Saturday, 14 August 2021

ভাবের ঘরে চুরি

দুটি বা একটি প্রশ্ন যা করতে পারি!

অনিন্দ্য ভট্টাচার্য


 

দু' চারটে বিষয় নিয়ে বিভ্রান্তি যেন এখনও কাটছে না। 

'বৃদ্ধতন্ত্রের' বিদায়?

বিগ মিডিয়া এবং বিভিন্ন মহল থেকে বারবার বলা হচ্ছিল, মূলত সিপিএম দলকে উদ্দেশ্য করে, যে এদের নেতারা সব বৃদ্ধ হয়ে পড়েছেন এবং এই সাদা চুলের নেতৃত্বে পার্টিটা আর চলছে না, নবীন প্রজন্মকে এবার উঠিয়ে নিয়ে আসা উচিত ইত্যাদি ইত্যাদি। অথচ সব রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বেই কিন্তু বৃদ্ধদের রমরমা! তাহলে সিপিএম'এর উদ্দেশ্যেই কথাটা কেন বারবার বলা? এটা আসলে এক ধরনের চাল। সিপিএম'এর সমস্যাটা যে নেতৃত্বে বৃদ্ধদের আধিক্য নয়, বরং তাদের চিন্তা-চৈতন্যের বার্ধক্য- তা বললে কেঁচো খুড়তে সাপ বেরতে পারে। তাই বহু প্রশ্ন ধামাচাপা দিতে বৃদ্ধদের বলির পাঁঠা করাই সাব্যস্ত ছিল। রাজনীতিতে এরকম কোনও নিদান নেই যে বৃদ্ধ হলে তার নেতৃত্ব দানের ক্ষমতা চলে যাবে, অথবা, অল্পবয়সীদের নেতৃত্বে এনে বসিয়ে দিলেই তরতর করে সংগঠন এগোতে থাকবে ও চিন্তা-চেতনার দুনিয়া খুলে যাবে। 

আমরা যদি চারপাশে তাকাই, ধরুন, বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বে আজ যিনি আসীন ও দেশের প্রধানমন্ত্রী, তাঁর বয়স ৭০ পেরিয়েছে। তাঁর নিজ দলের সাফল্যের নিরিখে তিনি এখনও অত্যন্ত কুশলী এক রাজনৈতিক নেতা। আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরও বয়স ৬৫ কি ৬৬। আমরা দেখব, ১৯৪২ সালে গান্ধীজী যখন 'ভারত ছাড়ো' আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন তখন তাঁর বয়স ছিল ৭২-৭৩। চীনে মাওজেদং'এর মৃত্যুর (১৯৭৬) পর গত শতকের ৮০-র দশকে দেংজিয়াওপিং'এর নতুন করে যখন পার্টির নেতৃত্বে অভিষেক হল তখন তাঁর বয়স ৮০'র কাছাকাছি। সেই দেং'ই কিন্তু চীনের অর্থনীতির গতিপথটাকে বদলে দিলেন। অথচ এঁদের বয়স নিয়ে কুতর্কগুলি ওঠেনি! বেশি বয়স হলেই কেউ অক্ষম হয়ে পড়বেন অথবা বয়স কম থাকলেই খুব সুস্থভাবে যথাযোগ্য নেতৃত্ব দেওয়া যাবে- এইরকম কোনও বিধি-বিধান কি কোথাও লিপিবদ্ধ আছে? তাহলে নানান টালবাহানার পর সিপিএম কার্যত তা মেনে নিল কেন? অবশ্যই দিশেহারা ও বিভ্রান্ত হয়ে। 

আর এই বিভ্রান্তি থেকেই বয়সের 'গোলযোগে' সিপিএম তাদের বিভিন্ন কমিটিতে সম্প্রতি নানারকম নিয়মেরও প্রবর্তন করে ফেলল। যেমন, ৭২ বছর হয়ে গেলে পাকাপাকি অবসর, ৬০ পেরিয়ে গেলে রাজ্য কমিটিতে নতুন অন্তর্ভুক্তি নয়, এরকম আরও বহু কিছু। ওরা কি এটা বুঝল না যে, মূলত বিগ মিডিয়ার তরফে আসলে তাদের রাজনৈতিক অসফলতাকে 'বৃদ্ধতন্ত্র' বলে হাসির খোরাক করা হয়েছিল! অন্ধ মানুষকে যেমন 'কানা' বলতে নেই (কারণ, সে ব্যক্তির অন্ধত্ব এক সক্ষমতা-বিশেষ), তেমনই বয়স্ক মানুষকে বৃদ্ধ বলে তাঁর সক্ষমতা-বিশেষকে উপহাস ও খর্ব করাও শিষ্টাচার নয়। একজন মানুষ ৭০ কি ৭৫ অথবা ৮০ বছর বয়সেও সক্ষম থাকতে পারেন। সকলের মনে না থাকতে পারে, কিন্তু সিপিএম ও অন্যান্য বামপন্থীদের নিশ্চয়ই খেয়াল আছে, জরুরি অবস্থার বিরুদ্ধে ১৯৭৭ সালে যখন জনতা পার্টি তৈরি হয়, তার মূল উদ্যোক্তা ও সংগঠক ছিলেন জয়প্রকাশ নারায়ণ, যার বয়স তখন মধ্য-৭০। 

আসলে সমস্যাটা অন্য জায়গায়- তরুণ বনাম বৃদ্ধ বিতণ্ডার সঙ্গে এগুলোর কোনও সম্পর্ক নেই। সমস্যাটা সমাজ-বাস্তবতাকে বোঝা, মানুষের সমস্যাগুলিকে উপলব্ধি করা, রাজনীতির জনগ্রাহ্য পথকে সাব্যস্ত করার মধ্যে নিহিত। এখানেই প্রায়-গোটা সিপিএম পার্টিটা কার্যত অক্ষম হয়ে পড়েছে। তরুণ-বৃদ্ধ-মধ্যবয়সী সকলে মিলে। তাদের দৃষ্টিভঙ্গিজনিত সমস্যার কারণেই তারা আজ এ রাজ্যে অনেকটাই অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গেছে। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের কৃষক অভ্যুত্থানকে তারা মোকাবিলা করেছিল টাটা'র দৃষ্টিভঙ্গি থেকে। অথচ, অশীতিপর বৃদ্ধ ও অবসরপ্রাপ্ত জ্যোতি বসু কিন্তু পার্টির এই খামতিটাকে খানিকটা হলেও বোধ করেছিলেন। সিঙ্গুরে টাটা'র দল যখন প্রথম জমি দেখতে যায় (২০০৬), তখন গ্রামের মহিলাদের তাড়া খেয়ে তাদের পালিয়ে আসার কথা শুনে তিনি মন্তব্য করেছিলেন, 'কৃষক সভাকে না জানিয়ে টাটা'র দল ওখানে গেল কেন?' সেদিন জ্যোতিবাবুর এই কথার অন্তর্নিহিত তাৎপর্যকে বোঝার ক্ষমতায় পার্টি ছিল না। তার মাশুল তারা এরপর দিয়েই গেছে; আজ এসে বিধানসভায় শূন্য আসন প্রাপ্তিতে খানিক বোধোদয়ের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছে। 

তবে এ কথা তো ঠিক, একটি দল বা একটি আদর্শ অথবা একটি আন্দোলনের সার্থকতা নির্ভর করে তার পেছনে তরুণদের বিপুল সমাবেশকে ঘিরেই। অর্থাৎ, একটি আন্দোলন বা একটি সংগঠন তখনই তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে ওঠে যখন তার পেছনে তারুণ্যের জমায়েত দেখা যায়। তার মানে কিন্তু এই নয় যে, অতএব, তরুণদের হঠাৎ করে এনে উচ্চতর নেতৃত্বে বসিয়ে দিতে হবে। কারণ, অভিজ্ঞতা, প্রজ্ঞা, মতাদর্শ, রাজনৈতিক লাইন, সাংগঠনিক ক্ষমতা- নেতৃত্বের জন্য এগুলোর প্রাসঙ্গিকতাই সর্বাধিক। এই গুণসমূহ একজন তরুণ অথবা বৃদ্ধ উভয়ের মধ্যেই বিরাজ করতে পারে। তাই বয়স নয়, নেতৃত্বে আসতে হলে বিচার্য হওয়া উচিত প্রজ্ঞা, সাংগঠনিক দক্ষতা ও রাজনৈতিক চিন্তার মিশেলে এক আস্থাভাজন, আবেগলব্ধ পরিণত মনস্কতা। বয়সের কোটা বেঁধে দিয়ে সিপিএম সম্ভবত আবারও এক যান্ত্রিক অভিসারে নিজেদের গলদঘর্ম করে তোলার আয়োজন করল।

শিক্ষার আতিশয্য!

অনুরূপ, আরও একটি ভাবের ঘরে চুরি পরিলক্ষিত হচ্ছে। তা এই যে, গত দেড় বছর ধরে এখানে ও অন্যান্য রাজ্যেও করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনের কারণে স্কুল-কলেজ সব বন্ধ হয়ে আছে। তা এক অভূতপূর্ব পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। 

লকডাউন উচিত কি উচিত নয়, অথবা শিথিল লকডাউনে সব কিছু খুলে গেলেও স্কুল-কলেজ না খোলাটা যথার্থ কিনা- এইসব তর্কে আপাতত যাচ্ছি না। আমার বলার কথা এই, এ রাজ্যে (এবং অন্যত্রও) গুটি কয়েক এলিট স্কুল-কলেজ বাদ দিলে প্রাক-করোনা সময়ে গত ২০-২৫ বছরে কোন স্কুল-কলেজে পড়াশোনা করে সকলে জগৎ-সংসার উল্টে দিয়েছে? গত ৩০-৩৫ বছর ধরে সকলেই এ রাজ্যে দেখছেন, স্কুল-কলেজে নাম-রাখা আর উপস্থিতিটুকুই সার, বিকেলের খেলা বন্ধ রেখে রাত গড়িয়ে কোচিং সেন্টার আর টিউটোরিয়ালে ভীড় জমিয়ে নোট সংগ্রহ করে তবে ছাত্র-ছাত্রীদের ধ্বস্ত হয়ে বাড়ি ফেরা। অর্থাৎ, টাকা গুনে দেওয়া একটা সমান্তরাল শিক্ষাব্যবস্থা জোরকদমে চলতে চলতে আজ এসে স্বাভাবিক এক ব্যবস্থাপনায় পরিণতি পেয়েছে। এ নিয়ে কারও কোনও খেদও দেখি না, আক্ষেপও নয়; যে কারণে অনার্স'এর ছাত্ররাও এখন কোচিং'এ অথবা শিক্ষকের বাড়িতে গিয়ে পয়সা দিয়ে আলাদা করে পরীক্ষা-পাসের নোট কিনে আনছে। 

এই জন্যই কি ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে স্কুল-কলেজ খোলার ব্যাপারে তেমন তাগিদ নেই? বামপন্থীদের বিভিন্ন গণসংগঠনগুলি তো রাস্তায় নেমে স্কুল-কলেজ খোলার দাবিতে সোচ্চার, কিন্তু ব্যাপক ছাত্র-ছাত্রীদের কেন এই প্রশ্নে তেমন হেলদোল নেই? এলিট স্কুল-কলেজগুলির ক্ষেত্রে না হয় বোঝা গেল, তাদের আধুনিক অনলাইন ব্যবস্থায় ও নানাবিধ প্রাযুক্তিক কৌশলে তারা উতরে যাচ্ছে। কিন্তু ৯০ শতাংশের ওপর সর্বজনীন স্কুল-কলেজগুলিতে তাহলে হচ্ছে টা কী? গোপনে পাড়ার কোচিং সেন্টার আর টিউটোরিয়াল খ্যাত শিক্ষকদের বাড়ি বাড়ি থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের সরাসরি নোট ক্রয়? গত ৩০-৩৫ বছর ধরে এই তো শিক্ষার মূলধারা! স্কুলে মাইনে দিতে হয় না কিন্তু কোচিং সেন্টারে হাজার হাজার টাকা গচ্ছা দিয়ে গরিব শ্রমজীবী ঘরের ছেলেমেয়েদের 'শিক্ষা' কিনতে ওষ্ঠাগত প্রাণ! প্রায় সকলের দুটো করে স্কুল- এক নং স্কুল, যেখানে নাম নথিবদ্ধ, শংসাপত্র মিলবে; দুই নং স্কুল, যেখানে আগত পরীক্ষার প্রশ্নের উত্তর কিনতে পাওয়া যাবে। যদি এই ব্যবস্থাই চলে আর তার বিরুদ্ধে কেউ কিছু না বলতে পারে, তবে আজ হঠাৎ 'শিক্ষা প্রাঙ্গণে শিক্ষার দাবি'তে (স্কুল-কলেজ খোলা) ছাত্র-ছাত্রীরা সোচ্চার হতে যাবে কেন?

'বৃহন্নলা ছিন্ন করো ছদ্মবেশ'। সমাজ বাস্তবতা এক আর আমাদের দাবি আরেক- তা জনতা শুনবে আর মানবেই বা কেন?


5 comments:

  1. প্রদ্যুম্ন বন্দ্যোপাধ্যায়14 August 2021 at 18:26

    অনিন্দ্য ঠিক জায়গাগুলো ধরেছে। কমবয়েসী দের ভিড় বাড়িয়ে বৃদ্ধ দের নিস্তেজ করে কমিউনিস্ট দের উত্থান ঘটানোর নিনাদ একধরনের সেই বাজার গরম করা চিরকালিন ঘটনারই পুনরাবৃত্তি। বঙ্গে মার্ক্স বাদ চর্চা র যে সিপিয়েমি প্রকরন গড়েওঠে তা অনেকটা এইরকম। প্রতিপক্ষ, ভিন্ন পথযাত্রী,তাদের বশ্যতা মানতে অস্বীকার করা মানবকদের ঠান্ডা করতে সিদ্ধ হস্ত এইদলের কাঠামোর রন্ধ্রে রন্ধ্রে গাঁথা আছে কঠোর নজরদারির একবিস্তৃত বিন্যাস । এই তন্ত্রের আওতায় এলে রাষ্ট্রসুলভ দৃষ্টি ভঙ্গি জোরদার হয়, কমবয়েসী বেশী বয়সী এখানে একাকার।সব কিছু ওপর থেকে দেখা হয়ে ওঠে দস্তুর।স্যোসাল ইন্জিনিয়ারিং হয়ে ওঠে রাজনীতি র মূল হিসেবনিকেশ। সঙ্গে বাড়তি পাওনা দৈনন্দিন সন্ত্রাস।আর এই সমস্ত কিছু র ওপরে থাকে, সুদীপ্ত কবিরাজের ভাষায় ,জলদগম্ভীর স্বরে দ্বান্দ্বিক
    ও ঐতিহাসিক বস্তুবাদ উচ্চারণ যা বাধ্যতামূলক ।

    ReplyDelete
  2. প্রায় সম্পূর্ণ সহমত|Private tution এর বিষবৃক্ষ বামফ্রন্ট বা তারও আগে যুক্তফ্রন্ট এর আমলে শুরু|মাস্টারমশাই নিজের ছাত্র কে classroom এর বাইরে অর্থের বিনিময়ে পাঠ দান করছেন (সঙ্গে note এর Xerox দিচ্ছেন)-সর্বনাশী প্রভাব নিহিত ছিল সেইখানে|90 এর দশকে চমকে উঠে ছিলাম, যখন জানলাম pg classes এর studentsরাও এখন tutions নেয়|
    সিঙ্গুরে বামফ্রন্ট conceptual ও procedural অনেক ভূল করেছ-এটা বহুল চর্চিত বিষয়|
    আর, বিধানসভা আজ বাম শূন্য হবার মূল কারণ, এক কথায়- তৃণমূল স্তরে জনসংযোগ হারিয়ে ফেলা|

    ReplyDelete
  3. ঠিক কথা বলেছিস।
    বৃদ্ধ সিপিএম চিন্তা ভাবনায়।
    কম বয়েসীরা অশ্লীল, আধালুম্পেন।

    শিক্ষাক্ষেত্রে ও হক কথা।
    শুধু বাংলায় নয় পাশ্ববর্তী রাজ্যগুলি একই হাল।
    শিক্ষায় ভাঁওতাবাজি চুড়ান্ত।

    আজ বিকেলে বেরিয়ে এক অচেনা লোকের কথা শুলাম। বাইকে বসেসেই বললছ কাল থা‌থেকে রান্না বন্ধ কারণ ৫ টাকায় মমতা সরকা খাওয়ার দিচ্ছে ডিম সহ, ফ্লটে থাকে। আসামেও দেখেছি, মূলত দিন শ্রমিক ও রিক্সা চালকদের প্রিয় জায়গা।
    বিকাশের নবদিগন্ত!

    ReplyDelete
  4. 🥕🛤️
    খুব ভাল বলেছেন অনিন্দ্যদা । একদম মূল জায়গাটা🎯 আপনি ধরতে পেরেছেন এবং গুছিয়ে লিখেছেন । এই দিকটা নিয়ে কিন্তু অনেকেই কিছু বলছে না । পশ্চিমবঙ্গের বামফ্রন্ট বা সিপিএমের এই অধঃপতনের কারণ প্রধানত তাদের দৃষ্টিভঙ্গির দৈন্যতা । চিন্তাভাবনায় এরা বৃদ্ধ হয়ে যাচ্ছে, সেইজন্যই এরা দিনের-পর-দিন হারিয়ে যাচ্ছে । পুরোনো জায়গা ফিরে পেতে গেলে শুধুমাত্র কিছু বুড়ো রাজনৈতিক নেতাদের সরিয়ে নতুন যুবক- যুবতী রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদের আনলেই অবস্থার পরিবর্তন হবে না । স্বচ্ছ ও নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ছাড়া পশ্চিমবঙ্গের সিপিএমের অবস্থা পরিবর্তনের কোনও সম্ভাবনা নেই ।
    • এই লেখা প্রসঙ্গে আপনি বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার যে কঙ্কালসার রূপটি ছোট করে তুলে ধরেছেন সেটাও যথার্থ ।
    👍🏻👌🏼♥️🌹

    ReplyDelete
  5. No doubt jyoti Basu was a mass leader.Most of cplm leader basically bureaucratic in nature.They don't have dialectical vision blindly follow the rules in mechanical way.
    This party can't produce solid leader of younger generation.

    ReplyDelete