Sunday, 16 March 2025

ভবিষ্যৎ কি ছোট উদ্যোগের হাতে?

পাকিয়ে উঠছে নতুন এক চরাচর

অনিন্দ্য ভট্টাচার্য


 

সম্প্রতি OpenAI সংস্থার সিইও স্যাম অল্টম্যান বলেছেন, আগামী দিনে এক-ব্যক্তিক কোম্পানিও ১ বিলিয়ন ডলার মূল্যের যোগ্য হয়ে উঠতে পারে। অর্থাৎ, কোম্পানির যিনি মালিক তিনিই কর্মচারী এবং আর কেউ কর্মে নিয়োজিত নেই, সে কোম্পানির পক্ষেও বাজারে ১ বিলিয়ন ডলার মূল্য অর্জন কোনও অভাবনীয় বিষয় নয় আর। কথাটি শুনলে তাক লেগে যেতে পারে, কিন্তু তা আজকের সময়ে তেমন অসম্ভব কিছু নয় মোটেই। তাহলে কি আগত ভবিষ্যতে সত্যি সত্যিই কাজকম্মে লোকজনের তেমন আর প্রয়োজন নেই? কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অগ্রগমন তেমনই ইঙ্গিত দিচ্ছে বৈকি!

দেখেছি, এই ধরনের প্রসঙ্গ পাড়লেই কিছু উত্তেজিত কিন্তু ‘নৈতিক’ মানুষজন বেশ তেড়েফুঁড়ে এসে জিজ্ঞেস করেন, তাহলে কি আপনি বলতে চাইছেন সকলে বেকার হয়ে ঘুরে বেড়াবে আর রাষ্ট্রীয় কোষাগারের ‘ভিক্ষা’ নিয়ে বেঁচে থাকবে? আজকাল ইউনিভার্সাল বেসিক ইনকামের যে প্রস্তাব নিয়ে বিশ্বব্যাপী আলোচনা উঠেছে, আংশিক ভাবে কোথাও কোথাও তার প্রচলনও হয়েছে (আমাদের দেশের বিভিন্ন রাজ্যে তো বটেই), তাকে তাঁরা ‘ভিক্ষাবৃত্তি’ বলে থাকেন। কী মুশকিল! আমি এনাদের কিছুতেই বোঝাতে পারি না যে আমি এক পর্যবেক্ষক মাত্র, এ আমার ভাবনা-প্রসূত কোনও প্রকল্প নয়, পুঁজিবাদী রাজনৈতিক অর্থনীতির এক স্বাভাবিক পরিণতি যেখানে জগৎ-সংসারের প্রায়-সমস্ত কাজের ভার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে নিচ্ছে এবং ক্রমেই বহু সংখ্যক কর্মকুশলী মানুষজনকে অবাঞ্ছিত করে দিচ্ছে। এর পিছনে মৌলিক তাড়নাটা ব্যবসায় মুনাফার হারে উত্তরোত্তর বৃদ্ধি ঘটানো। মুনাফার হারে উর্ধ্বগতি না এলে মুনাফা অর্জনে স্থিতাবস্থা থাকে না— এই হল পুঁজিবাদী অর্থনীতির সচলবচল থাকার চাবিকাঠি। শিল্প বিপ্লবের পরে এ তাবৎ প্রযুক্তির যে কোনও অগ্রগতি ও প্রয়োগের পিছনে এই তাগিদ ও আকাঙ্ক্ষাই কাজ করেছে। আজ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অলৌকিক সম্ভাবনা সেই তাগিদ ও আকাঙ্ক্ষাকে শত গুনে বর্ধিত করেছে মাত্র! তাই, স্যাম অল্টম্যান যখন বলতে চান যে ভবিষ্যতের কোম্পানিগুলোতে প্রায় কোনও লোকই থাকবে না, সে জায়গায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চালিত মনুষ্যরূপী রোবট সমূহ অথবা একগুচ্ছ অ্যালগরিদমকে দেখা যাবে উৎপাদন বা পরিষেবার কাজে অংশ নিতে যারা মুনাফার হারে উর্ধ্বগতি এনে পুঁজিবাদী ব্যবস্থার চলাচলকে নিশ্চিত করবে, কারণ তাদের কর্মক্ষমতা নানা অর্থে যে কোনও স্বাভাবিক মানুষের থেকে বহু গুনে অধিক, তিনি ভুল কিছু বলেন না।

ফলে, আজকের স্টার্টআপগুলি বিনিয়োগ ও অর্থের জন্য আর হত্যে দিয়ে বসে থাকে না। অনেক সময় ‘ভেঞ্চার পুঁজি’ওয়ালারা অর্থের থলি নিয়ে এদের পিছনে ঘুরঘুর করলেও এরা তাদের দিকে ফিরেও তাকায় না। কারণ, অযথা অর্থ বা পুঁজির ভার থেকে এদের কাছে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কারুকৌশল, যা দিয়ে তারা স্ব স্ব সংস্থার কর্মক্ষমতা ও উৎপাদনশীলতাকে বাড়াতে পারে। এক সময় সিলিকন ভ্যালি’র ধারণা ছিল, নতুন কোম্পানিকে এগোতে হলে ভেঞ্চার পুঁজির বিনিয়োগকারীদের থেকে মোটা অর্থ সংগ্রহ ও প্রচুর কর্মী নিয়োগ করে নিজেদের বেশ বড়সড় করে দেখাতে হবে; মুনাফা না হয় আসবে পরে। এই বাগাড়ম্বরটা দেখাতে পারলেই বাজারে তাদের দর বেড়ে যেত, কারণ, কতজন কর্মী নিয়োগ হল এবং কত পরিমাণ অর্থ জোগাড় করা গেল, এইটাই ছিল সে কোম্পানির মর্যাদা, ঠাটবাট ও বাজার মূল্যের মাপকাঠি। পরে দেখা গেছে, এমনতর বহু কোম্পানি অচিরেই মুখ থুবড়ে পড়েছে ও তেমন উদ্যোগপতিরা হয় দেউলিয়া হয়ে অন্যত্র পালিয়েছে, নচেৎ কোনওমতে সে সব বেচেবুচে নিজেদের মুখরক্ষা করেছে। কিন্তু এখন রণকৌশলটা ভিন্ন: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মারফত সর্বোচ্চ স্তরের নিপুণ কার্যক্ষমতা অর্জনের চেষ্টা, যেখানে কর্মী সংখ্যাকে যথাসম্ভব কম রাখা এবং অযথা বিনিয়োগের রোয়াব না দেখানো। বর্তমানের এই প্রবণতাকে খেয়ালে রেখেই স্যাম অল্টম্যানের অমন মন্তব্য। সামান্য তথ্য ঘাঁটলেই দেখা যাবে, আজকের বেশ কিছু স্টার্টআপ এই রীতিতে এগিয়ে উল্লেখযোগ্য সফলতা পেয়েছে; যেমন, Eleven Labs, Gamma, Anysphere, Trata, Diligent, Truewind ও আরও অনেক। এ ক্ষেত্রে অভাবনীয় ভূমিকা রেখেছে Deepseek, যারা গণনার খরচকে অনেক সস্তা করে, নিজেদের কোডকে open source’এ রেখে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারকে আরও বেশি সর্বজনীন করতে সফল হয়েছে।

ইতিমধ্যেই লক্ষণীয়, একদিকে যেমন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যাপক প্রয়োগের ফলে চাকরির জগতে লোকজনের চাহিদা বহু ক্ষেত্রে নিম্নগামী, অন্যদিকে আবার সেই বুদ্ধিমত্তার সহজলভ্যতা ও সর্বজনীনতার জন্য যে কোনও ব্যক্তি বা গোষ্ঠী তাকে কাজে লাগিয়ে নতুন কর্মের জগৎ তৈরি করতে উদগ্রীব। কতরকমের যে কাজের বাহার, কতরকমের পরিষেবা, কত বিচিত্র বাজার অভিসার— সব মিলিয়ে নব-নির্মিত অভিনব কাজের দুনিয়া। অর্থনীতির ভাষায় যাকে বলে ‘utility’ (উপযোগিতা) সৃষ্টি। সমস্ত কাজই জীবিকার কাজ যখন সে কাজের অন্তে নির্মিত স্পর্শযোগ্য অথবা অস্পর্শযোগ্য পণ্যটির বাজার মূল্য নিশ্চিত। এই মূল্য-স্বীকৃতি তার উপযোগিতার স্মারক। আমি যদি বিকেলে বাড়িতে গরম তেলেভাজা ভেজে প্রতি ১০ মিনিট অন্তর ৫ কিলোমিটার ব্যাসার্ধে চাহিদা অনুযায়ী একটি অ্যাপের মাধ্যমে ক্রেতাদের (ব্যক্তি, পরিবার বা অন্য দোকান) সরবরাহ করি, বুঝতে হবে, তার বাজার মূল্য আছে, কিছু কর্মীকে মজুরির বিনিময়ে কয়েক ঘন্টা কাজে লাগানো গেছে এবং সর্বোপরি, অ্যাপের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে ক্রেতাদের চাহিদার বিন্যাসকে যথাযথ ভাবে রপ্ত করে তাদের আকাঙ্ক্ষাকে পূরণ করাও সম্ভব হয়েছে। ক্রেতাদের চাহিদাকে ধরা ও সামলানো এবং কর্মীরা কতটা কম সময়ে ক্রেতাদের কাছে পৌঁছতে পারল— কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কিন্তু এই সমস্ত বিষয়াদিকে নজরে রেখে তার উপলব্ধ অ্যালগরিদম দিয়ে প্রক্রিয়াটা সম্পন্ন করল; সঙ্গে পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাবপত্রও সেরে রাখল। এইভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে ও সামান্য উদ্যোগে যে কোনও পছন্দের কাজকে আয়ত্ত্বাধীনে এনে আয়ের পথকে প্রশস্ত করে ফেলা তেমন কষ্টসাধ্য নয় মোটে। তবে সে কাজের আয়ু কতদিনের তা বলা মুশকিল। এও বলা শক্ত, সকলে এ কাজে পটু হবে কিনা। কিন্তু তথ্য বলছে, আমাদের দেশের মোবাইল ঘনত্ব ৮২.৫৪ শতাংশ (২০২৩), অর্থাৎ, প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ৮২ জন মোবাইল ব্যবহার করেন; আর একই সময়ে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন ১২০ কোটি মানুষ (statista.com)। বলাই বাহুল্য, নৈতিক চিন্তাবিদদের আমাদের দেশের আমজনতাকে অতি-অসহায় ভাবার কোনও কারণ নেই! 

অবশ্য, এইভাবে কত শত মানুষ তাদের নিজেদের সক্ষমতাকে উজ্জীবিত করে নানারকম ব্যবসা-বাণিজ্যে মেতে উঠেছে তার যথাযথ তথ্য এখনও সংকলিত নয়। সে ভাবে কোনও সমীক্ষাও হয়নি। কিন্তু চারপাশে নজর করলেই ব্যাপারটা বেশ প্রকট। তাই যখন বলা হয়, আজ কাজের এক বহুমুখি বিচিত্র জগৎ তৈরি হয়েছে যেখানে কাজ অঢেল যদিও স্থায়িত্ব অনিশ্চিত, তা বহমান কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চালিত এক নতুন রাজনৈতিক অর্থনীতির দিকেই আমাদের দিকনির্দেশ করে। ফলে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সক্ষমতা সম্পর্কে আজ প্রায় সকল মানুষকেই কমবেশি জানতে হয়, না হলে তারা দিকদিশা হারায়। কিন্তু তৎসত্ত্বেও কাজকর্মের অস্থায়িত্বের কারণে (আজ যে কাজ আছে কাল সে কাজ নাও থাকতে পারে, কাল যে কাজের সৃষ্টি হবে আজ সে কাজের অস্তিত্ব নেই) এক নিবিড় অনিশ্চয়তার ঘেরাটোপে মানুষের জীবন যে নিমজ্জিত, তা নিয়ে কোনও সংশয় নেই। আর সেইজন্যই ‘ইউনিভার্সাল বেসিক ইনকাম’এর অবশ্যম্ভাবিতাকে অস্বীকার করারও কোনও উপায় নেই। অতএব, ‘ভিক্ষাবৃত্তি’র তত্ত্ব এনে যারা এই ন্যায্য নাগরিক হকের নৈতিক বিরোধিতা করছেন তারা আসলে স্বীকারই করতে চাইছেন না সমাজে সাধারণ ভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠ শ্রমজীবী মানুষের অতি-নিম্ন মজুরি প্রাপ্তির বাস্তবতাকে। ফলে, সে ক্ষতিপূরণের দায়ও তাঁরা নিতে চান না, কারণ, আদপে তাঁরা মনে করেন, পুঁজিবাদী বৈষম্য নীতিগত ভাবে ন্যায্য। আর এই কথাগুলি যখন তথাকথিত বামপন্থার ধারক-বাহকেরা বলেন, তখন সে ‘বামপন্থা’ যে মৃত তা তাদের জনবিচ্ছিন্নতা দেখলেই মালুম হয়।

অথচ, সারা বিশ্ব জুড়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আচম্বিত ও দ্রুত অভিঘাতে ভেঙে পড়ছে সাবেক পুঁজিবাদের ইমারত। আমেরিকা ও ইউরোপ আজ ‘অভিবাসীদের ভয়ে’ আতঙ্কিত। ট্রাম্প অচিরেই ঘোষণা করতে চলেছেন, কতিপয় বিদেশের নাগরিক বাদে আমেরিকায় কেউ আর প্রবেশই করতে পারবে না। রাজনৈতিক মঞ্চে দ্রুত উত্থান ঘটছে চরম দক্ষিণপন্থী শক্তির। দোর্দণ্ডপ্রতাপ এলন মাস্ক’এর টেসলা’র বিক্রি পড়ে গেছে ৪৬ শতাংশেরও বেশি; চীনের BYD’র কাছে সে নাজেহাল। মঙ্গল গ্রহের উদ্দেশ্যে পাঠানো এলন মাস্ক’এর SpaceX স্টারশিপও আকাশে ওড়ার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই আবারও স্ব-বিস্ফোরণে উড়ে গেল। এবার ‘স্টারলিঙ্ক’কে ধরে ট্রাম্প ও মোদির ঘাড়ে চেপে এলন মাস্ক ভারতের বিশাল বাজারে ঢুকে রাজ করতে চাইছে। কিন্তু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দুরন্ত দৌড়ে তারা ছোট ছোট কোম্পানিগুলির সঙ্গে কতটা এঁটে উঠতে পারবে তা নিয়েই দেখা দিয়েছে ঘোরতর সন্দেহ। আমাদের দেশেও এইসব ছোটরা খেল দেখাচ্ছে-- Observe AI, InVideo, Avaamo, Spyne ইত্যাদি বহু ভারতীয় স্টার্টআপ ও ছোট ছোট সংস্থাগুলি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে বড় বড় সংস্থাকে আজ চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে। এ নিয়ে পরে বিশদে কোথাও বলা যাবে। তথ্য বলছে, DPIIT (Department for Promotion of Industry and Internal Trade) স্বীকৃত ভারতীয় স্টার্টআপের সংখ্যা ২০১৬ সালে যেখানে ছিল মাত্র ৫০২, তা ২০২৪’এর ৩১ ডিসেম্বর দাঁড়িয়েছে ১,৫৭,৭০৬’এ; অনুমান ২০৩০ সালের মধ্যে এই সংখ্যা দ্বিগুনেরও বেশি হয়ে যাবে।

রাজনৈতিক অর্থনীতির নতুন এই অভিযোজনকে না বুঝলে দেওয়ালে মাথা ঠুকে ভেজাল নৈতিকতার বাতাস উড়িয়ে যেতে হবে!

                          

8 comments:

  1. mitrasumit08@gmail.com16 March 2025 at 17:06

    ভালো লাগলো

    ReplyDelete
  2. স্বপন সেনগুপ্ত ( ঝানকু )16 March 2025 at 18:21

    ভাববার বিষয় তো বটেই!

    ReplyDelete
  3. কাজের (চাকরির) বাজারের বেহাল অবস্থা আর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এলোপাথাড়ি আগ্রাসন, অসংগঠিত ব্যক্তিমানুষের নাভিশ্বাসের কারণ। এর থেকে নিষ্কৃতির পথ খুঁজে বের করতে হবে।

    ReplyDelete
  4. সমাজের অধিকাংশ মানুষই শ্রমে বুদ্ধিতে উন্নত শিক্ষায় একটা পরিশীলিত মানবতার উন্নত সমাজতান্ত্রিক সমাজের ভাবনা ও বীক্ষা থেকে একটা একই সঙ্গে গভীর ভাবনাপ্রসূত বাস্তবতার ছবিকে রূপায়িত করবে এমন চিন্তা করলে কী তা শুধুমাত্র A.I.নির্ভর সমাজের ভাবনাকে না আযত্ব করা হয়? লেখক নিজেই বলছেন এই অতি ক্রমশ উন্নয়নমূলক A.I.নতুন ধরণের কর্মসংস্থান করবে কিন্তু তার স্থায়িত্বের কোনো নিশ্চয়তা নেই আর এসবের মূল উদ্দেশ্য কিন্তু কতিপয় বাণিজ্যদৈত্যদের আরো উচ্চমুখী মুনাফা। তা এতো শুধু ঘটনার বাস্তব অভিমুখকে আয়তন করা।তার অবশ্যই প্রয়োজন আছে।তবে এতো আজকের সামাজিক বিবর্তনের ধারা শুধু।একটা নতুন অতি সঙ্গত স্বপ্নের প্রার্থিত বহু- আকাঙ্খিত.
    সমাজভাবনা ও তার সাংস্কৃতিক চর্চা ও চর্য্যার যে দিকটা কোথায় এ লেখাতে?? শুধু ঘটনার পেছনে ছুটে চলাটা তো এক আধুনিক গতানুগতিকতার অন্য মোড়ের পুঁজিবাদের স্থিতাবস্থার পক্ষে চলা নয়ত! এই বিবর্তনের ঘটনাপরম্পরার রাজনৈতিক অর্থনীতি ই কী একমাত্র চর্চার বিষয়। এ কথা কিন্তু শুধুমাত্র মননবিহীন নৈতিকতার পক্ষে সওয়াল নয় কোনোভাবে।বরং সাম্প্রতিক ক্রমোন্নত প্রযুক্তি বিশেষ করে ক্রমোন্নত A.I.ও তার ব্যাপক রাজনৈতিক অর্থনীতি সম্যক বোঝার অনুধাবন করার একটা নতুন বীক্ষা অন্বেষণের পাথেয় হোক তা চাই। আর এ পাথেয় ব্যতিরেকে এ কাজ সম্ভব নয় এ বিষয়ে একমত।

    ReplyDelete
  5. আয়ত্ব করা।

    ReplyDelete
  6. অভিজিৎ দাস17 March 2025 at 08:46

    বেশ সুন্দর করে আলোচনা করেছো। আমাদের দেশে কর্মসংস্থান সে ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে না। আজকের খবরের কাগজে একটা রিপোর্ট বেরিয়েছে যেখানে বলছে একুশ বছরের কম বয়সীদের EPFO enrollment হ্রাস পেয়েছে।

    ReplyDelete
  7. সুভাষ দাস :
    মানুষকে স্বস্তির পথ খুঁজে বার করতে হবে---এই অনিশ্চয়তার যুগে।
    বেশিরভাগ মানুষ খুঁজে পাবেন যেমন আয় তেমন ব্যয় এবং সরকারি সাহায্য ব্যবস্থার উপর নির্ভর করে। শান্তিতে বাঁচার পথ নানাভাবেই হতে পারে যা শুধু টাকার উপর নির্ভরশীল নয়।
    তুলনামূলকভাবে খুব কম হলেও, বেশ কিছু মানুষ
    কৃত্রিম বুদ্ধিমতাকে কাজে লাগিয়ে সৃষ্টিশীল পথে আয়ে বাঁচার আনন্দ খুঁজে পাবেন। শান্তি যেন জীবনে অধরা না থাকে--- সেটা গুরুত্বপূর্ণ।

    ReplyDelete
  8. কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আর্থ-সামাজিক অভিঘাত নিয়ে সুন্দর আলোচনা। কিন্তু মননশীলতা, সৃষ্টিশীলতা এবং সর্বোপরি পরিবেশের ওপর ঐর অভিঘাত কী তা নিয়ে কোথাও খুব একটা আলোচনা দেখি না। ফেসবুকের একটা লাইক বা শেয়ারে যে পরিমাণ শক্তির খরচ হয় এবং তার ফলে পরিবেশের যে ক্ষতি হয় তা নিয়ে তেমন আলোচনা কোথাও হয় না। মূলগতভাবে বুঝতে গেলে মানতে হবে যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দুনিয়া আসলে ডিজিটাল দুনিয়ার রকমফের। ডিজিটাল দুনিয়া সত্যিই কতটা কাম্য তা নিয়ে আলোচনা দেখি না। এমনকী এই দুনিয়া মেরিটোক্রেসির জন্ম দিতে পারে, একটা স্পার্টান ডিসটোপিৎআ নিয়ে আসতে পারে। আলোচনায় এগুলোও বিচার করা হোক।

    আরেকটি ব্যাপার বলবার আছে। যেকোন‌ও গবেষণায় ব্যর্থতায়হল সাফল্যের সোপান। নাসা হোক বা ইসরো, এর আগে দুর্ঘটনা কি ঘটেনি? কাজেই স্পেসএক্সের ভেঙে পড়া নিয়ে এখন‌ই কোন‌ও ধারণায় উপনীত না হয়ে বরং সূনীতা উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোরকে ফিরিয়ে আনার জন্য স্পেস‌এক্সের বাহবা প্রাপ্য হোক। আর স্পেস এক্সের শেয়ারের পতন কিন্তু কোন‌ও প্রযুক্তিগত কারণে হয়নি। হয়েছে মাস্কের নাজি ধারায় এক হাত তুলে অভিবাদন দেওয়ার ভঙ্গিমার জন্য।

    ReplyDelete