জেএনইউ ও তারপর
প্রবুদ্ধ বাগচি
জেএনইউ’এর ঘটনাটি নিয়ে গত পক্ষকাল ধরে নানারকম সমালোচনা পাল্টা সমালোচনার যে ধারাবাহিক
স্রোত চলেছে তাতে মুখ ও মুখোশের নানা ভঙ্গিমা আমরা ইতিমধ্যেই দেখে ফেলেছি। একটি
ছাত্র সংসদের সম্পাদকের কোনও একটি বিশেষ দিনের বক্তব্যকে ঘিরে এত বড় মাপের
টালমাটাল, এত সুতীব্র রাজনৈতিক চাপান উতোর স্মরণকালের মধ্যে ঘটেছে, এমন মনে পড়ে না। পাশাপাশি, একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভিতরের ঘটনা জাতীয় রাজনীতির উত্তাপকে বাড়িয়ে
তুলে সংসদ অবধি গড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশ অভাবনীয়। এইসব আলোচনা ও প্রতিক্রিয়া
থেকে আমরা দেশপ্রেমের নানা হ য ব র ল সংজ্ঞা যেমন জানার সুযোগ
পেলাম তেমনই একটি ছকে বাধা দেশপ্রেমের বিরুদ্ধে জোরে কন্ঠ তুললে রাজনৈতিক
প্রতিহিংসা কোন পর্যায়ে যেতে পারে তার একটা মগজহীন আদলও দেখতে পেলাম। এবং নিয়ত দেখতে
পাচ্ছি। সবটাই একটা পুতুলনাচের ইতিকথা, যার সঙ্গে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষমতা দখলের
অগোপন সংযোগ রয়েছে। এটা বুঝতে কোনও অসুবিধে নেই যারা আদালতে গিয়ে ছাত্র পেটাচ্ছে
এবং সোস্যাল মিডিয়ায় নানা প্ররোচনামূলক বক্তব্য অনায়াসেই রাখছে এবং ফতোয়া দিচ্ছে
দেশপ্রেমের নামে, আর যাই হোক তারা এই দেশটাকে চেনেন না এবং প্রেম শব্দটা
তাঁদের অভিধানে নেই। অথচ এই দুটি শব্দকে গ্লুস্টিক দিয়ে জুড়ে তারা একটা ধাঁচা বা
খাঁচা তৈরি করেছে এবং যার বাইরে সবাইকে একই ব্র্যাকেটে ফেলে নিজেদের উগ্রতাকে
উলঙ্গ করছে। হ্যাঁ, এমনটাই কথা ছিল। এবং এই ছকটা যে আমাদের খুব অচেনা তা নয়।
মার্কিন দেশের কোনও এক রাষ্ট্রপ্রধান বলেছিলেন যে যারা আমাদের ইরাক নীতি
সমর্থন করেন না তারা আমাদের বিরুদ্ধের লোক এবং দেশবিরোধী। বিহার নির্বাচনে গোহারা
হেরে যাওয়ার আগে ভাজপার দশাসই সর্বভারতীয় সভাপতি বলেছিলেন এখানে যারা তাঁদের ভোট
দেবেন না ধরে নেওয়া হবে তারা পাকিস্তানের সমর্থক। ২০১৪ লোকসভা নির্বাচনের
প্রাক্কালেও এমন একটা সাদাকালো ধারণার ভাবনা সুকৌশলে ছড়ানো হয়েছিল, যদিও আসন
সংখ্যার হিসেবে ভাজপার জয়জয়কার তাঁদের প্রাপ্ত ভোটের শতাংশের সঙ্গে মেলে না।
প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ভোটার এই দলটিকে ভোট দিয়েছেন, অর্থাৎ দুই-তৃতীয়াংশ ভোটার এঁদের
বিরুদ্ধেই মত দিয়েছেন। তার মানে কি এরা সকলে পাকিস্তানের সমর্থক? এই ভয়ংকর বক্তব্যের মধ্যে একটা সলতে পাকানোর
ব্যাপার ছিল এবং ভাজপা বিহারে হেরে ভূত না হলে সেই বোমাটা বিহারেই হয়তো ফাটত।
কিন্তু, বাস্তবে তেমন ঘটল না কিন্তু বারুদের জড়ো হওয়া স্তুপ তো আর নিস্তেজ করা হয়নি। দাদরি থেকে পান্সার হত্যা, কালবুরগি নিধন এগুলো
আসলে সব ওই জমাট বাধা বোমাটার ফেটে যাওয়া একেকটা টুকরো ছিল। আমরা কেউ কেউ বুঝেছি
কেউ বুঝিনি। বুঝলাম, যখন রোহিত ভামুলার ঘটনা হল, যখন কানহাইয়া গ্রেফতার হল। এটা
সেই বোমার বারুদ যা ভাজপা ও তার ছোট বড় মেজ শরিক ফাটিয়েই ফেলল, না ফাটিয়ে উপায় ছিল
না। বোমা, যা নাকি ঘৃণার বারুদ আর আগ্রাসী মৌলবাদের স্প্রিন্টার দিয়ে বানানো হয় তা তো ফাটানোর জন্যই তৈরি হয়, আলমারিতে
সাজিয়ে রাখার জন্য নয়। তবে উপলক্ষ লাগে। প্রয়োজনে তা তৈরি করে নেওয়া যায়।
জেএনইউ’এর ঘটনা সেই প্রকল্পের অংশ যাকে এখনও কোনও আরএসএস মতধারী নেতার নামে চিহ্নিত
করা হয়নি। কিন্তু তাতে বোমা ফাটাতে অসুবিধে কী?
নব্বই দশকের শেষে
যখন ভাজপা এনডিএ জোটের নেতৃত্ব নিয়ে ক্ষমতায় আসে তার আগে তাঁদের মূল ইসু ছিল রাম
মন্দির। সরকারে এসে পাঁচ বছর কাটিয়ে রাম মন্দিরের একটা ইটও গাঁথা হয়নি। বিলগ্নিকরণের
নামে দেশের রাষ্ট্রায়ত্ব শিল্পগুলিকে জলের দামে দেশি বিদেশি শিল্পপতিদের হাতে তুলে
দিয়ে ‘ফিল গুড’ আর শাইনিং ইন্ডিয়া স্লোগান দিয়ে ভাজপা ক্ষমতা থেকে সরে যায়। এবং ২০০৪’এর লোকসভা নির্বাচনের পর ভাজপার কোমর ভাঙা অবস্থায় তাঁদের কেন্দ্রীয় প্রতাপও বেশ
নিভু নিভু হয়ে আসে। কারণ অটল বিহারীর রাজনৈতিক
সন্ন্যাস, আদবানির প্রধানমন্ত্রী
হতে না পারার হতাশা, প্রমোদ মহাজনের হত্যা, উমা ভারতীর হাটে হাঁড়ি ভাঙা নানা
মন্তব্য ইত্যাদি। উপরন্তু ছিল সরকারে এসেও রাম
মন্দির না গড়তে পারা, ৩৭০ ধারা বিলোপের পথে এক মিলিমিটারও এগোতে না পারা, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি শিকেয় তুলে রাখা এইসব। বাবরি মসজিদ ধবংসের প্রায় ষোলো সতেরো বছর পর যেদিন বাবরি মসজিদ মামলা নিয়ে আদালতের
রায় বেরোয় সেইদিন সরকারি প্রশাসন তটস্থ হয়ে ছিল, কী জানি কী হয়; ওই ঘটনার
চব্বিশ ঘণ্টা আগে থেকে সারা দেশে এসএমএস আদানপ্রদান নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু দেশের মানুষের আগ্রহ যে ইতিমধ্যে অনেকটাই মন্দির মসজিদ
থেকে সরে গেছে সেদিন সারা দেশ বিষয়টায় একরকম উদাসীনতা দেখিয়ে তা প্রমাণ করে দেয় । সম্ভবত সেই সময় ভাজপা নেতৃত্ব বুঝতে পারেন রাম এর নাম নিয়ে আর
ক্ষমতায় ফেরা সম্ভব নয়। অতঃ কিম!
কিন্তু সেই সময় ইউপিএ সরকার’এর ব্যাটিং গড় মন্দ নয়। উদারনীতি অর্থব্যবস্থা তাঁদের বরাবরের পছন্দ। সংস্কারের নামে তাঁদের জিভ দিয়ে জল পড়ে। এগুলোর কোনোটার সঙ্গেই তো ভাজপার তেমন কোনো বড় বিরোধ নেই। ফলে কেন কংগ্রেস নয়, তারাই সেরা এটা বলার পরিসর তখন ছিল না,
বললেও কেউ শুনত না।
এই সুযোগ এল দু’ভাবে। এক, একটি অস্পষ্ট নীতিগত কারণ দেখিয়ে
ইউপিএ থেকে বামেদের সমর্থন প্রত্যাহার। আর ইউপিএ ২ বেশ সন্তোষজনক ভাবে লোকসভায় ফিরে এলেও প্রথমত ধারাবাহিক দুর্নীতি ও
নানা চাপে আর্থিক সংস্কারের শ্লথ গতি ইউপিএকে কিছুটা ব্যাকফুটে ফেলে দেয়। আর্থিক সংস্কারের ফলে লাভের কলাটা মুলোটা যারা সব থেকে বেশি পান তাতে এঁদের
খুশি হওয়ার কথা নয়। হনওনি। কিন্তু দেশে যাই হোক একটা সংসদীয় ব্যবস্থা আছে, যখন তখন সরকার পালটে দেওয়ার সুযোগ
সেখানে কম। এই শূন্যতাটা পূরণ করতে আসরে
নামে ভাজপা এবং তাঁদের নয়া ব্রিগেডের বিকাশপুরুষ মোদীভাই। যার নিজের রাজ্যে কাজের থেকে প্রচার বেশি । শিল্পের নামে উন্নয়নের ঢাক বাজানোয় যার জুড়ি নেই আর জুড়ি নেই নিজেকে প্রোমোট করায় ( হ্যাঁ একদম নিজেকেই, অনেকটা আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর মতো। ঘটনাচক্রে যার প্রিয় কোটেশন ‘আমার মাথা নত করে দাও হে তোমার চরণ ধূলার তলে’)। সুতরাং মোদি, অতএব মোদি, অগত্যা মোদি। ২০১৪ লোকসভা নির্বাচন
মোদিময় যিনি নাকি উন্নয়নের ভগীরথ হয়ে দেশকে জগতসভায় শ্রেষ্ঠ আসন নিইয়েই ছাড়বেন । তার জন্য ‘মন কী বাত’, তার জন্য ‘চায়ে পে চর্চা’, তার জন্য ঝাড়ু হাতে রাস্তা সাফাই এবং
আমূল সংস্কারের ঢালাও প্রতিশ্রুতি। একেবারে শেষের
অ্যাজেন্ডায় দেশের বণিক মহলে পুলক অন্তহীন তারা মোদির ওপর বিনিয়োগে রাজি কারণ তাঁদের
ধারণা এই বিনিয়োগ উপরি ডিভিডেন্ড হয়ে ফিরবে। তাই ঝাঁ-চকচকে কর্পোরেট প্রচার, জনমানসে এই অবতারকে প্রায় বিগ্রহ
হিসেবে প্রতিষ্ঠা। এবং বিপুল জয়।
কিন্তু ভাজপা আসলে একটা রাজনৈতিক দল হলেও তাঁদের তাত্ত্বিক সদর
দফতর নাগপুর এবং ওই নাগ বাহিনীর স্বাভাবিক কিছু ফণা তোলা ইসু আছে যা ঠিক আমাদের সংবিধানসম্মত
শাসনের সঙ্গে খাপ খায় না। আগের বারে রাম রাম করতে এরাই
এগিয়ে এসেছিলেন, ‘আউর এক ধাক্কা দো / বাবরি মসজিদ তোড় দো’ স্লোগান তুলেছিলেন । এরা কিছু বিষাক্ত মতকে যুক্তি বুদ্ধির ওপরে লালন করেন, সংখ্যালঘু সম্বন্ধে এঁদের কিছু
মনগড়া থিওরি আছে যা সরকারি পরিসংখ্যান দফতরের রিপোর্টের সঙ্গে মেলে না। এবং নাগপুরজাত কিছু মেজ সেজ সংগঠনও আছে তারা কেউ মনে করেন এই
দেশের উচ্চবর্ণের হিন্দুরাই শেষ কথা বলবেন, কেউ ভাবেন দেশের সব ইসলাম ধর্মের মানুষরাই ভিনদেশি
প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সমর্থক, কেউ ভাবেন সব সংখ্যালঘুকে সংখ্যাগুরুর
ধর্মে ফিরিয়ে আনাই তাঁদের একমাত্র কাজ বা ভিনদেশী পাদ্রীকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার মতো
পুণ্য আর হয় না ইত্যাদি। এইসব তারা আগেও
করেছেন। কিন্তু সেবারে ভাজপা দলের ক্ষমতায় আসার প্রেক্ষিত
ছিল আলাদা। এবারে আবার অন্যরকম। মোদিভাই তার কর্পোরেট
সাথীদের কাছে কথা দিয়েছেন তাঁদের যাবতীয় সুযোগ সুবিধে করে দেওয়াই তার ব্রত। তাতে সামাজিক কল্যাণমূলক কর্মসূচির ভাঁড়ারে টান পড়লেও কিছু যায়
আসে না। কিন্তু এটা খুব অনায়াস করতে গেলে একটা আপাত শান্তির
পরিবেশ থাকা দরকার, একটা গ্রহণযোগ্যতা প্রতিষ্ঠা হওয়া দরকার। আর সব থেকে আগে দরকার ওই নাগপুরের নাগ বাহিনীকে সংযত রাখা ।
মুশকিল হল, এইখানেই একটা বড় ব্যর্থতা মোদির। একে তো ক্ষমতায় আসার এক দেড় মাসের মধ্যে খোদ নয়াদিল্লি রাজ্যেই মোদি হাওয়া ফক্কা, তার ওপর বিহারেও সাঙ্ঘাতিক গর্জনের
পরেও বর্ষণ প্রায় শূন্য। পশ্চিমবঙ্গে ওরা
অনেক সম্ভাবনা নিয়ে শুরু করেছিলেন, কী আশ্চর্য, চিড়ে এখানেও
ভিজল না। ওদিকে সংস্কারের যে প্রতিশ্রুতি, শিল্প বিকাশের যে প্রত্যাশা মোদির
কাছে শিল্পমহল আশা করেছিল সে গুড়েও ক্রমশ বালি পড়ছে। মাঝখান থেকে আজকে দাদরি কালকে বেঙ্গালুরু, পরশু জেএনইউ অন্যদিন অন্য কোথাও চরম ধর্মীয়
অসহিষ্ণুতার দাপট, হুজুগে দেশপ্রেমের রক্তচোখ বাড়ছে। বর্ষার জমা জলে যেমন নানা ভাইরাস ব্যাক্টেরিয়ার জন্ম হয় ঠিক তেমন ভাজপার পৌরাণিক রাজনীতির
আদর্শের বদ্ধ জলায় নানান গোষ্ঠী উপগোষ্ঠীর চাষবাস যাঁদের নাম কোথাও মোদী সেনা কোথাও হিন্দু সংহতি কোথাও
বজরং সেনা আর ট্র্যাডিশনাল শিবসেনারা তো আছেনই । এরা ভাজপাকে নিজেদের জ্ঞাতিভাই মনে করেন এবং দেশ জুড়ে বেআইনি কাজে একের পর
এক স্বাক্ষর রেখে যাচ্ছেন । জেএনইউ’এর ঘটনা এই সব কিছুর একটা
মিলিত প্রতিক্রিয়া । যার ছাপ ঘটনাচক্রে ছড়িয়ে গেছে
বিশ্বময়। টিভির কল্যাণে, সোস্যাল মিডিয়ার অতি সক্রিয়তায়
এই ঘটনার মূল পরিকল্পনা প্রায় উন্মোচিত। যারা এইসবে যুক্ত তারা মনে করতে আরম্ভ করেছেন চাইলেই তারা যা খুশি করতে পারেন। কলকাতায় বসে রাজ্য ভাজপার সর্বময় নেতা যাদবপুরের পড়ুয়া কর্মী
অধ্যাপকদের কলার ধরে দেশপ্রেম শেখানোর ইজারা নিয়েছেন। যাদবপুরের আচার্য নিজের পদের প্রতি অবমাননা করে তার আদি দলের পক্ষ নিয়ে পদকে কলঙ্কিত
করেছেন তার জন্য কোনও ধিক্কার যথেষ্ট নয় ।
কিন্তু এত কিছুর পরেও কিছু কথা থাকে । যে ছাপ্পান্ন ইঞ্চির ক্ষমতায় থাকার কল্যাণে এইসব ক্রিমি কীটদের বাড়বাড়ন্ত তার মূল
দায় কিন্তু দেশের কর্পোরেট সেক্টরের প্রতি । তাঁদের ঘাড়ে চেপে
তিনি প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন । অথচ সংস্কারের
জোরালো রথ ছুটিয়ে তাঁদের জন্য এখনও বিশেষ কিছু করে উঠতে পারেননি । বিভিন্ন সংস্কার বিল দুই সভায় পাশ করিয়ে শিল্প লবির প্রতি খুব
জোরালো বার্তা পৌছে দেওয়া যায়নি । জমি বিলে একের
পর এক বেআইনি অর্ডিন্যান্স করেও তা পাশ হয়নি। পড়ে আছে জিএসটি বিল। এছাড়া মনমোহন সিংহের সরকারকে
যে নীতি পঙ্গুতায় ভাজপা বিঁধত তার বিকল্পে ভাজপা সরকারের ভূমিকা তেমন কিছু বলার মতো
নয় । ভাজপা ক্ষমতায় থাকার সূত্রে নানা বিতর্ক ও কুকম্ম
করে যারা নাম কুড়োতে চাইছেন আসলে তারা সোনার ডিম পাড়া হাঁসটার প্রতি সুবিচার করছেন
না । জেএনইউ থেকে যাদবপুর, দাদরি থেকে গুলাম আলি, পান্সার থেকে কানহাইয়া শেষ অবধি সরকারের বিড়ম্বনা হয়ে যাচ্ছে । কর্পোরেট সেক্টর দেশপ্রেম, হিন্দুত্ব, নাগপুরের নাগ
বাহিনীর অ্যাজেন্ডা কিছুই বোঝে না, তারা চায় মুনাফা, সরকারি প্রশ্রয়ে লুট করার লাইসেন্স, সরকারি নীতি যা তাঁদের
বাণিজ্যকে গতিময় করবে, রাষ্ট্রীয় ব্যাঙ্কের ঋণ, যা খুশি হলে তারা শোধ করতেও পারেন নাও পারেন, রাশি রাশি
সম্ভাবনাময় বিনিয়োগ ----- এখনও মোদি সরকার খুব বেশি কিছু তাঁদের
দিতে পারেননি । তাঁরাও খুব বেশি সময় দেবেন
না । প্রায় দু বছর অতিক্রান্ত । তেমন হলে আবার তারা কংগ্রেসের মধ্যেই বন্ধু খুজবেন যারা নির্ভরযোগ্য
অন্তত এইসব ফালতু উৎপাতে সরকারের সময় ব্যয় হবে না । এই জায়গায় মোদির ভাগ্যাকাশে দুর্যোগের ঘনঘটা । জেএনইউ নিয়ে যারা বড় বড় দেশপ্রেমের বুলি ফেসবুকের দেওয়ালে সাটাচ্ছেন তাঁরা নিজেরা
গর্বিত হলেও এই দিকটা খেয়াল করছেন এমন মনে হয় না । গরু যাঁদের মাতা এবং হনু যাঁদের পিতা তাঁদের থেকে এর বেশি অবশ্য আর কিছু আশা করা
যায় না । এবং এটাও খেয়াল রাখা দরকার
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর মতোই মোদিজি নিজের ক্যাবিনেটে কাউকেই দ্বিতীয় বিকল্প তৈরি করছেন
না, কারণটা পরিষ্কার
। ইতিহাসে এর ব্যাখ্যা পাওয়া
যাবে। ফলে উনি থাকলে থাকবেন নইলে ভাজপা আবার ডুবো নৌকো
হয়ে যাবে। কান্ডারীহীন, দিশাহীন । তখন এইসব হঠাৎ গজানো দেশপ্রেমিকরা পতন রুখতে পারবেন না, ইতিহাসের আস্তাকুঁড় রিসাইক্লিং
বিন’এর মতো সাফ না করলে এঁদের সেখানেও জায়গা পাওয়া সমস্যা হবে । এটা ভাজপার ক্ষেত্রে শঙ্কা, আমাদের ক্ষেত্রে স্বস্তি ।