে এক। একমাত্র ভারতের শাসক বা বিচারব্যবস্থা  প্রাকৃতিক নিয়মের সত্যতা সম্পর্কে নি:সন্দেহ এবং বাকি পৃথিবী ভুল পথে চলছে এই ভাবনা কি চরম অহমিকা নয়? এই অহমিকা কার বা কাদের? এই অহমিকা ভারতীয় শাসক-তন্ত্রের। এই অহমিকার কোনো বিজ্ঞান নেই। এই প্রাকৃতিক নিয়ম সংক্রান্ত নিদানেরও কোনো বিশ্বজনীনতা নেই। তাহলে প্রাকৃতিক নিয়মের নাম করে স্বৈরতান্ত্রিক নিদান দেবার অধিকার কে দিল সুপ্রীম কোর্টকে?
এই রায় আসলে আমাদের দেশে গণতন্ত্র আছে কিনা সে বিষয়েই আবার নতুন করে প্রশ্নচিহ্ন তুলে দিল।
প্রাকৃতিক নিয়মেই সমপ্রেমীরা অপরাধী নয়।

Wednesday 11 December 2013

Insurgent Publishing?


Stevphen Shukaitis, editor of Minor Compositions, talks about the possibilities for open publishing as an experiment and a provocation. This is an interesting interview on how to turn political decomposition into a new form or recomposition..
Please click below to get the full interview:
http://classwaru.org/2013/12/02/what-can-an-open-insurgent-publishing-body-do-an-interview-with-stevphen-shukaitis/ 

Wednesday 4 December 2013

Make the 7th Little Magazine Fair (2-4 Jan 2014) a Grand Success


No Financier No Grants No AD
Let Us Reach to 12,000 People
A Donation of Rs 5 (if not more) will fetch Rs 60,000
to enable us to organise
The 7th All Bengal 3-day Little Magazine Fair
2 - 4 January 2014 (2 - 8 pm) at College Sqr (Kolkata)

Are you with us?

Little Magazine Somonnoy Mancha


Saturday 30 November 2013

Little Magazine Mela - 28 Nov 2013

প্রতি মাসের শেষ শনিবার লিটল মাগাজিন মেলা - এবার হল ২৮ নভেম্বর ২০১৩ / কলকাতায় আকাদেমি'র সামনে
একটি ছবি - পথের আলোয় মেলা চলেছে -

Friday 29 November 2013

সাইকেল চালানো আমাদের অধিকার

কলকাতায় সাইকেল চালানোর ওপর কলকাতা পুলিশের banning নিয়ে কয়েকটি সংগঠন পুলিশের বড়কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে। সেই বৈঠক নিষ্ফল হয়। এ সম্পর্কে একটি রিপোর্ট নিচে দেওয়া হল যা 'http://songbadmanthan.com/'এ প্রকাশ পায়-

২৬ নভেম্বর কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল কমিশনার সৌমেন মিত্র-র সঙ্গে সাইকেল সমাজ সহ কয়েকটি সংগঠনের বৈঠক হয় লালবাজারে। সেই বৈঠকে সাইকেল সমাজের পক্ষ থেকে কমিশনারের কাছে দাবি জানানো হয়, ১) অবিলম্বে কলকাতার সমস্ত রাস্তা থেকে নিঃশর্তভাবে সমস্ত নিষেধাজ্ঞা (সাইকেল সহ সমস্ত অযন্ত্রচালিত যানবাহনের ওপর) প্রত্যাহার করতে হবে। ২) কলকাতার রাস্তায় যানজটের সমস্যার সমাধানে রাজ্য সরকার একটি কমিটি তৈরি করুক, তাতে বিশেষজ্ঞ, কলকাতার রাস্তায় যারা সাইকেল চালায় তারা, এবং ট্রাফিক ডিপার্টমেন্টগুলো থাকুক। এছাড়া সাইকেল সমাজের পক্ষ থেকে বলা হয়, সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের কম সময়ে কলকাতার রাস্তায় এক জায়গা থেকে অন্য জায়গা যাওয়ার একমাত্র মাধ্যম সাইকেল। সেই মাধ্যমটিকে ১৭৪ টি রাস্তায় নিষেধ করা (৪০ এর বেশি রাস্তায় ২৪ ঘন্টার জন্য, ১১৭টি রাস্তায় সকাল ৭টা থেকে রাত ১১টা) মানে কলকাতার রাস্তা থেকে সাধারণ মানুষকে ঠেলে সরিয়ে দেওয়া। সাইকেল সমাজের পক্ষ থেকে এন্টালিতে স্বাক্ষর সংগ্রহের সময় সাধারণ সাইকেল আরোহীরা জানিয়েছিলেন, ণ্ণযদি বড়ো রাস্তায় সাইকেল নিষেধ করে দেয় পুলিশ, তাহলে গলি রাস্তায় গাড়ি নিষেধ করে দেবে জনগণ।’ এই কথাটাও পুলিশ কমিশনারকে শুনিয়ে দেওয়া হয়।
ভবানীপুর যদুবাজার অঞ্চলের সাইকেল আরোহী জীবিকা অধিকার রক্ষা কমিটি-র পক্ষ থেকে গোয়ালা, ছোটো ব্যবসায়ী সহ বিভিন্ন সাইকেলজীবী মানুষেরা ছিলেন বৈঠকে। তাদের পক্ষ থেকে বলা হয় — এই সংগঠনের পক্ষ থেকে দু-বছর আগে কলকাতা পুলিশকে একটি ম্যাপ দেওয়া হয়েছিল, তাতে কোথায় কোথায় সাইকেল লেন হতে পারে, তার বর্ণনা দেওয়া ছিল। এই ম্যাপ তৈরি করার কথা বলেছিল কলকাতা পুলিশই (দিলীপ বন্দ্যোপাধ্যায়)। কিন্তু এতদিনেও সেসব কিছু করা হয়নি। উল্টে ৩৮টি রাস্তায় সাইকেল নিষেধ ছিল আগে, সরকার বদলের পর তা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ১৭৪টি রাস্তায়। অথচ সাইকেল স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীদের জন্য আবশ্যিক একটা পরিবহণ মাধ্যম। তেল সঙ্কট ও মূল্যবৃদ্ধির যুগে সাইকেল অনস্বীকার্য। প্রয়োজনে সাইকেল চালকদের জন্য কলকাতা পুলিশ সচেতনতা সপ্তাহ আয়োজন করতে পারে।
পাবলিক নামক সংগঠনের তরফে প্রদীপ কক্কর বলেন, কলকাতা শহরের হাওয়া বাতাসের যা অবস্থা তাতে সাইকেল-এর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে কোনও তর্কই চলতে পারে না। তাছাড়া কলকাতা পুলিশ রাস্তায় যানবাহনের গতির ভিত্তিতে কলকাতার সড়ক পরিবহণকে ভাগ করছে — সেই ভাগাভাগিতে একদম শেষে আসছে সাইকেল সহ সমস্ত অযন্ত্রচালিত যান। এই ভাগাভাগি সম্পূর্ণ ভুল। কলকাতা পুলিশের সচেষ্ট হওয়া উচিত রাস্তা থেকে প্রাইভেট গাড়ি কমানোর জন্য। কলকাতা যে ফুসফুসের অসুখের রাজধানী হয়ে উঠছে বায়ুদূষণের জন্য, সে ব্যাপারে কলকাতা পুলিশ নিশ্চয়ই অবগত আছে।
রাইড টু ব্রিদ সংগঠনের গৌতম শ্রফ বলেন, কলকাতার সাধারণ সাইকেল ও অযন্ত্রচালিত যানের ওপর নির্ভর করে যারা, তাদের ভাত মারার এই চেষ্টা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। আমি কলকাতাবাসী বলে আমার লজ্জা হচ্ছে।
সুইচ অন সংগঠনের একতা জাজু বলেন, কলকাতা পুলিশ অবিলম্বে নিঃশর্তে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিক।
বৈঠকে চক্র সত্যাগ্রহ মঞ্চের তরফে এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে ইন্টারনেটের মাধ্যমে সংগৃহিত প্রায় ২৫ হাজার স্বাক্ষর কলকাতা পুলিশের হাতে তুলে দেন একতা জাজু। শমীক সরকার সাইকেল সমাজ সংগঠনের তরফে রাস্তায় সংগৃহিত প্রায় আড়াই হাজার স্বাক্ষর জমা দেন।
আন্দোলনকারীদের বক্তব্যের আগে ও পরে প্রায় আধঘন্টা বক্তব্য রাখেন স্পেশাল পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র স্বয়ং। সেই বক্তব্যে তিনি জানান,
১) সাইকেল ও অযন্ত্রচালিত যান নিষেধ করা হয়নি, নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে মাত্র।
২) কলকাতায় রাস্তা তুলনায় কম, ফলে ট্রাফিক চ্যালেঞ্জ বেশি।
৩) প্রতি বছর কলকাতায় চারশ’ সাড়ে চারশ’ লোক অ্যাক্সিডেন্টে মারা যায়। সাইকেল আরোহীদের জন্য দুর্ঘটনা ঘটে। আমরা রাস্তায় সিসিটিভি ক্যামেরা বসিয়েছি, তা থেকে ছবি পাচ্ছি। সেগুলি আমরা ইউটিউবে তুলে দিয়ে দেখিয়ে দেব সাইকেলের জন্য দুর্ঘটনা ঘটে।
৪) কলকাতা পুলিশ রাস্তায় প্রাধান্য দেয় যথাক্রমে মেট্রো, বাস, মিনিবাস; তারপর প্রাইভেট গাড়ি; তারপর হাতে টানা রিকশা প্রভৃতি; তারপর মোটর সাইকেল; তারপর সাইকেল।
৫) সাইকেল করতে পারলে ভালো হত, কিন্তু রাস্তা এত কম যে করতে পারা যাচ্ছে না।
৬) প্রাইভেট গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করার ব্যাপারে কলকাতা পুলিশ ভাবনা চিন্তা করেছে, কিন্তু কিছুই কার্যকর করা যায়নি।
৭) তিন রকম লোকেরা সাইকেল চালায় : ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, সাইকেলপ্রেমী, কাজের জায়গায় সাইকেলে যায় যারা (ক্ষুদ্র সংখ্যক)
৮) কলকাতা পুলিশের পরিকল্পনা : মেইন রাস্তা পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ও বড়ো গাড়ির জন্য (প্রাইভেট গাড়ি সহ); অটো, রিক্সা, সাইকেল, ভ্যান, ম্যাটাডোর — এগুলো রেল বা মেট্রো স্টেশন থেকে বড়ো রাস্তায় নিয়ে যাবে লোকেদের। বড়ো রাস্তায় এগুলো চলতে পারবে না, ক্রসিং পেরোতে পারবে; সাইড লেন বা বাইলেন দিয়ে সাইকেল বা অন্যান্য ধীরগতির যান চলতে পারবে।
সৌমেন মিত্রর বলা শেষ হয়ে গেলে আন্দোলনকারীরা তাঁর প্রতিটি পয়েন্টকে খন্ডন করতে চান যুক্তি দিয়ে, কিন্তু তার কোনও সময় না দিয়ে স্পেশ্যাল পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র মিটিং থেকে বেরিয়ে যান।

Saturday 23 November 2013

A Painting in Nov 2013 issue of Ekak Matra

একক মাত্রা 'র নভেম্বর ২০১৩ সংখ্যায় প্রকাশিত এই ছবি।
শিল্পী - সৌর্য়েয় চক্রবর্তী

Tuesday 12 November 2013

মুক্তির সন্ধানে


একটু নিশ্বাস নিয়ে বাঁচি 

রেজাউল করিম 

ভোটের ঢাকে কাঠি পড়তে আর মাত্র কয়েকটি মাস বাকি আছে। চারিদিকে সাজো সাজো রব উঠেছে। ভারতীয় জনতা পারটি নরেন্দ্র মোদিকে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য মনোনীত করেছেন। গুজরাট দাঙ্গার সময় মোদিজির মন্তব্য “আমরা দুই, আমাদের দশ”, “শরণার্থী শিবির না মোল্লা তৈরির আঁতুড়ঘর” বা গুজরাট দাঙ্গা “নিউটনের তৃতীয় সুত্র মেনে” ইত্যাদি মন্তব্য স্মরণ করে বিরোধী দলগুলি তাকে মুসলিম বিরোধী বলে অভিহিত করতে উঠেপড়ে লেগেছে। অপরদিকে, তথাকথিত হিন্দুত্ববাদি দলগুলিও খুব সূক্ষ্মভাবে হিন্দু আবেগ জাগিয়ে মুসলিম বিরোধিতার ধিকিধিকি তুষের আগুনে নতুন জ্বালানি দিয়ে ভোট বৈতরণী পার হতে চাইছেন। মোদিজিও সুবিধামত মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি তার মনোভাব খুব সুকৌশলে ব্যক্ত করতে কসুর করছেন না। তার কথার মারপ্যাঁচে মোহিত জনগণ উদ্বাহু হয়ে নৃত্য করছে, শেয়ারবাজারের সুচকের সাথে পাল্লা দিয়ে তার ব্যক্তিগত সুচকও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। প্রায় সহজেই বলা যায় যে, ষোড়শ লোকসভার নির্বাচকমণ্ডলীর কাছে চেতন বা অবচেতনে মুসলিমরা ভোটের অন্যতম প্রধান ইস্যু। কেউ তাদের “তুষ্ট” করতে চান, আর কেউ সেই তোষণের বাড়া ভাতে ছাই দিতে চান। দুই যুযুধান প্রধান শক্তি তাই ভিন্ন মেরুতে অবস্থান করলেও মনেপ্রাণে “ধর্ম নিরপেক্ষতা”কেই নির্বাচনের ইস্যু করতে চান। 
কেন বারবার সংখ্যালঘুর অধিকার ভোটের ইস্যু হয়ে ওঠে, কেন বার বার তাদের আচার- আচরন চুলচেরা বিশ্লেষণের শিকার হয়, একদল তাদের খলনায়ক সাজান আর একদল অপাপদিদ্ধ শিশু হিসেবে তাদের বর্ণনা করেন, এ প্রশ্নের উত্তর নিহিত আছে ১৯৪৯ সালের ২৪ নভেম্বর তারিখে, যেদিন ভারতের পার্লামেন্ট স্বাধীন দেশের সংবিধান আনুষ্ঠানিক ভাবে গ্রহণ করেছিল। নানা ঐতিহাসিক কারনে সেদিন বিবাহ, উত্তরাধিকার, ধর্মীয় আচার আচরণ সংক্রান্ত ১৮৪০ সালের চালু আইনটিকেই আইন হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল। তার ফলে, দেওয়ানি বিধির ক্ষেত্রে বিশেষত বিবাহ ও উত্তরাধিকার সংক্রান্ত বিষয়ে হিন্দু ও মুসলিমদের জন্য আলাদা আইন গৃহীত হল। অবশ্য, কালক্রমে হিন্দু বিবাহ, উত্তরাধিকার ও পারিবারিক আইন নানারকম ঘষামাজা করে, সংশোধনী নিয়ে যথেষ্ট যুগোপযোগী হলেও এ সংক্রান্ত মুসলিম আইন প্রায় অবিকৃতই রয়েছে। তাতে যা নূতন সংযোজন বা পরিবর্তন হয়েছে, যেমন ডিভোর্স ও প্রটেকশন বিল, ১৯৮৬, তা মুসলিম ব্যক্তিগত আইনকে আরও জটিল ও প্রাচীনপন্থী করে তুলেছে। সংবিধান প্রণেতারা যদিও অবশ্য খুব ভালভাবে জানতেন যে, অখণ্ড ভারতবর্ষ দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে দ্বিখণ্ডিত হয়েছে এবং এই সাম্প্রদায়িক বিভাজন অতিক্রম করে ভারতবর্ষের অখন্ডতার জন্য একটি অভিন্ন আইনই যথাযথ। তা বিবদমান ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করবে। কিন্তু, নেহেরুজি মনে করতেন যে ভারতে বসবাসকারী মুসলিমরা যথেষ্ট আধুনিক নন ও তাঁরা অভিন্ন বিধির জন্য যথেষ্ট প্রস্তুত নন। সেইজন্যে, এই বিধি নির্দেশমূলক বিধির (আর্টিকেল ৪৪) অন্তর্ভুক্ত করে তার অন্তর্ধান যাত্রার ব্যবস্থা করলেন। ভারতের সংবিধান অনুসারে নির্দেশমূলক বিধি অনুসারে ন্যায়ালয় কোন রায় দিতে পারে না। অভিন্ন দেওয়ানি বিধির সেই অন্তর্জলী যাত্রা ভারতবাসির জন্য এক অন্ধকার যুগের সুচনা করল। এ কথা নিঃসংশয়ে বলা যায় যে ভারতের সংবিধানের ১৫(২) ধারায় যে সমানাধিকারের কথা বলা হয়েছে, ব্যক্তিগত আইনগুলি তার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। আবার, মুসলিম ব্যক্তিগত আইন সংক্রান্ত সমস্ত বিষয় নিয়ে বিভিন্ন আদালত নানা সময়ে যেসব মন্তব্য করেছেন (১৯৬২ ও ১৯৬৮ সালে এ সংক্রান্ত নানা মামলায় মাদ্রাজ, বোম্বাই ও পাঞ্জাব হাইকোর্ট) তাতে একটা বিষয় পরিস্ফুট হয়েছে যে, ভারতে প্রচলিত ব্যক্তিগত আইনসমূহ সংবিধানের ৩৭২ নম্বর আর্টিকেলে অন্তর্ভুক্ত নয় বরং এগুলি পরম্পরাগত আইন, এ সংক্রান্ত কোন বিল আইন সভায় পাশ করা হয়নি। মহামান্য আদালত আরও লক্ষ্ করেছে যে, মুসলিম ব্যক্তিগত আইন কোরানে যেভাবে বলা হয়েছে সেভাবে গৃহীত হয়নি বরং তা তথাকথিত শরিয়ত অনুসারী বলে মান্যতা পেয়েছে। প্রকৃতপক্ষে এইসব আইন ইমাম সাফেয়ী (৭৮৭-৮২০) বাগদাদে “আর-রিসালাত” নামক একটি গ্রন্থে সর্বপ্রথম গ্রন্থিত করেন। শাসনকাজ পরিচালনার জন্য উম্মায়িদ ও আব্বাসিয় খলিফাদের যুগে প্রচলিত আইন (ফিকাহ) ও আর-রিসালাত বর্ণিত শরিয়তি আইন নানা সময়ে নানাভাবে পরিবর্তন হয়েছে । এসব পরিবর্তনের মূল উদ্দেশ্য ছিল, খলিফাদের শাসনকে শক্তিশালি করা ও তাদের সব ধরনের রাজকীয় রীতিনীতিকে ধর্মীয় গ্রহণযোগ্যতা দেয়া। যারা এইসব পরিবর্তন মানতে চাননি তাদের কেউ কেউ কারাগারে জীবন দিয়েছেন (আবু হানিফা, ৭৬৭) কেউ সরাসরি খুন হয়েছেন (মনসুর হাল্লাজ আব্বাসিয় খলিফা আল মুক্তাদিরের রাজত্বকালে ৯২২ সালের ২৬শে মার্চ তাকে খুন করা হয়)। সংক্ষেপে বলা যায়, যে প্রচলিত শরিয়তি আইন অতি পার্থিব রাজকীয় প্রশাসনিক ফরমান, কোরান সম্মত কোন ঐশ্বরিক বিধান নয়। ভারতীয় মুসলিমদের কাছে মাননীয় ইমামদের ( যেমন, আবু হানিফা) কাছেও তা গ্রহণযোগ্য ছিল না। এইসব আইন আবার কোরানের ১৫/৯১ আয়াতের সাথে সাযুজ্যপূর্ণ নয়। অথচ, ভারতের পার্লামেন্ট তাকে কোরান সম্মত বিধান হিসেবে মান্যতা দিয়ে এসেছে, তাকে সাদরে দেশের আইন হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। মনে রাখতে হবে, মওলানা আজাদের মত পণ্ডিত ব্যক্তিও সেই সব আইন নিয়ে প্রকাশ্যে কোন সমালোচনা করেননি। এ প্রসঙ্গে স্মরণ করা যেতে পারে যে দক্ষিণ আফ্রিকাতেও প্রায় একই রকম একটি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল ১৯৯৩ সালে নতুন সংবিধান রচনার সময়ে। অবশ্য, ব্যক্তিগত আইনকে তখন সে দেশের আইনসভা গ্রহণযোগ্য বলে মান্যতা দেননি।
যাই হোক, ফিকাহ কথিত আইন ভারতের “অপরিণত” মুসলিম জনগোষ্ঠীর কল্যাণের জন্য তাদের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া হল যেমন ভাবে বলির আগে কোরবানির পশুগুলিকে দাগিয়ে দেওয়া হয়। এই আইন বলে মুসলিমরা কয়েকটি বিশেষ অধিকার লাভ করল- কন্যা সন্তানরা পিতার সম্পত্তির সমানাধিকার থেকে বঞ্চিত হল ,পুরুষরা একাধিক বিবাহ করার বৈধতা ও যথেচ্চ তালাক দেয়ার অধিকার অর্জন করল ও উত্তরাধিকার সংক্রান্ত বিষয়ে “ফারায়েজ” ও আইনসম্মত বলে গণ্য হল। তালাক নিয়ে কোরান শরিফে খুব বিস্তৃত ব্যাখ্যা রয়েছে- তালাক একটি বিশেষ সুযোগ যা অতি সাবধানে ব্যবহার করা উচিত, এটি বৈধ অধিকারের মধ্যে সবচেয়ে ঘৃনিত ও সামান্য কারনে বা একই সাথে তিন তালাক দিলে তা গ্রাহ্য হওয়া উচিত নয়। এমনকি, তালাক উচ্চারিত হলে, খোদাতালায়র সিংহাসন ক্রোধে কাঁপতে থাকে। অথচ, শরিয়তি আইনে সে সব উল্লেখ মাত্র নেই। তালাক সংক্রান্ত মুসলিম ব্যক্তিগত আইনটির আর একটি দুর্বলতা হল এটি ক্রিমিনাল প্রসিডিওর কোডের ১২৫ নম্বর ধারার বিরোধী, যে ধারায় জাতি ধর্ম নির্বিশেষে যে কেউ খোরপোষের জন্য মাজিস্ট্রেটের শরণাপন্ন হতে পারেন। ভারতের পার্লামেন্ট ১৯৫৪ সালে আরও একটি আইন পাশ করেন যার পোশাকি নাম স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্ট। এই আইনে ভারতে বসবাসকারী যে কোন হিন্দু, অহিন্দু ও বিদেশিরা এই আইনের সাহায্যে বিবাহ নথিভুক্ত করতে পারেন। মুসলিম ব্যক্তিগত আইন অবশ্য ১৯২৯ সালের শিশু-বিবাহ নিবারনী আইনের ও পরিপন্থী, কারন, মুসলিম ব্যক্তিগত আইন অনুসারে ১৮ বছরের কম বয়সীদের বিবাহ ও আইনসিদ্ধ। এককথায়, বলা যেতে পারে যে ব্যক্তিগত আইন সমূহ অনেক ক্ষেত্রেই দেশের চালু নিরপেক্ষ আইনের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নেই।
খুব সহজেই অনুমেয়, “মুসলিম জনগোষ্ঠী” বেশ কিছু বিষয়ে তার হিন্দু প্রতিবেশী থেকে আলাদা। তাদের জন্য নির্মিত সর্বনেশে বিশেষ আইন- কানুন তাদের আলাদা হতে বাধ্য করেছে। না হলে, “মুসলিম জনগোষ্ঠী” কোন সুষম-বিন্যস্ত গোষ্ঠী নয় যে তাদের মধ্যে সাধারন সাম্য থাকবে- তাঁদের ধর্ম এক হলেও তাঁরা বহুধা বিভক্ত। তাদের মধ্যে রয়েছে ভাষাগত ও শিক্ষাগত বিভিন্নতা। তাদের আচার-আচরণ, জাতিগত বিন্যাস একই রকম নয়। তাদের মধ্যে রয়েছে বিস্তর সংস্কৃতিগত ফারাক। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, বাঙালি চাষি মুসলিমদের সাথে তাদের দুলে- বাগদি- চণ্ডাল-কৈবর্ত- নমশূদ্র পূর্বপুরুষের যতখানি মিল রয়েছে বিহারী মুসলিমদের সাথে রয়েছে প্রায় ততখানি পার্থক্য।কাজেই, সংখ্যাগুরু ইন্টেলেকচুয়ালরা পার্লামেন্টে আইন পাশ করে মুসলিমদের উপর যে আইন চাপিয়ে দিয়েছেন তাতে তাদের বিড়ম্বনা নানাভাবে বেড়েছে। সেই কথামালার কুমিরের গল্পের মত- ধান চাষ করে সে “গোঁড়ার” দিক আর আখ চাষ করে “ডগার” দিকের অধিকার পেয়েছে!
এইসব আইনে “বলিয়ান” হয়ে মুসলিমরা কতটা লাভবান হয়েছেন তার প্রমান সাচ্চার-রিপোর্টের ছত্রে ছত্রে ছড়ান রয়েছে। তাঁরা শিক্ষা থেকে শত যোজন দূরে থেকেছে। সম্মানজনক জীবিকা তাদের করায়ত্ত হয়নি। প্রায় সব ধরনের সরকারি সাহায্য থেকে তাঁরা বঞ্চিত হয়েছে। তাদের ছেলেমেয়েদের মাত্র ৪ ভাগ মাদ্রাসায় পড়ে অথচ, বাম ডান নির্বিশেষে মাদ্রাসা শিক্ষাকেই তাদের দুর্ভাগ্যের কারন হিসেবে চিহ্নিত করেন। অথচ, প্রকৃত বাস্তব হল, তাঁরা দুটি কারনে মাদ্রাসায় যেতে বাধ্য হয়- ঐসব জায়গায় সাধারন স্কুলের সংখ্যা কম ও বেসরকারি স্কুলে পড়াবার মত সংগতি তাদের নেই। তা সত্ত্বেও শতকরা প্রায় ৩০ ভাগ পরিবার তাদের সর্বস্ব ব্যয় করেও ছেলেমেয়েদের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করেন। তাদের শিশুদের শতকরা ২৫জনই স্কুলে যায় না, গেলেও অষ্টম শ্রেণীতে গিয়েই তাঁরা ঠিক করেন- যথেষ্ট হয়েছে, আর নয়।। তাঁরা ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ হয় পান না বা পেলেও খুব অল্প সংখ্যক ভাগ্যবান তা পান, যদিও ঋণ খেলাপি হিসেবে তাদের বদনাম তুলনামূলক ভাবে কম। তাদের এলাকা গুলিতে রাস্তাঘাট ভাল নয়, পানীয় জলের ব্যবস্থা অপ্রতুল, বিদ্যালয়, পোস্ট অফিস, ব্যাঙ্ক এমন কি বাস স্টপের সংখ্যাও কম। জাস্টিস সাচ্চার রিপোর্টে উল্লেখ করেছেন (২০০৬ :২৩৭) যে, মুসলিমরা ‘exhibits deficits and deprivation in practically all aspects of development’ হর্ষ মন্দার লিখেছেনঃ “একথা খুব সহজেই প্রতিয়মান যে, তথাকথিত মুসলিম তোষণ মুসলমানদের পৃথক সত্ত্বা নির্মাণের যে “অধিকার” দিয়েছে তার ফলে মুসলিম নারীরা একদিকে ভরণ পোষণের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন, বা ইচ্ছা করলেও কেউ কোন অনাথ শিশুকে দত্তক নিতে পারেন না, অন্যদিকে তেমনি তাদের দাড়ি রাখা ও বোরখা পরার অভ্যাস সবার সন্দেহ ও বিরক্তির কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে। মুসলিমরা সারাক্ষণ এক ধরনের নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন, কারন তাঁরা বার বার জাতিগত হিংসা আর গণহত্যার শিকার হয়েছেন। এই নিরাপত্তা হীনতার জন্য তাঁরা বিশেষ বিশেষ জায়গায় সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে থাকতে বাধ্য হন”। তাহলে, যে অক্ষয় স্বর্গের কল্পলোকের স্বপ্নে বিভোর হয়ে মুসলিমরা বিশেষ আইন বলে নিজেদের পৃথগন্ন করেছিল তা ভুল শুধু ভুল, মিছে পরিহাসে পরিণত হয়েছে। অথচ, প্রতিদিনের রাজনৈতিক কুনাট্যরঙ্গের তাঁরাই প্রধান শিকার । কখনো হিন্দুত্ববাদীদের অমৃত ভাষ্য তাদের কংগ্রেসের কোর্টে ঠেলে দিচ্ছে। ভীত ত্রস্ত কংগ্রেস তখন সন্তরণমূঢ় অসহায় বালকের মত ত্রাসে সঙ্কুচিত হয়ে, ‘মুসলিম-তোষণে’ সাময়িক ক্ষান্তি দিয়ে,খড় কুটো আঁকড়ে ধরার মত হিন্দু তোষণের চেনা রাস্তায় হাঁটার চেষ্টা করেছে, যার ফলশ্রুতিতে বন্ধ মন্দিরের দ্বার খুলেছে, মুসলিমরা আবার তালাক দেবার নতুন অধিকার লাভ করেছে। যে সব অধিকার তাঁরা পেয়েছে, তা তাদের পৃথক সত্ত্বা নির্মাণ করেছে ঠিকই কিন্ত তার জৈবিক ক্ষুধা নিবৃত্তির কোন ব্যবস্থা সেখানে নেই। তাই দুষ্টচক্রের মত সেই অধিকার তার প্রতিদিনের জীবন সংগ্রামকে আরও দুর্বিষহ করে তুলেছে। উৎপাদন চক্রের যেখানে তার অবস্থান সেখানে তার পৃথক সত্ত্বা তার কাছে জগদ্দল পাথরেরে মত ভারি হয়ে দাঁড়ায়, সংখ্যাগুরুর রোষে সে আরও বেশী বৈষম্যের শিকার হয়, যা তার আলাদা থাকার জেদ আরও তীব্র করে। তখন সে আরও জোর করে তার পৃথক সত্ত্বাকে আঁকড়ে ধরতে চায়। হিন্দুত্ববাদিরাও তাদের এই জেদ , ঔদ্ধত্ত ও “অধিকারে” আহত হয়ে তাদের আরও তীব্র আক্রমণ করে। যেন, তাদের খুব ক্ষতি হয়ে গেছে, যেন অবাধ তালাকের অধিকার দিলে তাঁরাও খুব “সভ্য” হয়ে উঠতেন, যেন বিশেষ অধিকার খারিজ হয়ে গেলেই রাতারাতি দেশের সব সমস্যার সমাধান হয়ে যেত। অবশ্য, কেউ এই প্রশ্ন তোলেন না যে, মুসলিমদের জন্য তথাকথিত অধিকার প্রণয়নের সময় আইন সভায় কতজন মুসলিম আইন প্রনেতা ছিলেন? কেউ এই প্রশ্নও তোলেন না যে, যখন আইন পাশ হয়েছিল তখন ত বৃহৎ সম্প্রদায়ের মানুষই সংখ্যালঘুর জন্য এই নিদান হেঁকেছিলেন। যতবার তা সংশোধিত হয়েছে, তা হয়েছে পশ্চাৎগামী, আর মুসলিমদের অজ্ঞতা, বিচ্ছিন্নতা তা আরও বাড়িয়েছে। কিন্তু সে পশ্চাৎগামী নাট্যানুষ্ঠানও হয়েছে সংখ্যাগুরুর বদান্যতা ও পৃষ্টপোষকতায়!! নাহলে যারা ফৌজদারি বিধি বিনা বাক্যব্যয়ে মেনে নিলেন তাঁরা দেওয়ানি বিধি মানবেন না এমন কথা গরিষ্ঠ মুসলিম জনগোষ্ঠী বলেন নি, আর বললেও শোনার কোন যথার্থ কারন ছিল না। মুসলমানরা স্বাধীন ভারতের আইন সভায় যে হারে নির্বাচিত হন, তার সাহায্যে নিশ্চিত ভাবে কখনোই “নিজেদের জন্য” বিশেষ “মর্যাদাদানকারী” কোন আইন পাশ করাতে পারবেন না। তাহলে, কেন তাঁরা অন্যায় আক্রমণের শিকার হন, কেন তাঁদের পৃথক সত্ত্বা একের পর এক নির্বাচনে ইস্যু হয় আবার নির্বাচনের পর তাঁরা বিস্মৃতির শিকার হন?
সম্প্রতি জাভেদ আখতার টুইটারে মন্তব্য করেছেন, “জাভেদ আখতার, জাদু!খুব কপাল করে জন্মেছ। কখনো তোমাকে সংঘ পরিবার মুসলমান বলে গাল দেয়, কখনো মোল্লারা “ছদ্ম-মুসলমান” হওয়ার জন্য তোমার মুন্ডুপাত করে”। যেসব মুসলিম নাগরিক সচেতনভাবে নিজেদের ভারতীয়ত্ব জাহির করতে চান তাঁরা কিন্তু এখন সত্যকার “না ঘরকা না ঘটকা”। আপনি খুব যুক্তিবাদি, কিন্তু আপনার নামটি আরবীয় ভাষায়। আপনি যত সেন্সিবল হন না কেন, কোথাও না কোথাও, কারনে-অকারনে আপনি অপমানিত হতে পারেন- হতে পারে ফেসবুকে, হতে পারে টুইটারে, হতে পারে হাটে- বাজারে, রাস্তা ঘাটে বা বাসস্থানে। আপনি লগ্নভ্রষ্টা কনের কপাল নিয়ে জন্মেছেন, অল্প স্বল্প মুখ ঝামটানি অনিবার্য ভাবে আপনাকে সইতে হবে। প্রসঙ্গত বলে রাখি, ভারতীয় স্টেট ব্যাঙ্ক এই লেখককে গৃহঋণ দিতে অস্বীকার করেছিল। তিন তিনবার অনুসন্ধানের পর যখন সে উপরওয়ালাদের শরণাপন্ন হল তখন যে শর্তে তাকে ঋণ দিতে চায় তা নেবার মত প্রবৃত্তি ও আগ্রহ কোনটাই তার ছিল না। বাড়ি ভাড়া নিতে গিয়েও একই অভিজ্ঞতা হয়েছে। সব কিছু ঠিকঠাক হয়ে যাবার পর নাম শুনেই ভদ্রলোকের ভুরু কুচকে উঠল- “বুঝতেই পারছেন। আমার কোন অসুবিধা নেই। আসলে আমার স্ত্রী আবার পুজো আচ্চা...”। তাই, তার স্থির বিশ্বাস, যত নষ্টের গোঁড়া নামটাকে বিসর্জন দিতে হবে। প্রথমতঃ বাঙালি ভাত আর অক্সিজেনে যদি পুষ্টি লাভ হতে পারে তাহলে বাংলা নাম নয় কেন? যে নামগুলি মুসলমানদের কাছে এত প্রিয় সেগুলো আর যাই হোক মুসলমানদের দেয়া নয়। “মুহম্মদ” নাম দিয়েছিলেন তার কাকা ও দাদূ- দুজনের কেউ মুসলিম ছিলেন না। আলি, ওমর, আবু বকর, উসমান এ সব নাম ও পাগান মূর্তি পুজারিদের দেওয়া। বাহারাম, সোহরাব, রুস্তম এসব বীররাও ত ছিলেন পার্সি অগ্নিপূজক। তাহলে, বাংলা নাম অচ্ছুত কেন?
তবে, প্রতিদিনকার যে অনিবার্য গ্লানি, অপমান, হীনমন্যতায় শিক্ষিত মুসলমানরা বেঁচে আছেন, তাদের বার বার দেশপ্রেমের প্রমান দিয়ে বেঁচে থাকার শংসাপত্র যোগাড় করতে হচ্ছে, আমার নামটি “মুসলমান” কিন্ত আসলে আমি তেমন “মুসলমান” নই বলে প্রতিদিন নিজের সাথে নিজেকে লড়তে হচ্ছে- অবমাননাকর সেই বিষবৃক্ষটিকে সমূলে উৎপাটিত করতে হবে। “মুসলিম ব্যক্তিগত আইন” গলায় ফাঁসের মত মুসলিমদের জাগতিক অস্তিত্বকে প্রতি মুহূর্তে বিপন্ন করছে। সেই বিপন্নতাবোধ থেকে মুক্তির উপায় হিসেবে চাই বিছিন্নতার শেকড় থেকে উৎপাটন। বড় ভায়ের চক্ষুশূল হয়ে হয়ত কায়ক্লেশে বাচা যায় কিন্ত মাথা উচু করে বাঁচতে হলে সবার সাথে তাল মিলিয়ে বাঁচতে হবে। না হলে, দেশপ্রেম, দেশাভিমান, দেশের জন্য আত্মত্যাগ কোন বিষয়ে পিছিয়ে না থেকেও কেন বৈষম্যের কৃত্রিম দেয়ালে বার বার সে মাথা ঠুকে মরে। সব বৈষম্য দূর হোক, সব ভুল বোঝাবুঝির অবসান হোক। তার আগে পরিপূর্ণ মুক্তির স্বাদ চাই, চাই অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু হোক, একটু নিশ্বাস নিয়ে বাঁচি।

Monday 4 November 2013

যে সমস্ত স্টলে 'একক মাত্রা' পাওয়া যায়

এই স্টলগুলিতে না পেলে আমাদের জানান। আপনার কাছাকাছি অন্য কোনও স্টলে যদি পেতে চান আমাদের জানান-


Tuesday 29 October 2013

Monday 28 October 2013

অর্থনীতির আলোচনা

অর্থনীতিতে শ্রমের পরিকাঠামো গুরুত্ব পাবে কী ?

অনিন্দ্য ভট্টাচার্য

নিচের এই লিঙ্কটি ক্লিক করুন - 

Tuesday 8 October 2013

সুন্দরবনের কোনও বিকল্প নেই

সুন্দরবনে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র কেন?

ইন্দ্রনীল সাহা

সুন্দরবন দুই বাংলা জুড়ে বিস্তৃত। প্রায় ৬০ শতাংশ বাংলাদেশে আর ৪০ শতাংশ পশ্চিমবঙ্গে। স্বাভাবিকভাবেই এপারে যেসব মাছ আসে তার অনেকাংশেরই জন্ম হয় বাংলাদেশের সুন্দরবনে। এভাবেই চলছে। গত ২০০ বছরে সভ্যতার অগ্রগতির কোপ গিয়ে পড়েছে সুন্দরবনের উপরে। প্রায় ৬৬ শতাংশ বনভূমি আজ লুপ্ত। এই আক্রান্ত বনভূমির উপর আজ নতুন আক্রমণ- বাংলাদেশ সুন্দরবন ঘোষিত বনভূমির মাত্র ১৪ কিমি দূরে ভারত বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে তৈরি হতে চলেছে ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন এক বিশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। পুরো পরিকল্পনা অনুসারে অধিগৃহীত ১৮৩৭ একর জমিতে দুই ধাপে তৈরি হবে মোট ২৬৪০ মেগাওয়াট উৎপন্নকারি তাপবিদ্যুৎ-কেন্দ্র। প্রথম ধাপে তৈরি হবে দুটি ইউনিট ৬৬০ মেঃওঃ ক্ষমতার। সময় ধার্য করা হয়েছে সাড়ে চার বছর। পুরো কাজটি হবে ভারতের NTPC এবং বাংলাদেশের BPDBর যৌথ উদ্যোগে। ২০শে এপ্রিল ২০১৩ সালে এই মর্মে চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে ঢাকাতে। সরকারি আইন অনুযায়ী, এই ধরনের প্রকল্পের জন্য যে কোনওরকম কাজ শুরু হবার আগেই পরিবেশগত সমীক্ষা (ইআইএ) ও তার ছাড়পত্র পাওয়া আবশ্যিক। এক্ষেত্রে কিন্তু প্রকল্পের স্থান চূড়ান্তকরণ ও জমি অধিগ্রহণ থেকে শুরু করে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি স্বাক্ষর ইত্যাদি যাবতীয় কাজ শেষ হওয়ার পর কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিবেশগত প্রভাব নিরূপণ বা এনভায়রনমেন্টাল ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট(ইআইএ) করা ও তার জন্য জনসাধারণের কাছে মতামত চাওয়া হয়! এই তামাশার অবশ্যম্ভাবী ফলাফল যা হবার তাই হয়েছে। অর্থাৎ, অনেক অস্বস্তিকর প্রশ্নগুলিকে হয় সম্পূর্ণ এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে নয়তো বিভ্রান্তিকর উত্তর দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ আজ পথে নেমেছেন। জাতীয় কমিটি (NCBD) র নেতৃত্বে ঢাকা থেকে সুন্দরবন এক বিশাল লং মার্চে যোগ দিতে চলেছেন ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ। এই মিছিল মনে করিয়ে দিচ্ছে ফুলবাড়ির কথা। সেদিনের সেই লং মার্চ আটকে দিয়েছিল ফুলবাড়ি প্রকল্পকে। এই মিছিল সেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি করতে পারবে কিনা ইতিহাস তার জবাব দেবে। ৫ লাখ মানুষের রুটি রুজি, ১০ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে নেড়া বনভূমি, ৬৩,৬৩৮ টন ধান, ৫৭৮৭ মেট্রিক টন মাছ এবং নগদ বার্ষিক ৫০০০ কোটি টাকার সম্পদের বিনিময়ে পাওয়া যাবে বিদ্যুৎ। এদিকে এপার বাংলাতেও গড়ে উঠছে প্রতিরোধ। এপার বাংলার উদ্যোগে ইন্টারনেটে একটি অনলাইন পিটিশন করা হয়েছে। সই সংগ্রহ করা হচ্ছে ইন্টারনেটের বাইরেও। অনলাইন ও সংগৃহীত সই সহ সম্পূর্ণ পিটিশনটি দিতে যাওয়া হয়েছিল NTPC র কলকাতা অফিসে ২৭শে সেপ্টেম্বর। সেখানে কী ঘটেছে তার বিস্তারিত খবর আমরা নিচে দিচ্ছি। বড় মিডিয়ার চুপ করে থাকার কারণে বেশিরভাগ মানুষই এই প্রকল্পের কথা জানেনই না। আশার কথা, এগিয়ে এসেছেন বিভিন্ন লিটল ম্যাগাজিন ও পত্র পত্রিকা। রামপালের খবর পৌঁছে যাচ্ছে দুই বাংলার ঘরে ঘরে। মানুষ এগিয়ে আসছেন, এর বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন। একটাই কথা- দুই দেশের সরকারকে সবাই বলতে চাইছেন 'বিদ্যুৎ উৎপাদনের বহু বিকল্প আছে, সুন্দরবণের কোনও বিকল্প নাই'।


NTPC কেন পিটিশন গ্রহণ করল না?

ইন্দ্রনীল সাহা

আমরা মোটামুটি ২৫ জন প্রিটোরিয়া স্ট্রীটের NTPC অফিসের সামনে জড়ো হই ২৭ সেপ্টেম্বর দুপুর আড়াইটে নাগাদ। জায়গাটা একটু নির্জন। থিয়েটার রোড, ক্যামাক স্ট্রীট অঞ্চলে একটু অভিজাত এলাকায়। স্বাভাবিকভাবেই একটার পর একটা বড় সুদৃশ্য গাড়ির যাতায়াত, কিন্তু বাস বা পথচারী প্রায় নেই বললেই চলে। এমনকি চায়ের দোকানও অনেকটা দূরে মোড়ের মাথায়। আমাদের সাথে ছিল ২৫টা প্ল্যাকার্ড। একটা ছবিতে ইআইএ রিপোর্ট ১১টা প্ল্যাকার্ডের আর লং মার্চের খবর, এবেলায় প্রকাশিত রিপোর্ট এইসব। কোনো প্ল্যাকার্ডেই কোনো সংগঠন বা ওই জাতীয় কিছুর উল্লেখ ছিল না। প্ল্যাকার্ডের ছবিগুলো একজন তুলেছে মেলে পেলেই শেয়ার করব। আমরা চটপট প্ল্যাকার্ডগুলো সাজিয়ে ফেলি NTPC র গেটের উল্টো দিকের ফুটে আর আশপাশের গেট ইত্যাদিতে। কোনো মাইক বা কিছু ছিল না, ছিল না কোনো শ্লোগান বা অযথা চিৎকার। গ্রুপের সবাই প্ল্যাকার্ডগুলো হাতে নিয়ে দেখছিল নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছিল এই সব। আমরা অপেক্ষা করছিলাম ১০৯ পাতা সই এর প্রিন্ট আউট নিয়ে পৌছানোর কথা দুজনের জন্য।
বেলা ৩.৩০ নাগাদ সই-এর প্রিন্ট আউট নিয়ে এলে আমাদের মধ্য থেকে ১০ জন মতো NTPCর অফিসে চার তলায় আস্তে আ্‌স্তে উঠে আসি। আমাদের লিড করছিলেন শান্তনুদা (শান্তনু চক্রবর্ত্তী) আর বঙ্কিমদা (বঙ্কিম দত্ত)। কাঁচের দরজা পেরিয়ে সিকিউরিটির কাছে গিয়ে আমরা জানালাম ডেপুটেশন দিতে এসেছি, কোনো পদস্থ অফিসারকে ডেকে দিতে। সিকিউরিটি বললেন DGM (HR) যিনি কলকাতা অফিসের হেড, নেই অতএব ডেপুটেশন নেওয়া যাবে না। আমরা বলএটা কী লাম ওনার অনুপস্থিতিতে যিনি ইন-চার্জ তাকে ডেকে দিতে। এর উত্তরে শুনলাম কেউই নাকি নেই! একটা কেন্দ্রীয় সরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজের দিনে এটা কি সম্ভব? এই কথাটা আমরা তুললাম। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন কর্মচারি আমাদের সাথে কথা বলতে শুরু করলেন – আমরা কে? কী চাই, ইত্যাদি। কথায় বুঝলাম এরা Personnel department এর লোক ভালোই খবর রাখে কেননা ওরা রামপাল বলছিল না, বলছিল খুলনা প্রজেক্ট এবং আরো এমন কিছু কথা যা মোটামুটি দুই বাংলার রামপাল সংক্রান্ত ঘটনার স্টাডি না থাকলে বলা যায় না। যাই হোক পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছিল এদের কোনো কথা শোনার মুড নেই।
শেষ পর্যন্ত আমরা ঠিক করলাম ডেপুটেশনটা কাউন্টারে জমা করে দেব। তাতে সবাই মানে NTPCর সবাই রাজি হল। আমরা বললাম একটা প্রাপ্তি স্বীকার দিন। এইখান থেকেই ঘটনা এক নতুন মোড় নেয়। শুরুটা হল প্রতীপকে দিয়ে। ও সিকিউরিটিকে বলেছিল “আরে ছাড়ো না নিয়ে নাও ঝামেলা হাঠাও”। এই কথাতে হঠাৎ ওখানকার একজন বলশালী স্টাফ খেপে যায়; প্রায় মারতে আসে, প্রতীপকে বলে বেরিয়ে যেতে এবং আক্রমনাত্মকভাবে চিৎকার জুড়ে দেয়। প্রতীপ ক্ষমা চায়, ওর কথা উইথড্র করে, কিন্তু কাকস্য পরিবেদনা। ওকে প্রায় ফুটবলে যেভাবে ডিফেন্ডাররা গায়ে হাত না দিয়েও চাপতে থাকে সেভাবে ঠেলে কাঁচের দরজার কাছে নিয়ে যান তিনি। এইসবের মধ্যে একটু হট্টগোল শুরু হয়ে যায়, দু-একটা চিৎকার চ্যাচ্যামেচি হয়। অবস্থা যেদিকে গড়াচ্ছে সেটা ভালো ঠেকছিল না। আমি আমার মোবাইলের ক্যামেরা অন করার চেষ্টা করি আর বলার চেষ্টা করি “আপনি যা বলছেন অন রেকর্ড বলুন।” কিন্তু আমি আমার কথা শেষ করার আগেই একজন বেশ শক্তিশালী কর্মচারী আমার উপরে, বাস্তবত, হাতে পায়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। আমার মোবাইল কেড়ে নিয়ে ফেলে দেবার চেষ্টা করে ও আমাকে শারীরীকভাবে আদর করবার নানা চেষ্টা করতে থাকে। বাকিদের কাছে ঘটনাটা এতটাই অপ্রত্যাশিত যে কেউ কিছু বুঝে উঠতে পারছিল না এমনকি সিনিয়ররাও কেমন হতভম্ব হয়ে যান। আমাকে জোর করে ধাক্কা দিয়ে বার করে দেওয়া হয়। আমরা সবাই গেটের বাইরে বেরিয়ে আসি। মেসেজটা পরিষ্কার – আমাদের কথা শুনবেও না আর ডেপুটেশনও নেবেনা। মিনিট দশেক অপেক্ষা করার পর আমরা বেরিয়ে যাই। ঠিক হয় সোমবার এটা কুরিয়ার করে দেওয়া হবে।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দুটো কাজ তৎক্ষনাৎ করা যেত – ১. মিডিয়াতে গলা ফাটানো যেত আর ২. পুলিশে কমপ্লেন করা যেত। দুটোর কোনোটাই করিনি তার কারণগুলো এইরকম- ১. NTPCর কর্মচারী বা তাদের কোনো ইউনিয়ন আমাদের শত্রু নয়। এসব করলে ভুল বোঝাবুঝি আরো বাড়ত। ২. আমাদের কোনো ছাতা নেই, কোনো সংগঠন নেই এমনকি সবাই সবাইকে ভালো মতো চিনিও না। NTPCর সাথে লড়াই মুখের কথা না। আমরা প্রস্তুত ছিলাম না বা এখনো নেই। ৩. এই ঘটনাটাকে বড় ইস্যু করলে রামপাল যেটা আরো অনেক অনেক বড় বিপর্যয়, সেটা পিছনে চলে যাবার একটা সম্ভাবনা থেকে যায়। দীর্ঘদিনের চেষ্টায় আস্তে আস্তে রামপাল নিয়ে মানুষ কথা বলতে শুরু করেছে সেটা হয়তো ধাক্কা খেত। এখানে এমন মানুষ আছেন যারা এই ঘটনার সাক্ষী। ভাবছিলাম, শহর কলকাতার ইংরাজি বলা ভদ্রলোকের সাথে যদি NTPC এইভাবে কথাবার্তা বলেন তাহলে সুন্দরবনের মানুষগুলির সাথে তারা কী করেন? জানতে ইচ্ছা রইল আর রামপাল নিয়ে লড়াই যেটা হয়তো এই ঘটনাটা না ঘটলে আর বেশি এগোতাম না সেটা আমি জারি রাখব।

Friday 27 September 2013

সুপ্রিম কোর্ট ঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে


অবশেষে সুপ্রিম কোর্ট দেশের মানুষের দীর্ঘদিনের ইচ্ছাকে সম্মান জানিয়েছে। কোর্ট জানিয়েছে, এবার থেকে ইভিএম মেশিন-এ 'না' শীর্ষক একটি বোতাম থাকবে যেখানে press করে মানুষ জানাতে পারবেন যে তিনি কোনও দলকে সমর্থন করছেন না। অর্থ ও পেশিশক্তি যেভাবে আমাদের নির্বাচনকে নিয়ন্ত্রণ করে, সেই পরিপ্রেক্ষিতে এই রায় যুগান্তকারী। এতদিন নির্বাচনের নাম করে সাধারণ মানুষকে বাধ্য করা হত কোনও না কোনও রাজনৈতিক দলের পক্ষ নিতে - এই রায় রাজনৈতিক দলগুলির সেই একাধিপত্য ভেঙ্গে দেবে। এখন দেখার এই রায়কে কতদিনে ও কীভাবে নির্বাচন কমিশন প্রয়োগে নিয়ে যায় ।


Monday 23 September 2013

Little Magazine Mela

লিটল ম্যাগাজিন মেলা

বর্ষার জন্য ২ মাস বন্ধ ছিল.. আবার শুরু হচ্ছে লিটল ম্যাগাজিন মেলা - প্রতি মাসের শেষ শনিবার।
এবার ২৮ সেপ্টেম্বর - একাডেমী অফ ফাইন আর্টস (কলকাতা) চত্বরে। বিকেল ৪-৩০ থেকে ৭ টা অবধি।
সমস্ত লিটল ম্যাগাজিন ও পাঠকদের এই মেলায় অংশ নিতে অনুরোধ করা হচ্ছে। আবার সেই হইচই, বই-টই, বিক্রিবাটা, কথাবার্তা, গান, আড্ডা।
আয়োজক: লিটল ম্যাগাজিন সমন্বয় মঞ্চ

Friday 20 September 2013

What We preach in the Name of Economics?


Its a brilliant piece published in EPW (Sep 21, 2013)!
Long ago we bid good-bye to value and labour from the discourse of 'mainstream' economics. Now its all 'market'. What we preach today is not economics at all- but some common sense slices from the perspective of corporate ideology.
http://www.epw.in/editorials/economics-demystifies-economics.html?ip_login_no_cache=9d523b365ba49230ba3708194113f6eb
 
 
 

Thursday 19 September 2013

Whats happening in the Schools?

 
স্কুল প্রাঙ্গণ  ও ছাত্র-ছাত্রীরা
সঞ্জয় পাঠক
যে বিষয়টিকে সুকৌশলে চেপে দেওয়া হল-
গত ১২ সেপ্টেম্বর দমদমের ক্রাইস্ট চার্চ গার্লস হাইস্কুলের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী ঐন্দ্রিলার মর্মান্তিক মৃত্যুর প্রক্ষিতে ঐ স্কুলের প্রায় সব অভিভাবক ও ছাত্রীরা স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তাঁদের দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছিলেন। কিছু অভিভাবক তাঁদের অনিয়ন্ত্রিত ক্ষোভে ঐ স্কুলের বেশ কিছু জিনিষপত্র ভাঙচুর করেন। বৈদ্যুতিন মাধ্যমে দেখা গেছে, অধ্যক্ষা ক্ষমা চাইলেও, অভিভাবক ও ছাত্রীরা ছিলেন অনড়। তাঁদের দাবী ছিল, অধ্যক্ষাকে পদত্যাগ করতে হবে এবং গ্রেপ্তার করতে হবে। ।এমন কি ক্ষোভে কেউ কেউ অধ্যক্ষাকে জুতোও দেখিয়েছেন। এরপর অধ্যক্ষাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে ও তিনদিন পর তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়। স্কুল ভাঙচুরের অপরাধে ইতিমধ্যে ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরপর ওয়েস্ট বেঙ্গল এসোসিয়েশন অফ ক্রিশ্চিয়ান স্কুলের পক্ষে আর্চবিশপ ঘোষণা করেন, পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত ক্রিশ্চিয়ান স্কুল, কলেজ এবং সমস্ত আইসিএসই স্কুল (প্রায় ১৫০০ স্কুল প্রতিষ্ঠান) এই ভাঙচুর ও পুলিশি নিষ্কৃয়তার প্রতিবাদে আগামী ১৯শে সেপ্টেম্বর বন্ধ থাকবে – তাঁরা ঐ দিন কালা দিবস পালন করবেন। এই পর্যন্ত খবরটি প্রায় সমস্ত মানুষই ইতিমধ্যে বৈদ্যুতিন ও সংবাদমাধ্যমে জেনেছেন।
কিন্তু যে বিষয়টি এই ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে সামনে আসতে পারত, তাকে অত্যন্ত সুকৌশলে এড়িয়ে যাওয়া হল। বিষয়টি কী ? তা হল, এই বেসরকারী স্কুলগুলির যথেচ্চাচার। স্কুলের পরিকাঠামো থেকে শুরু করে, শিক্ষকদের বেতন কাঠামো, ছাত্র/ছাত্রীদের প্রদেয় বিপুল বেতন সহ আরোপিত শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে এক তুঘলকি ব্যবস্থা যা দেশের প্রতিষ্ঠিত আইনকে মর্যাদা তো দেয়ইনা, বিপরীতে এদের তৈরী আইনকে মান্যতা দেওয়ার বাতাবরণ তৈরী করেছে দীর্ঘ সময় ধরে। এই অব্যবস্থার বিরুদ্ধে না সরকার পক্ষ, না স্কুল কর্তৃপক্ষ টু শব্দটি করেনি। বিপরীতে ভাঙচুরের ঘটনাটিকে প্রাধান্য দিয়ে, প্রচার মাধ্যমে চাউড় করিয়ে দেওয়া হল অমোঘ এক বার্তা – ‘ভাঙচুরকে কোন ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না, একে শক্ত হাতে মোকাবিলা করা হবে।’ অথচ অভিভাবক ও ছাত্রীরা তীব্র ক্ষোভে কেন ফুঁসে উঠলেন, কেন বিক্ষোভ দেখালেন, তার মূলটি কোথায় প্রোথিত – এই গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক, অর্থনৈতিক প্রশ্নটিকে সুচতুর কৌশলে আপাতত ঠান্ডাঘরে পাঠিয়ে দেওয়া হল।
ঘটনার দিন বৈদ্যুতিন ও সংবাদমাধ্যমের সূত্রে ঐ স্কুলের কয়েকজন অভিভাবক ও ছাত্রীদের স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভের বহি:প্রকাশ ঘটেছিল। তা ছিল, কর্তৃপক্ষের দুর্ব্যবহার ও যে কোনও অজুহাতে অভিভাবকদের কাছ থেকে টাকা-পয়সা আদায় করা নিয়ে। আগেই বলেছি, ‘অভিভাবক ও ছাত্রীরা স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তাঁদের দীর্ঘদিনের
পুঞ্জিভূত ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছিলেন’। হ্যাঁ, ঠিক এটাই এখানে ঘটেছিল বলেই মনে হয়। ঐন্দ্রিলার মর্মান্তিক মৃত্যু একটি উপলক্ষ মাত্র, যা অনুঘটক হিসেবে কাজ ক’রে, দীর্ঘদিনের জমে থাকা ক্ষোভ ও ঘৃণাকে উস্কে দিয়ে প্রায় প্রলয়ের আকার ধারণ করেছিল। স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এটি ছিল একটি স্বত:স্ফুর্ত আন্দোলন। অভিভাবক ও ছাত্রীদের কোন সংগঠন না থাকার কারণে তাৎক্ষণিক বিচারে যে যেমন ভেবেছেন, তেমনই ভূমিকা রেখেছিলেন।
বিগত প্রায় ১৫ বছর ধরে সরকারী পে-কমিশন লাগু করার প্রেক্ষিতে এইসব স্কুলগুলি গোটা দেশ জুড়ে স্কুল-ফি বাড়িয়েছে ৪০০ থেকে ৫০০ শতাংশ। অথচ নিয়ম অনুযায়ী, পে-কমিশন লাগু করার প্রেক্ষিতে সর্ব্বোচ্চ ৫০ শতাংশ স্কুল-ফি একটি মাত্র বছরে বাড়ান যেতে পারে। এই আইনকে কলা দেখিয়ে প্রায় সব স্কুলই এই সুযোগে প্রতি বছর উচ্চ হারে স্কুল-ফি বাড়িয়ে অভিভাবকদের ঘারে চাপ বাড়াচ্ছে ক্রমাগত।
বিভিন্ন অজুহাতে অভিভাবকদের পকেট কাটা এই স্কুলগুলি একটা নিয়মে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। যেমন, এডমিশন ফি, সিকিউরিটি ডিপোসিট, বিল্ডিং ফান্ড, স্কুল এসেনশিয়ালস, এক্টিভিটি এন্ড হবি ফিস, মেনটেনেন্স চার্জ, অডিও-ভিসুয়াল ফিস, কম্পিউটার ল্যাব ফিস, সায়েন্স ল্যাব ফিস, স্কুল ফান্ড, এন্যুয়াল ডে চার্জ, ম্যাগাজিন ফিস, এন্যুয়াল কনসার্ট ফিস, স্পোর্টস ফিস, চিলড্রেন ডে সেলিব্রেশন ফিস, টিচার্স ডে সেলিব্রেশন ফিস, পিকনিক, ট্রান্সপোর্ট ফিস ইত্যাদির নামে লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতিবছর এইসব নামী-বেনামী বদ স্কুলগুলি অভিবাবকদের কাছ থেকে আঁখ-মাড়াই কলের মত নিংড়ে নিচ্ছে । আমি জানি কোন কোন স্কুল নার্সারী লেভেলে নিচ্ছে ১৫ লাখ টাকা। শুধু কি তাই, এরা অভিবাবকদের কাছে বাধ্যতামূলক করেছে বই, খাতা, খাতা-বইয়ের মলাট, ইউনিফর্ম(গরম ও শীতের ভিন্ন), সব ধরণের স্টেশনারি স্কুল থেকেই কিনতে হবে যা বাজার থেকে অন্তত তিনগুণ বেশী দাম ।স্কুলের বার্ষিক অনুষ্ঠান হবে, তারজন্য ঝাঁ-চকচকে পোষাক লাগবে, কে দেবে ? কেন বলির পাঁঠা অভিভাবক। স্পোর্টসে কালার ফুল টি সার্ট পড়তে হবে, কে দেবে? কেন ছাত্র/ছাত্রীর বাপ। এসবই ঘটছে সরকারের নাকের ডগায়।
আমার এক ছাত্র এক সময় আমাকে বলেছিল, “স্যার, একটা স্কুল চালানো মানে সমান্তরাল ভাবে একই সাথে ৫-৬টি ব্যবসা চালানো। যেমন, বাস থাকলে ট্রান্সপোর্ট বিসনেস, ক্যান্টিন থাকলে রেস্টুরেন্ট বিসনেস, বই-খাতার ব্যবসা, ব্যাগের ব্যবসা, ম্যাগাজিন ব্যবসা, বছরের প্রথমে ঢপ্ দিয়ে তোলাবাজীর ব্যবসা – আরো কত কি!” ওর আরো একটি বিষয়ে ক্ষোভ ছিল তাহল, প্রতিদিন স্কুল শুরুর সময়ে খ্রীষ্টিয় ধর্মীয় সঙ্গীত প্রার্থনা করতে সবাইকে বাধ্য করা এবং বছরে কয়েকবার খ্রীষ্টিয় ধর্মগুরু পরিচালিত ‘মাস’-এ আবশ্যক অংশগ্রহণের যৌক্তিকতা নিয়ে। বেসরকারীকরণ, উদারীকরণ ও বিশ্বায়ণের পুঁজিবাদী নীতির ফলে সব কিছুর মত শিক্ষাকেও পণ্য করা হয়েছে। আর ক্রিশ্চিয়ান/ বেসরকারী স্কুলের মালিকরা বেপরোয়া ভাবে লুট করছে অসংগঠিত জনতার রক্ত জল করা সম্পদ।
বিভিন্ন ক্রিশ্চিয়ান/ বেসরকারী স্কুলে শিক্ষকতার সূত্রে স্কুল কর্তৃপক্ষকে কাছ থেকে প্রত্যক্ষ করার সুযোগ পেয়েছিলাম। এদের ঔদ্ধত্য, দম্ভ ও সবাইকে দমিয়ে রাখার প্রয়াসকে ঘৃণার চোখে দেখেছি। কখনো এদেরকে হিটলারের ছানা বলে মনে হয়েছিল।সরকারী অনুদান বহু স্কুলই পেয়ে থাকে, তা সত্বেও এদের খাই মেটেনা। বহু স্কুলে শিক্ষকদের আইন অনুযায়ী বেতন দেওয়া হয়না। কন্ট্রাক্ট প্রথায় শিক্ষক নিয়োগ করা হচ্ছে। চাকরী চলে যাবার ভয়ে বেশীরভাগ শিক্ষকরা সঙ্কুচিত। প্রায় সবাই প্রাইভেট টিউশন পড়ান। প্রাইভেট টিউশন করতে কিছু শিক্ষকদের লালায়িত হতে দেখেছি। এসব সত্বেও তাঁদের ভিতরে ক্ষোভ দানা বাঁধছে, লক্ষ করা যায়। এই সামগ্রিক অব্যবস্থার বিরুদ্ধে ছাত্র/ছাত্রী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের জোট বেঁধে লড়াই গড়ে তোলা ছাড়া অন্য কোন রাস্তা খোলা আছে বলে মনে হয়না। কিভাবে সংগঠিত হবেন, তা ছাত্র/ছাত্রী, অভিভাবক ও শিক্ষকরাই ঠিক করবেন। এদিকে, এই বে-নিয়ম টিঁকিয়ে রাখার তাগিদে ও ক্ষোভের আগুনে জল ঢেলে দিতে এরা যে কতটা পারঙ্গম এবং কি ভিষণভাবে এরা সংগঠিত, তা তাদের ধর্মঘট ডাকার মধ্যদিয়ে প্রমানিত। এই অচলায়তন ভাঙ্গার তাগিদ ও পুঁজির হিংস্র আক্রমণের বিপরীতে সার্বজনীন শিক্ষার নির্মাণে যাঁরা ব্রতী হবেন, সঙ্গত কারণেই তাঁদের দিকে দৃষ্টিপথ খোলা রাখব।
 

Friday 13 September 2013

'একক মাত্রা'র কথা



দীর্ঘ ১৪  বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রকাশ পেয়ে চলেছে 'একক মাত্রা' । মানুষ যে ভাবে বেঁচে থাকে, তার রোজকার যাপন, ভাবনা-চিন্তা, তার প্রতিদিনের প্রতিটি অনুষঙ্গ এক জীবন গড়নের আভাস দেয়। জীবনের এই প্রতিটি মোচড়কে ঘিরেই 'একক মাত্রা'র আবর্ত। নানা বিষয় এখানে ভিড় করে আসে, নানাজনে  নানাভাবে সমাজ ও চারপাশ বিশ্লেষণে মনোনিবেশ করে। এখানে তাই কে লিখছেন সেটা বড় কথা নয়, কী লিখছেন সেটাই গুরুত্ব পায়।

বাংলা ভাষায় শুধুমাত্র ভালো গদ্য ও প্রবন্ধের কাগজের বড়ই আকাল।  আপনাদের সকলের অংশগ্রহণে 'একক মাত্রা' হয়ে উঠুক বাংলা ভাষায়  চিন্তা ও সম্মিলনের এক সমৃদ্ধ আবাস।

এবার আমরা 'ওয়েব দুনিয়া' নিয়ে সংখ্যা করেছি।  আগামী সংখ্যার প্রচ্ছদ বিষয় 'বাজার অর্থনীতির তাল বেতাল'। বোঝার চেষ্টা করব অর্থনীতির দুনিয়ায় পৃথিবী জুড়ে ও আমাদের দেশে কীসের এত হই-হট্টগোল ।

'ওয়েব দুনিয়া' নিয়ে আপনাদের মতামতের আশায় রইলাম।

আমাদের ইমেল- ekakmatra@yahoo.com
আমাদের ফেসবুক লিঙ্ক- https://www.facebook.com/ekak.matra

যোগাযোগ রাখুন কথা বলুন।

১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৩।

Thursday 12 September 2013

একক মাত্রা'র কিছু প্রচ্ছদ ছবি

একক মাত্রা'র প্রচ্ছদ বিষয় সম্পর্কে আলাদা করে কথা বলে




এক ঝলকে 'একক মাত্রা'

আমাদের অনলাইন জানুয়ারি 2013 সংখ্যা দেখুন:
http://ekakmatra.editionnext.com/


আমাদের সেপ্টেম্বর 2013 সংখ্যার কভার ছবি:
গদ্য ও প্রবন্ধের আধুনিক ক্যানভাস
কলকাতা ও শহরতলির প্রায় সমস্ত স্টলে পাওয়া যাচ্ছে