মায়ের মৃতদেহের পাশে দুধের শিশু!
সঞ্জয় মজুমদার
সরকারি নির্দেশে এবং তার বাইরেও 'থোড়াই কেয়ার' করে অনেক তালাই খুলে গেছে, বেশ কিছুটা। এবার পুরোটা খোলার দিন গুনছে শয়তান ভাইরাসটা। আহ্ কি আনন্দ। তালা খুললেই জমায়েত হবে, হবেই। জমায়েত হলে চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলতায় উশৃঙ্খল মানবশৃঙ্খল জন্ম নেবে। নেবেই। এটাই তো চাই। মানুষের শরীর ছাড়া যে করোনা বাঁচবে না। মানুষের শরীর তো তার বেঁচে থাকার আধার। আর ভালোবেসে ভাইরাসকে মানুষ তো তার শরীর দেবে না। কাজেই অদৃশ্য হয়ে ছলে-বলে-কৌশলে দু-পেয়েদের শরীর ভোগ করতেই হবে। ঠিক ধর্ষকদের যেমন জোর করে মানুষের শরীর চাই, এও অনেকটা তেমন। গণধর্ষণের নতুন সংজ্ঞা। এত ভালোবাসা কেউ কখনও দেখিয়েছে নাকি। হ্যাঁ দেখিয়েছে। 'করোনা'র জাতভাইরা দিব্যি দেখিয়েছে। কই তখন তো দুপেয়েগুলো এত দীর্ঘস্থায়ী ভয় পায়নি।
মুখবইতে বাংলাদেশের একটা মেডিক্যাল কনফারেন্সের নানান বক্তব্য শুনছিলাম। মিষ্টি বাঙাল ভাষায় সে দেশের একজন প্রথিতযশা চিকিৎসা বিজ্ঞানী, যিনি ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনে কর্মসূত্রে যুক্ত ছিলেন এবং একজন ভাইরোলজিস্টও বটে, খুব যত্ন করে পাওয়ার পয়েন্টে সমবেত অভ্যাগতদের সামনে ভাইরাস এবং বিশেষত করোনা ভাইরাসের বিবর্তন, জীবনযাত্রা, ওঠাপড়া ও কিছুটা ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করছিলেন। মাতৃভাষায় এমন একটা মারণব্যাধির দুর্ধর্ষ ভাইরাসের জীবনচক্র শুনতে কেন যেন উৎসাহ বোধ করছিলাম, বেশ একটা রোমহর্ষক রহস্য-রোমাঞ্চ কাহিনির মতো। ভদ্রলোকের বলার ভঙ্গিতেই হয়তো একটানা শুনে গেলাম। তাতে একটা জিনিস স্পষ্ট হল, আমাদের শরীরে সামান্য সর্দি-কাশি হাঁচিতে করোনার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে, এখনও যায়, ভবিষ্যতেও যাবে। কিন্তু করোনা পরিবারের সব সদস্যের কোভিড-১৯'এর মতো এত ভয়ঙ্কর সর্বগ্রাসী রূপ নয়। কিংবা বলা ভালো, আমাদের শরীর করোনা পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের মতো কোভিড-১৯'কে নিয়ে বেঁচে থাকতে পারছে না। এই রোগকে প্রতিরোধের ক্ষমতা শরীরে জন্ম নিচ্ছে না। আর শ্বাসকষ্টের সমস্যা? দমবন্ধ পরিস্থিতি? সে তো আমাদের নেতা-মন্ত্রীদের গালভরা প্রতিশ্রুতি শুনেও আজকাল আমার হয়। শ্বাসকষ্টের সব দায় শুধুমাত্র 'করোনা'র একার উপর চাপিয়ে দেওয়া ঠিক নয়।
'একক মাত্রা'র ব্লগে এক লেখায় পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরমুখী হওয়ার প্রসঙ্গে বলেছিলাম। সরকারকেই যে তার দায়িত্ব নিতে হবে তাও উল্লেখ করেছিলাম এবং এঁরা কখনও একা একা নয়, দলবদ্ধ হয়ে যাতায়াত করেন, তার উল্লেখও ছিল। দীর্ঘস্থায়ী লকডাউনের আতঙ্কে এঁরা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে, যেমন দিল্লী, মুম্বাইয়ের বান্দ্রা, সুরাট ইত্যাদি জায়গায় বাড়ি ফেরার আশায় জমায়েত করছিলেন। কোথাও বাসস্ট্যান্ডে বা কোথাও রেলস্টেশনে। আবার এঁদের একটা বড় অংশ 'কী হয় আরেকটু দেখি' ভেবে যেখানে ছিলেন সেখানেই আরও কিছু দিন কাটানোর পরিকল্পনা করছিলেন। স্বাভাবিক ভাবেই আজ, এই লেখায় পরিযায়ী শ্রমিকদের কথাতে ফিরতেই হল।
ইতিমধ্যে মাসখানেকের উপর নদীতে বেশ খানিকটা জল গড়িয়ে গেছে। অনেক টালবাহানা ও বিস্তর জলঘোলা করে সরকার, মানে কেন্দ্র রাজ্য যৌথভাবে, সেই শ্রমিকদের ঘরে ফেরানোর গুরুদায়িত্ব নিয়েওছে। প্রধানমন্ত্রী দফায় দফায় প্রায় সমস্ত রাজ্য এবং ইউনিয়ন টেরিটোরির সর্বোচ্চ প্রশাসনিক প্রধানদের সাথে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে ও লকডাউনের যাবতীয় রীতিনীতি মেনে ভিডিও কনফারেন্সিং করেছেন। প্রত্যেক সংবাদপত্র, টেলিভিশন, রেডিও এবং সোশ্যাল মিডিয়া ফলাও করে সেইসব অত্যাধুনিক হাইপ্রোফাইল প্রশাসনিক বৈঠকের ঢালাও প্রচারও করেছে এবং করতেই থাকবে। সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়ে একই সাথে পরিযায়ী শ্রমিকদের অবর্ণনীয় দুর্দশার কথা গণমাধ্যমে বারবার তুলে ধরা হয়েছে, হচ্ছে। কেউ কম, কেউ বেশি। তাহলে কেন আবার সে সবের চর্বিত-চর্বন করছি? কারণ, সব কিছু দেখেশুনে কতকগুলো প্রশ্ন মনে খোঁচা দিচ্ছে।
দেশের একাধিক ইন্টেলিজেন্স ডিপার্টমেন্ট কি শুধুই মারপিট, দাঙ্গা-হাঙ্গামা, আভ্যন্তরীণ অশান্তির আগাম খবর এবং সামরিক প্রয়োজনেই ব্যবহৃত হয়? মেডিক্যাল ও ফিনান্সিয়াল ইমার্জেন্সির আগাম সতর্কবার্তা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর আওতার বাইরে?
তা যদি না হয় এবং করোনা উদ্ভুত পরিস্থিতিকে গোটা পৃথিবী বিশ্বযুদ্ধের সাথে তুলনা করে, তাহলে বিশ্বের সব দেশেই কি ইন্টেলিজেন্স ফেইলিওর একসাথে ঘটল? নাকি সবটাই প্রশাসনিক ঔদ্ধত্য আর ব্যবসায়িক মুনাফার কদর্যতম নিদর্শন?
কোভিড-১৯-এর কয়েক পাতার সাম্প্রতিক ইতিহাস বলছে, চীন নাকি তাদের দেশে ইউহান প্রদেশে করোনা সংক্রমণ এবং তার থেকে সম্ভাব্য বিপদের কথা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে সরকারি ভাবে জানাতেই মাসখানেক দেরি করেছিল। কিন্তু, তারপরেও চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে আমরা কানাঘুষো টের পাচ্ছিলাম এই তিন অক্ষরের শব্দের ভয়াবহতার কথা এবং তার সঙ্গে লকডাউন বলে একটা নতুন ওষুধের বিবরণ। টিআরপি ক্ষুধার্ত মিডিয়াতেও 'করোনা' বলে একটা কথা ইতিউতি উঁকি দিচ্ছিল। 'হাত ধুয়ে ফেলা'র প্রচলিত কটাক্ষটা করোনা মোকাবিলার ব্রহ্মাস্ত্র, এটাও জানতে পারছিলাম। তাহলে চীন ও ইতালির সার্বিক পরিস্থিতি এবং ডিসেম্বর-জানুয়ারি থেকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার লাগাতার সাবধানবাণী শোনার পরেও, ভারতে লকডাউন লাগু করতে মার্চ মাসের শেষ অবধি গড়িয়ে গেল কেন? কোন কোন ধর্মীয় ও রাজনৈতিক জমায়েতকে 'সেফ প্যাসেজ' পাইয়ে দেওয়ার জন্য এত বিলম্ব?
গণমাধ্যম কখন চেঁচামেচি শুরু শুরু করবে, আমরা সাধারণ মানুষেরা তার পথ চেয়ে বসে থাকি। কিন্তু প্রশাসনের সর্বোচ্চ বিন্দুতে যাঁরা আছেন তাঁরা তো মিডিয়া নির্ভর প্রশাসন চালান না নিশ্চয়ই, বরং মিডিয়াই তাদের কাছ থেকে বাইট নেয়, গল্প বানায়। বিপদের আগাম তথ্য জেনে এবং তার উপর কার্যকরী সিদ্ধান্ত প্রয়োগ করাটা দক্ষ প্রশাসকের লক্ষণ। আমাদের দেশে কেন্দ্র, কেন্দ্র শাসিত ও রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানেরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও আধুনিক প্রযুক্তির ল্যাজ ধরে 'আমরাই সবচেয়ে দক্ষ প্রশাসক'- এই ব্যানার মিডিয়াতে টাঙিয়ে রেখেছেন। এঁদের প্রশাসনিক দক্ষতার আকাশচুম্বী গর্বে আমাদেরও কখনও কখনও মাটিতে পা পড়ে না। ভাবি, আমরা কত সুরক্ষিত। পাখি হয়ে উড়ে বেড়ানোর সাধ জনগণেরও আছে।
লকডাউন উপেক্ষা করে দলমত, ধর্মমত নির্বিশেষে উড়ে এবং অকারণে ঘুরে বেড়ানোর ঝকঝকে চলমান ও স্থিরচিত্র, সঙ্গে প্রকাশ্য দিবালোকে পুলিশের 'হাতের সুখ'-এর ছবি অনবরত মিডিয়াতে প্রচার করার পরেও, প্রশাসনের নাকের ডগায় ঘটতে থাকা নিজামুদ্দিনের ঘটনাকে একমাত্র জমায়েত ও সংক্রমণের বৃহত্তম কারণ হিসেবে তুলে ধরার প্রচেষ্টা প্রশ্নাতীত থাকে কি?
তথ্য বলছে, পৃথিবী জুড়ে করোনা সংক্রান্ত সামাজিক ও স্বাস্থ্য সচেতনতার প্রকাশ মুসলিম সম্প্রদায়ের বেশিরভাগ অংশেই দেখা গেছে এবং মুসলিম প্রধান দেশগুলোতে তার সুফল স্পষ্ট। কই, এসবের প্রচার তো হচ্ছে না। নিজামুদ্দিনের জমায়েত কোনওভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। তাকে প্রচারের আলোয় এনে জনগণকে আতঙ্কিত করে শিক্ষা দেওয়াটাও না হয় মেরেকেটে মেনে নেওয়া গেল। কিন্তু, এই অবস্থায়, তাদের ভালো ছবিগুলো সামনে এনে বাকিদের উৎসাহিত করা যাচ্ছে না কেন? নাকি তৈরি করা 'বন্দবস্ত' গোলমাল হয়ে যেতে পারে?
আগের লেখাতে আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কিছু উদাহরণের মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সংগ্রামপুরের আজিজুল (কাগজ বিক্রেতা) ও বর্ধমানের দীপকের (ধূপ বানিয়ে বেচে খায় এবং চোখে দেখতে পায় না) কথা আবার টেনে আনি। আজিজুলের ছেলে সোনার কারিগর, যিনি এবং আরও জনা চল্লিশেক পরিযায়ী শ্রমিক মুম্বাই থেকে প্রথম দিকে ফিরতে চাননি। তাঁদের স্বহৃদয় মালিকের ব্যক্তিগত উদ্যোগে বেশ কিছুদিন মোটামুটি নিশ্চিন্তে ছিলেন। আশ্রয়, মাথা গোঁজার ঠাঁই, সবই জুটেছিল। কিন্তু এখন আর তাঁরা লড়াই চালাতে পারছেন না। মালিক কর্মচারী সবাই মানসিক, শারীরিক এবং অর্থনৈতিক ভাবে বিধ্বস্ত, নিঃস্ব। বাড়ি ফেরার দিন গুনছেন। কোনওরকমে কাগজ বিক্রি করে আর একটু চাষবাসের কাজ করে সংসার চালানো আজিজুলের অভাবের সংসারে ছেলে হল বড় ভরসা। ফিনান্সিয়াল প্যানডেমিকের অবধারিত ছোবলে দুজনেই সম্পূর্ণ বেকার। অন্যদিকে, দীপক তো লকডাউনের প্রথম থেকেই অথৈ জলে। কারণ, করোনাতঙ্কে ভক্তের দল ভক্তি দিয়েই দেবতাদের সন্তুষ্ট রেখেছেন, ধূপের প্রয়োজন পড়ছে না। ফলে, পরিযায়ী, অ-পরিযায়ী শ্রমিক এবং অসংখ্য সাধারণ মানুষ যাঁরা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে, বিভিন্ন প্রয়োজনে গিয়ে লকডাউনের ধাক্কায় আটকে ছিলেন, প্রত্যেকেরই ফিরে আসার কাহিনি আমরা রোজ দেখছি।
এখানে একটা প্রশ্ন আছে। মার্চ মাসের শেষ অবধি সরকার বিভিন্ন অজানা কারণে লকডাউনের দিন ঘোষণা যদি বিলম্বিত করে থাকতে পারে, তাহলে ২৫ মার্চের আগেই এইসব মানুষদের পরিকল্পিত উপায়ে কোনওরকম হয়রানি ছাড়াই বাড়িতে ফিরিয়ে আনা যেত না কি? লকডাউনের ঘোষণা আসলে এই মানুষগুলোর কাছে এক অতর্কিত আক্রমণের মতো। অফিস টাইমে বাড়ি ফেরার পথে শিয়ালদহ স্টেশনে ভয়ঙ্কর দমবন্ধ করা ভিড় হবে, ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ডার্বি ম্যাচের পর যুবভারতী থেকে জনস্রোত বেরিয়ে আসবে, এগুলো কি নতুন করে বলার মতো কোনও ঘটনা? আর লকডাউনের মতো এক সম্পূর্ণ অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ পরিস্থিতিতে পড়ে আমাদের দেশের পরিযায়ী শ্রমিকরা আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু করবেন, এটুকু আন্দাজ করার মতো প্রশাসনিক দূরদর্শিতা সরকারের ছিল না? ঘটনা বলছে, ছিল না। থাকলে ট্রেনের ভাড়া কে দেবে বা দেবে না, কোন রাজ্য ফেরাবে বা ফেরাবে না- এইসব অমানবিক অবান্তর প্রশ্ন ঘিরে দিনের পর দিন নষ্ট হত না। দুটো ট্রাকের মুখোমুখি ধাক্কায় ২৫ জন শ্রমিকের মৃত্যুর জন্য প্রধানমন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রী নিশ্চয়ই দায়ী নন। কিন্তু পরিযায়ী শ্রমিকদের চলাফেরার উপর এই সময়ে অন্তত যথাযথ রাষ্ট্রীয় নজরদারি থাকলে এই মর্মান্তিক ঘটনাগুলো এড়ানো যেত। যেমন এড়ানো যেত এই দুঃসময়ে টেস্টিং-কিট, ভেন্টিলেটর এবং রেশন দুর্নীতির দুঃখজনক অধ্যায়। অনলাইনে প্রশাসনিক বৈঠকের ভিডিও কনফারেন্সিং দেখিয়ে চ্যানেল মালিকদের স্পন্সর ঢের জুটে যাবে, দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া প্রান্তিক মানুষদের তাতে কচুপোড়া।
করোনা সংক্রমণকে ঢাল করে ভোটের রাজনীতি কিন্তু ঘটছে। ফিরতে চাওয়া পরিযায়ী শ্রমিক, সামনের সারিতে লড়তে লড়তে অসুস্থ হয়ে পড়া চিকিৎসা কর্মী, পুলিশ কর্মী, পুরকর্মী, ব্যাঙ্ককর্মী, সাংবাদিক, কোনও রাজ্যের কাছেই স্বস্তির কারণ হবেন না, সেটা একরকম নিশ্চিত। নির্বাচনের সময় 'মানুষের পাশে আছি' গোছের প্রতিশ্রুতি দেওয়া আর মানুষের দুঃসময়ে সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করার মধ্যে আকাশ-পাতাল পার্থক্যটা 'করোনা' যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে গেল। দুর্ভাগ্যের শেষ এখানেই নয়। বামপন্থী নেতারাও সোশ্যাল মিডিয়ায় ত্রাণসামগ্রী বিতরণের ছবি পোস্ট করছেন, এই দিনও দেখতে হল। প্রচার নিশ্চয়ই প্রয়োজন কিন্তু তাই বলে 'মানুষের পাশে আছি'র প্রচার? আজিজুল আর দীপকের প্রসঙ্গ টেনে আমিও হয়তো সেই দোষে দোষী হয়ে গেলাম।
আপাতত শেষ করি শুধু একটা প্রশ্ন রেখে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, ৫-জি নেটওয়ার্ক, পাঁচ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি, প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত ও সাম্প্রতিকতম ২-এর পেছনে অজস্র শূন্যের বুদবুদ ছড়ানো অর্থনৈতিক প্রতিশ্রুতি কাদের জন্য? সমাজব্যবস্থার পিরামিডের একদম শেষে সবচেয়ে চওড়া অংশটায় প্রান্তিক মানুষের বাস। এসব গালভরা শব্দবন্ধনীর সুফল যদি এঁদের কাছে না পৌঁছতে পারে তাহলে বইতে যতই লেখা থাক, বিদগ্ধ মানুষেরা যতই বোঝানোর চেষ্টা করুন, শিকড় শুকিয়ে গাছ কিন্তু বাঁচানো যাবে না। দুর্ঘটনাগ্রস্ত লরি থেকে ছিটকে পড়া মায়ের মৃতদেহের পাশে অবিশ্রান্ত ডাকতে থাকা দুধের শিশুর কান্নার মতোই তা শোনাবে।
No comments:
Post a Comment