কৃষক আন্দোলন
অভূতপূর্ব মোড় নিতে পারে
প্রশান্ত ভট্টাচার্য
কৃষকদের আন্দোলনের দ্বিতীয় পর্যায়টি শুরু হয়েছে গত বছরের গোড়া থেকেই। এখন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকারের যা মতিগতি, তাতে আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি কৃষকদের দিল্লি অভিযান অনিবার্য হয়ে উঠেছে। দেশের অন্ন যাঁরা জোগান, মোদী সরকার তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে পর্যন্ত নারাজ। আর আদালতের ভূমিকাও স্যালুট করার মতো নয়; শীর্ষ আদালতের যত আগ্রহ সড়ক থেকে আন্দোলনরত কৃষকদের হঠিয়ে পরিবহন যাতায়াতের সুবিধা করে দেওয়ায়, ততটা আগ্রহ নেই কৃষকদের মূল দাবিগুলোর সুষ্ঠু সমাধানে সরকারকে বাধ্য করানোয়। তা সত্ত্বেও কৃষকরা এখনও পর্যন্ত প্রশংসনীয় ধৈর্য দেখাচ্ছেন। কিন্তু এই ধৈর্য কতদিন থাকবে আমার গভীর সন্দেহ আছে। যে কোনও সময়ই মাটির এই মানুষগুলো আক্রমণাত্মক হতে পারেন। এমন লক্ষণও দেখা যাচ্ছে, যে কোনও সময় কৃষক আন্দোলন চমকপ্রদভাবে অন্য চেহারা নিতে পারে। খেয়াল রাখতে হবে, গত তিন সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবাদী দু'জন কৃষক নেতা আত্মঘাতী হয়েছেন।
তবে এটাও ঘটনা, কেন্দ্রের মোদী সরকারকে গত দশ বছরে যদি কোনও গণআন্দোলন বিব্রত করে থাকে, সেটা কৃষক বিক্ষোভ। ২০২১ সালে কৃষকদের আন্দোলনের জেরে কৃষি আইন প্রত্যাহারও করতে হয় কেন্দ্রকে। কিন্তু তারপরও সমস্যা মেটানো যায়নি।
২০২৪ সালের লোকসভা ভোটেও মোদীর যে ৪০০ পূরণের স্বপ্ন ধূলিস্যাৎ হয়েছে, তার অন্যতম কারণ কৃষকদের দুর্মর আন্দোলন। এখনও পঞ্জাব-হরিয়ানার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে কেন্দ্র বিরোধী বিক্ষোভে কৃষকরা। কৃষক নেতা জগজিৎ সিং দাল্লেওয়াল এখনও অনশনে। কৃষকরা এখন পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছেন। হরিয়ানা, রাজস্থান আর উত্তরপ্রদেশে কৃষকরা বিক্ষোভের সূত্রপাত করেন। এই দ্বিতীয় পর্যায়ের আন্দোলনে মোট ৫ জন নিহত আর ১০ জনের মতো বিক্ষোভকারী জখম হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। অনেক কৃষককে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে আর আন্দোলনরত কৃষকদের বিরুদ্ধে বহু এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছে। কৃষকরাও বেশ কয়েকবার অহিংস পথে দিল্লি সীমান্তে প্রবেশের চেষ্টা করলেও সতর্ক দিল্লি পুলিশ নানাভাবে তাঁদের বাধা দেয়। মন্থর গতিতে আন্দোলন ২০২৪ জুড়ে চললেও গত ডিসেম্বরে এটি একটি নতুন মাত্রা অর্জন করে। সংযুক্ত কৃষক মোর্চা (অরাজনৈতিক) আর ক্রান্তিকারী কৃষক মোর্চা গত ৬ ডিসেম্বর দিল্লি অভিযানের ডাক দিতেই আন্দোলন তীব্রতা পায়। পঞ্জাব, হরিয়ানা ও উত্তরপ্রদেশে ধারাবাহিক প্রতিবাদ শুরু হয়।
মোদীর প্রতিশ্রুতির পর ২০২১ সালের ডিসেম্বরে কৃষকদের আন্দোলনের প্রথম পর্যায়টি স্থগিত করার ডাক দেয় সংগঠনগুলোর সংযুক্ত কমিটি। কিন্তু যেদিন থেকে মোদীর নেতৃত্বাধীন সরকার দ্বারা প্রতারিত হওয়া টের পান কৃষকরা, শুরু হয় ফের আন্দোলন। তিনটি বিতর্কিত খামার আইন প্রত্যাহার ও সরকার তাদের অনেক দাবিকে বাস্তবায়িত করার আশ্বাস দেওয়ার পরে কৃষকরা ন্যায্যত অনুভব করেছিলেন তাঁদের দাবি পূরণ হবে। কিন্তু কৃষক সংগঠনগুলো বলছে, আশ্বাস পূরণ হয়নি। ২০২১'এর আন্দোলনে ৭৫০ জন কৃষক প্রাণ হারিয়েছিলেন আর কৃষকদের বিরুদ্ধে অসংখ্য এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছিল।
সম্প্রতি দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখর কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানকে এই প্রসঙ্গে তিরস্কার করেন। তিনি ওই প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে চৌহানকে সরাসরি জিজ্ঞাসা করেন, কেন কেন্দ্র প্রতিবাদী কৃষকদের সঙ্গে কথা বলছে না। তিনি বলেন, 'প্রতিটি মুহূর্ত আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের দ্বিতীয়-সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তি হিসাবে আমি আপনাকে অনুরোধ করছি, দয়া করে আমাকে বলুন, কৃষকদের কোন প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল আর কেন তা পূরণ করা হয়নি? প্রতিশ্রুতি পূরণে আমরা কী করছি? গত বছর একটা আন্দোলন হয়েছিল, আর এই বছরও একটা আন্দোলন হয়েছে। সময় চলে যাচ্ছে, কিন্তু আমরা কিছুই করছি না।' উপরাষ্ট্রপতি এমনকী জগজিৎ সিং দাল্লেওয়ালের প্রসঙ্গও টানেন। ধনখর কেন্দ্রকে স্পষ্ট সতর্ক করেছিলেন যে সরকার তার নিজের লোকদের সঙ্গে লড়াই করতে পারে না বা তাদের এমন পরিস্থিতিতে ফেলতে পারে না যেখানে লড়াই করা ছাড়া অন্য উপায় থাকে না। সেদিন উপরাষ্ট্রপতি নিজেকে কৃষক পরিবারের সন্তান বলে দাবি করে খুল্লামখুল্লা বলেন, 'আমরা এই ধারণা নিয়ে বসে থাকতে পারি না যে তাদের সংগ্রাম ক্রমে সীমিত হবে আর তারা শেষ পর্যন্ত ক্লান্ত হয়ে পড়বে। আমাদের ভারতের আত্মাকে বিরক্ত করা উচিত নয়, আমাদের হৃদয়ে আঘাত করা উচিত নয়। আমরা কি কৃষক সমাজ ও সরকারের মধ্যে একটি সীমানা তৈরি করতে পারি? যাদের আমাদের আলিঙ্গন করতে হবে তাদের দূরে ঠেলে দেওয়া যাবে না।' ভারতের উপরাষ্ট্রপতির এইসব মন্তব্য কৃষকদের আন্দোলনের গুরুত্ব ও অপরিহার্যতাকে স্পষ্ট করে দিয়েছে। আন্দোলন এসে পড়েছে ২০২৫-এ। প্রতিবাদী জগজিৎ সিং দাল্লেওয়ালের অনশন ৪৯ দিনে পড়েছে। তাঁর শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। উদ্বিগ্ন সুপ্রিম কোর্ট আগেই কেন্দ্রীয় সরকারের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাকে জিজ্ঞাসা করেছিল, 'কেন আপনার ক্লায়েন্ট একটি বিবৃতি দিতে পারে না যে প্রকৃত দাবিগুলি বিবেচনা করবে আর কৃষকদের অভিযোগ নিয়ে আলোচনা করার জন্য আমাদের দরজা খোলা আছে?' এরপরও কিছুই এগোয়নি।
কৃষকদের বিক্ষোভ ও তাঁদের নেতা জগজিৎ সিং দাল্লেওয়ালের অনশনের কথা বিবেচনা করে সুপ্রিম কোর্ট তাঁদের সঙ্গে কথা বলে একটি সমাধান খুঁজে বের করার জন্য একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করে দিয়েছে, যার নেতৃত্বে আছেন একজন অবসরপ্রাপ্ত উচ্চ আদালতের বিচারপতি। এই কমিটি কৃষি ও অর্থনীতির সঙ্গে জড়িত বিশেষজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত করেছে। কমিটির কাজ কৃষকদের সমস্যা আর দাবিগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা।
কিন্তু কৃষক সংগঠনগুলি এই কমিটির সঙ্গে বৈঠকে অংশ নিতে অস্বীকার করে। যার ফলে পরিস্থিতি স্থবির হয়ে আছে। কৃষক সংগঠনগুলোর বক্তব্য, এই সমস্যা ও সঙ্কট আদালতের বিষয় নয়, এটা সম্পূর্ণ কেন্দ্রীয় সরকারের নীতি ও সদাশয়ের ওপর নির্ভর করছে। কিষাণ মজদুর মোর্চা (কেএমএম) ও কিষাণ মজদুর সংগ্রাম কমিটির (কেএমএসসি) সমন্বয়কারী কৃষক নেতা সারওয়ান সিং পান্ধের সাফ কথা, 'এটা আদালতের বিষয় নয়। আমাদের দাবি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে, আর সরকারের নিজেই আলোচনার জন্য এগিয়ে আসা উচিত।' তিনি অভিযোগ করেন যে কৃষকদের মধ্যে বিভাজন তৈরি করতে এই বৈঠক ডাকা হয়েছিল আর কমিটি এর মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের সামনে তাদের সুপারিশ পেশ করেছে। পান্ধের আরও অভিযোগ, কমিটি কিছু নিয়ম আর শর্ত দিয়েছে, যে কারণে কৃষকরা বৈঠক না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অন্যদিকে সরকার পক্ষের অভিযোগ, অনশনরত কৃষক নেতা জগজিৎ সিং দাল্লেওয়ালের অবস্থা ইচ্ছাকৃতভাবে খারাপ করার চেষ্টা করা হচ্ছে; চূড়ান্ত একটা কিছু ঘটে গেলে কৃষকরা সেন্টিমেন্টাল ইস্যু করে ফয়দা লুঠতে চায়।
বাস্তব ঘটনা হচ্ছে, ব্যাপারটা কিন্তু দাল্লেওয়ালেই সীমাবদ্ধ নয়। গত বৃহস্পতিবার শম্ভু সীমানায় বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেন আন্দোলনরত ৫৫ বছর বয়সী কৃষক নেতা রেশম সিং। ঘটনাটি জানতে পেরে তাঁর সতীর্থরা দ্রুত তাঁকে পাতিয়ালার রাজেন্দ্র হাসপাতালে নিয়ে যান। দুপুরে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত কৃষক নেতা পঞ্জাবের তরন তারন জেলার পাছবিন্দের বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার সকালে তিনি আন্দোলনরত সতীর্থদের সঙ্গে বসেছিলেন। তখনই আচমকা বিষ খেয়ে নেন ৫৫ বছরের ওই প্রৌঢ়। আন্দোলনকারী কৃষকদের অভিযোগ, মোদী সরকারের ওপর ক্ষোভ থেকেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ওই কৃষক। রেশম সিংয়ের আত্মহত্যা গত তিন সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় ঘটনা।
গত ১৮ ডিসেম্বর শম্ভু সীমানায় আত্মহত্যা করেছিলেন রণযোধ সিং নামে এক কৃষক নেতা। রবিবারই খানাউড়ি সীমানায় আন্দোলনরত এক বয়স্ক কৃষি শ্রমিক মারা গিয়েছেন। ফরিদকোটের এই কৃষি শ্রমিককে হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তাররা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
নভেম্বরের শেষ থেকেই দফায় দফায় শম্ভু সীমানা থেকে দিল্লির উদ্দেশে মিছিল করে এগোনোর চেষ্টা করেছেন কৃষকরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে তৈরি ছিল প্রশাসনও। বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ভোর থেকেই বন্ধ করে দেওয়া হয় মোবাইল ও ইন্টারনেট পরিষেবা। এলাকায় জারি হয়েছিল ১৬৩ ধারা। কৃষকরা ব্যারিকেড টপকে এগোতে গেলে তাঁদের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বাধে পুলিশের। ছোড়া হয় জলকামান, কাঁদানে গ্যাস। তাই বার বারই কৃষকদের 'দিল্লি চলো' অভিযানের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি), কৃষি ঋণ মকুব, পেনশনের ব্যবস্থা ও বিদ্যুতের বিল না-বাড়ানোর মতো বেশ কয়েকটি দাবি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কৃষকদের এই আন্দোলন চলছে। গত বছর ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে দিল্লি লাগোয়া পঞ্জাব আর হরিয়ানার শম্ভু ও খানাউড়ি সীমানায় সংযুক্ত কিষান মোর্চা (অরাজনৈতিক) ও কিষান মজদুর মোর্চার ব্যানারে অবস্থানে বসে রয়েছেন কৃষকরা। ২৬ নভেম্বর থেকে কৃষক নেতা জগজিৎ সিং দাল্লেওয়াল আমরণ অনশন শুরু করার পর আন্দোলন নতুন করে উজ্জীবিত হয়ে ওঠে। এই পরিস্থিতিতে কিছুটা মলম লাগাবার গরজে বছরের প্রথম দিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকের শেষে নিজেদের কৃষকদরদী প্রমাণ করার জন্য বড় ঘোষণা করে মোদী সরকার।
'প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনা প্রকল্প'কে এবার ঢেলে সাজাতে চাইছে কেন্দ্র। এই লক্ষ্যে ৬৯,৫১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করার কথা জানানো হয়েছে। এই প্রকল্পের প্রযুক্তিগত আধুনিকীকরণের জন্য ৮০০ কোটি টাকার তহবিলও গড়ছে সরকার। কৃষি ক্ষেত্রে ব্যবহৃত অত্যন্ত জরুরি ডাই অ্যামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি)) সার উৎপাদনকারীদের জন্য বিপুল অঙ্কের বিশেষ আর্থিক প্যাকেজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রীসভা। নতুন এই এককালীন বিশেষ প্যাকেজের অধীনে মোট ৩,৮৫০ কোটি টাকার ভর্তুকি দেওয়া হবে। উল্লেখ্য, এর আগে এই সারেই এনবিএস ভর্তুকি ছিল। তার ওপরে এই বিশেষ প্যাকেজের মাধ্যমে অতিরিক্ত ভর্তুকি দেবে কেন্দ্র।
কিন্তু কৃষকরা তাঁদের দাবিতে অনড়। উত্পাদিত ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বা এমএসপি গ্যারান্টি আইন প্রণয়ন না করা পর্যন্ত তাঁরা সরছেন না। জগজিৎ সিং দাল্লেওয়ালের ধনুকভাঙা পণে যতটা বিচলিত শীর্ষ আদালত বা দেশের সংবেদনশীল মানুষ, তার ন্যূনতম ছাপ নেই নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর সতীর্থদের। তারা ভাবছে, ওই মলমেই কাজ হবে।
কৃষকরা যে কতটা চড়া মেজাজে আছেন, তা বোঝা গেল দিলজিৎ দোসাঞ্জের ব্যাপার নিয়ে। নতুন বছরের সূচনায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করেন দিলজিৎ, এরপরই প্রতিবাদী কৃষক নেতাদের তীব্র সমালোচনার শিকার হন এই পঞ্জাবি তারকা। মোদীর সাথে দিলজিৎ দোসাঞ্জের বৈঠক নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে কৃষকরা গায়কের দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। দিলজিৎ দোসাঞ্জ মোদীর সঙ্গে তাঁর বৈঠককে নতুন বছরের ‘দুর্দান্ত শুরু’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন, অন্যদিকে ‘নম্র সূচনা থেকে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন’ তারকা হিসাবে দিলজিৎ-এর উত্থানের প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এর পালটা প্রতিবাদী কৃষকদের কথা, 'দিলজিৎ যদি সত্যিই কৃষকদের কথা ভাবতেন, তাহলে শম্ভু সীমান্তে দাল্লেওয়ালজীর লড়াইকে সংহতি জানিয়ে আমাদের সঙ্গে যোগ দিতেন, আমাদের উদ্বেগ শুনতেন আর তাঁর আগের বক্তব্যেই অটল থাকতেন। প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে দেখা করায় ওঁর উদ্দেশ্য নিয়েই সংশয় দেখা দিচ্ছে।' প্রতিবাদী কৃষকরা এসব কথা নিছক অভিমান থেকে বলছেন না। আমাদের মনে রাখতে হবে, ২০২০ সালে দিলজিৎ দোসাঞ্জ কৃষক আন্দোলনের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেছিলেন, কেন্দ্রকে তাঁদের দাবি পূরণের আহ্বান জানিয়েছিলেন আর কৃষকদের পক্ষে জোরালো সওয়াল করেছিলেন। ওই বছরই দিলজিৎ ইনস্টাগ্রামে কৃষকদের সমর্থনে এই পোস্টটি করেছিলেন: ‘২৫ সেপ্টেম্বর। আমরা সবাই কৃষক সমাজের পাশে দাঁড়াব। পঞ্জাবের সব বয়সের মানুষ কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।' কৃষকদের ভাষায় সেই দিলজিৎ এখন 'গদ্দার'।
আগামী দিনে এই কৃষক আন্দোলন এক ব্যাপক অভ্যুত্থানের চেহারা নিতে পারে। দাল্লেওয়ালজীর অনশন দেশবাসীকে এক বিপুল উৎকণ্ঠায় রেখেছে।
No comments:
Post a Comment