Thursday, 29 January 2015

লিটল ম্যাগাজিনের ওপর আক্রমণ

রাতের চেয়েও অন্ধকার!

সুপ্রিয় সাহা

গত ২৫ শে জানুয়ারি ২০১৫ কে আমরা বাংলা লিটল ম্যাগাজিনের পক্ষে এক “কালো দিন” হিসেবে চিহ্নিত করতেই পারি। নদিয়ার দেবগ্রামে ২২-২৮ জানুয়ারি চলছে দেবগ্রাম সাংস্কৃতিক মেলা এবং এই মেলাতেই আত্মপ্রকাশ করল একটি ছোট পত্রিকা “সাদামাটা”। সবে কলেজে ভর্তি হয়েছে কি হয়নি সব ১৮/১৯ বছরের ছেলেমেয়েদের একটি গ্রুপ- যেমন হয় আর কি! “অলিন্দ” ও “তালপাতার সেপাই” শুরু হওয়ার অনেকদিন পর দেবগ্রাম থেকে প্রকাশিত হল আরো একটি ছোট পত্রিকা। ২২ ও ২৩ তারিখ তারা মেলার স্টল থেকে বেশ ভালোই বিক্রিবাটা শুরু করে কিন্তু গোল বাঁধে ২৪ তারিখ সন্ধেয়। হঠাৎ বেশ কিছু মানুষ পত্রিকার স্টলে প্রায় আক্রমণের ভঙ্গিতে এসে জানায় যে পত্রিকার সম্পাদকীয় তে তাদের ধর্ম ও ধর্মীয় লোকাচার কে ইচ্ছাকৃত ভাবে হেয় ও অপমান করা হয়েছে। এক্ষুনি তারা সমস্ত ম্যাগাজিন জ্বালিয়ে দেবে, ভেঙ্গে দেবে স্টল, দরকার হলে ছেলেমেয়েগুলোকেও ছাড়বে না। পত্রিকার সদস্যরা এমনকি আমরাও বেশ ঘাবড়ীয়ে যাই কারন তাদের কথা অনুয়ায়ী সেরকম কিছুই আমরা খুঁজে পাছছিলাম না। আমি সম্পাদকীয়র সেই অংশ এখানে তুলে দিচ্ছি যেখানে তাদের কথা অনুয়ায়ী তাদের ধর্মকে অপমান করা হয়েছে।
“...আমরা বিশ্বাস করি যে, বছরের দুটো দিন সাদা পাঞ্জাবী পাজামা পড়লেই সংস্কৃতিবান হওয়া যায় না। তার জন্য লাগে সাংস্কৃতিক মনোভাব। আমরা এও মনে করি যে, কিছু লিখতে গেলে তার জন্য পাঞ্জাবী পড়ে একটা সাইড ব্যাগ ঘাড়ে ঝোলাতে হয় না বা বড় বড় দাড়ি গোঁফ-ও রাখতে হয় না। তাই এই সময় দাঁড়িয়ে জিন্স ও টিশার্ট পড়ে কিছু লেখায় হল আমাদের “সাদামাটা”...”
এর মধ্যে ক্রমেই উত্তেজনা বেড়ছে। কোন কথাই শুনতে ওরা রাজী নয়। শেষমেশ মেলা কমিটি ওদের স্টল উঠিয়ে দেয় এবং ছেলেমেয়েগুলো রাতের অন্ধকারে মেলা ছেড়ে প্রাণ নিয়ে পালাতে বাধ্য হয়।
ঘটনাটি এখানেই মেটে না। ক্রমাগত বাড়তে থাকে। পরের দিন ঐ ধর্মেরই কিছু শিক্ষিত জন তাদের বোঝাতে গিয়েও বিফল হয়ে ফেরে। এর পর অনেকেই এখানে অন্য অনেক কিছুর গন্ধ পেলেও, সেটা আমাদের আলোচনার বিষয় নয়।
এবার সংক্ষেপে বলি। মূলত তাদের দাবী হয় সম্পাদককে স্টেজে উঠে ক্ষমা চাইতে হবে। আমরা হতবাক! ধীরে ধীরে ঘটনা গড়ায় পুলিশের কাছে। এবং অনেক ঝামেলার পর সম্পাদককে পুলিশ ফাঁড়িতে উন্মত্ত কিছু লোকের সামনে ক্ষমা চাইতে হয়। এরপরও যে ব্যাপারটি পুরোপুরি মিটে গেছে তা বলা না গেলেও আমি সে আলোচনায় আর যেতে চাই না।
আমরা গোটা ঘটনার বেশিরভাগ সময়ই উপস্থিত ছিলাম “সাদামাটা”র পাশে। এবং সম্পাদককে যখন ক্ষমা চাইতে হচ্ছে কোন ভুল না করা সত্তেও, তখন সেখানে দাঁড়িয়ে একটি লিটল ম্যাগের একজন সম্পাদক হিসেবে আমার মাটিতে মিশে যাওয়া ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না। সে রাতে আমি ভাল করে ঘুমোতে পারিনি আর এখনো অবধি ভিতরে এক অস্বস্তি কাজ করছে, ভুলতে পারছি না আমি, যার জন্য অনেকে বারণ করা সত্ত্বেও এই লেখাটি লিখেছি। জানিনা, ঠিক করছি না ভুল তবে কিছু তো একটা করছি এটাই আমার স্বান্তনা। একটা নতুন ম্যাগাজিন, কয়েকটা উজ্জ্বল ছেলে-মেয়ের প্রথম লেখালেখি শুরু করার পথটাকে যেভাবে আক্রমণ করে ভেঙ্গে দেওয়ার চেষ্টা করা হল, সেখানে আমরা তাদের জন্য কিছুই করতে পারলাম না। আর এখানেই বারবার অনুভব করছিলাম লিটল ম্যাগাজিনগুলোর শহরকেন্দ্রিকতা ও অ-সংগঠিত হয়ে থাকার প্রভাব।

Wednesday, 28 January 2015

In Search of a New Abode



New Culture and New Economics

Partha Sengupta

I was reading the anthology Ekti Bhabna Sankalan: Tomake Chai produced to commemorate twenty years of 'Tomake Chai' sung by Suman Chatterjee/Kabir Suman. The anthology is edited by Sumit Das and Anirban Sadhu published by Altamira, second edition, January 2013.

In the beginning I would like to mention that, as most of the authors in that collection have pointed out, there is pre-tomake chai and post-tomake chai era in Bangla music, I differ to that observation. There are many genre of Bangla music produced industrially or otherwise. It is completely impossible to club all of these into to one meta-classification. Industrially produced popular Bangla music, in the form of Bapi Lahiri to Paglu Dance has continued as it is. Nothing has changed on that front. The middle class bhodrolok music commonly known as Adhunik music was on decline when Suman appeared on the horizon. If we unpack the event of decline, in the light of emerging technology of recording, post-production, distribution and musical instrument and its relevant industries in neo-liberalisation conditions, we might observe rather a shift than decline. Many relatively young singers were making albums of ’Adhunik’ popular remakes and remixes. This genre is discussed in detail in that anthology. Suman didn't choose the path laid by Bapi Lahiri or ‘Adhunik’ remixes. These two forms of music were doing quite well in terms of market, especially the first one. But he chose to create his own genre; though singers like Gautam Chatterjee, Pratul Mukherjee, Anushree-Bipul were already there and were doing great work. But for some reason they couldn't became part of middle class imagination. Were they too radical or too much politically stimulating for larger middle class to connect with? Presently, I am not looking into that detail.

But I would like to mention two very important aspects which I find most significant in new cultural practice that has larger social and economic implications.

Opening the flood gate of creativity
Bengali middle class always had habit of writing poems or occasional stories. It is said that every Bengali young boy/girl must have written a line or two in his or her adolescence. But hardly anyone had thought of writing and composing music. Suman had done it. He inspired the whole generation of young boys and girls to write and compose their own music. Later, Bengali Bands further contributed to this inspiration. People started believing that they could also create music themselves. What was significant in that is, like little magazine practices which is completely based on personal or collective satisfaction without any perception and possibility of commercial benefits, Suman  and bangla bands invited the same culture into music. Music is now composed and enjoyed by many as individual or collective with very little or remote possibility of financial benefits. Often collectives fall apart due to personal gains or ego, but that doesn't mean capital relation is better than collective, it actually means individuals in the collective have to work on their personal ambition or/and ego. Post Suman and bands, the pleasure of creation of music itself has emerged as a big public culture in Bengal or may be urban Bengal. This is definitely a revolution and again offering a new model of creative and cultural practice beyond financial ambitions.

Deploying the peer to peer internet network to share new creations
Nowadays, many singers, musical groups share their music on internet which has huge number of listeners, not consumers. People who believe in that culture, they only listen to those music. This practice redefines the idea of quality. They don't need ‘state-of-the-art’ commercial studios or factory production to satisfy their listeners. For their listeners quality is somewhat else, it is not confined within the industrial quality control standards which mostly produce junks.
Though corporate burgers and pizzas go through rigorous quality standards, still people call it junk food! Have we ever asked that why food products produced in large scale are mostly junk foods laced with excess oil, salt, cheese or sugar? (Michael Moss, Salt, Sugar and Fat, How the Food Giants Hooked Us, Random House, New York) Why at every second day mobiles and other consumer goods come up with new fancy models? Because the companies cannot sustain on the basis of normal necessity, they need to lure the ‘customers’. If a company thinks that it would produce only 1000 items all through and survive in the market, it will not happen, the company has to reduce cost of production by increasing productivity in the form of extraction of surplus value by exploitation of workers, technological advancement and other legitimate/illegitimate cost cutting mechanisms, to survive the competition. That is why small enterprises wither away or are bought out by the big enterprises. We can imagine a control system to stop big enterprises to form, but in reality it doesn't happen or could ever happen. This phenomenon is built-in within the capitalist economy. Even local shopkeepers and street vendors deploy several malicious ways for an edge in the local market competition. Small enterprises running workshops at backyards are no less ruthless and repressive than 'big' companies. Ethical company is an oxymoron idea.

So more the companies produce, more it has to lure ‘customers’ to buy those surplus productions. Market through various strategies titillates basic instincts of human being and converts them into ‘customers’. People largely accept the commercial publicity stunts obediently and surrender to the temptations and fall in the trap of market economy. Capital also lures or forces non-consumer societies into ‘consumer base’ to expand its market. In reality they enhance greed against actual necessity. Freedom is destroyed through the rhetoric of ‘freedom of choice’. In a capitalist society, ‘freedom of choice’ actually means the livelihood reeling under the cycle of obsessions and consumptions. Technological advancements sought for the purpose of reduction of cost and luring is often projected as development. If examined, many technological research would collapse like avalanche. Secondly, inventions and innovations are also made for marketing purpose that very much destroys the humanity.
Norman Borlaug, the pioneer of Green Revolution was working in the war laboratory of American company Du Pont but Rockfeller Foundation hired him by offering a much bigger pay packet. American government, Ford Foundation and Rockfeller Foundation entrusted him with setting up a research centre named CIMMYT in Mexico for research in wheat and corn. Reference given to him was to develop such dwarf high yielding crop varieties which can consume maximum fertilizer without falling on the ground, with fertilizers helping in increasing yields. This seed variety was sent to Punjab in 1966. At that time it was called Mexican wheat. Similarly an institute, named International Rice Research Centre was set up in Manila. These were mainly funded by American government and its Foundations, for example IRRI got 74% of its fund from American govt. and its companies. Paddy was not a regular crop, was planted only in water logged areas but after high yielding varieties came in mid-seventies, wheat–paddy rotation became the crop pattern. Thus ‘green revolution’ landed in Punjab.
                                    S.S. Mahil, Social and Economic Cost of Green Revolution, Frontier, Internet Issue (http://www.frontierweekly.com/views/sep-14/26-9-14-Social%20and%20economic%20cost%20of%20Green%20Revolution.html)


Self-creativity, innovations, jugaar are the various creative routs regularly people take to create objects which suits perfectly to their necessity rather buying it from the market at an exorbitant cost.

New music practitioners don’t see their music as object of market rather as gift of love. They force us to think about the relevance of mass production against the subjective notion of quality. The cost of quality in terms of amount of required investment defines the subjective framework of quality. They further pose a challenge to all forms of management controlled mass productions done through alienated work force who are blackmailed to work inhumanly against very basic survival for the accumulation of someone else's wealth.

Thus, every time these music practitioners share their songs on internet they kick the market economy on its face. And that kick is purely intoxicating.

***
The question of quality, freedom, autonomy and humanity have reinvented software, film, drama, music and other forms of creative and interactive materials. Creativity emerging from conditions and situations found spaces in the new formats. Experimental films, tactical media, self-publishing etc. are new formats emerging out of this question of subjective quality and specificity.

There is a theatre collective in Kolkata, Kathajatak, who avoid proscenium and prefers to perform in small spaces. They do it not because they have shortage of resources, they do it because they want to avoid passive spectacle of proscenium and stardom. They give more importance to the narrative and its structure than the aura of performance. Kathajatak also prefer to facilitate rather participatory and interactive situation to blur the line between performer and the viewer and engage in discursive sessions which constantly redefines and re-frames the content of the performance and the subject itself. Let us not confuse this format of performances with Third Theater. This is a rare but not an isolated event; there is a long global history of collaborative performances.

Such people and groups represent a complete new model of cultural practice. Through their practice they have proposed a new cultural ecology almost devoid of direct intervention of market. I use the word 'almost' because spaces like ‘youtube’ or even many free blogs are commercial spaces, but the artists who are uploading their works, they are not necessarily financially benefited from this. Artists selling their musical works online are subverting the capitalist model of demand-supply chain and its paraphernalia as I discussed earlier. Social relation of dignity and mutual respect plays more important role in this case rather than making wealth for few. This practice works on the principle of simple commodity exchange where financial and economic activities are limited to survival necessity only through selling their own materials directly to the interested listeners and users.
Here I would also like to mention about a publication initiative named Dhyanbindu. It runs a small book shop in College Street, Kolkata. On its facebook page it emphasises on ‘Dhyanbindu doesn't produce at mass scale’, ‘Dhyanbindu doesn't have any page three’ etc... It sees itself as a location for deep research and introspection not just another commercial venture. Interestingly, it also declares that this space doesn't publicise itself as a counter-culture etc. to garner any sensationalism.

I am concerned about the situation when similar initiatives come face to face in competition. But that is not happening soon. I am sure people would find a humane way to subvert competition when situation would arrive. In these initiatives, inter-personal relation plays more important and primary role rather than wealth generating for a few. Is this a non-commercial/limited-commercial model function? Is it a utopia? How does it matter as long as the artists and other stakeholders enjoy? Let them negotiate between survival and buyout.
Presence of such creative practitioners is extremely important in a time when many people celebrate market economy as only ‘successful’ form of social existence. An economy completely based on violence (ruthless exploitation of workers, destruction of civilizations, ecology etc.) and allure (customerism, consumerism, wealth), destructing other models of non-transactional sharing and collective survival and existence. In that world, humanism means occasional industrial philanthropy for the ‘poor’ from the top or economics of philanthropy for the ‘poor’.

Survival of humanity cannot be controlled by vicious circle of competition, exploitation and industrial philanthropy. Globally many collaborative experiments are tried out. One such experiment is Fablab (http://www.fabfoundation.org/fab-labs/).
Economic theorists are working on non-hierarchical collaborative economic models. (Vasilis Kostakis, Michel Bauwens, Network Society and Future Scenarios for a Collaborative Economy, Palgrave Pivot, August 2014; Jeremy Rifkin, The Zero Marginal Cost Society: The Internet of Things, the Collaborative Commons, and the Eclipse of Capitalism, Palgrave Macmillan Trade, April, 2014) I am not saying that these models are perfectly working models, but then if we wait for a model to be fabricated in a workshop somewhere else and we very conveniently jump on it when time ripe, I don't think that opportunism is going to ever happen. We have to make that model work through our limited possible efforts. I don't know whether all pervasive social revolution would happen any time soon, as it is difficult to imagine that greed for power and wealth would recede simultaneously across the world and the population. But these collectives, selfless activities, refusals, alternative sharing and survival efforts that crawl within the repressive systems are the locations where humanists would find their home.
 
Link: http://www.pinterest.com/zakkahello/remember/

Tuesday, 27 January 2015

Tuesday, 20 January 2015

Misleading News!

About a So-called Success Story

Jadunath Mukhopadhaya

A carrot of promises are now dangling before the hopeful mankind: Cancer cure is not far away. On 6 January, Anand Bazar Patrika reported a 'success' story of four Bengali researchers, who claimed that very cheap cure of cancer is at our doorstep. Their paper recently published in the 'International Journal of Cancer' claimed that they have successfully arrested the growth of mice cancer by injecting Dopamine. But if you read between the lines of the reported success story, you will be astonished to know that Dopamine has not undergone any human trial yet. It will take not less than 5 years to know its effect on naturally evolved human cancer. Why so much hurry then to propagate Bengali re-searchers(!) so called success story?
Cancer researchers world over have tried to attack and abolish the blood vessel going to a cancer, but miserably failed repeatedly. Unable to attack the blood vessels of a cancer directly, they tried to attack some basic factors that help blood vessels to grow in a cancer. In medical parlance it is called Tumor Angiogenesis Factors (TAF). By suppressing TAF, it was said: we can abolish the supply line in a cancer, thus an eventual death of cancer due to starvation will be the net outcome. But cancer proved to be more tougher than the TAF-experiment.
The so called success story can be easily rejected as a mere trash, if you read between the lines of the above report itself. Dopamine, which they applied for inhibiting the growth of lab-grown, transplanted mice cancer will be a total failure when applied to inhibit or destroy naturally evolved human cancer. Human cancers are not lab-grown, it evolves from the tissues of its carriers, thus cancer is an integral and inseparable part of its carriers.
And what is Dopamine? It is a catecholamine synthesized by the adrenal gland and intermediate product in the synthesis of norepinephrine. It acts to increase the blood pressure, specially systolic blood pressure and acts as a neuro-transmitter in the nervous system. It is but natural then, if Dopamine is applied to a cancer patient who is otherwise at peace with cancer, serious side effects will make his life hell.

Monday, 19 January 2015

'একক মাত্রা' জানুয়ারি ২০১৫

জানুয়ারি ২০১৫ সংখ্যার প্রচ্ছদ ও সূচি 


Wednesday, 14 January 2015

বাংলা অকাদেমি ও লিটল ম্যাগাজিন

লিটল ম্যাগাজিন পাই কোথা?

অনিন্দ্য ভট্টাচার্য



১১ জানুয়ারি থেকে কলকাতার নন্দন চত্বরে শুরু হয়েছে বাংলা অকাদেমি আয়োজিত লিটল ম্যাগাজিন মেলা। ১৯৯৮ সাল থেকে এ মেলার সূত্রপাত। অবশ্যই এ ছিল বাংলা অকাদেমির এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। আজও এ মেলা চলেছে এবং এরজন্য তাদের সাধুবাদ প্রাপ্য। এমত প্রাঙ্গণ থেকেই তো পাওয়া যায় গবেষণা ঋদ্ধ চিন্তা, সৃজনশীল সাহিত্য ও অজানা আকর। এ পর্যন্ত ঠিকই আছে। একক ভাবেই লিটল ম্যাগাজিনের স্বকীয় আলোয় এ মেলা উজ্জ্বল ও ভাস্বর হয়ে ওঠে, প্রতি বছর।

কিন্তু আশ্চর্যের হলেও গোদা সত্যটা হল, এমন এক ঐতিহ্যপূর্ণ ও মনন সম্পদে ভরপুর লিটল ম্যাগাজিনের প্রতি এই একটি মাত্র বছরভর নিয়মতান্ত্রিক দায় পালন করা ছাড়া বাংলা অকাদেমির যেন আর কিছুই করার নেই। অথচ কর্ণকুহরে প্রবেশিল উদ্বোধনী ভাষণে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর এই আক্ষেপ মাখানো উচ্চারণখানি যে তিনি যদিও লিটল ম্যাগাজিনের একজন নিবিষ্ট পাঠক তবুও তা তাঁর পক্ষে সবসময় পড়ে ওঠা সম্ভব হয় না কারণ সে সব সংগ্রহের উপায় বড়ই কষ্টকর। তখন পাশে উপবিষ্ট বাংলা অকাদেমির সম্মাননীয় পদকর্তারা। তাঁদের মনে পড়ল না, কতবার যে লিটল ম্যাগাজিনের তরফে অকাদেমিকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে ওই প্রাঙ্গণে একটি লিটল ম্যাগাজিন বিক্রয় কেন্দ্র খোলার। শুধু আক্ষেপ না করে মন্ত্রী মহাশয়ও কী এমন একটি প্রস্তাব রাখতে পারতেন না? তবেই তো বোঝা যেত সত্যিই তিনি একজন লিটল ম্যাগাজিন গুণগ্রাহী।

সে যাক গে। আসলে গয়ং গচ্ছ একটি মেলা করা আর দু-একটি পুরস্কার বিতরণী ছাড়া বাংলা অকাদেমির লিটল ম্যাগাজিনের প্রতি যে কিছুই করার নেই, তা দীর্ঘদিন ধরেই অতীব স্পষ্ট। কারণ, যারা সর্বময় কর্তা তাঁরা জানেনই না লিটল ম্যাগাজিন বস্তুটি ঠিক কী ও কেমন। তাই সত্তর দশকের লিটল ম্যাগাজিনের প্রদর্শনীতে গিয়ে ‘কৃত্তিবাস’ দেখতে হয়। আর হবে নাই বা কেন, লিটল ম্যাগাজিন লাইব্রেরি ও গবেষণাগারের প্রাণপুরুষ সন্দীপ দত্ত মহাশয়ের তো দেখি জায়গাই নেই সেখানে। অতএব, সারা বছর লিটল ম্যাগাজিন নিয়ে অকাদেমির সত্যিই কিছু করার নেই। শুধু মেলার এই পাঁচদিন বাদ দিলে আজ পর্যন্ত কখনও কোনোদিন বাংলা অকাদেমিকে লিটল ম্যাগাজিন নিয়ে কিছু করতে দেখিনি বা শুনিনি। অথচ, তাঁরা ভান করবেন – অহো আহা লিটল ম্যাগাজিন। সে তাঁরা কিছু না করুন, লিটল ম্যাগাজিন তার নিজ শক্তিতেই বেগময়। তার প্রমাণ তারা রেখেছিল নন্দীগ্রামে পুলিশের গুলি চালানোর প্রতিবাদে ২০০৮ সালে নিজেদের উদ্যোগে ও শক্তিতে বিকল্প মেলা সংগঠিত করে, বাংলা অকাদেমির মেলাকে বয়কট করে। সে সমান্তরাল মেলা আজও চলেছে কলেজ স্কোয়ার প্রাঙ্গণে। চিন্তা, ভাবনা ও আবেগের যে স্ফুরণ সে সময় মানুষ দেখেছিলেন তা অনেক বিষ ধারণাকে সমূলে উৎপাটিত করেছিল। কর্পোরেট মিডিয়ার ফিরি করা লোভ-লালসা-হিংসার ফর্দ ধোপে টেঁকেনি।

তাই লিটল ম্যাগাজিন বাংলা অকাদেমি থেকে যত দূরে থাকবে বা বাংলা অকাদেমি লিটল ম্যাগাজিনকে যত দূরে ঠেলে রাখবে তাতে আখেরে লাভ লিটল ম্যাগাজিনেরই।      

Thursday, 8 January 2015

রবীন্দ্র সদন প্রাঙ্গণে লিটল ম্যাগাজিন মেলা


কলকাতার নন্দন-রবীন্দ্র সদন প্রাঙ্গণে 
সারা বাংলা লিটল ম্যাগাজিন মেলা
১১ থেকে ১৫ জানুয়ারি ২০১৫, ২টা থেকে ৮টা
'একক মাত্রা'র থাকছে নতুন ও পুরনো সংখ্যার সম্ভার নিয়ে

Tuesday, 6 January 2015

কলেজ স্কোয়ার'এর লিটল ম্যাগাজিন মেলা




ছোট মুখে বড় কথা

পল্লবী বন্দ্যোপাধ্যায় 

লিটল ম্যাগাজিন তো বাংলা সংস্কৃতির দুয়োরাণী। কোনও সরকারই তাকে বিশেষ পাত্তা দেয় না। সে মিডিয়ার বড়বাবুই হোন, বা সেক্রেটারিয়েটের। তো এ হেন লিটল ম্যাগাজিন মেলায় যখন কলেজ স্কোয়ার ভরিয়ে পাঠকের দল বিকিকিনি করতে লাগলেন, সে দৃশ্য দেখে আমাদের উদ্দীপনা বেড়ে গে আরও কয়েক গুণ। বই ম্যাগাজিন বেচাকেনার ফাঁকে ফাঁকেই মঞ্চে চলছিল নানাবিধ আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বিক্রিবাটার ব্যস্ততার মাঝে মাঝে চলছিল লেবু চা আর তামাকের ডোজ। প্রথম দিনের ছুটির মেজাজ আর মেঘের চোখরাঙানি যদিওবা লোকজনকে তেমনভাবে মেলায় আসতে উদ্বুদ্ধ করতে পারেনি, দ্বিতীয় আর তৃতীয় দিনে মেলার লোকসংখ্যা ছিল চোখে পড়ার মতো। পাওয়া গেল বেশ কয়েকজন নতুন গ্রাহকও।

কিন্তু যাবতীয় উৎসাহ উদ্দীপনায় আক্ষরিক অর্থেই যে জল ঢালল, সে হল নিম্নচাপ। আবহাওয়া দফতরের দৈববাণী সত্যি করে তুলতে শনিবার মানে মেলার শেষ দিনে ঠিক বিকেল পাঁচটায় মানে যখন মেলা জমজমাট, হুড়মুড়িয়ে নামল বৃষ্টি। আঝোর ধারায় বৃষ্টি। যে যেমন পারল ছুট দিল ব্যাগপত্তর গুছিয়ে। কিন্তু স্রেফ বৃষ্টি দিয়েই কি লিটল ম্যাগের সৈনিকদের দমিয়ে ফেলা যায়? বিশ্বভারতীর পোর্টিকোর নীচেই বৃষ্টির আড়ালের খোঁজে আসা মানুষের ভিড়ে প্রতুল মুখোপাধ্যায় প্রকাশ করলেন জাহিরুল ইসলামের বই বাংলায় মুসলমানের ইতিহাস। প্রতি বছরের মতোই এ বছরেও মেলা শেষ করার কথা ছিল প্রতুলবাবুর। এবং করলেনও তাই।

হঠাৎ ঐ বারান্দার নীচেই আলো আঁধারির খেলায় দৃপ্ত গলায় ডিঙ্গা ভাসাও সাগরে সাথীরে ধরলেন। সাথীরাও সুরে বেসুরে গলা মিলিয়ে উঠে পড়লেন ডিঙ্গায়। বাইরে বৃষ্টি, বুকে মেলা ভেস্তে যাবার হতাশা রাগ বিরক্তি, আর কানে গরজি গুমরি ডাকে শোনো ঐ তরঙ্গ উথালপাথালএর কোরাস শুনতে শুনতেই পরবর্তী  মেলার জন্য মনে মনে প্রস্তুত হই। জানি প্রস্তুত হচ্ছেন আপনারাও। তাহলে আবার দেখা হচ্ছে। নন্দন চত্বরে। ১১ থেকে ১৫ই জানুয়ারি।