হাস্যরসও যখন অপরাধ
সোমা চ্যাটার্জি
ভারতীয় সংস্কৃতিতে রাজনৈতিক হাস্যরস বা ব্যঙ্গ, যাকে ইংরেজিতে 'পলিটিকাল স্যাটায়ার' বলে, তার গ্রহণযোগ্যতা এখন বড় প্রশ্নের মুখে।
গত কয়েক দিন ধরে স্ট্যান্ড-আপ কমেডিয়ান কুণাল কামরার একটি কমেডি ভিডিও 'নয়া ভারত' ইউটিউবে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে রাজনৈতিক অসন্তোষ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া শুরু হয়েছে এবং বিরূপ সহিংস প্রতিক্রিয়া দেখা যাছে। কমেডিটি'তে কুণাল বর্তমান সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির দিকটিই কৌতুকের সঙ্গে উপস্থাপন করেছেন এবং ‘গদ্দার' বলে একটি প্যারডি পরিবেশন করেছেন যার অর্থ বিশ্বাসঘাতক। কিন্তু এই ঘটনার পর মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে ও শিবসেনা দল আক্রমণাত্মক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, এমনকি মুম্বাই'এর হ্যাবিটাট সেন্টার যেখানে কুণাল এই অনুষ্ঠান করেছিলেন, সেখানে গিয়ে ভাঙচুর করে তাঁর কুশপুতুল পুড়িয়েছে।
কুণাল কামরা তাঁর বিতর্কের জন্য, বিশেষ করে তাঁর তীক্ষ্ণ রাজনৈতিক ব্যঙ্গের জন্য যথেষ্ট পরিচিত। ২০২০ সালে এক বিমানে সাংবাদিক অর্ণব গোস্বামীর মুখোমুখি হওয়ার পর একাধিক বিমান সংস্থা তাঁকে নিষিদ্ধ করে। বিচার বিভাগ সম্পর্কে তাঁর রসিকতার জন্য তিনি আইনি সমস্যায় জর্জরিত হয়েছেন, এমনকি সুপ্রিম কোর্ট তাঁর ট্যুইট'এর জন্য তাঁর বিরুদ্ধে অবমাননার মামলা জারি করেছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও, কামরা ভারতের প্রাতিষ্ঠানিক ব্যর্থতার একজন সমালোচক হিসাবেই বরাবর সোচ্চার থেকেছেন।
অবশ্য এই ঘটনা নতুন নয়। ২০১৭ সালে কুণাল তাঁর প্রথম ইউটিউব ভিডিও আপলোড করেন যার শিরোনাম ছিল 'দেশপ্রেম ও সরকার'। আট মিনিটের ক্লিপটিতে তিনি বিমুদ্রাকরণ, ছাত্রদের কণ্ঠরোধ করা এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অপ্রয়োজনীয় নিন্দা সম্পর্কে রসিকতা করেছিলেন। বেশ কয়েকটি সহিংস হুমকি পাওয়া সত্ত্বেও কুণাল ভিডিওটি সরিয়ে নেননি। এটি ১.৮ কোটিরও বেশি বার দেখা হয়েছে। গত বছর অক্টোবরের শুরুতেও কুণাল মুম্বাইয়ের বিলাসবহুল কমেডি ক্লাব 'দ্য হ্যাবিট্যাট'এ পাঁচটি শো করেন কিন্তু তাঁর বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠান বাতিল হয়ে যায় এবং তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। তাঁর মুম্বাইয়ের বাড়িওয়ালা পর্যন্ত তাঁকে উচ্ছেদ করেন। কিন্তু কামরা তখনও বলেছিলেন, তিনি যে জিনিসগুলি স্পষ্টভাবে দেখতে পাচ্ছেন সেগুলি নিয়েই রসিকতা করতে চান, কারণ, তাঁর মতে 'কমেডি আক্রমণাত্মক কোনও শিল্প নয়, এক বাস্তবতা'।
'দ্য হ্যাবিট্যাট'এর মালিক বলরাজ ঘাই' এর কথায়, ২০১৬ সালে 'দ্য হ্যাবিট্যাট' খোলার পর থেকে তাঁর সেন্টারটি রাজনৈতিক উৎপীড়ন ও ক্ষোভের নিশানা হয়ে উঠেছে এবং প্রতি বছর তিন থেকে চারটি এরকম ঘটনা ঘটে চলেছে। তাঁর মতে, কিছু দর্শকের কাছে কামরা একজন নায়ক, 'এমন একজন যিনি কর্তৃত্বের কণ্ঠস্বরের বিরুদ্ধে কথা বলেন'। কামরার এজেন্ডা বিনা কারণে 'প্রতিষ্ঠান বিরোধী' হওয়া নয়, তাঁর এজেন্ডা 'উন্নত ব্যবস্থা, উন্নত শাসন, উন্নত সমাজ'। ঘাই বলেন, যারা কামরার শোয়ের টিকিট কেনেন তাঁরা জেনেই আসেন যে এখানে কী ধরনের রাজনৈতিক উপাদান উপস্থাপিত হবে, সে জন্য যদি শ্রোতারা সম্পূর্ণরূপে কামরার সঙ্গে একমত থাকেন, তিনি যে কোনও রসিকতা করতে পারেন এবং কোনও অপরাধ না করে চাতুরীর সঙ্গে সত্যি কথা বলতে পারাটাও একটা পরিছন্ন শিল্পবোধকেই ব্যক্ত করে।
কিন্তু গত কয়েক বছর ধরেই বিশেষ করে বর্তমান রাজনৈতিক ব্যবস্থার অধীনে ভারতে স্ট্যান্ড-আপের ভবিষ্যৎ ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়েছে এবং কৌতুকাভিনেতাদের স্বাধীন মন নিয়ে নিজের শিল্পকে প্রকাশ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্ট্যান্ড-আপ কমেডি ভারতে তুলনামূলকভাবে নতুন। ২০১০-এর দশক থেকে অনেকেই এটিকে ক্যারিয়ার হিসাবে ভাবতে শুরু করে, তবে এর পূর্বসূরীরা অনেক পুরনো। প্রাচীন ইতিহাসেও রাজদরবারে বিদূষকরা ছিলেন যারা উপহাস ও বিদ্রুপের মাধ্যমে রাজা ও পারিষদদের মনোরঞ্জন করতেন কিন্তু তাদেরও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ছিল। কয়েক শতাব্দী ধরে কমেডি মানব জীবনের একটি অঙ্গাঙ্গী শিল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠিত ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিককালে ভারতে কৌতুকাভিনেতাদের নির্মমভাবে হয়রানি ও ট্রোলের শিকার হওয়ার জন্য ভারতের স্ট্যান্ড-আপ কমেডির ভবিষ্যৎ এখন অজানা।
২০১৯ সালে কৌতুকাভিনেত্রী আগ্রিমা জোশুয়া মহারাষ্ট্র রাজ্য সরকারের একটি মূর্তি প্রকল্প সম্পর্কে রসিকতা করার পর ২০২০ সালের ৭ জুলাই মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনার (এমএনএস) সমর্থকরা 'দ্য হ্যাবিট্যাট' ভাঙচুর করে ও আগ্রিমা জোশুয়ার কাছে রসিকতার জন্য ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানায়। তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ এবং তাঁকে ধর্ষণের হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হয়। জোশুয়াকে বাধ্য করা হয় জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টি, শিবসেনা, এমএনএস এবং কংগ্রেসের কাছে ক্ষমা চাইতে। জোশুয়া বলেন, ক্ষমা চাওয়ার পর আরও ঘৃণা ও আপত্তিকর মন্তব্য শুনতে হয়েছিল এবং তাঁকে কোনওরকম নিরাপত্তাও দেওয়া হয়নি।
একই ভাবে ২০২১ সালের জানুয়ারিতে মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে কট্টর ডানপন্থী হিন্দু রক্ষক সংগঠনের সদস্য ও ইন্দোরের প্রাক্তন বিজেপি মেয়রের ছেলে একলব্য লক্ষ্মণ সিং গৌরের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে মুনাওয়ার ফারুকি নামে এক কৌতুকাভিনেতাকে গ্রেফতার করা হয় এবং প্রায় এক মাস ধরে তাঁকে আটক রাখা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল যে তিনি হিন্দু দেবদেবীদের সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন। অথচ, অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার আগেই ফারুকিকে আটক করা হয় এবং পুলিশ পরে স্বীকার করে যে তিনি হিন্দু দেবতাদের অপমান করেছেন এমন কোনও প্রমাণ নেই। তবুও, ডানপন্থী হিন্দু গোষ্ঠীগুলি তখন থেকে বারবার তাঁকে হেনস্থা করেছে এবং তাঁর অনুষ্ঠান বাতিল করতে বাধ্য করেছে। গোয়ায় সাম্প্রতিক একটি অনুষ্ঠানে তাঁকে মঞ্চে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হলে ৫০০ লোক নিজেদের আগুনে পুড়িয়ে ফেলার হুমকি দেয়।
২০২১ সালের নভেম্বরে ওয়াশিংটন ডিসির কেনেডি সেন্টারে ভারতের শীর্ষস্থানীয় স্ট্যান্ড-আপ কৌতুকাভিনেতা বীর দাস 'টু ইন্ডিয়াস' নামে একটি কৌতুক কবিতা পাঠ করে শোনানোর পর তাঁকে নিদারুণ হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। এই অনুষ্ঠানে দাস ভারতকে বৈপরীত্যের দেশ হিসাবে বর্ণনা করেছিলেন যেখানে লোকেরা 'দিনের বেলায় মহিলাদের পূজা করে কিন্তু রাতে তাদের ধর্ষণ করে'। অনুষ্ঠানটি তীব্র ভাবে সমালোচিত হয় এবং তাঁর বিরুদ্ধে আইনি মামলাও দায়ের হয়। সমালোচকরা তাঁর বিরুদ্ধে ভারতকে বদনাম করার অভিযোগ আনেন। দাস'এর বক্তব্য তিনি ওই কবিতাটিতে দক্ষিণ এশীয় দেশের সামাজিক সমস্যা সম্পর্কে তাঁর চিন্তাভাবনাই তুলে ধরতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ক্ষমতাসীন বিজেপি'র মুখপাত্র আদিত্য ঝা দাসের বিরুদ্ধে 'দেশকে অপমান' করার জন্য পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন এবং অবিলম্বে তাঁকে গ্রেফতারের দাবি জানান। ঝা'এর অভিযোগ, 'নারী ও ভারতের বিরুদ্ধে' এই অবমাননাকর বক্তব্য উস্কানিমূলক এবং এটি আন্তর্জাতিকভাবে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে।
শাসকগোষ্ঠীরা যে ব্যঙ্গের প্রতি খুব একটা সহনশীল নয় সে ব্যাপারে কলকাতাও পিছিয়ে নেই। তার প্রমাণ দ্য হ্যাবিট্যাটের 'অল-স্টার' লাইন-আপের অংশ, অভিনেতা অনির্বাণ দাশগুপ্ত। ২০১৭ সালে অনির্বাণ কলকাতায় তাঁর বড় হয়ে ওঠা এবং সুভাষ চন্দ্র বসুর অন্তর্ধান সম্পর্কে সেখানকার শিশুরা কী ভাবেন তা নিয়ে একটি ভিডিও প্রকাশ করে রসিকতা করেছিলেন। সেই ভিডিও অপসারণের দাবিতে তিনি কলকাতার রাজনৈতিক কর্মীদের কাছ থেকে হুমকি পেয়েছিলেন। তাঁর মতে, ‘বামপন্থী’ বা ‘ডানপন্থীদের’ হেনস্থার আক্রমণাত্মক ভঙ্গী একই ধরনের। যে দলই ক্ষমতায় থাকুক না কেন, সবসময় কমেডিকে দমন করে।
এই প্রসঙ্গে কমেডি শিল্পের কিংবদন্তি চার্লি চ্যাপলিন'এর কথা অবশ্যম্ভাবী ভাবে এসে পড়ে। চ্যাপলিন নিজেও একনায়কতন্ত্রের বিরোধিতা করেছিলেন এবং ধর্মকে অস্বীকার করতেন। ১৯৪০ সালে নির্মিত তাঁর 'দ্য গ্রেট ডিক্টেটর' ছবিটিতে তিনি অ্যাডলফ হিটলার ও বেনিতো মুসোলিনির তীব্র নিন্দা করেছিলেন এবং ফাসিবাদ, নাৎসিবাদ ও ইহুদী বিদ্বেষেরও সমালোচনা করেন। তার ফলে জার্মানি ও অন্যান্য দেশে এটির প্রদর্শন বন্ধ করে দেওয়া হয়। চ্যাপলিন তাঁর আত্মজীবনীতে লিখেছেন, 'কমেডি তৈরিতে, ট্র্যাজেডি উপহাসের চেতনাকে উদ্দীপিত করে।' তাঁর মতে, কমেডি এমনই শিল্প যা রাষ্ট্রীয় সহিংসতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে, অনুকরণ করে এবং উপহাস করে। এটি সরকারকে তাদের কর্মের জন্য দায়বদ্ধ করে তোলে। হাস্যরস হল ভিন্ন মতের একটি বুদ্ধিমান অভিব্যক্তি।
১৯৬২ সালে ভারত-চীন যুদ্ধের পর জওহরলাল নেহরুকে কার্টুনিস্ট আর কে লক্ষ্মণ ব্যঙ্গ করেছিলেন। ট্রোল বা ভাড়া করা গুণ্ডাদের দিয়ে আক্রমণ করার পরিবর্তে প্রধানমন্ত্রী তাঁকে বলেন যে কার্টুনটি তাঁর খুব ভালো লেগেছে এবং তিনি ফ্রেমবন্দী স্বাক্ষরিত একটি বড় কপিও চেয়েছিলেন। দুর্ভাগ্যবশত, আমাদের রাজনৈতিক ভাবে আরোপিত সমসাময়িক ভারতে বিদ্রূপ বা হাস্যরস হারিয়ে গেছে বলে মনে হয়। গোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানী রাহুল ত্রিপাঠি বিশ্বাস করেন যে, বর্তমান শাসক দল এবং তার পদাতিক সৈন্যদের সমস্যা হল যে তাদের জাতীয়তাবাদ, হিন্দুধর্ম ও বহুত্ববাদের এত সংকীর্ণ ব্যাখ্যা রয়েছে তা যে কোনও বিরোধী চিন্তাভাবনার সঙ্গে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয়ে তাদের অস্থির করে তোলে। তাই তারা প্রতিশোধ স্পৃহায় জড়িত থাকে, কারণ, তারা ধর্মীয় এবং জাতীয় গর্বের অনুভূতির নিজস্ব মাপকাঠিতে এগুলিকে বিচার করে।
ভারতে কুণাল কামরা ও মুনাওয়ার ফারুকি'র মতো কৌতুকাভিনেতারা এবং রচিতা তানেজার মতো কার্টুনিস্টরা যে কাজ করেন তার জন্য তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও না কোনও ধরনের ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়। সুপ্রিম কোর্ট রনবীর এলাহাবাদীকে ইউটিউবে কোনও বিষয়ে কিছু আপলোড করতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ফারুকি এবং আরও তিন সহযোগীর সঙ্গে গ্রেফতার হওয়া কৌতুকাভিনেতা নলীন যাদবের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির অন্যান্য ধারাগুলির মধ্যে ২৯৫এ (ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা) ২৯৮ (ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার ইচ্ছাকৃত অভিপ্রায়) এবং ১৮৮ (অবাধ্যতা)'এর অধীনেও মামলা চলছে। যাদবের নিজের ভাষায়, 'ইন্দোরের মানুষের কাছে এখন তিনি একজন সন্ত্রাসবাদী এবং তার আর কোনও পরিচয় নেই।' স্ট্যান্ড-আপ কৌতুকাভিনেতা প্রশাস্তি সিং-এর মতে, 'দশ বছর আগে যে রসিকতা নিছক বিরক্তিকর ছিল, আজ তার মাত্র ১ শতাংশই আপনাকে সমস্যায় ফেলে দিতে পারে।'
হাস্যরস আমাদের সবচেয়ে গুরুতর ট্র্যাজেডির অর্থ বুঝতে সাহায্য করে। কিন্তু উপরোক্ত ঘটনাগুলি বারবার মনে করিয়ে দেয় যে ভারতের মতো গণতান্ত্রিক দেশেও আজ রাজনৈতিক বিদ্রুপ ও মতবিরোধের কোনও স্থান নেই। সাম্প্রতিক সময়ে মোদী সরকার আইন প্রণয়নের মাধ্যমে ভিন্নমতাবলম্বীদের দমন করার চেষ্টা করে চলেছে। কামরার মতে, সংশোধিত তথ্য প্রযুক্তি বিধি তাঁর 'রাজনৈতিক ব্যঙ্গাত্মক কাজে জড়িত থাকার ক্ষমতা' হ্রাসের একটি হাতিয়ার। সরকার তাঁর ফ্যাক্ট-চেক ইউনিটকে 'জাল, মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর' বলে 'এমনতর বিষয়বস্তু'কে অপসারণের ক্ষমতা দিয়ে কমিক্সকে 'স্বেচ্ছাচার ও বিষয়গত' হস্তক্ষেপের আওতায় আনতে চাইছে। কামরা বলেন, 'সরকার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সম্পূর্ণ একচেটিয়া অধিকার চায় এবং এটি আমাদের এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মধ্যে এনে ফেলেছে।' তিনি ইতিমধ্যে বম্বে হাইকোর্টে আবেদন করেছেন। ইতিমধ্যেই বিদেশি অনুদান নীতি (এফসিআরএ অ্যাক্ট) লঙ্ঘনের জন্য শিবসেনা নেতা সঞ্জয় নিরুপম অভিযোগ করেছেন যে কামরা বিদেশ থেকে এই ধরনের শো করার জন্য ৪ কোটি টাকা পেয়েছেন, যা কামরা ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁকে ক্ষমা চাওয়ার কথা বললে তিনি বলেন, একমাত্র মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী বললেই তিনি ক্ষমা চাইবেন।
হাসি আজও আমাদের অন্ধকার সময়ে বেঁচে থাকার ওষুধ। কিন্তু মঞ্চের রসিকতার বিতর্ক রুখতে যদি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের প্রয়োজন হয় তাহলে আগামী দিনে প্রস্তাবিত নতুন সংবিধানে হাস্যরসকে অপরাধ হিসেবে দেখানো এবং অপরাধের সংজ্ঞা পরিবর্তনের দিন আসন্ন বলেই মনে হয়।