গোপন হিংসার গলা সাধা
প্রবুদ্ধ বাগচী
বন্দুক লাও, সড়কি লাও, মশাল লাও — লাও তো বটে, আনেটা কে! যাঁর ওপর আনার দায় ছিল তিনি বলে দিয়েছেন, এ ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ডের সাজা প্রচলিত আইনের ব্যাকরণের সঙ্গে মেলে না। এই আইন তিনি তৈরি করেননি। বৃহত্তর গণতন্ত্রের সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটে নির্বাচিত আইনসভা সেই সব আইনের বিধি লিখেছে। তাহলে তো এই আইন তৈরির পদ্ধতির মধ্যে আমরাও উপস্থিত আছি, এই যারা আজকে বলছি অপরাধীর কেন ফাঁসির সাজা হল না। তাহলে কি আমরা নিজেদেরই রচিত বিধিকে নিজেরাই ভেঙে ফেলতে আজ গলা তুলছি? যিনি সাজা দিয়েছেন তিনিও নিছক একজন সরকারি চাকুরে, তাঁর নিয়োগপত্রে সই করেছেন রাজ্যপাল বা রাষ্ট্রপতি, তাঁরাও আমাদের সংসদীয় কাঠামোর প্রত্যঙ্গ— যে সংসদীয় কাঠামোকে মজবুত করতে আমরা প্রতি পাঁচ বছরে একবার ভোটের লাইনে দাঁড়াই। তবে কি একটা ঘৃণ্য অপরাধের উপযুক্ত তদন্ত ও শাস্তি চাইতে গিয়ে নিজেদেরই তৈরি আইনসভা ও বিচারব্যবস্থার বিপরীত একটা মঞ্চে দাঁড়িয়ে পড়লাম আমরা? চেয়েছিলাম বিচার, চেয়েছিলাম উপযুক্ত তদন্ত, দোষী বা দোষীদের শাস্তি, কিন্তু তার মানে কি আমরা নিজেরাই ঠিক করে দেব কী সাজা হবে সেই অপরাধীর?
মনে পড়ে জঙ্গলমহলের সেই স্কুল মাস্টারমশাইটির কথা, পড়ুয়াদের কাছে তিনি ছিলেন বড় প্রিয়। একদিন স্কুল চলার সময় এল ঘাতক বাহিনী, ক্লাসঘরের মধ্যে তাঁকে রক্তাক্ত করে ফুঁড়ে দিয়ে গেল তাঁর কিশোর ছাত্রছাত্রীদের চোখের ওপর। তারপর লাল কালিতে পোস্টার লিখে জানিয়ে দেওয়া হল, শাসক দলের হয়ে কাজ করার জন্য তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। মাওবাদীদের এইটাই নাকি রীতি। তাঁদের বিচারে অপরাধীর এই সাজাই নাকি প্রাপ্য। আবার, বিনপুরের সেই শালমহুয়ার জঙ্গলে লুকিয়ে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছিল যে মাওবাদী স্কোয়াড, রাতে মাথার কাছে অস্ত্র রেখে ঘুমিয়েছিলেন তাঁরা ক’জন। যৌথ বাহিনীর জওয়ানরা ঘুমন্ত গেরিলাদের হত্যা করে তাঁদের শবদেহ বাঁশের গায়ে ঝুলিয়ে বেঁধে চিত্র সাংবাদিকদের সামনে ক্যামেরার পোজ দিয়েছিলেন। দুটো হত্যার কোনওটারই সুবিচার হয়েছে বলে জানা নেই। হলেই বা, কী হতে পারত সেই বিচারের রায়?
এই রাজ্যের ইতিহাসে ষাট ও সত্তরের দশক জুড়ে ব্যাপ্ত হননের কাল। শুধু রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে-প্রতিদ্বন্দ্বে ঘটে গেছে কত না খুন, নিছক সন্দেহের বশে পুলিশবাহিনী নির্বিচারে নিকেশ করে দিয়েছে নির্দোষ তরুণ-তরুণীদের। কারও কি বিচার হয়েছে? তার অর্থ কি এই যে এই প্রতিটি হত্যার সাজা দিতে গিয়ে টানা ছ’ বা আট মাস চালু রাখতে হত ফাঁসির মঞ্চ? একেকটি নির্বিচার হত্যার পাল্টা আরেকটা করে আখ্যান!
অপরাধ ও অপরাধীর বিষয়ে রাষ্ট্রের একটা মনস্তত্ব থাকে। থাকে তার সাজা দেওয়ার বিবিধ বিধান। কল্যাণকর রাষ্ট্রের ধারণার আওতায় কয়েক দশক হল 'কারাগার' শব্দটি পালটে ফেলে নাম দেওয়া হয়েছে ‘সংশোধনাগার’, অর্থাৎ, সাজাপ্রাপ্ত অপরাধীর মানসিকতা সংশোধনের একটা প্রয়াস জারি থাকবে রাষ্ট্রের পক্ষেই। এর যে ইতিবাচক ফল কিছু হয়নি তা নয়। অনেকেই হয়তো জানেন, একদা কলকাতার কুখ্যাত ‘সাট্টা ডন’ ও বউবাজার বিস্ফোরণ মামলার মূল চক্রী রশিদ খান এখন প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে বন্দিদের ছবি আঁকা শেখান। সারদা চিটফান্ড মামলার বিচারাধীন বন্দিনী দেবযানী মুখোপাধ্যায় দমদম সেন্ট্রাল জেলে সহবন্দিদের শিক্ষিকা হিসেবে কাজ করেছেন। যাঁরা মনোরঞ্জন ব্যাপারীর ‘ইতিবৃত্তে চণ্ডালজীবন’ পড়েছেন, তাঁরা জানেন তাঁকে জেলের ভিতর প্রথম শিক্ষার পাঠ দিয়েছিলেন এক যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক, না হলে তাঁর লেখক হয়ে ওঠা হত না। ‘মুক্তধারা’ নামক খ্যাত বাংলা চলচ্চিত্রটি তৈরি হওয়ার আগেই যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামীদের নিয়ে ‘বাল্মীকি প্রতিভা’ মঞ্চস্থ করে আমাদের অবাক করে দিয়েছিলেন অলকানন্দা রায়; মানুষের দাবিতে সেই নাট্য মঞ্চায়িত হয়েছিল রবীন্দ্র সদন প্রেক্ষাগৃহে। ঠিক ওই সময়েই অলকানন্দা রায়ের বাড়িতে পরিচিত হওয়ার সুযোগ হয়েছিল আঠারোটা খুনের অপরাধে ‘বন্দি’ নাইজেল ওকারা ওরফে ভিকির সঙ্গে। সে বলেছিল, কীভাবে অলকানন্দা রায় তাকে পুনর্জন্ম দিয়েছেন, সে এখন তাঁকে ‘মা’ বলে ডাকে। শুনিয়েছিল, কীভাবে রবীন্দ্র সদনের ফাঁকা প্রেক্ষাগৃহে বিশাল মঞ্চের সামনে দাঁড়িয়ে সে ডুকরে কেঁদে উঠে নিজেকে পরিশুদ্ধতর করতে চেয়েছিল একদিন। এগুলো নিছক রোমাঞ্চিত তথ্য নয়, এসবের ভিতরে একটা নিখাদ মানবিকতার আখ্যান আছে, রয়েছে এক লুকিয়ে থাকা আলো। সম্ভবত গোটা সামাজিক রাজনৈতিক পরিসর জুড়ে একটা সংগঠিত চেষ্টা চলছে সেই আলোটাকে যাতে প্রতিহিংসার ঠুলি পরিয়ে অন্ধ করে দেওয়া যায়। অপরাধের চরিত্রের থেকে বেশি নজর অপরাধীর দিকে সরে গেলে এর বেশি কিছু হওয়ারও ছিল না। গত দুই দশকে প্রশাসন ও আইনসভার ক্লীবত্বের ফাঁক দিয়ে বিচারব্যবস্থার ওপর কি বাড়তি এক প্রত্যাশা তৈরি করে ফেলেছি আমরা? রাখলে বিচারপতিরাই রাখবেন না হলে নয়! আর আমাদের প্রত্যাশার প্রতি ‘সুবিচার’ করতে না পারলেই আমরা তাঁদের আদ্যশ্রাদ্ধ করার লাইসেন্স পেয়ে যাব?
ফরাসি বিপ্লবের আগে সে দেশে কেউ আত্মহত্যা করলে শবদেহকে নগ্ন করে উল্টো করে টাঙিয়ে প্রকাশ্যে তার অন্ত্যেষ্টি করা হত; কারণ, আত্মহত্যা ছিল অপরাধ। মধ্যযুগে গিলোটিন, পরে ইলেক্ট্রিক চেয়ার হয়ে মুণ্ডচ্ছেদ-- এই ধরনের বিভিন্ন সাজার কথা আমরা শুনেছি। নরহত্যাকে প্রায় ‘ধ্রুপদী শিল্পের’ পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিল মুসোলিনী-হিটলার, প্রতিক্রিয়ায় মুসোলিনীর প্রকাশ্য রাজপথে ফাঁসি হয়। এ দেশের মধ্যযুগের ইতিহাসেও এ ওঁর মুণ্ডু কেটে আরেকজনকে ‘উপহার’ পাঠাচ্ছেন এমন সব হিংস্র কাহিনির কথা যে আমরা শুনিনি তা নয়। অবশ্য আমাদের পুরাণের আখ্যানে দেবদেবীদের যে সব ‘সাজা দেওয়ার’ ছড়ানো ইতিহাস সেখানে প্রতিহিংসার চাপ বড়ই বেশি। কথায় কথায় ভস্ম করে দেওয়া, ধ্বংস করে দেওয়ার প্রবণতায় নিষ্ঠুরতার ছায়া দীর্ঘ।
তবে মানবসভ্যতা তো ইতিহাস থেকেই শিক্ষা নেয়, তাই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরের দুনিয়ায় বেশিরভাগ দেশে মৃত্যুদণ্ডের সাজা রদ হয়ে গেছে। 'চোখের বদলে চোখ' নিয়ে যে ঘৃণ্যতম অপরাধের প্রবণতা রুখে দেওয়া যায়, সংখ্যাগুরু বিশ্ব এই তত্ত্বকে তামাদি ঘোষণা করে দিয়েছে অনেক কাল আগেই। ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী কালোবাজারীদের ল্যাম্পপোস্টে ফাঁসি দেওয়ার নিদান দিলেও কার্যত তার প্রভাব লবডঙ্কা ছাড়া কিছুই নয়। অপরাধ-বিজ্ঞান নিয়ে যাঁরা গবেষণা করেন, তাঁদেরও সমীক্ষা ভিত্তিক পর্যবেক্ষণ এই যে, মৃত্যুদণ্ডের সাজার সংস্থান কোনও অপরাধ সংগঠিত করার ক্ষেত্রে ‘ডেটারেন্ট ফ্যাক্টর’ হিসেবে কাজ করে না। আর তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ তো এই দেশে নারীদের বিরুদ্ধে ঘটে যাওয়া হাজারও অপরাধের খতিয়ান। তার পরেও আমরা 'ফাঁসি ফাঁসি' করে এমন বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়ছি কেন? আমাদের অন্তর্গত রক্তের ভিতর কেবলই কি হননের জোয়ার-ভাঁটা? আমরা কি চাই আমাদের সমবেত হিংসার বাষ্প ফেটে পড়ুক বিচারের পাতায় পাতায়?
আদালতের যে রায় নিয়ে এত কথা, সেখানে কিন্তু সব থেকে বড় ভরসার কথা এইটেই, আদালত সমস্ত সাক্ষ্য, তথ্যপ্রমাণ ও ফরেনসিক রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে যে সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে তা হল-- এই জঘন্যতম অপরাধটি একজন অপরাধীই সংগঠিত করেছে। তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে বিচারপতি বলেছেন, সিবিআই'এর তদন্তকারী অফিসার প্রাপ্ত তথ্য ও প্রামাণ্য নথির ওপর ভিত্তি করে একটি 'চেইন অফ ইভেন্টস' তৈরি করেন। সেই 'চেইন'কে অনুসরণ করে মাননীয় বিচারপতি সমস্ত তথ্যাদি ও ঘটনাক্রমকে খতিয়ে দেখে এবং আনুষঙ্গিক জিজ্ঞাসাবাদের প্রক্রিয়ায় ১৭২ পাতার রায় দেন। সেখানে তিনি সমস্ত খুঁটিনাটি বর্ণনা ও বিশ্লেষণ পেশ করে এবং ২০২২ সালে সুপ্রিম কোর্টের একটি মামলার (মনোজ ও অন্যান্য বনাম মধ্যপ্রদেশ সরকার) রায়ে উল্লিখিত 'বিচারকে রক্তের জন্য তৃষ্ণার্ত হয়ে ওঠা'র মানসিকতার বিরোধিতার প্রসঙ্গ পেড়ে লেখেন, আরজিকরে সংগঠিত অপরাধ নিকৃষ্ট ও ভয়ঙ্কর, তবুও তিনি অপরাধীকে মৃত্যুদণ্ড নয় আমৃত্যু কারাবাস ও সংশোধনের প্রক্রিয়ার পথ ধরে চলার আদেশ দিচ্ছেন।
আমরা কি ফাঁসি চাই, না অপরাধের উপযুক্ত তদন্ত ও প্রতিটি দোষীর আইনানুগ সাজা? নিজেরা সাজা ঠিক করে আইনের কাছে তার অনুমোদন আদায় করার মাধ্যমে আমরা কি আসলে পুরো বিষয়টাকেই গুলিয়ে দিয়ে সম্প্রচার করছি নিজেদের মধ্যে একটু একটু করে বেড়ে ওঠা হিংসা ও আগ্রাসনের? অথচ হাতের কাছে হাজির ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের ‘ভুল সাজা’র উদাহরণ। আফজল গুরুকে ফাঁসিতে চাপাবার আগে কার্যত তাঁর কোনও বিচারই হয়নি, এই তথ্য পেয়েছি কোভাড গান্ধির ‘ফ্র্যাকচার্ড ফ্রিডম’ বইতে। আবার, নিম্ন-আদালতের ফাঁসির সাজা উচ্চ আদালতে খারিজ হয়ে গেছে এমন উদাহরণ প্রচুর। আর বিলকিস বানু-র ‘ধর্ষক’দের রাষ্ট্রের তরফে মুক্তি দিয়ে ফুলমালা সহ সম্বর্ধনা দেওয়া হয়েছে, এই তথ্যও ভুলে যাওয়া উচিত নয়। সদ্য মুক্তি পাওয়া সত্যজিৎ রায়ের ফেলুদা-কাহিনি ‘ভূস্বর্গ ভয়ঙ্কর’এ আমরা খুঁজে পাই এক অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে যিনি নিজের চাকুরি জীবনে বেশ কিছু মৃত্যুদণ্ড নিয়ে রীতিমতো অনুতপ্ত। পরিচিত বাংলা ছবি ‘সবার উপরে’ও আমরা পেয়েছি এক ভুল বিচারের গল্প। আসলে বিষয়টা এই যে, সমাজে, সাহিত্যে বিচারের পাশাপাশি ‘অন্যায্য’ বিচারেরও একটা উপস্থিতি আছে। বিশেষ করে, একটা পর্যায়ে এসে এই ধরনের বিচার খুব সূক্ষ্ম ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণের ওপর দাঁড়িয়ে থাকে। তাই যাকে বলে নিবিড় পর্যবেক্ষণ বা ক্লোজ স্ক্রুটিনি তার গুরুত্ব খুব বেশি। নিম্ন আদালতের বিচারক এ ক্ষেত্রে যে রায় লিখেছেন তাতে এই নিবিড়তার ছায়া খুব প্রত্যক্ষ।
আমরা কেউ মূল চক্রীদের অপরাধ কমিয়ে দেখানোর পক্ষপাতী নই। অপরাধীরা উপযুক্ত সাজা পাক এইটিই আমাদের উদ্দেশ্য ও বিধেয়। কিন্তু গণ-আদালতে নিজেদের মতো বিচার করে সাজা দেওয়ার প্রলোভন কেন আমাদের এমনভাবে খেপিয়ে তুলেছে তার হদিশ পাওয়া মুশকিল। এক সময় রাজ্যের প্রান্তে প্রান্তে গণধোলাইয়ের প্রবণতা বেড়ে গিয়েছিল, সেই সময় কবীর সুমন ‘কাঁদতে দে’ শিরোনামে একটি গান বেঁধেছিলেন। সেখানে ছিল গণপ্রহারে ক্ষতবিক্ষত এক ছেলের চোখে দেশলাই জ্বেলে দেওয়ার বর্ণনা। ব্যক্তি হিংসার থেকেও সমবেত হিংসার দাপট ও তাপ অনেক বেশি বিপজ্জনক। এক নারকীয় অপরাধের বিচার প্রক্রিয়ায় নিজেরা প্রত্যক্ষে-পরোক্ষে জড়িয়ে গিয়ে আমরা কি তাহলে প্রতিদিন একটু একটু করে খুনি হয়ে উঠছি?
খুব ভালো লাগলো। দারুন সহজবোধ্য লেখা। দুটি কথা,
ReplyDeleteপ্রথমতঃ অনুশোচনা, আত্ম দংশন হল সবচেয়ে বড় শাস্তি। মৃত্যুদণ্ডে সেই শাস্তির সুযোগ থাকে না।
দ্বিতীয়তঃ আদালতের রায় শেষ অবধি কোন এক বা একাধিক ব্যক্তির পর্যবেক্ষণ ও সিদ্ধান্ত। অতএব সেখানে ভ্রান্তির সুযোগ থেকেই যায়। তাই রায়দানের ক্ষেত্রে বিচারপতি যে সংযম দেখিয়েছেন, সাহস দেখিয়েছেন, সেটাও কুর্নিশ জানাই।
ক্রাউডের পাগলামির সামনে, এমন সোজাসুজি মত প্রকাশের জন্য প্রবুদ্ধকেও ধন্যবাদ।
প্রবুদ্ধ-বাবু ফাঁসির বিপক্ষে, বেশ ভাল কথা.....। ফাঁসির সপক্ষেও হাজারখানা মোক্ষম যুক্তি সাজান যায়। অপরাধ যেখানে বিজ্ঞানভিত্তিকভাবে প্রমাণিত এবং প্রতিষ্ঠিত নয় সেখানে কে বা কারা অপরাধী তার বিচার কিভাবে সম্ভব? এবং ইন্দ্রজিৎ-এর মত বলা যায়ই “কাব্যির নাম শুনে কেন তুমি পালাবে?/ কেন রোজ রেডিওটা অত জোরে চালাবে?/ কেন তুমি ডালে দেবে আটখানা লঙ্কাই?/ সব্বাই করে বলে সব্বাই করে তাই”। সরকার, পুলিশ-প্রশাসন বা সিবিআই অন্ধকারে হাতড়ে বেড়াচ্ছে। ডিএনএ বা জিন নিয়ে দেশে বিদেশে কিঞ্চিৎ কাজ করার সুবাদে বিনম্র-ভাবে বলতে পারি অভয়া-কাণ্ডে জিন/ডিএনএ বিশ্লেষণে অকাট্য সাক্ষ্যপ্রমাণ জোটান মুশকিলই নয়, প্রায় অসম্ভব। প্রায় বললাম, আমেরিকা-জার্মান বা ইয়োরোপের কিছু দেশে প্রায় অসম্ভবকে সম্ভব করার মত প্রযুক্তি/উপকরণ মজুত আছে, ভারতে নেই। সরকার, পুলিশ-প্রশাসন বা সিবিআই, আমার মত সাধারণ মধ্য মেধার কারবারিদের নিয়ে চলে বা চলে আসছে। মধ্যমেধা/স্বল্পশিক্ষা কখনও নিজের ভুল বা দোষত্রুটি স্বীকার করতে পারে না। একবার ভুল স্বীকার করলে পরেরদিন তার/তাদের সুখী নিরাপদ জীবনে নেমে আসতে পারে আদিগন্ত বিস্তৃত অন্ধকারের দূর্বিসহ খাঁড়া! অপরাধী মধ্যমেধার পুলিশ/সিবিআই আধিকারিকদের থেকে বিদ্বান, পেশাদার এবং প্রতিভাধর হলে, থোড়বড়িখাড়া তার থেকে প্রশ্নহীন আনুগত্যে, নেতা-নেত্রীর তাঁবেদার বনে, টিভির সান্ধ্য গল্প-দাদুর আসর থেকে অনিন্দ্য-র ভাষায় ‘মগজে শান দেওয়ার’ নির্বোধ পঙ্কিল রসদ সংগ্রহের বৃথা চেষ্টা চালানোই কি ভাল নয়? মরা ব্যাঙের মত যুগের পর যুগ টিকে ত থাকা যাবে।
ReplyDeleteমৃন্ময় চন্দ।
অপরাধী, মধ্যমেধার পুলিশ/সিবিআই আধিকারিকদের থেকে বিদ্বান, পেশাদার এবং প্রতিভাধর হলে, থোড়বড়িখাড়া তদন্তকে অনায়াসে পাশ কাটাতে পারবে।
ReplyDelete