Sunday, 9 August 2020

প্রশ্নগুলো সহজ আর উত্তরও তো জানা!

করোনা আক্রান্তের শ্রেণি বৈষম্য

উত্তান বন্দ্যোপাধ্যায়

কতকগুলো প্রশ্নের উত্তর জানতে ইচ্ছে করে:

১) যে সমস্ত রাষ্ট্র নেতা, রাজনীতিবিদ, এমএলএ, এমপি, মন্ত্রীর করোনা পজিটিভ হয়েছে তাদের কি সবারই সিম্প্টোমেটিক পজিটিভ? এবং সব্বাই কি কো-মরবিড পেশেন্ট? অ্যাসিম্পটোমেটিক কেউ নন? প্রত্যেকেরই কি হাসপাতাল/ নার্সিংহোম প্রয়োজনীয়? সাধারণ মানুষ যাদের অ্যাসিম্পটোমেটিক পজিটিভ হয়, তাদেরকে তো মাইক ফাটিয়ে বলা হয় হোম কোয়ারিন্টাইনে থাকুন। তো এঁদেরকেও কি তা বলা হয়? তাহলে এঁনারা প্রত্যেকেই কীভাবে হাসপাতাল/ নার্সিংহোমে ভর্তি হন?

২) হাসপাতাল/ নার্সিংহোমে ভিআইপি'রা এত অনায়াসে বেড পাচ্ছেন কীভাবে? কই, অতি প্রয়োজনীয় রোগীরও তো হাসপাতালে বেড জোগাড় না করতে পেরে মৃত্যু হয়েছে চিকিৎসার অভাবে। মাঝে মাঝেই সে সব খবরেও আসে। তা কি ওনাদের ক্ষেত্রেও হয় ? না হলে, হয় না কেন? তাঁরা কি লক্ষ লক্ষ টাকার বিল মেটান? নাকি কোনও গৌরী সেন তাঁদের সবসময়েই থাকে? নাকি নেতা বলে মুফতে পেয়ে যান সব? আমি সারা দেশের কথাই জানতে চাইছি। শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়।

৩) এরপর কোনও নেতা বা মন্ত্রীর যদি মৃত্যু হয় তাহলে এমন কি হয় যে বাড়ির লোকেরা বা কেউ জানতেও পেলেন না কবে তার দেহ সৎকার হল? ফোন করে করেও কোনও সদুত্তর পাওয়া যাবে না। এমনটা কি হয় সমাজের উঁচুতলার মানুষদের ক্ষেত্রে?

আরও একটি প্রশ্নের উত্তর চাই:

৪) করোনায় মৃতদেহ কেন দেখতে দেওয়া হয় না? কেন প্রিয়জন ও নিকট আত্মীয়কে শেষ শ্রদ্ধা ও সম্মান জানাতে দেওয়া হয় না? রাষ্ট্র কি প্রিয়জনের কাছ থেকে কাউকে বিচ্ছিন্ন করতে পারে? এই 'বিজ্ঞান'টুকু নিয়ে কেউ তো জিজ্ঞাসা করুক! শবদেহ থেকে কি ড্রপলেটস ছড়ায়? প্রশ্ন। করোনা ভাইরাস শবদেহে কতক্ষণ বাঁচে? কোনও ভাইরাস তো বেঁচেই থাকে আশ্রয়দাতা জীবন্ত কোষের উপর। আশ্রয়দাতার কোষ মৃত হলে ভাইরাসটি তবু কি বেঁচে থাকে? থাকলে কতক্ষণ? 

 

1 comment:

  1. খুব সঙ্গত প্রশ্ন। নেত-মন্ত্রী-ক্ষমতাবানদের সুযোগ সুবিধার ব্যাপারগুলো ছেড়েই দিচ্ছি, কেননা শুধু করোনার আবহেই নয়, এমন সুযোগ তারা বরাবরই পেয়ে থাকেন। ভারতবর্ষ সেই অর্থে এখনো গণতান্ত্রিক মানসিকতা সম্পন্ন হয়ে ওঠে নি। কিন্তু চার নম্বর প্রশ্নটা বৈজ্ঞানিক মানসিকতা দাবী করে। মৃতদেহ দেখতে না দেবার বিধান যত দূর মনে পড়ছে সরকার নিজেই চালু করে ছিল। এর কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা কিন্তু তখন দেওয়া হয় নি। এই অবৈজ্ঞানিক সিদ্ধান্ত তখন মানুষের মধ্যে ভয় সঞ্চার করেছিল। অনেকটা ডাইনি-ভীতির মতো। আর তাই জনসাধারণও বিনা প্রতিবাদে মেনে নিয়েছিল। আজ তিন-চার মাস পরে আতঙ্ক কাটিয়ে মানুষর মনে প্রশ্নগুলো উঠছে। এটা ভাল লক্ষ্মণ।

    ReplyDelete