অধিকাংশ মানুষের নিয়মিত কাজ না থাকাটাই ভবিতব্য?
অনিন্দ্য ভট্টাচার্য
সম্প্রতি, ইন্টারন্যাশনল লেবর অর্গানাইজেশন (আইএলও)
প্রকাশিত ‘ইন্ডিয়া এমপ্লয়মেন্ট রিপোর্ট ২০২৪’ নানা দিক থেকে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। বেকারি
বাড়ছে, আয় কমছে- এই প্রবণতাটি প্রতিবেদনটির মূল অক্ষ হলেও এর মধ্যে যে একটি অতীব
গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের ধারা প্রবাহিত, তাকে বুঝতে হলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের
দিকে আমাদের মনোযোগ দিতে হবে।
এ কথা আগে বহুবার বলেছি, অর্থনীতি ও যাপন ক্ষেত্রের সর্বস্তরে কৃত্রিম বুদ্ধিমতার প্রয়োগে আপামর বিশ্বে এতাবৎকালের রাজনৈতিক অর্থনীতিতে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। তা থেকে আমাদের দেশের অর্থনীতিও বাদ থাকেনি। যেমন, আইএলও’র প্রতিবেদন জানাচ্ছে, গত বেশ কয়েক বছর ধরেই ম্যানুফ্যাকচারিং ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের অনুপাত ১২ থেকে ১৪ শতাংশে স্থির থাকলেও নির্মাণ ও পরিষেবা ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানে বৃদ্ধি হয়েছে-- কৃষি থেকে শ্রম শেষোক্ত এই দুটি ক্ষেত্রে স্থানান্তরিত হয়েছে। কিন্তু কোভিডের পর এই চিত্র সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছে। দেখা যাচ্ছে, অ-কৃষি ক্ষেত্র থেকে কৃষি ক্ষেত্রে শ্রম স্থানান্তকরণের উলটো প্রক্রিয়াই এখন চরম বাস্তব। স্বভাবতই, কৃষির ওপর এ এক ভয়ঙ্কর চাপ। কারণ আর কিছুই নয়, নির্মাণ ও পরিষেবা ক্ষেত্রে, বিশেষত পরিষেবা ক্ষেত্রে ডিজিটাল ব্যবস্থা ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগের ফলে মনুষ্য শ্রমের চাহিদা ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে। সেই বাড়তি শ্রম ফিরে আসছে কৃষিতে। শুধু তাই নয়, ২০১৮ সালের পর থেকে স্থায়ী কর্মসংস্থানও ক্রমেই কমতে থেকেছে; পরন্তু, ২০১৯ সালের পর কর্মসংস্থানের যেটুকু বৃদ্ধি দেখা গেছে তার দুই-তৃতীয়াংশই ঘটেছে হয় স্বনির্ভর ক্ষেত্রে নয়তো বা মিলেছে বিনা মজুরিতে গৃহশ্রমের মহিলাদের পরিসরে। অর্থাৎ, কাজের বহু রসদ আছে, অফুরন্ত কাজের সুযোগও আছে, কিন্তু চাকরি নেই। কারণ, উৎপাদন প্রক্রিয়াটাই সার্বিক ভাবে হয়ে পড়েছে পুঁজি-নিবিড় ও প্রযুক্তি-নির্ভর। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এসে বিষয়টিকে আরও ত্বরান্ত্বিত করেছে।
বোঝাই যাচ্ছে, আগামী দিনে চাকরির বাজার একপ্রকার অনিশ্চিত। শুধু তাইই নয়, ডিগ্রি-প্রাপ্ত অথবা উচ্চশিক্ষায় পাশ দেওয়া কর্মপ্রার্থীদের চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা আরও কম। কারণ, দক্ষতা-নির্ভর উচ্চশিক্ষিত-পাশদের এতদিনের বরাদ্দ কাজগুলি যন্ত্র এখন অনায়াসে আরও নিপুণ ও নিখুঁত উপায়ে দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করতে সক্ষম। জেনারেটিভ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জমানায় prompt লিখে দিলেই কেল্লা ফতে! যন্ত্র নিমেষের মধ্যে নির্ধারিত কাজটি করে দেবে। ‘ডেভিন’ নামে এমন এক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবস্থা এসে গেছে যে, সফটওয়ারের বিন্দু-বিসর্গ পর্যন্ত সে সমস্ত কাজ সমাধা করতে পারে। উপরন্তু, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ‘Agentic Workflows’ এখন থেকে মানুষের মতোই ধাপে ধাপে সৃজনশীল ও উদ্ভাবনের কাজগুলি করবে; যেমন, একটি কাজের প্রথমে খসড়া তৈরি করা, রাফ ওয়ার্ক, প্যাচ ওয়ার্ক মারফত তাকে আরও যথাযথ ও উপযুক্ত করে তোলা-- এইভাবেই যন্ত্রও এখন মানুষের কায়দাতেই প্রয়োজনীয় বিবিধ স্তরীয় বিন্যাসের মধ্য দিয়ে কাজগুলিকে সম্পন্ন করবে আরও অধিক উৎপাদনশীল ফলের জন্য। তফাত হল, যন্ত্রের কাজ হবে অত্যন্ত দ্রুততা ও নিপুণতার সঙ্গে, সর্বোপরি ত্রুটিহীন। তার মানে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চালিত ব্যবস্থাপনা মানুষের দক্ষতাকে প্রতিস্থাপন করে তথাকথিত প্রতিষ্ঠান-পাশ ডিগ্রিধারীদের অকেজো ও অপ্রাসঙ্গিক করে দেবে। বরং, পরিশ্রমসাধ্য কায়িক কাজের প্রতুলতা এখনও কিছুকাল অদক্ষ ও কায়িক শ্রমিকের চাহিদাকে ধরে রাখবে। তার ইঙ্গিত উল্লিখিত প্রতিবেদনেও আছে। বলছে, আমাদের দেশে এখনও ৮২ শতাংশ মানুষ অসংগঠিত ক্ষেত্রে কাজ করেন এবং ৯০ শতাংশ মানুষ অনিয়মিত ভাবে নিয়োজিত। তথ্য এও বলছে, ২০২২ সালে যেখানে নিরক্ষর যুবকদের মধ্যে বেকারত্বের হার ছিল ৩.৪ শতাংশ, সেখানে স্নাতকদের মধ্যে তা ছিল ২৯.১ শতাংশ যা নিরক্ষর-বেকারি থেকে ৯ গুন বেশি। যেহেতু, দক্ষতার সঙ্গে উচ্চশিক্ষার অঙ্গাঙ্গী সম্পর্ক, আর এই দক্ষ কাজগুলিকেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চালিত ব্যবস্থাপনা শুরু থেকে শেষ অবধি সম্পন্ন করতে পারদর্শী, তাই ‘উচ্চশিক্ষিত’দের মধ্যে বেকারির হার আরও বাড়বে। কারণ, ‘ভাল ও স্থায়ী’ চাকরির আশায় উচ্চশিক্ষায় ভর্তির হার ইদানীং কমে এলেও পাশের হারের বিচারে এখনও তা সংখ্যাগত ভাবে বেশি।
ফলে, একদিকে বেকারির হার বৃদ্ধি পাচ্ছে, অন্যদিকে কর্মরত মানুষের মজুরি বা আয় কমছে। সংগঠিত ক্ষেত্রে নিত্য ছাঁটাই ব্যতিরেকেও মজুরি বা আয় কমছে, অসংগঠিত বা অদক্ষ কাজের এলাকাগুলিতে কাজের জোগান থাকলেও মজুরি ক্রমশই কমছে। আইএলও প্রতিবেদনের তথ্য দেখাচ্ছে, আমাদের দেশে অদক্ষ ও অনিয়মিত কৃষি শ্রমিকদের ৬২ শতাংশ ও নির্মাণ শ্রমিকদের ৭০ শতাংশ ন্যূনতম মজুরি পান না।
এইরকম পরিস্থিতির প্রেক্ষিতেই জনকল্যাণের রাজনীতি আজ প্রধান ভূমিকায় অবতীর্ণ। কারণ, প্রথমত, নগদ হস্তান্তরের মাধ্যমে (যেমন ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ বা ‘কৃষক বন্ধু’ প্রকল্প) পরিবারের প্রকৃত আয়কে কিছুটা বর্ধিত করলে সার্বিক গড় মজুরির পতনকে আপাতত সামাল দেওয়া যায়; দ্বিতীয়ত, নানান পরিষেবাকে বিনামূল্যে অথবা অর্ধমূল্যে প্রদান করতে পারলেও তা প্রকৃত আয়কে কিছুটা বাড়ায়! যেমন, ২০০ ইউনিট অবধি যদি বিদ্যুৎ বিনামূল্য পাওয়া যায়, অথবা, উন্নত বিদ্যালয়-শিক্ষা ও স্বাস্থ্য যদি সত্যি সত্যিই একেবারে বিনাপয়সায় মেলে, তাহলে তা যে প্রকৃত আয়কে বাড়ানোর পক্ষে সহায়ক, তা বলাই বাহুল্য। হয়তো, আগামী দিনে এই প্রবণতাই ‘ইউনিভার্সাল বেসিক ইনকাম’এর এক সর্বতো ব্যবস্থা হয়ে দাঁড়াবে। যে মোদি সরকার কিছুদিন আগেও এই ধরনের জনকল্যাণমূলক অভিসারকে ‘রেউড়ি’ বলে গাল পেড়েছিল, আজ তারাও ‘মোদি কা গ্যারান্টি’ নামে এইগুলিকেই ফেরি করছে। কোনও কোনও দল, যেমন আরজেডি বলতে শুরু করেছে, তারা বিহারে ক্ষমতায় এলে ব্যাপক ভাবে সরকারি চাকরি দেবে। হয়তো অন্য দলগুলিও অচিরেই একই কথা বলবে। কারণ, সরকারি দফতরে কাজের চেয়ে লোক-নিয়োগের পাল্লা ভারী হলেও এই ব্যবস্থার প্রবর্তন করা যেতে পারে এই অভিসন্ধিতেই যে, কাজ নেই তো কী হয়েছে, মাসের শেষে মাইনে তো আছে— অন্য ভাষায় যা হয়তো বা, অথবা নিশ্চিত ভাবেই ‘ইউনিভার্সাল বেসিক ইনকাম’ বলেও পরিগণিত হতে পারে!
কিন্তু রাজকোষে এত অর্থের জোগান দেবে কে? বলাই বাহুল্য, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এমন এক ব্যবস্থাকেই সাব্যস্ত করে লাগাম ধরেছে যেখানে মনুষ্য শ্রমের সমস্ত ভার সে বহন করতে সক্ষম; ফলে, এআই চালিত উৎপাদন ও পরিষেবায় কোনও খামতি থাকার কথা নয়, বরং, আরও নিখুঁত ও নিপুণ হওয়াই বাঞ্ছনীয়। দেখাও যাচ্ছে তা! অতএব, উদ্বৃত্ত আহরণের প্রক্রিয়াটিও অটুট রইল। সখেদে, রাজকোষে কর আদায়ও হয়তো আরও নিপাট হল। বুঝতে হবে, এ সময়ে কতিপয় পেশাদারকে বাদ দিলে যন্ত্রই স্বয়ম্ভু!
তাহলে অধিকাংশ মানুষের কি আর কাজ থাকবে না? ঠিকই, বাধ্যত মজুরি-দাসত্ব হয়তো আর থাকবে না। যখন শিল্প বিপ্লবের পর ইংল্যান্ডে ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্পে জোয়ার আসে তখন কারখানায় কাজ করার জন্য মজুর পাওয়া যেত না। গ্রাম থেকে তুলে এনে, রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো ভবঘুরেদের গ্রেফতার করে কারখানায় ঢুকিয়ে দেওয়া হত। কারণ, সেই অসহনীয় মজুরি-দাসত্বে কেউ স্বইচ্ছায় আবদ্ধ হতে চাইত না। পরে সেই রীতিই অভ্যাসে, প্রচারে ও আইনের চমকানিতে সর্বজনমান্য হয়েছে। ওষ্ঠাগত প্রাণে গত দু’ শতকে চাকরির নামে মানুষ এই মজুরি-দাসত্বকেই বহন করেছে। এর ভয়াবহ অভিঘাত ও চরম বিপন্নতা আমরা বারবার প্রত্যক্ষও করেছি। মার্কস এই মজুরি-দাসত্ব থেকে মুক্তির স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। তবুও এই চক্র চলেছে, কারণ, মানুষের আর অন্য উপায় ছিল না।
কিন্তু যন্ত্রের অভূতপূর্ব উত্তরণে আজ যখন এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তির সম্ভাবনা প্রবল তখন ‘কর্মসংস্থান’ প্রদানের রাজনীতির নামে এই বদ্ধ অবস্থায় বন্দী রাখার প্রয়াস কেন? মানুষের জন্য ‘মজুরির বিনিময়ে অধিকাংশ কর্মই’ তো আর থাকছে না! যা মৃতপ্রায় তা নিয়ে এত মড়াকান্না কীসের? অভ্যাসের টান? বিপ্রতীপে, ঘরে বসে অথবা লোক-দেখানো সরকারি কর্মস্থলে গিয়ে মাস শেষে ‘ইউনিভার্সাল বেসিক ইনকাম’ গোছের জুটে গেলে মানুষ তো এক অর্থে আংশিক মুক্তি লাভ করবে, নিজের পছন্দের কাজে মনোনিবেশ করতে পারবে। সে তো ভাল কথা। কিন্তু মৌলিক ব্যবস্থাপনাটি যেহেতু অর্থ বৈষম্যের সমস্ত উপাদান নিয়ে এখনও ‘পুঁজিবাদ’ই থাকছে, তাই এর বিবর্তন ও অভিঘাতগুলি বাস্তবে কেমনতর হবে তা এখনও কিঞ্চিৎ অনিশ্চিত! সম্মুখ পানে আরও খানিক এগোনো যাক না হয়! আওয়াজ উঠুক, 'ইউনিভার্সাল বেসিক ইনকাম' চালু করো।
সংসারে সন্তান বা সদ্যজাত সন্তানের মা-র হাতে যদি 'বেসিক ইনকামের' টাকা সরাসরি পৌঁছয়, তবে শিশু-সন্তানের মস্তিষ্কের বৃদ্ধি-বিকাশ হয় সুচারু। শিশুর অ্যামিগডালা-হিপোক্যাম্পাসের গঠন সাবলীলভাবে পূর্ণতাপ্রাপ্ত হয়। দ্রুততার সঙ্গে শিশু ভাষা শেখে। মা-র হাতে টাকা পড়ায় উদ্বৃত্ত টাকার কিছুটা সঞ্চয় হয়। প্রবৃ্ত্তিগত ভাবে বাবা-র তুলনায় মা শিশুর প্রতি বেশি যত্নবান হন। গরীব ঘরে পুরুষের হাতে বিনা আয়াসে টাকা এসে পড়লে পুরুষটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নেশাভাঙ করে সে টাকা উড়িয়ে দেন। মা-র হাতে 'বেসিক ইনকামের' টাকা পৌঁঁছলে সংসারে প্রতিপালনে খরচের বোঝা খানিকটা লাঘব হওয়ায় নিত্য-তিরিশদিনের সাংসারিক খিটিরমিটির খানিকটা বন্ধ হওয়ায় শিশুর মানসিক বিকাশ হয় মসৃন। সুতরাং কল্যানকামী রাষ্ট্রে 'বেসিক ইনকামের' টাকা মা-র হাতে পৌঁছনো বাঞ্ছনীয়।
ReplyDeleteদ্বিতীয়তঃ--এআই কাজের থেকে অকাজ বেশি করছে। 'লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেলের' ওপর ভিত্তি করে এআই শিশুর মত বেড়ে ওঠে। পারিপার্শ্বিকতা, পরিবেশ, আচার-আচরন, দৃশ্যশ্রাব্য অনুভুতি, মন-মনন--চেতনা, হৃদয়বৃত্তি বাদ দিয়ে শুধু ভাষাকে নির্ভর করে বেড়ে উঠলে এআই-এর পক্ষে কস্মিনকালেও মানুষের সমকক্ষ হয়ে ওঠা সম্ভব নয়। সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত শুধু ভাষা বা অ্যালগরিদমে সম্ভব নয়। মানুষের সুকুমার প্রবৃত্তি, তার প্রজ্ঞা, পান্ডিত্য-জ্ঞান; তার স্বপ্ন-তিতিক্ষা , হৃদয়ের অনির্বান আকুতি, বেদনা তাকে এগিয়ে দেয় সৃষ্টিশীলতার ঈর্ষনীয় সাফল্যের পথে। তাই মোনালিসা-ডেভিডের উৎকৃষ্ট নকল এআই বানাতে পারলেও প্রতিভার দার্ঢ্যে উজ্জ্বল নান্দনিক কোনও সৃষ্টি এআই করে উঠতে পারে নি। পারবেও না। কারন চামচ করে গিলিয়ে আর যাই হোক প্রতিভাধর বানান যায় না। ধর তক্তা মার পেরেক গোছের কাজ এআই করবে, মাঝে মধ্যে দু একটি কাজে চমকেও দেবে। ব্যাস, ওই পর্যন্তই। পোষা কুকুর-বিড়াল-মাছ-পাখিও ওরকম দু একটি চমকে দেওয়া কাজ করে ফেলে। তবে শেষ জয়ে মানুষই হবে বিজয়ী।
👍🏼👍🏼👍🏼👍🏼👌🏼🌹
Deleteওপরের বক্তব্যটি আমার, মৃন্ময়ের।
ReplyDeleteতথাকথিত শিক্ষিত অর্থাৎ বি এ এম এ পাশের মধ্যে বেকারত্বের হার সর্বকালেই বেশি ছিল ।এর জন্য তথ্য ভান্ডার ঘা৺টার বিশেষ দরকার নেই।আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স আসার বহু যুগ আগে আমরা সাহিত্যে চলচ্চিত্রে এর নজির দেখেছি। অপরাজিত বা অপুর সংসারের অপূর্ব কে ছোটখাট প্রেসের কাজ বা কেরানীগিরির জন্য কি পরিমাণ বেগ পেতে হয় আমরা দেখেছি। তফাৎ হয়েছে এই যে 'অল্প স্বল্প ইংরাজি জানিলে সওদাগরী হাউজে কাজের সুযোগ' নেই আজ। তার বদলে রয়েছে ডেলিভারি বয় হওয়ার সুযোগ আর সেটা চাকরী নয়। স্বল্প শিক্ষিত বা অশিক্ষিত মানুষ সহজেই চুক্তি ভিত্তিক বা স্বল্প মেয়াদী কাজে যোগ দিতে পারে।সেটা নিজ এলাকায় না হলে অন্যত্র পাড়ি দিতে পারে।তাই এদের মধ্যে বেকারত্বের হার তুলনামূলক ভাবে কম হওয়া স্বাভাবিক। অবশ্য কোভিড কালে এই শ্রেণীটি ব্যাপক ভাবে কর্মহীন হয়েছিল। রাষ্ট্রের আয়ের উৎস যদি ক্রমশ সীমিত হয়ে আসে সেক্ষেত্রে কল্যাণমুখী অর্থনীতি রূপায়ণ করা কঠিন হয়ে পড়ে। মায়েদের বা মেয়েদের হাতে সামাজিক সুরক্ষার টাকা সরাসরি গেলে ভালো এটা অনস্বীকার্য। কিন্তু এর সীমাবদ্ধতা প্রকট।
ReplyDeleteসঠিক পর্যবেক্ষণ ।
Delete