তবুও, জাগুন জাগুন
কাছেই আগুন
মালবিকা মিত্র
আরএসএস, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ইত্যাদি সংগঠনের প্রশিক্ষণ প্রাপ্তদের একটা বড় সমস্যা হল, পবন পুত্রের ল্যাজে আগুন লাগানো, উস্কানি, জ্বালানি সংগ্রহ এসবই শেখানো হয়। কিন্তু আগুন নেভানোর কৌশল শেখানো হয় না। ফলে, তারা দাঙ্গা লাগাতে পারে, কিন্তু কতদিন চলবে, কতজন মরবে, কোথায় কোথায় আগুন লাগবে জানা নেই। শুধু জানা থাকে, মরবে দুই পক্ষের গরিব মানুষ, জ্বলবে বস্তি চালা ঘর।
গরম গরম বক্তৃতা দিলাম বেশ। কিন্তু প্রশ্ন হল, এমন গরম করলাম যে আমি নিজেই ধরে রাখতে পারলাম না। একটু মনে করাই ২০১৯ সালে তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন। দিলীপ ঘোষ, কৈলাশ, অরবিন্দ মেনন খুব গরম করলেন। অপর পক্ষ বেশি চার্জড হল, শুধু তিনটি আসনেই নয়, বৃদ্ধ জয়প্রকাশ মজুমদার নিজেও হাতে হাতে ফল পেলেন। এটাই হল নিয়ন্ত্রণহীন গরম করা।
এবারের নির্বাচনে যে সমস্ত ভাষা ব্যবহার করেছে কেন্দ্রীয় নেতা, মন্ত্রী থেকে শুরু করে রাজ্যের চুনোপুঁটি নেতা, সেটা সরাসরি প্ররোচনা। যার পরিণতি নির্বাচন পরবর্তী হিংসা। সঙ্গে বাড়তি সংযোজন সাম্প্রদায়িক মাত্রা। ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার উস্কানি। হাজার চেষ্টা করেও যে মেরুকরণ করা গেল না, একমাত্র একটা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা রাজ্য জুড়ে ছড়াতে পারলে সংখ্যাগুরুর মেরুকরণ সম্ভব। সেই কারণেই প্রধান বিরোধী দলের এখন পাখির চোখ যে কোনও অশান্তি মৃত্যু বঞ্চনাকে সাম্প্রদায়িক রঙে রাঙিয়ে তোলা। বিজেপির পরাজয় তাই সাময়িক স্বস্তি, কিন্তু আগামী দিনের জন্য অস্বস্তিকর। তিন থেকে সাতাত্তর বিধায়কে উল্লম্ফন ও প্রধান বিরোধী দল তারা। আর গণতন্ত্রে বিরোধী দল হল ভবিষ্যতের বিকল্প সরকার। অতএব সাধু সাবধান!
এই প্রসঙ্গে আশার কথা শোনাই এবার। অ্যারিস্টটল মনে করেন, সঙ্গীতের সুর উচ্চস্বরগ্রামে দীর্ঘক্ষণ স্থায়ী হয় না। আবার গভীর খাদেও দীর্ঘ সময় স্থায়ী হয় না। অধিকাংশ সময় সঙ্গীত মধ্যস্বর বজায় রাখে। ফুটবল খেলায় যেমন কয়েকটি অসাধারণ আক্রমণ প্রতিপক্ষের শিবিরে আছড়ে পড়ে, কখনও নিজের রক্ষণভাগে বল দেওয়া নেওয়া চলে। কিন্তু খেলার অধিকাংশ সময় খেলা চলে মাঝ মাঠে। মনঝিম পন্থা আদর্শ অনুসরণ যোগ্য। অ্যারিস্টটল রাজনীতির ক্ষেত্রে এই সূত্র প্রয়োগ করতে পরামর্শ দেন। কোনও চরমপন্থা রাজনীতিতে স্থায়ী হয় না। চরমপন্থী শাসক সমাজবাদ, লাল পতাকা, গণতন্ত্র ইত্যাদি নানা ধরনের মুখোশের আড়ালে আশ্রয় নেয়। তথাপি বিশ্বে কোনও একনায়কতন্ত্রী ফ্যাসিবাদী শাসন দীর্ঘস্থায়ী হয়নি।
সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সাময়িক ঝড় তোলে, মেরুকরণ ঘটায়। কিন্তু ঝড় স্থায়ী হয় না। দ্রুত রাম মন্দির স্থাপনের কর্মযজ্ঞের মধ্যে অযোধ্যা বিধানসভা কেন্দ্রের রুদৌলি তহশিলের রাজনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে কোন যাদুতে পঞ্চায়েত প্রধান হলেন ইসলামী ধর্মগুরু হাফিজ আজিমউদ্দিন! তাই, এ রাজ্যকে মিনি পাকিস্তান, মুখ্যমন্ত্রীকে মমতাজ বেগম, আর তার নির্বাচনী এজেন্টকে দাউদ ইব্রাহিম বলার পরেও সম্পূর্ণ মেরুকরণ তো সম্ভব হল না, এটুকুই আশাব্যঞ্জক।
এখানে হিন্দুত্ববাদীদের সঙ্গে প্রশাসনের মদত আছে ।তাই এতটা বেপরোয়া।এদের আটকাতে রাজ্য প্রশাসন কে সক্রিয় থাকতে হবে
ReplyDeleteচাটি মারলে লাথিও খেতে হতে পারে । এটা দাঙ্গাবাজরা ভুলে গিয়ে খুব ভুল করেছে । নো ভোট টু বিজেপি তো হলো, এবার বিজেপিকে কবর দেওয়া হোক । সত্যিকারের কবর দেওয়া নয়,-- রাজনৈতিকভাবে কবর দেওয়া হোক । 😉🤘🏼🦥
ReplyDeleteBJP is to be fought politically and ideologically. The political bankruptcy of LEFT has paved the way for the growth of saffron power. People measure all parliamentary parties, left or right, on the same wave length. The principal aim of all parliamentary parties is how to loot the exchequer with efficiency and populism.
ReplyDeleteCannot agree more!
ReplyDelete