সব আছে তো কী নেই!
ব্যাকরণ সিং
এক সিমেন্ট কোম্পানির
ব্যানারে বিশ্বের সব থেকে ‘বড় দুর্গা’র কাট আউট যখন ঢেখে ফেলেছে শহরের ইতিউতি এবং
সেলিব্রিটিদের নানান ভোলভাল আর কসমেটিক সব ছায়াছবির মুক্তিতে ছয় রিপুতে শকিং
তোলপাড়, তখন বোঝা গেল যে পুজো আসিয়াছে। কত মণ সিমেন্টে মা প্রকট হলেন আর সেই
কোম্পানিই বা কত কোটি ঘরে তুলল সে বিচার না হয় আপাতত তোলা থাক কিন্তু মা যে
আদ্যন্ত বাণিজ্যিক ও কর্পোরেট মা হয়েছেন তা আর ঠেকায় কে! বিকোবেন তিনি বিকোবেন! অতএব, ফুল আছে, ফল আছে, কাশ আছে, পদ্ম আছে, নতুন জামার
গন্ধও আছে, ধেই ধেই প্যান্ডেল বেরানো আছে, খাই খাই ছন্দও আছে আর আছে নিমেষে দেদার
পকেট খালি করার কর্পোরেট মন্ত্র। সুতরাং, এখন শুধু শরীর মুখে প্লাস্টিক সার্জারি
নয়, গোটা যাপনে- গল্পে, উপন্যাসে, চলচ্চিত্রে, খাবারে, সম্পর্কে, মায় দেবীর রূপে ও
বোধনেও। চলচ্চিত্র দেখি না ভিডিও গেমস, গপ্পো পড়ি না লালসা জাগানো বটিকা খাই,
রসনার স্বাদ নিই না বিষ গিলি, চিকিৎসা করাই না ভোগে যাই- কে জানে!
তবে নেইটা কী? ‘পল্লীগ্রাম’এ
রবি ঠাকুর যেমন লেখেন, ‘পুরাতন গৃহ, পুরাতন দেবমন্দিরের প্রধান সৌন্দর্যের কারণ এই
যে, বহুকালের স্থায়িত্ববশত তাহারা মানুষের সহিত অত্যন্ত সংযুক্ত হইয়া গেছে, তাহারা
অবিশ্রাম মানবহৃদয়ের সংস্রবে সর্বাংশে সচেতন হইয়া উঠিয়াছে- সমাজের সহিত তাহাদের
সর্বপ্রকার বিচ্ছেদ দূর হইয়া তাহারা সমাজের অঙ্গ হইয়া গেছে। এই ঐক্যেই তাহাদের
সৌন্দর্য।’ আমাদের অঙ্গহানি, বন্ধুহানি তো সেই কবেই! আমাদের সৌন্দর্য কই?
besh laglo
ReplyDelete