পৌবি লাই প্রদর্শনী
অভিজিৎ রায়
উওর-পূর্ব ভারতের সর্বাধিক চিওাকর্ষক লোকসাহিত্য মণিপুরের ‘জায়্যান্ট পাইথন’এর
কাহিনি। কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার
মন্ত্রক এবং ইন্দিরা গান্ধী রাষ্ট্রীয় মানব সংগ্রহালয়ের উদ্যোগে মণিপুরের এই
লোকসাহিত্যকে দেশে অন্যান্য অংশে পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে ‘পৌবি লাই-
স্টোরি অফ্ জ্যায়ন্ট পাইথন’ নামে ‘সিঙ্গল অবজেক্ট’ বা একক বস্তুর প্রদর্শনীর
মাধ্যমে। কলকাতা জাদুঘরের আশুতোষ অডিটোরিয়ামে পৌবি লাইয়ের প্রদর্শনী ১লা অক্টোবর
থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে।
দিল্লির জাতীয় সংগ্রহালয়ে ৪২ দিন ধরে পৌবি লাইয়ের প্রদর্শনী চলার পর এখন সেটি
কলকাতার জাদুঘরে হাজির। মণিপুরে মেইতেই জাতির মধ্যে প্রচলিত পৌবি লাইয়ের অতিকথাকে তুলে ধরা হয়েছে বিভিন্ন শিল্পীর অঙ্কিত ছবি প্রদর্শনীর মাধ্যমে। এই
প্রদর্শনীর মূল আকর্ষণ ২০০২ সালে বিখ্যাত ভাস্কর্য শিল্পী প্রয়াত করম দীনেশ্বর
কর্তৃক নির্মিত পৌবি লাইয়ের ২১ ফুটের কাঠের কাঠামো।
মণিপুরের মেইতেই সংস্কৃতি অনুযায়ী পৌবি লাই একটি পাইথন
যা জ্ঞানের উৎস হিসেবে বিবেচিত; তাদের বিশ্বাস, রাজা লাইরেন্ পাকহ্যাঙ্গবা দিনের
আলোয় মানব প্রতিকৃতি ও রাতে নিজেকে দৈবশক্তি দ্বারা পাইথনে পরিবর্তিত করতেন। ‘পাপহল্
ল্যামবুবা’ ম্যানুস্ক্রিপ্টে রাজা পাকহ্যাঙ্গবার পাইথনে পরিবর্তিত হওয়ার কথা
উল্লেখ আছে এবং সেখানে পাইথনকে পাপহল্ নামে বর্ণনা করা হয়েছে।
প্রদর্শনীতে ব্যবহৃত কাঠামোটি নির্মাণের নেপথ্যেও একটি ইতিহাস রয়েছে। দীনেশ্বরের স্বপ্নে পৌবি লাই নির্দেশ দেন লেইমাটক নদীর ধারের অরণ্য থেকে কাঠ
সংগ্রহ করে কাঠামোটি তৈরী করতে। কাঠামোটি ইন্দিরা গান্ধী রাষ্ট্রীয় মানব
সংগ্রহালয়ে সংরক্ষিত।
মণিপুরি লোকসাহিত্যের মাধ্যমে উওর-পূর্ব ভারতের
সংস্কৃতিকে জাতীয় স্তরে নিয়ে আসার জন্য প্রয়াস নেওয়া হয়েছে। সংস্কৃতি মন্ত্রকের
অতিরিক্ত সচিব কে কে মিওল বলেন, ‘সরকার উওর-পূর্ব ভারতের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে
অগ্রাধিকার দিতে এই প্রদর্শনীর প্রয়াস নিয়েছে। জাতীয় সংগ্রহালয় ও ইন্দিরা গান্ধী
রাষ্ট্রীয় মানব সংগ্রহালয় যৌথভাবে সেই প্রয়াসকে সমর্থনে এগিয়ে এসেছে।’
No comments:
Post a Comment