আমূল বদলে যাচ্ছে যাপনের চালচিত্র
সঞ্জয় মজুমদার
সাত সকালে সুবলের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলাম। মাঝারি উচ্চতার বিশুদ্ধ বাঙালি, টিপটপ দেখতে সুবল যাদবপুর ৮বি অঞ্চলের একজন সফল মুদি ব্যবসায়ী। রোগী দেখার ফাঁক-ফোকরে সফল চিকিৎসকরা যেমন হেলায় বড় বড় ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি সামলান, সুবলকেও দেখেছি বিক্রি-বাটার মধ্যেই তাবড় FMCG'র এজেন্টের সাথে টুকটাক কথা চালিয়ে যেতে। বছর কুড়ির ব্যবসায় গত পাঁচ বছরে সুবলের দোকান প্রথম সারির FMCG (Hindustan Unilever, P&G, ITC, Britannia, Nestle, Dabur, Godrej আরও কত কী)'র ঝাঁ-চকচকে চোখ টেনে নেওয়া সাজানো-গোছানো জিনিসে ভরপুর। বছর তিনেক আগে কার্ডে কেনাবেচার জন্য কাঠখড় পুড়িয়ে একটা POS মেশিন কাউন্টারে রাখল। সঙ্গে ফোনে অর্ডার নেওয়া আর হোম ডেলিভারির সুবন্দোবস্ত।
আর জনসংযোগ? কলকাতায় পেট্রোল-ডিজেলের দাম একশোর দিকে হাঁটা দিক, জেনে না-জেনে চীন করোনার ফ্রি হোম-ডেলিভারি করুক, লকডাউনের গুঁতো থাক না-থাক, বাংলা যতই 'যশ'-স্বী হোক, অর্থনীতির রেখাচিত্র 'হায় হায়' করতে করতে যতই নামুক আর শেষমেশ বাংলা সবুজ হোক বা গেরুয়া, চব্বিশ ঘন্টা ক্লিন-শেভড্ সুবল সকাল সকাল বাঙালি খদ্দেরকে সামনের দিকে একটু মাথা ঝুঁকিয়ে চার-আনার হাসি মাখিয়ে গুড-মর্নিং বলবেই। মার্কেটিং ম্যানেজমেন্ট না পড়েও এসব হাবভাবের সাথে কেনাকাটার কোনও সম্পর্ক সে রাখেনি। ভাগ্যিস রাখেনি, না হলে আমার মতো বাঙালি, যারা বাংলা বনধ্, লকডাউন কেমন চলছে সেটা দেখতে বেশি করে রাস্তায় বেরয়, দেশের আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে সুবলদের সাথে আড্ডায় মাতে, তাদের বোধহয় সকালেই রাত্রি নেমে আসত।
মাছ-মাংস ফল সবজি মুদি এবং অন্যান্য সব কিছু মিলিয়ে প্রায় সবরকম আমিষ-নিরামিষ দোকানে উঁকি দেওয়ার অভ্যাস আমার আছে। বেচাকেনা ছাড়াও ক্রেতা-বিক্রেতার একটা আত্মিক যোগাযোগ প্রতিদিন দেখা সাক্ষাতের ফলে হয়েই যায়। এটা নতুন কিছু নয়। এর ফলে নিক্তিতে মেপে সঠিক ওজনে বাজারের সেরা দামের জিনিসপত্র নিয়ে আমি যে গর্বিত হয়ে বাড়ি ফিরি, তাও না। উল্টোদিকে, বিক্রেতার ছোটখাটো অপরাধ মার্জনা করে দিয়ে ছেঁড়াফাটা নোট বদল, কিছুই না কিনে খুচরো করিয়ে নেওয়া এবং আগের দিনের পচা মাছ, টক আম ইত্যাদি বদলের পরম সৌভাগ্যও ঘটে। ভীষণ হিসেবি শৃঙ্খলাপরায়ণ ভবিষ্যৎদ্রষ্টা সংসারী নই বলেই হয়তো দোকানির সাথে আলাপ জমিয়ে রাখার রণকৌশল অজান্তেই নিয়ে ফেলি।
তা যাই হোক, মাসখানেক হল কোভিড নেগেটিভ হয়ে ফুরফুরে মেজাজে এ হেন সুবলের সাথে জোড়া মাস্ক ভেদ করে ছ' ফুটের শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে আড্ডা চলছিল। আড্ডার একটু নমুনা দিই:
'বুঝেছ সুবল, বাজারে শুধু আড্ডা মারতেই আসব... পাঁচশো মুসুর আড়াইশো মুগ... কেনাকাটা আর কিছু হবে না... কাবলি তিনশো.. কালকের খবর শুনেছ?... মুম্বইতে পেট্রল সেঞ্চুরি করল। এরা বাঁচতে দেবে না আর... সার্ফ এক্সেল পাঁচশ...'
এইরকম আর কি। বেচাকেনার সাথে আড্ডা ফ্রি দিতে দিতে সুবল কিন্তু চিরকুটে আমার আইটেমগুলো লিখেই যাচ্ছে। এর মধ্যে হয়তো সেদিনের বাজার দর জেনে, দশটা দোকানে দরদাম করে, চারজনের সাথে দাম নিয়ে ঝগড়া করে নোটবুকে বাজারের ফর্দ সমেত কেউ এসে পড়েছে। সুবল তাকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। ফলে, সুবলের সামনে এখন দুটো ফর্দ। একজনকে মুম্বইয়ের পেট্রোলের দামের একটা মোটামুটি ব্যাখ্যা দিলেই চলবে, আর পরের জনকে টিক দিয়ে লিস্ট মিলিয়ে কোন জিনিসের দাম কী এবং কেন, তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করতে হবে। স্বাভাবিকভাবেই দ্বিতীয় গোত্রের ক্রেতা প্রথমজনের পরে এসে টাকাপয়সা এবং সময় একটুও বাড়তি খরচা না করে কাজ সেরে আগেই চলে যাবে, বলাই বাহুল্য।
'দাদা আর কিছু?', সুবলের প্রশ্ন আমাকে। আমিও এবার সজাগ হয়ে উঠেছি। কারণ, মুম্বইয়ের পেট্রোল দুশোয় পৌঁছনোর আগেই বাড়ি ফিরতে হবে। ইতিমধ্যে জনা ছয়েক আরও এসে পড়েছেন। তাতেও সুবল একটুও বিচলিত হয় না। ও জানে দাদা এবার দোকানের ঝাঁ-চকচকে তাকে চোখ বুলিয়ে অবশিষ্ট তালিকা শেষ করবে। হেঁসেলে চাল ডাল তেল নুনের স্টকের একটা ছবি মাথায় মোটামুটি থাকেই। কোনটা রি-অর্ডার লেভেলে পৌঁছেছে সেটার একটা আন্দাজ নিয়েই আসি। আর কিছু বেশি নিলে বা ভুলে গেলে বকা খাওয়ার বিষয়টাও তালিকায় থাকে। এত বছর বাজারে তীর্থ করে জিনিস ভর্তি ব্যাগের দিকে একবার তাকালে অন্তত বুঝতে পারি কত টাকার জিনিস আছে। এক-দু'বার বারো আনা দরদাম চেল্লামেল্লি করে, চার আনা বাঁচিয়ে, সারা মাসে ট্রেন বাস অটোয় যাতায়াতের ভাড়াও ওঠাতে না পেরে ক্ষ্যামা দিয়েছি। আর সবচেয়ে তৃপ্তির, কোনও দোকানে বাকির খাতা খুলে রাখিনি। কাজেই বাজারে আসি বিন্দাস মুডে। ঘরে বসে প্রাক-কোভিড জীবনের নস্টালজিয়ায় ভুগতে চাই না, বরং আগামী দিন আবার আগের মতো হবে, অর্থাৎ ভবিষ্যৎটা অতীতের মতো হবে- এই 'পোস্টালজিয়া'য় (বাজারের নতুন শব্দ) বাঁচতে চাই।
ডাক্তারবাবু ছাড়াও রাতারাতি গজিয়ে ওঠা কোভিড এক্সপার্টদের তালিকায় অ্যানিমাল প্রোটিন ঢুকে পড়েছে। ব্যস আর যায় কোথায়, বিল্টুর কপাল খুলে গেছে। তার মুরগির দোকানটা সুবলের মুদিখানা আর ওষুধের দোকানের মতো রমরমিয়ে চলছে। মুরগির গলা কেটে ছাল ছাড়িয়েই শুধু ক্ষান্ত হচ্ছে না, তার ডিম এবং সঙ্গে আলু পেয়াঁজ আদা রসুনও বাদ যায়নি। আলি আর রহমত তো ফল সবজি বেচে কুল করতে পারছে না। দিন দুয়েক রহমতের নাদুস-নুদুস ছেলেটাকে তার বাপের সাথে দেখতে না পেয়ে জিজ্ঞেস করলাম, 'কি ব্যাপার, তোমার ব্যাটা কোথায়?' প্রশ্ন শেষ হওয়ার আগেই উত্তর চলে এল, 'হোম ডেলিভারিতে পাঠিয়েছি।'
'অর্ডার ধরছ কী করে?'
'কেন দাদা, ফোনে, হোয়াটসঅ্যাপে।'
'বাজারেও তো খদ্দের কম নয়, এখানে সামলাচ্ছো কী করে?
'ঐ যে আপনার পাশে দাঁড়িয়ে আছে, শ্যামল।'
বোঝো কারবার। আমি ভাবছিলাম এও আমার মতো খদ্দের। পরে জানলাম, বিড়ির কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়ে শ্যামল এখন বেকার। আলির গ্রামেই থাকে। আপাতত আলি তাকেই সাগরেদ বানিয়ে নিয়েছে। শ্যামলেরও টু' পাইস রোজগার হচ্ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের বেশির ভাগটাই FMCG ব্যবসার মধ্যে পড়ে। মানে যা প্রতিদিন বাজারে আসবে, খরচাও হয়ে যাবে খুব তাড়াতাড়ি। এইজন্যই Fast Moving. কিন্তু মুশকিল হল FMCG'র বেশির ভাগ জিনিস ব্র্যান্ড নাম দিয়ে বিক্রি হয়। ফলে, সুবল মুদিখানার দোকানে এই ধরনের ব্যবসা করতে পারে, যেটা বিল্টু রহমত বা আলি আপাতত পারছে না। কোনওদিন পারবে না, এ কথা কিন্তু জোর দিয়ে বলা যাবে না। তবে দিনের শেষে লকডাউনের বাজারে এরা চারজনেই অনলাইন-অফলাইন ব্লেন্ডিং করে দিব্যি ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। কর্মী ছাঁটাই তো করেইনি, উল্টে অন্য জায়গা থেকে হোঁচট খাওয়া লোকজনকে কাজে লাগিয়েছে আর অনলাইনে অর্ডার নিয়ে হোম ডেলিভারিতে রোজগার বাড়িয়েছে। সুবল তো এর মধ্যে স্যুইগি, জোমাটো'র হাতও ধরে ফেলেছে। বাজার ধরে রাখার কোনও রাস্তাই বাদ রাখেনি। মাস ছয়েক পরে হয়তো দেখব- www.alirsobji.com কিংবা www.biltuchiken.com নাম দিয়ে ওয়েবসাইটও তৈরি হয়েছে।
উপরে যা কিছু লিখলাম সবটাই কিন্তু আদ্যোপান্ত সত্যি। তবে সচেতন পাঠক বুঝতেই পারছেন, দোকানির নামগুলো শুধু পরিবর্তন করেছি। যাদবপুর ৮বি'র মতো একটা সাধারণ বাজারের যদি এই ছবি পাই, তাহলে চারিদিকে যতই 'গেল গেল' রব উঠুক, একটু মাথা ঠাণ্ডা করে তলিয়ে ভাবলে বোঝা যাবে, বাজার কিন্তু সে কথা বলছে না, বলবেও না। বাজারে চাহিদা আর জোগানের খেলাটা অনেকটা গরম হাওয়া ঠাণ্ডা হাওয়ার মতো। একজন আরেকজনকে টানে। শেষমেশ ভারসাম্যটা বাজার নিজেই তৈরি করে নেয়।
তাই বলে চোখ উল্টে বসে থাকলে হবে না। প্রাক-কোভিড এবং কোভিড-পরবর্তী উপভোক্তার আচার-আচরণ, চিন্তাভাবনা, কেনার ক্ষমতা সবই যে পরিবর্তন হবে সেটা তো স্বাভাবিক। এইসব জেনে ফেলা বিপদের মধ্যে বাজার খুব একটা ঘাবড়ায় না। প্রতিকূল-অনুকূল সব পরিস্থিতির জন্য শেয়ার বাজারের বিনিয়োগকারীরা প্রস্তুত থাকেন। সে কারণেই লকডাউন, বেহাল অর্থনীতি, কর আদায়ের ঘাটতির পরেও শেয়ার বাজার দিব্যি বৃদ্ধি পাচ্ছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রয়োজনীয়-অপ্রয়োজনীয় জিনিসের তালিকাও বদলাতে থাকে। এর উপর সরকারি সিদ্ধান্ত, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মহলের বাস্তব পরিস্থিতি, এসব তো আছেই।
আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ কথা: প্রযুক্তি। আমাদের নিত্যকর্ম পদ্ধতির অনেক কিছুই যে অনলাইনে করা সম্ভব সেটা কিন্তু সবাই বুঝতে পারছি। তার চেয়েও বড় কথা, বাজার এবং তার বিনিয়োগকারীরাও বুঝতে পারছে। অভাব উদ্ভাবনের জন্ম দেয়, আর তা শুধু মানুষের মেধাশক্তির সহজাত ক্ষমতা দিয়ে পূরণ করা যাচ্ছে না। প্রতিযোগিতার বাজারে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হলে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা আরও দ্রুত নিখুঁত এবং পরিণত হতে হবে। কম্পিউটার কিন্তু আজ থেকে ত্রিশ-চল্লিশ বছর আগে সেই মঞ্চ তৈরি করেছিল। দুঃখের বিষয়, আজকের বাস্তবতায় তা কিন্তু একেবারেই যথেষ্ট নয়। নিত্যনতুন সমস্যায় জর্জরিত পৃথিবীতে, অসম্ভব ক্ষিপ্রতায় নিখুঁত এবং অভিনব সমাধানের রাস্তা বার করে আনতে হবে। রাস্তা একটা বেরিয়েছে: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। এই প্রসঙ্গে অনুসন্ধিৎসু সচেতন পাঠককে অনুরোধ করব, অনিন্দ্য ভট্টাচার্য'র বহু চর্চিত 'আশায় বাঁচে চাষা: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও একুশ শতকের রাজনৈতিক অর্থনীতি' শীর্ষক 'উপপথ' প্রকাশনার বাংলা ভাষায় লেখা বইটি পড়ে নিতে।
শেষমেশ যত কথাই বলি না কেন, না বলা কথার তালিকা দীর্ঘ হতে থাকে। এই লেখাতেও তার অন্যথা হল না। 'যশ'-এর তাণ্ডবে যেদিন উপকূলের গ্রামগুলো লণ্ডভণ্ড হল, সেই রাতে ঘুম আসছিল না। দোতলার বারান্দা থেকে পাড়ার নির্জন নিস্তব্ধ গলিটায় এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ভাবছিলাম, মৃত্যুই যদি জন্মের একমাত্র শর্ত হয় তবে আর ভয় কীসের? ভাবনাটা যে ঠিক ছিল, পরদিন সকালে প্রমাণ পেলাম। টেলিভিশনের পর্দায় সন্দেশখালিতে জনৈক মৎস্যজীবী তপন সর্দারের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী কন্যা, ঝড় জলে বিধ্বস্ত ভেঙে পড়া বাড়িটার সামনে দু' চোখ ভরা আশা নিয়ে সাংবাদিককে বলছে, 'সব বই ভেসে গেছে, কিচ্ছুটি নাই। স্কুলের মাস্টারের থেকে বই চেয়ে নিয়ে এসেছি। পড়তে হবে যে।'
অসম্ভব প্রাসঙ্গিক লেখা। বুনোটটা একশো সুতোর আর জমিন বেশ পোক্ত
ReplyDeleteদেবাশিস মজুমদার
খুব ভালো এবং ইনফরমেটিভ লেখা!
ReplyDeleteখুব ভালো লাগলো। বর্তমানের কঠিন বাস্তব বর্ণনা ।
ReplyDeleteআর একটা সুন্দর,ঝরঝরে,প্রাসঙ্গিক লেখা। খুব ভালো লাগলো।
ReplyDeleteAmazing write-up!
ReplyDeleteEkta lekha ja manastatyer janma day.
ReplyDeleteমুগ্ধ হয়ে পড়লাম একটা বর্ণও বাদ না দিয়ে।এত প্রাসঙ্গিক লেখা বহুদিন পর পড়লাম এবং ভবিষ্যতে এরকম লেখা আরো পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।
ReplyDeleteঅত্যন্ত প্রাসঙ্গিক এই লেখাটি পড়ে ভালো লাগলো। রচনাশৈলী প্রশংসনীয়।
ReplyDeleteপ্রাসঙ্গিক এবং বাস্তব বোধের উপর ভর করে সাবলীল লেখাl ভালো লাগলো l আরো এই ধরনের লেখার অপেক্ষায়..।.
ReplyDeleteP. B.
Sir www.subolermudikhana.com ta hbe na?
ReplyDeleteখুব ভালো লাগলো আমার।
ReplyDeleteখুব ভালো। দারুন বাস্তব। এই ধরনের লেখার অপেক্ষায় থাকলাম স্যার।
ReplyDeleteভীষন ভালো লেখা..... অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক.....
ReplyDeleteআরো একটা চমৎকার ঝরঝরে ফিচার। খুব প্রাসঙ্গিক।আমিও একমত যে জীবন নিজের চলার ছন্দ ঠিকই খুঁজে নেবে।
ReplyDeleteখুবই প্রাসঙ্গিক
ReplyDeleteনিজের বাস্তব অভিজ্ঞতাকে অত্যন্ত সুন্দরভাবে সহজ করে সাজিয়েছেন সঞ্জয়দা । বর্তমান সময়ের এই কঠিন পরিস্থিতিতেও সঞ্জয়দা তার বলিষ্ঠ লেখনীর মাধ্যমে রসিয়ে রসিয়ে বর্ণনা করেছেন নিজের চোখে দেখা ঘটনাসমূহ । কঠোর বাস্তব কিন্তু কত সহজ ও স্বাভাবিক !!!! আমাদের পৃথিবী এখন অতি দ্রুতই বদলাচ্ছে । পরিবর্তন সময়ের ধর্ম কিন্তু বেশ ক'বছর ধরে পৃথিবী যেন অতিরিক্তই দ্রুততার সঙ্গে বদলিয়ে যাচ্ছে । এই বদল এর সাথে পা মিলিয়ে যারা চলতে পারবে না তারা অচিরেই হারিয়ে যাবে । জ্বিনের নাম আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা । প্রদীপ ঘষে ঘষে বেরোনো এ দৈত্য, যার ক্ষমতা অসীম । 😈
ReplyDeleteআমাদের জীবন এখন আর অতীত, বর্তমান আর ভবিষ্যতে বিভক্ত নয়; এ জীবন এখন শুধু দু'ভাগে বিভক্ত-- করোনা পূর্ব জীবন আর করোনা উত্তর জীবন । নদীর এক পাড় ভাঙলে যেমন অন্য অন্য পাড়ে বসতি গড়ে ওঠে অচিরেই, গাছের এক ডাল ভাঙলে যেমন অন্য ডালে ফুটে ওঠে ফুল তেমনি করোনার ফলে বিভিন্ন কাজ যেমন হারিয়ে যাচ্ছে সেরকমই বহু কাজের ক্ষেত্র গড়েও উঠছে । সময় শুধু আমাদের মধ্যে শুধু নিরাশারই জন্ম দেয় না-- সাথে সাথে নিয়ে আসে আশার আলোও । তাই যেকোনো পরিস্থিতিতেই সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে তাকে ধরতেই হবে । নৈরাশ্যের পরিস্থিতির মাঝে এ লেখায় রয়েছে তাই আশার বাণী । ♥️
💡পরিশেষে ছোট একটি ফুটনোট দিয়ে কথা শেষ করি, সঞ্জয়দার লেখায় দারুণ করে অনিন্দ্যদার বইটির বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে; যাদের সম্ভব হবে বইটি অবশ্যই সংগ্রহ করে পড়ে নেবেন । ভালো জিনিসের বিজ্ঞাপন যত হবে, ততোই ভালো কিন্তু। 😄
এমন ঝরঝরে গদ্যে অমন রূঢ় বাস্তবকে ফুটিয়ে তোলার মধ্যে রয়েছে অসীম মুন্সিয়ানা। লেখককে ধন্যবাদ।
ReplyDeleteসাবলীল ভাষায় অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক একটি লেখা। খুব ভালো লাগলো।
ReplyDelete