অনিন্দ্য ভট্টাচার্য
দু-তিনদিন আগে উড়িষ্যায় জেলা পরিষদ নির্বাচনে বিজেডি (বিজু জনতা দল) ৯০ শতাংশরও বেশি আসন জিতে চমক লাগিয়ে দিয়েছে। বিজেপি ও কংগ্রেস গুটি কয়েক আসন পেয়ে নিজেদের মুখ পুড়িয়েছে। কোনও বিরোধী দলের নেতা কোথাও কোনও গণ্ডগোল বা অসততা হয়েছে বলে কোনও অভিযোগ আনতে পারেনি। পাশাপাশি, ১০৮টি পৌরসভার নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমুলের ‘বিপুল জয়’এও দলীয় বহু নেতাদের মধ্যে চরম অস্বস্তি ও বিড়ম্বনা! সৌগত রায় তো সোজা কথা সোজা ভাবে বলেই ফেলেছেন। বাস্তবে, এ কি আমাদের লজ্জা নয়! কারণ, পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরা বাদে ভারতবর্ষের কোনও রাজ্যে যে কোনও স্তরের নির্বাচনে কোথাও কোনও সামান্য ধাক্কাধাক্কি পর্যন্ত হয় না। নির্বাচন ঘিরে আমাদের এই বিপন্নতা কেন?
আমরা সকলেই জানি, উড়িষ্যার মুখ্যমন্ত্রী ও বিজেডি’র সর্বময় নেতা নবীন পট্টনায়ক স্বল্পবাক মানুষ। তিনি ভাল মতো ওড়িয়া ভাষাও জানেন না বলে শুনেছি। সাংবাদিকদের সঙ্গে ইংরেজিতে কথা বলেন। জনসভায় ওড়িয়ায় লিখিত ভাষণ পাঠ করেন। সুবক্তাও নন। জন পরিসরে খুব যে মেলামেশা করেন, তেমনও নয়। তবুও তিনি হরেদরে উড়িষ্যার মানুষের ‘চোখের মণি’। যদিও কিছু কিছু জায়গায় কর্পোরেট কর্তৃক গরিব ও আদিবাসী মানুষের জমি অধিগ্রহণে তাঁর সরকার দমনপীড়ণ মূলক পদক্ষেপ নিয়েছে যার বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধও সংগঠিত হয়েছে।
২০১৯ সালে সারা দেশ জুড়ে মোদি হাওয়া সত্ত্বেও উড়িষ্যায় একই সঙ্গে অনুষ্ঠিত লোকসভা ও বিধানসভার ভোটে উড়িষ্যাবাসী লোকসভায় বিজেপিকে ভোট দিলেও বিধানসভায় কিন্তু বিজেডিকে ঢেলে ভোট দিয়েছেন। বিজেডি দল ও বিশেষত নবীনবাবুর এই তুমুল জনপ্রিয়তার কারণ কী? অবশ্যই তাঁর সরকারের দেয় জনকল্যাণমূলক প্রকল্পগুলি। অসংখ্য জনপ্রকল্পের মধ্য দিয়ে তিনি প্রান্তিক ও শ্রমজীবী মানুষের মধ্যে জীবনের মৌলিক স্বাচ্ছন্দ্যগুলিকে পৌঁছে দিতে অনেকটাই সক্ষম হয়েছেন। কয়েকটি উল্লেখযোগ্য প্রকল্প হল: কালিয়া যোজনা, উড়িষ্যা ফুড সিকিউরিটি স্কিম, বিজু স্বাস্থ্য কল্যাণ যোজনা, খুশি স্কিম, মোবাইল ফর ফার্মার্স, আহার যোজনা প্রভৃতি এমন নানাবিধ প্রকল্প আছে যা নানান ভাবে গরিব মানুষকে সক্ষমতা অর্জনে সহায়তা করে চলেছে। আর এই কারণেই তাঁর জনপ্রিয়তায় এখনও কোনও ভাটা পড়েনি আর নির্বাচনে জিততে তাঁর অহেতুক বলপ্রয়োগেরও কোনও দরকার পড়ে না।
জনকল্যাণমূলক রাজনীতির এই রমরমাকে বুঝতে হলে সামান্য পিছন থেকে শুরু করতে হবে। আজ থেকে ৩০-৪০ বছর আগে এমত বহুমুখি জনপ্রকল্পের প্রায় কোনও অস্তিত্বই ছিল না। রেশন ব্যবস্থা মারফত খাদ্যে সীমাবদ্ধ ভর্তুকি ও সরকারি পরিকাঠামো উদ্ভুত কিছু সুবিধা ব্যতীত সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে সরকার বলতে বোঝাত এক সুদূরের মায়ালোক। ব্যতিক্রম হিসেবে, ১৯৮২ সালে অন্ধ্রপ্রদেশে এনটি রামা রাও দু’ টাকা দরে চাল দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সোরগোল ফেলে দিয়েছিলেন। নির্বাচনে তার সুফলও পেয়েছিলেন। এর আগে ৭০ দশকে ইন্দিরা গান্ধীর ‘গরিবি হঠাও’ শ্লোগান বহু মানুষকে আকর্ষিত করেছিল। কিন্তু তা ছিল কতকটা কথার কথা।
সর্বস্তরে, বিশেষত সমাজের গ্রামীণ ও প্রান্তিক জায়গাগুলিতে জনকল্যাণমূলক প্রকল্পগুলির বাস্তবায়ন উসকে উঠল ১৯৯০’এর দশকে পঞ্চায়েতি রাজ ও নগর পালিকায় ক্ষমতার সংবিধান সংশোধনীর (যথাক্রমে ৭৩তম ও ৭৪তম) ফলে, যেখানে গ্রামসভা ও পৌরসভাকে স্থানীয় সরকারের সাংবিধানিক মর্যাদা দেওয়া হল। সারা দেশ জুড়েই ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থা ও পুরসভার হাতে ক্ষমতা ও অর্থের সংস্থান হওয়াতে নিচ থেকে উন্নয়ন কার্যক্রমের এক ধারা প্রবর্তিত হল। দুর্নীতিও মাথাচাড়া দিল কিন্তু সদর্থক একটি ধারাও বিকাশ লাভের চেষ্টা করল।
পাশাপাশি প্রায়-সর্বত্রই কংগ্রেস দলের ভাঙন ও তাদের আধিপত্য শুকিয়ে আসায় এবং বিভিন্ন আঞ্চলিক দলের উত্থানের ফলে রাজ্য বা স্থানীয় স্বার্থে এক জোরালো প্রবণতা দানা বাঁধে। আগে যা একটি বা দুটি রাজ্যে সীমায়িত ছিল, তা অচিরেই ৯০-এর দশক থেকে প্রায় সারা দেশের প্রবণতা হয়ে উঠতে থাকে। দেখা যায়, কয়েকটি রাজ্য ব্যতিরেকে প্রায় সমস্ত রাজ্যেই আঞ্চলিক দলগুলি নিজ নিজ পরিস্থিতির আলোকে একেক রকম বৈশিষ্ট্য অর্জন করে ক্ষমতায় অথবা প্রধান বিরোধী দলের অবস্থানে উঠে আসতে শুরু করেছে। ভারতীয় রাজনীতিতে একুশ শতকের প্রথম দশক থেকেই তা এক উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ধারণ করে। দিল্লি, উড়িষ্যা, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, ঝাড়খণ্ড, মহারাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গ সহ উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলিতে এই ছবি বেশ জোরালো হয়ে ওঠে। তামিলনাড়ু ও অন্ধ্রপ্রদেশে এই প্রবণতা আগেই কার্যকরী ছিল।
অতীতে ‘উন্নয়ন’ অর্থে ধরে নেওয়া হত, বড় বড় শিল্প স্থাপন, চওড়া রাস্তাঘাট (ন্যাশনাল বা স্টেট হাইওয়ে) তৈরি এবং জল-জঙ্গল-জমি অধিগ্রহণ মারফত গরিব মানুষকে উচ্ছেদ করে বিশালাকার পরিকাঠামো বা শিল্প প্রকল্প নির্মাণ। এর ফলে কিছু কর্মসংস্থান হত বটে কিন্তু আসল লক্ষ্য ছিল কতিপয় বাণিজ্য অধিপতিদের মুনাফার পাহাড়কে নিশ্চিত করা। এর সঙ্গে সঙ্গেই ভিটেমাটি ও জীবন-জীবিকা থেকে উচ্ছেদ হওয়া নিঃস্ব মানুষের যে অগণিত ভিড় অন্যান্য শহর ও মহানগরে ছড়িয়ে পড়ত, তাদের প্রকল্প-উত্তর জীবনের দিকে কেউ ফিরেও দেখত না। ফলে, একদিকে যেমন এইসব পরিত্যক্ত মানুষজনের অভাব-অনটন দেশ জুড়েই তৈরি করেছিল এক সামাজিক-রাজনৈতিক অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি, অন্যদিকে, ‘উপর থেকে চুইয়ে পড়া’ এই উন্নয়ন তত্ত্বও ক্রমশই অসার প্রতিপন্ন হচ্ছিল। একটি মৌলিক প্রশ্ন উত্থাপিত হল: সরকারের টাকা কার ভর্তুকিতে যাবে? বড় বড় শিল্পপতিদের পিছনে নাকি দুঃস্থ, প্রান্তিক মানুষের প্রয়োজনে। আঞ্চলিক দলগুলির উত্থান দ্বিতীয় মতের দিকেই সামান্য ঝুঁকে সম্মতি জানাল। কারণ, এই পথটিই ছিল তাদের পক্ষে প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠা ও জনসমর্থন আদায়ের অন্যতম স্তম্ভ। ঘুরিয়ে দেখলে, তৃণমূল স্তরে আঞ্চলিক বঞ্চনার আধারেই আঞ্চলিক দলগুলির ভিত্তিভূমি তৈরি হয়েছিল। এর সঙ্গে ছিল অন্যান্য কিছু রাজনৈতিক মতাদর্শের প্রশ্নও।
একই সঙ্গে গত দশ-বারো বছরে সারা বিশ্বের তালে তাল দিয়ে এ দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতেও এক আমূল বদলের প্রক্রিয়া বেশ দ্রুততায় শুরু হয়ে গেল। তা মূলত ছিল, ডিজিটাল দুনিয়ার সর্বগ্রাসী উত্থান ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আগুয়ান প্রয়োগে রাজনৈতিক অর্থনীতির দুনিয়ায় এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন। আমরা ধীরে ধীরে পেলাম ‘গিগ অর্থনীতি’র এমন এক জমানা যেখানে কাজের বহুমুখি ও সহস্রবিধ সুযোগ তৈরি হল, কিন্তু অধিকাংশ কর্মই চুক্তি-ভিত্তিক, পার্টনারশিপ ভিত্তিক অথবা স্বল্প সময়ের জন্য। বহুদিন আগেই আমি এই পরিস্থিতিকে চিহ্নিত করেছিলাম: কাজ আছে চাকরি নেই। তা আজ ঘোরতর বাস্তব। শুধু বাস্তব নয়, এমন এক অস্থিরতাও বটে যেখানে সমাজের সমস্ত কর্মক্ষম মানুষ জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে পুঁজির সামনে দণ্ডায়মান হয়ে গেল যে কোনও কাজে নিয়োজিত হওয়ার অভিলাষে (জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ)- নিম্নতর মজুরিতে ও লম্বা কর্মনির্ঘন্টে। তবে লটারি লাগার মতো, বড় বেতনের কাজও জুটে গেল, যদি যথাযথ কর্মদক্ষতা দেখিয়ে কোম্পানির মুনাফা অর্জনের হারকে বর্ধিত করার ক্ষমতা কেউ রাখে। সবটাই এক গভীর অনিশ্চিয়তার সুতোয় বাঁধা। এমত পরিস্থিতি এক নতুন রাজনৈতিক-অর্থনীতির বাতাবরণ নির্মাণ করল।
এক) বহুবিধ কাজের সুযোগ নিয়ে গিগ অর্থনীতির যে নতুন চলার পথ শুরু হল, সেখানে রাজনৈতিক দল ও নেতাদের গুরুত্ব একেবারেই কমে গেল। কারণ, তাদের না রইল চাকরি দেওয়ার সুযোগ অথবা ব্যবসার পারমিট জোগাড় করে দেবার ক্ষমতা। কিছু কিছু চাকরি (যদিও সরকারি চাকরির সংখ্যা এখন নগণ্যতর হয়ে এসেছে এবং সে সব চাকরির সমস্ত ক্ষেত্রে প্রভাব খাটানো যায় না) ও ব্যবসার ক্ষেত্রে তা থেকে গেল বটে কিন্তু সামগ্রিক ভাবে ডিজিটাল-নির্ভর কাজের যে বিপুল সুযোগ ও সম্ভাবনা তৈরি হল, সেখানে চাহিদা-জোগানের কারুকৌশলটি চলে গেল কর্মপ্রার্থী ও সংস্থার মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ ব্যবস্থায়। রাজনৈতিক দল ও নেতাদের ভূমিকা ফুরলো, কারণ, এইসব অধিকাংশ বাণিজ্যিক সংস্থার অস্তিত্ব প্রায়-ভার্চুয়াল স্তরে আর বড় বিনিয়োগকারীদের ঘাঁটানোর এলেম কোনও রাজনৈতিক দলেরই নেই।
দুই) এমনতর দীর্ণ অবস্থায় রাজনৈতিক দলগুলিকে তাই স্থানীয় স্তরে সরকারি অর্থের জোগানের ওপর নির্ভর করেই রাজনীতির ঘুঁটি সাজাতে হয়। সে পরিস্থিতি একেক রাজ্যে একেকরকম। একদিকে যেমন জনপ্রকল্পের অনুদান বা সুযোগ সরকারি পরিকল্পনা ও উদ্যোগে প্রান্তিক মানুষের মধ্যে বিলিবন্টন করে শাসকদের তরফে আস্থা অর্জন করার চেষ্টা চলল, অন্যদিকে, সেই সুবাদে সংকীর্ণ রাজনীতি করে বিরোধী শিবিরকে বঞ্চিত করে দলীয় শক্তি বৃদ্ধির অনুশীলনও চলল।
তিন) একদিকে গিগ অর্থনীতির সম্প্রসারণে কাজের সুযোগ, সম্ভাবনা ও নিয়োজন বাড়ল, কিন্তু চরম অনিশ্চয়তা, নিম্ন মজুরি ও তীব্র প্রতিযোগিতার কারণে সরকারি জনপ্রকল্পগুলির দিকেও সকল গরিব ও নিম্নবিত্ত মানুষের অমোঘ টান বজায় থাকল। এক হাতে অনিশ্চিত কাজ, অন্য হাতে প্রকল্পের অনুদান- এই হল বর্তমান ভারতীয় অর্থনীতিতে আপামর মানুষের বেঁচে থাকার আপাত পথ। এখানে অচিরেই তাই সমস্ত সাম্প্রদায়িক ও জাতপাত ভিত্তিক রাজনীতিরও অবসান হয়ে চলেছে, কারণ, পুঁজি ও মুনাফার কাছে মানুষের রং-রূপ-পরিচয়ের কোনও অর্থই গ্রাহ্য নয়।
প্রশ্ন হল, জনকল্যাণমূলক প্রকল্পগুলির সুবিধাকে মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়ে যদি জনসমর্থন পাওয়া যায়, তাহলে ভোটে রিগিং, ছাপ্পা ভোট দেওয়ার দরকার পড়ে কেন? একশো ভাগ ক্ষেত্রে জয় সুনিশ্চিত করার জন্য? যেখানে দলের চুনোপুঁটিটি পর্যন্ত চেষ্টা করছে প্রকল্পের অনুদানে জোরজবরদস্তি ভাগ বসাতে। সে বড় ভয়ঙ্কর খেলা। ‘খেলা হবে’র প্রবক্তা ও তরুণ তুর্কি নেতা কয়েক দিন আগেই ফেসবুক পোস্টে লিখেছিলেন, ২০১৮ সালের প্রতিক্রিয়ায় ২০১৯ হয়েছিল, তবুও শুধরে নেওয়া গিয়েছিল বলে ২০২১’এ অন্য ফল হয়েছে, কিন্তু ২০২২'এ যদি আবারও ২০১৮ হয়, তাহলে ২০২৪’এ যে ২০১৯ হবে না তার গ্যারান্টি কে দেবে?
তাই এ রাজ্যেও জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের অবাধ প্রয়োগ সত্ত্বেও কেউ কেউ যখন বলেন, এই রাজনীতিতে নবীন পট্টনায়ক, অরবিন্দ কেজরিওয়াল, জগন রেড্ডি, এম কে স্টালিন প্রমুখেরা আমাদের রাজ্য থেকে এগিয়ে, তখন তার উত্তর কী? তাঁরা অন্তত নির্বাচনে তো জোর খাটান না!
সঠিক মূল্যায়ন।ভালো লেখা
ReplyDeleteএকটা জায়গায় একটা কিন্তু রয়ে যাচ্ছে পুঁজির তরলতায় জাতপাত সাম্প্রদায়িকতা এখনো মুছে যায়নি। গেলে তবু উত্তরণ হত।
ReplyDeleteসাম্প্রদায়িকতা বাড়ছে।
Delete১০০ টাকার টেন্ডার যদি প্রথমেই ২০-২৫% কমে ডাক হয়, তাহলে জনকল্যাণের কি অবস্থা সহজেই অনুমেয়। তাহলে ৭৫-৮০ টাকার মধ্যে কাজের জন্যে খুব বেশি হলে ৫০-৬০ টাকা থাকে। এত ভারী লেখার প্রয়োজন কোথায় যদি সাধারণ মানুষ বুঝতেই না পারে?
ReplyDeleteপ্রাসঙ্গিক লেখা। সঠিক বিশ্লেষণ। তবে এমন কি চলতেই থাকবে নিরবচ্ছিন্ন?
ReplyDeleteসম্প্রদিকতা কি এটা নিয়ে সংবিধানে সঠিক ব্যাখ্যা প্রয়জন নয় এই কথাটি একটি দলের নামের সাথে সব সময় জুড়ে থাকে অথচ এরা একটি প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল এটা হয় কি করে
ReplyDeleteখুবই গুরুত্বপূর্ণ বিশ্লেষণ। তবে নয়া উদারনীতির সঙ্গে এই প্রকল্পগুলির সম্পর্ক আরও বিশ্লেষণ করলে ভালো হত। এখানে রাষ্ট্রের জনকল্যাণমূলক ভূমিকা খর্ব করে টার্গেট গ্রুপকে কিছু সুবিধে দেওয়া হচ্ছে। যেমন সর্বজনীন রেশনের বদলে নানা ডিজিটাল কার্ডের নামে বিভাজন। খাদ্যের অধিকার সুনিশ্চিত করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের আর থাকছে না। সকলের জন্য স্বাস্থ্যের অধিকারের বদলে স্বাস্থ্যবীমা। কৃষকের ফসলের ন্যায্য মূল্যের নিশ্চয়তার বদলে কিছু আর্থিক সুবিধে। এখন এগুলি কারা পাবেন ঠিক করছে প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধির নামে শাসক দল। ফলে অধিকারের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের পরিবর্তে সকলে ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে সুযোগগুলি পেতে মরিয়া হচ্ছেন। অধিকার পরিণত হচ্ছে ভিক্ষায়। শাসক দলের প্রতি আনুগত্য প্রমাণই সুযোগ পাওয়ার প্রধান শর্তে পরিণত হয়েছে। শাসক দলের বদল ঘটলেও নীতি একই থেকে যাচ্ছে। শাসকের প্রতি আনুগত্যের বাধ্যবাধকতা স্থিতাবস্থা বিরোধী লড়াইকে দুর্বল করছে। তাই নয়া উদারনীতির তীব্র আক্রমণ, শ্রমের ওপর পুঁজির তীব্র আগ্রাসনেও আন্দোলন দানা বাঁধছে না।
ReplyDelete