'... গোপাল কখনই লেখা পড়ায় অবহেলা করে না। সে পাঠশালায় যাহা পড়িয়া আইসে, বাড়ীতে তাহা ভাল করিয়া পড়ে; পুরাণ পড়াগুলি দুবেলা আগাগোড়া দেখে।'
আর রাখাল?
'... লেখা পড়ায় রাখালের বড় অমনোযোগ। সে এক দিনও মন দিয়া পড়ে না; এবং এক দিনও ভাল পড়া বলিতে পারে না।'
তাহলে এখন সুবোধ গোপালদিগের কী হইবে? এই মহামূল্য প্রশ্নটি অভিভাবক ও শিক্ষা অনুরাগীদের শুধুমাত্র ব্যতিব্যস্ত রাখেনি, সমাজের প্রায় সকলেরই নানা ধরনের মাথাব্যথা অথবা ব্যথা উপশমের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোনও কোনও শিক্ষাবিদ (যেমন সুকান্ত চৌধুরী) পরীক্ষা বন্ধের পক্ষে, তবুও যেন বিতর্ক আর সোশ্যাল মিডিয়ায় খিল্লিবাজী ফুরচ্ছে না। অতএব, শিক্ষা নিয়ে রাখালেরাও এখন দু' কথা পেশ 'করিতে উদগ্রীব হইয়া পড়িয়াছে'। এ হেন রাখালের তাই বিনীত জিজ্ঞাসা, শিক্ষা কাহারে কয়! এবং একবিংশ শতকের দুটি দশক পার করে শিক্ষা আজ কোন তেপান্তরের মাঠে এসে দিকশূন্য পানে দৃষ্টি মেলেছে?
হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘বঙ্গীয় শব্দকোষ’এ শিক্ষা’র অর্থে বলা হচ্ছে: বিদ্যাগ্রহণ, শিক্ষণ, শেখা। আবার, অভ্যাস বা উপদেশ’ও বলা হয়েছে, শাস্ত্র বা বিজ্ঞান অর্থেও ধরা হয়েছে। আরও বহু শব্দের মতো এ শব্দেরও যখন বৈভব এত সুদূর বিস্তৃত ও নানা মাত্রিক, তখন স্বাভাবিক, ‘শিক্ষা’ অঙ্গে কূপমণ্ডুকতার কোনও জায়গা নেই। হক কথায়, শিক্ষা শুধুমাত্র বিদ্যায়তনেই পাওয়া যাবে এমন কোনও বিধান নেই। অর্থাৎ, শিক্ষার আরও বহুবিধ প্রাঙ্গণ থাকতে পারে। সবচেয়ে প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন, শিক্ষার সর্বজনীনতারই বা প্রয়োজন কোথায়? কেনই বা?
এইসব প্রশ্ন মাথার মধ্যে কামড়ালেও নড়াচড়ার কোনও উপায় নেই; কারণ, আজ শিক্ষা বলতে বিদ্যায়তনে শেখা ‘উদ্দেশ্যমূলক’ কিছু পুঁথিপত্রকেই বোঝায়। ‘উদ্দেশ্যমূলক’ এই অর্থে যে, শিক্ষার সঙ্গে মানবতা ও চৈতন্যের সংযোগের গুরুত্বের কথা সর্বাধিক ভাবে তুলে ধরা হলেও, আসলে, ইংল্যান্ডে শিল্প বিপ্লবের পরে কলকারখানার উদয়ের সঙ্গে সঙ্গে অক্ষর ও মৌলিক পাটিগণিত জ্ঞানসম্পন্ন কিছু লোকজনের বাস্তব প্রয়োজন দেখা দিয়েছিল, যারা নব-উত্থিত অর্থনীতির কারিগরি ও ব্যবস্থাপনার কার্যাদিকে টেনে নিয়ে চলতে পারবে। সেই সুবাদে, সর্বজনীন শিক্ষার উদ্দেশ্য এও ছিল, কিছু ‘শিক্ষিত’ মানবসম্পদ তৈরি করা যারা শিল্পের কাজে লাগবে। আর তা গুটিকয়েক নয়, অজস্র পরিমাণে। কারণ, তখন শিল্পের অতি প্রসারের যুগ। ফলত, গড়ে উঠতে থাকল অগণিত স্কুল এবং পরবর্তীকালে কলেজ ও অন্যান্য শিক্ষণ প্রতিষ্ঠানও।
শিল্পের জন্য এই তাৎক্ষণিক প্রয়োজনীয় কাজের মানবসম্পদ ছাড়াও দরকার পড়েছিল আরও দু’ রকমের শিক্ষা। শিল্প বিপ্লবের অভিঘাতে প্রযুক্তি-নির্ভর পুঁজিবাদী সমাজের বৈপ্লবিক উত্থান যখন কঠোর বাস্তব তখন স্বভাবতই বিজ্ঞান-প্রযুক্তির গবেষণা ও উদ্ভাবন হয়ে পড়ল তার দোসর। পাশাপাশি, দায় ছিল এই নব সমাজকে যুক্তিগ্রাহ্য করে টিকিয়ে রাখার, আর তার জন্যই ইতিহাস, রাজনীতি, অর্থনীতি, দর্শন এইসব ক্ষেত্রেও শিক্ষা ও চর্চা হয়ে পড়েছিল অতীব প্রয়োজনীয়। অর্থাৎ, সামন্তবাদ ও রাজতন্ত্রের জোয়াল ভেঙে ইউরোপীয় সমাজ তখন যে নতুন রাজনৈতিক-আর্থনীতিক দিগন্তে প্রবেশ করছিল, তার গড়ে ওঠা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নানা মাত্রার এক সর্বজনীন ও সর্বাঙ্গীণ শিক্ষাব্যবস্থার আয়োজন অবশ্যম্ভাবী ছিল। বলার উদ্দেশ্য এই, আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা পত্তনের জন্য যতটা না মহত্ত্ব বা পবিত্রতাকে শিরোপা দেওয়া হয়, তার চেয়ে অনেক বেশি তা ছিল সামাজিক-অর্থনৈতিক চাহিদা বিশেষ; নতুবা, নতুন গড়ে উঠতে থাকা শিল্প-আধার ও ব্যবস্থাপনা বিফলে যাবে।
এ তো গেল পুরনো দিনের কথা! আজ কিন্তু সর্বজনীন শিক্ষার সে প্রয়োজন ফুরিয়েছে। তাই শিক্ষা অঙ্গনেরও ভোলবদলের দিন। সে কথা বুঝছে কে!
ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরাম প্রকাশিত (২০২০) ‘ফিউচার অফ জবস সার্ভে’ প্রতিবেদনে অনুমান করা হয়েছে, আজকের কর্মজগতের অর্ধেক কাজই ২০৩০ সালে অচল হয়ে যাবে। তা শুধু প্রযুক্তিগত অর্থে নয়, কাজের ধরন ও মর্মবস্তুতেও। দেখাই যাচ্ছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা উদ্গত নতুন যে কাজের পরিসর উঠে আসছে সেখানে সৃজনশীলতা, যুক্তিগ্রাহ্যতা, নিখুঁত অ্যালগরিদম, সমস্যার প্রতি সংবেদনশীলতা এইসব গুণ ও দক্ষতা অতীব জরুরি; যেখানে মনুষ্য শ্রমের অভিমুখটা হল বৌদ্ধিক ও নমনীয় কাজের দিকে আর যন্ত্রের দখল গতি ও নিপুণতার দিকে। শিক্ষাব্যবস্থারও তাই অনুরূপ পরিবর্তনের অনুসরণ বিনা চলবে কেন? অতএব, গোড়ায় শিল্প বিপ্লবের উপযুক্ত যে শিক্ষাব্যবস্থার পত্তন, সেখানে কচিকাঁচাদের নিয়মানুবর্তী, বাধ্য, ভদ্র পানে নির্মাণ করার প্রয়াস নেওয়া হয়েছিল যথাযথ শ্রমশক্তি পাওয়ার অভিলাষে। সারি সারি বেঞ্চে সারিবদ্ধ হয়ে বসে সম্মুখ পানে চেয়ে শিক্ষকের পড়ানোকে শৃঙ্খলাবদ্ধ হয়ে আত্মস্থ করার যে শিক্ষা মডেলটি তৈরি হয়েছিল, তা তৎকালীন শিল্পব্যবস্থার কাঠামোগত ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সাযুজ্য রেখেই। আজ সে সবের দিন ফুরিয়েছে। অনলাইন শিক্ষার আগমনে ক্লাসে সারিবদ্ধ বসে পাঠ নেওয়ার পুরনো ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্প ঘরানার ব্যবস্থা আজ অস্তাচলে। বহু কিছু আজ অচল। অর্থনীতির মূল্য নির্মাণে ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্পের ভাগ ক্রমশই সংকুচিত হয়ে আসায় সারিবদ্ধ, শৃঙ্খলাপরায়ণ শ্রমিক বাহিনী তেমন প্রধান প্রয়োজনীয় নয় আর। ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্পেও আজ অটোমেশনের ব্যাপক চল। শিক্ষায় মুখস্থবিদ্যা ও হাতের লেখার জমানাও শেষ। বৌদ্ধিক কাজই যখন মনুষ্য শ্রমের প্রধান অঙ্গন হয়ে উঠতে চাইছে তখন গুগল হাতড়ে তথ্যের সমাহারকে বিশ্লেষণ করাটাই হবে মুখ্য; সমালোচনামূলক বিশ্লেষণ ও নৈতিক বিচারের গুণসম্পন্নতাই হবে সাফল্যের চালিকাশক্তি।
এই নবশিক্ষা কীভাবে অর্জিত হবে? অর্থাৎ, এর কাঠামোগত বিন্যাসটি কেমন হবে? অবশ্যই এই শিক্ষাব্যবস্থার লাগাম চলে যাবে বড় বড় কর্পোরেটদের হাতে। মাধ্যমিক স্তর অবধি একটি সাধারণ পাঠক্রিয়া থাকবে, কিন্তু তারপরে গড়ে উঠতে থাকা কর্পোরেট স্কুলই হবে শিক্ষার মূল অভিযাত্রা। ধীরে ধীরে তিন কি চার বছরের ডিগ্রি প্রাপ্তির কাঠামোটাই হয়তো সেকেলে হয়ে যাবে। বিশ্ব ব্যাঙ্ক প্রকাশিত ‘ওয়ার্ল্ড ডেভেলপমেন্ট রিপোর্ট’এও (২০১৯) এ বিষয়ে কিঞ্চিৎ আলোকপাত করা হয়েছে। সোজা কথায় বললে, কর্পোরেট স্কুলগুলি মাধ্যমিক (বা উচ্চ মাধ্যমিক) উত্তীর্ণ ছেলেমেয়েদের তাদের নিজ নিজ বিচারে বাছাই করে এনে দু-এক বছরের উপযুক্ত নির্দিষ্ট কোর্সে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত করে স্ব স্ব কর্মজগতে নিয়োগ করবে। সেই স্কুলে তাদের সর্বশেষ প্রযুক্তি ও রীতিনীতিতে অভ্যস্ত করে তোলা হবে। কাজে প্রবেশ করার পরে আবারও যখন প্রযুক্তিতে বদল আসবে তখন ফের তাদের স্কুলে ফেরত পাঠিয়ে স্বল্পকালীন কোর্সে আপডেটেড করে নেওয়ার আয়োজন থাকবে। এইভাবে পুরনো শিক্ষাব্যবস্থাকে প্রতিস্থাপন করে উঠে আসবে কর্পোরেট চালিত এমন এক শিক্ষাব্যবস্থা যেখানে শিক্ষার সঙ্গে কাজের একটা সরাসরি ও প্রত্যক্ষ সম্পর্ক পালটে দেবে এতদিন চলে আসা শিক্ষার সামগ্রিক কাঠামোটাকেই। অবশ্য, চলতি শিক্ষাব্যবস্থার একটা ক্ষীণ অবয়ব থেকে যাবে যেখান থেকে অন্যান্য প্রয়োজনীয় মানবসম্পদের জোগান মিলতে পারে। যেমন, সরকারি বা সামরিক বাহিনীর কাজের লোক কিংবা সাধারণ স্কুল-কলেজ চালানোর জন্য শিক্ষক অথবা যারা স্বউদ্যোগী হয়ে উঠতে চান। সে কাজের এক্তিয়ারই বা আর কতটুকু। এ ব্যতিরেকে যা পড়ে থাকবে তা ঘোড়ার ডিম বই আর কিছু কী!
আসলে, শিক্ষা বলতে যে গাম্ভীর্য ও ঔদার্যে আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থার প্রভূত কদর করা হয় তার কার্যকারিতা কিন্তু লাভজনক উপায়ে কর্মক্ষম হয়ে ওঠার মধ্যেই। এর সঙ্গে মানবতা, দার্শনিকতা, চৈতন্য বা পরম উপলব্ধির আশু কোনও সম্পর্ক নেই। কিছু ব্যতিক্রমী মানুষ অবশ্য এই শিক্ষাব্যবস্থার কন্দর থেকেই বেরিয়ে আসেন উচ্চ চেতনার বিশেষত্ব নিয়ে। তা তাঁদের স্বগুণে অর্জিত, অন্য কোনও চৈতন্যের আলোকে, শিক্ষাব্যবস্থার অন্দর থেকে সম্ভবত নয়। মনে করে দেখুন, সত্যজিতের ‘আগুন্তুক’ ছবিতে মনমোহন মিত্রের সেই অমোঘ বাচনটিকে যেখানে তিনি বলছেন, সভ্য হল সেই মানুষ যে একটি বোতাম টিপে গোটা শহরকে নিমেষে নিঃশেষ করে দিতে পারে আর আরও সভ্য হল সে যে এই সিদ্ধান্ত নিতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করে না। আধুনিক এই শিক্ষাব্যবস্থা থেকেই তো বোতাম টিপে একটি শহরকে ধ্বংস করার বিদ্যা অর্জিত হয়েছে আর সে কাজ যারা করে তারা তো সেই শিক্ষাব্যবস্থায় সফল হয়ে নির্গত হওয়া মনুষ্যকুলই। সেই শিক্ষাব্যবস্থার প্রত্যক্ষ দায়িত্ব তো আজ তারাই (কর্পোরেট) নেবে যারা এর কর্মফলের বৃহত্তম ভাগটা আত্মসাৎ করে।
অতএব, শিক্ষাব্যবস্থার অন্তর্গত এই রহস্যটা বুঝে গেলে আর আক্ষেপ থাকে না যে 'শিক্ষিত মানুষ' কেন অমানবিক বা ক্রুরতম আচরণ করে; গোপাল কেন বড় হয়ে আত্মকেন্দ্রিক, স্বার্থপর 'সুবোধ' এক ধেড়ে খোকা হয়। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাব্যবস্থা তাই সব সময়েই এক সোনার পাথরবাটি বিশেষ যাকে নিয়ে বোকা মানুষের আতিশয্য এবং লাভের গুড় ঘরে তোলা কর্মপটু চালাক মানুষের স্বার্থসিদ্ধি, দুইই প্রায় সমান তালে চলে। তার রূপান্তর আসলে স্বার্থগন্ধী অর্থনীতি উদ্ভুত মুনাফার রকমফেরের কাহিনি। প্রকৃত শিক্ষার জগৎ অন্য স্তরে, অন্য লয়ে, ভিন্ন অবকাশে স্থিত। তাকে ধরার প্রক্রিয়া এক অন্য নিবিড় সাধনার প্রচেষ্টা। সে গল্প আলাদা।
লেখাটি চিন্তা-উদ্রেককারী।
ReplyDeleteঅনিন্দ্যবাবু মোক্ষম জায়গাটি ধরেছেন। পড়াশোনার সঙ্গে চাকরির সম্পর্কের ইতি গত পাঁচ দশ বছর ধরেই বাড়াবাড়ি রকমের শুরু হয়েছে। বিশেষ করে ইঞ্জিনিয়ারিং-এর ছেলে মেয়েরা ভিড় করে আইটি সেক্টরে যাচ্ছে,তারপর একটা সময়ে হাত কামড়াচ্ছে, এটা ঘটে চলেছে লাগাতার ভাবে। পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাটাই ঢেলে সাজানো দরকার। কিন্তু কে শুনছে কার কথা?
ReplyDeleteকর্পোরেট স্কুলগুলি মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ দের নিজ নিজ বিচারে বাছাই করবে এমন কথা বলা হয়েছে।তার মানে উত্তীর্ণ হওয়ার একটা গুরুত্ব স্বীকার করা হয়েছে।মুশকিল হলো পরীক্ষা হবেনা।তবে উত্তীর্ণের মাপকাঠি কিভাবে ঠিক হবে এবং তা কর্পোরেট স্কুলগুলোর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে কি না।এখানে গিগ অর্থনীতি র তত্ত্ব দিয়ে শিক্ষানীতি কে বিশ্লেষণ করার সরলীকৃত একটা প্রয়াস কাজ করছে।সিদ্ধান্ত আগেই নেয়া হয়ে গিয়েছে।সমস্যার বিশ্লেষণ সেই গরুর রচনা দিয়ে শেষ হয়েছে
ReplyDeleteকর্পোরেট স্কুলগুলো শিক্ষাকে সর্বজনীন করবে না, বরং মুনাফা দ্বারা পরিচালিত হবার জন্য সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে নিয়ে যাবে শিক্ষাকে। এই process টি ক্রমশই আরো গতি পাচ্ছে। বিশেষ করে covid এর অজুহাত দেওয়া হচ্ছে। সমস্যা হচ্ছে সর্বজনীন শিক্ষা না থাকলে পুঁজিবাদী কাঠামোর legitimacy টা নষ্ট হতে বাধ্য। আজকের দিনেই মন দিয়ে পড়াশুনা করলে ভালো চাকরি পাওয়া যাবে এই মিথটি কতটা মিথ্যা সেটা প্রমাণ হয়ে গেছে। তাই প্রধানমন্ত্রী বলেছেন পকোড়া ভাজো। কিন্তু এই সব বলে বেশিদিন চলবে না। সেক্ষেত্রে (1) উৎপাদনে সকলের অংশ নেওয়া (কাজের সময় কমিয়ে) বা (2) উৎপাদনের ফসল সামাজিক ভাবে বণ্টন করার দাবি উঠবে। (1) এর উল্টোদিকে আমরা চলেছি (profit বাড়ানোর জন্য)। ইউনিভার্সাল basic income ও বিনামূল্যে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা দিয়ে দক্ষিণপন্থী রা পুঁজিবাদী সিস্টেমকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করবে।
ReplyDeleteযে বা যারা বাস্তব পরিস্থিতিকে অন্তর দিয়ে উপলব্ধি করেছেন তারাই পরীক্ষা না হওয়ার পক্ষে রায় দিয়েছেন। কুম্ভীরাশ্রু ফেলছেন অতীত বিস্মৃত একদল মানুষ যাদের সিপিআইএম বলা হয় (MICROSCOPIC MUNORITY). বহুজাতিক চিন্তনে ক্লাসরুম শিক্ষার দিন ত শেষের পথে ,এই শিক্ষার চালচ্চিত্রের ঊষাকাল ত ৯০ এর দশক ,চ্যালেঞ্জ অব এডুকেশন। শিক্ষা হবে উৎপাদনমুখী , এখন আরো নির্মম ভাবে এই ব্যবস্থা হাজির। দেখলাম সুদীন চট্টোপাধ্যায় (একদা উচ্চ্ মাধ্যমিক বোর্ডের সভাপতি ) বেশ করে গবেষণা করেছেন , মুখ্যমন্ত্রী এই পরীক্ষা বন্ধ বলতে পারেন কি না , ছাত্রদের কত ক্ষতি হল ইত্যাদি। আরে পরীক্ষা নামক বস্তুটির দফারফা ত বহুকাল আগেই শেষ করেদিয়েছে এই সুদিনবাবুরা। একসময় শুনতাম শিখায় নৈরাজ্য , বন্দুক, পিস্তল নিয়ে পরীক্ষা , আসলে ওই শিক্ষকদের সামনে নকল করতে গেলে বন্দুকই লাগত , পরে আর লাগে নি দলদাসরা স্কুলে নকলের কারখানা খুলে ফেললেন। ওপেন স্কুল , ওপেন ইউনিভার্সিটি সেখানে যে কি পরীক্ষা হয়েছে তা ভগবানই জানেন !!!!!ধন্যবাদ অনিন্দ্যকে প্রাসঙ্গিক লেখাটির জন্যে। পার্থ সারথি চৌধুরী
ReplyDeleteপরীক্ষা না হয় বন্ধ হলো তা বলে স্কুলগুলো বন্ধ হয়ে যাবে? স্কুলজীবন শেষ, বাচ্চাদের হুড়োহুড়ি, মারামারি, টিফিন চুরি করে খাওয়া, মাস্টারদের পিছনে লাগা এসবই শেষ, সব কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার যুপকাষ্ঠে বলি। খেলার মাঠ নেই, স্কুল যাওয়া নেই, বাচ্চারা সব বাড়ির মধ্যে বন্দি, সারাদিন ল্যাপটপ আর মোবাইল। 40% স্টুডেন্টের তাও নেই। আমরা তো এই ব্যবস্থার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াব। AI এর নামে সব কিছু মেনে নেব?
ReplyDelete