Sunday, 19 November 2023

পুরুষ আত্মহত্যার কড়চা!

লিঙ্গ নিরপেক্ষ আইনের খোঁজে

পার্থ হালদার



কতকটা বহু জনের অগোচরে 'আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস' বলে ১৯ নভেম্বর দিনটিকে কেউ কেউ চিহ্নিত করেন। ধরে নেওয়া হয়, পুরুষদের ক্ষমতা অপরিসীম; সেই হেতু এমনতর দিবসের উত্থাপন কেন, তা নিয়ে কৌতূহল ও ধিক্কারেরও হয়তো অন্ত নেই। কিন্তু বাস্তবিক, এমন একটি দিন আজকাল বেশ সোরগোল তুলে উদযাপন চলে। এর সুত্রপাত ১৯৯৯ সালে ত্রিনিদাদ ও টোবাগো'তে; ইতিহাসের অধ্যাপক ডাঃ জেরম তিলক সিং'এর হাত ধরে। বর্তমানে পৃথিবীর ৯০টি দেশে এই দিনটি পালিত হয়। এ বছরেও এই দিনটি সাড়ম্বরে পালিত হচ্ছে। এ বছরের থিম 'ZERO MALE SUICIDE'। আজকাল 'পুরুষ অধিকার আন্দোলন' বলেও একটি ধারা উত্তরোত্তর শক্তিশালী হয়ে চলেছে, যেখানে বহু নারী এই আন্দোলনের সম্মুখ সমরে এসে দাঁড়িয়েছেন। যেমন, পূজা বেদী, দীপিকা ভরদ্বাজ, নন্দিনী ভট্টাচার্য'দের নাম এই মুহূর্তে বেশ জনপ্রিয়।

আমাদের সমাজে 'পুরুষতন্ত্র'  শব্দটির এক অন্যরকম গুরুত্ব আছে। এই শব্দটা শুনলেই পুরুষদের মনে হয়, পুরুষ হয়ে জন্মে বোধহয় কোনও অপরাধ হয়ে গেছে এবং দীর্ঘদিন ধরে নারীদের বিভিন্ন বিষয় থেকে বঞ্চিত রাখার যে সামাজিক চক্রান্ত তাতে অজান্তেই তাদের সকলেরই বোধহয় কিছু ভূমিকা আছে। অন্যদিকে নারীদের একাংশ ভাবে, তাদের জীবনের যা কিছু সমস্যা তার অধিকাংশই পুরুষ শাসিত সমাজের কারণে। অতএব, তাদের এখনও কিছু পাওনা বাকী আছে, তাই পুরুষতন্ত্রকে সমূলে উৎখাত না করা পর্যন্ত কোনও সমাধান নেই। 

১৭৬০-১৮৪০ সালের ব্যাপ্তিতে মানব সভ্যতার এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় রচিত হয়েছিল যার নাম 'শিল্প বিপ্লব'। এর সবচেয়ে লক্ষণীয় দিক বাষ্পশক্তি ও কয়লার ব্যবহার, যা ধীরে ধীরে মানুষের শ্রমশক্তির লাভজনক বিকল্প হিসাবে সমাজে স্থান করে নিল এবং নারীদের পক্ষেও বেশ কিছু উৎপাদনশীল কাজের সাথে যুক্ত হওয়ার সুযোগ এসে উপস্থিত হল। পরবর্তী দিনগুলিতে বিদ্যুৎ ও কম্পিউটারের আবিষ্কার এবং বর্তমানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিকাশ বহু কাজেই আজ নারীকে পুরুষের সমকক্ষ করে তুলেছে। রাজনৈতিক ভাবে গণতান্ত্রিক দেশগুলিতে পুরুষ ও নারীর সকলরই সমানভাবে সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনে এগিয়ে আশার সদিচ্ছা এবং শুভবুদ্ধি সম্মত মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই জন্ম দিয়েছে নারী স্বাধীনতা চেতনার। 

ভারতের মতো দেশও নারী স্বাধীনতার আন্দোলনকে উপযুক্ত গুরুত্ব দিয়েছে। নারীদের বিশেষ অধিকার সংবিধানের ধারা ১৫'র উপধারা ৩'এ বিশেষ ভাবে স্বীকৃত। কিন্তু গত তিন দশকের ইতিহাসে এর সুফলের সাথে যুক্ত হচ্ছে কিছু কুফল; কাজেই আমার বিশ্বাস, এ নিয়ে সমাজের সর্বস্তরে আলোচনা ও সদর্থক জনমত গঠন না হলে আমাদের হয়তো আরেকটি সামাজিক অবক্ষয়ের সাক্ষী হতে হবে। স্বাধীনতা ও তার বিপ্রতীপে পক্ষপাতমূলক আইনকে হাতিয়ার করে যে স্বেচ্ছাচার, তার মধ্যে কিছু সূক্ষ্ম পার্থক্য আছে। 'ডিসকভারি অফ্ ইন্ডিয়া' গ্রন্থে পণ্ডিত জহরলাল নেহেরু এর একটি সুন্দর ব্যাখ্যা দিয়েছেন- স্বাধীনতা চিরকালই 'Live and Let Live' নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত, তাই যে কোনও প্রকৃত স্বাধীনতাই অন্যের স্বাধীনতার উপর সম্পূর্ণ শ্রদ্ধাশীল। অপর দিকে স্বেচ্ছাচারিতা চিরকালই আত্মকেন্দ্রিক যা অন্যের স্বাধীনতার প্রতি সম্পূর্ণ উদাসীন। তাই যে নারী স্বাধীনতা দেশের পক্ষে আবশ্যিক, একবার ভেবে দেখা উচিত, তা কি কখনও আইনের সহজ সহায়তা পাওয়ার সুযোগ নিয়ে প্রতিহিংসা মেটানোর অবলম্বন হয়ে দাঁড়াচ্ছে? 

এ বিষয়ে সর্বাধিক চর্চিত আইনের ৪৯৮এ ধারা। আমাদের দেশের সংসদ এই আইনটি তৈরি করে মহিলাদের পণ প্রথার হাত থেকে বাঁচানোর জন্য। কিন্তু দুর্ভাগ্য, এই আইনটির অপব্যবহার এমন ভাবে শুরু হয় যে বহু নির্দোষ পরিবার অভিযোগের শুরুতেই (বিনা বিচারে) সাজা পেতে থাকে এবং বহু মানুষ সামাজিক ও মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। শীর্ষ আদালতও স্বীকার করতে বাধ্য হয় যে, আইনের এই ধারার অপপ্রয়োগ হয়েছে এবং তারা এর কড়া প্রয়োগে কিছু শিথিলতা প্রণয়নের পরামর্শ দেয়। এ নিয়ে পুরুষ অধিকার আন্দোলনের কর্মী দীপিকা ভরদ্বাজের 'India's Sons' ছবিটি বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য যা সারা দেশ জুড়ে ব্যাপক আলোড়ন ফেলেছে। এ কথা অস্বীকার করার কোনও উপায় নেই যে পণ প্রথার  বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো প্রয়োজন কিন্তু তার মানে তো এই নয় যে এই আইনের সুযোগ নিয়ে শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে লক্ষ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ আদায় করার মাধ্যমে নিয়মিত একটা বন্দোবস্ত গড়ে তোলা যেতে পারে।

আসলে এর মধ্যে একটা ভয়ঙ্কর ফ্যালাসি লুকিয়ে আছে। যে কোনও কারণেই হোক, আমাদের সমাজে নারীর চাহিদাকে 'আবদার' আর পুরুষের চাহিদাকে 'টর্চার' হিসেবে গ্রহণ করার এক প্রবণতা রয়েছে। কিছুদিন আগে অবধি কোনও বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে ভরণপোষণ বাবদ কোনও পুরুষকে তার বিচ্ছেদপ্রাপ্ত স্ত্রীকে যে পরিমাণ ক্ষতিপূরণ দিতে হত তা অকল্পনীয় এবং এখানেও একটি ফ্যালাসি লুকিয়ে ছিল। এটা ধরে নেওয়া হত, একজন পুরুষ এবং নারী তাদের শ্রম দিয়ে একটি পরিবার গড়ে তুলেছে তাই সেই সংসারে আর্থিক সমৃদ্ধির সমান স্বীকৃতি তাদের উভয়েরই পাওনা। কিন্তু যেখানে বিবাহের মেয়াদই ৩ মাস বা বড়জোর ৬ মাস, সেখানে লক্ষ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ একজন পুরুষ বা তার পরিবারের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত? আসলে, প্রচলিত সনাতনী বিশ্বাসটি হল, পুরুষ বিবাহের মাধ্যমে দেশের বেকার সমস্যার সমাধান করে। তাই বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে মহিলার আর্থিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করাই তার মূল উদ্দেশ্য, তা সে যেনতেন প্রকারেণ হলেও চলবে। তবে বর্তমানে এই অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। এতদিনের যে ধারণা- আমাদের সমাজে শিক্ষার গণ্ডি পেরলে বেকারত্বের লাঞ্ছনা কেবল পুরুষদের, শিক্ষিত নারী কোনও কিছু না করলেও তাকে কর্মহীন বেকার বলে ধরা হয় না- তা বদলাচ্ছে। নারীরা সমস্ত জায়গায় সমান হলেও পরিবারের আর্থিক দায়িত্বের ক্ষেত্রে তারা কেন সমান হবে না- এই অপ্রিয় বিতর্কটা কিছু মানুষের মধ্যে উঁকি দিচ্ছে।

ভারতের সংবিধান মৌলিক অধিকার হিসাবে প্রতিটি নাগরিককে সসম্মানে বেঁচে থাকার অধিকার দিয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য, আমাদের আইনসভা হয়তো মনে করে শরীর ও মন কেবলমাত্র নারীরই আছে, পুরুষদের নেই। তাই আমাদের দেশের ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স প্রতিরোধক আইনটির নাম 'প্রোটেকশন অফ উইমেন ফ্রম ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স অ্যাক্ট'। এখানে পুরুষদের কোনও স্থান নেই এবং তাদের উপর যেন কোনও শারীরিক বা মানসিক নির্যাতন হতেই পারে না। কিন্তু তথাকথিত চিন্তাবিদদের চিন্তাভাবনা সব গোলমাল হয়ে গেল যখন মনুয়া কাণ্ড সামনে এল, শাক দিয়ে আর মাছ ঢাকা গেল না। সম্প্রতি, বেইরিলি'তে ২৬ বছরের এক মহিলা তার ঘুমন্ত স্বামীর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে তাকে খুন করেছে। কারণ, সেই মহিলার মতে, তার স্বামী 'কালো' ও 'কুৎসিত' দেখতে। আদালতের বিচারে মহিলা দোষী সাব্যস্ত হয়েছে এবং যাবজ্জীবন সাজা পেয়েছে। প্রশ্নটা এই, আজকের সময়ে ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স কি শুধুই নারীদের ওপরে হয়? 

পুরুষের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের ইতিহাস কিন্তু কম পুরনো নয়। মনুয়া কাণ্ড না হয় চরম একটি ঘটনা, কিন্তু এর নিচেও তো বিভিন্ন স্তর আছে। পুরুষের উপার্জন বা চাকরির বহর অন্যের সাথে তুলনার মানসিক নির্যাতন তো আমাদের সকলের আশেপাশেই চোখে পড়ে। এছাড়া সব নির্যাতন মুখে বলাও যায় না। বিবাহিত জীবনের ক্ষেত্রে শারীরিক সম্পর্ক থেকে বহু ক্ষেত্রেই পুরুষেরা বিভিন্ন কারণে বঞ্চিত হয় কিন্তু প্রকাশ করতে পারে না। শারীরিক সম্পর্ক ঠিক থাকলে শরীরে কিছু প্রয়োজনীয় ভাল হর্মোন নির্গত হয়, যেমন ডোপামিন, অক্সিটোসিন, টেস্টোস্টেরন, সেরেটোনিন ইত্যাদি। এগুলি শারীরিক ও মানসিক ভাবে বেঁচে থাকার অন্যতম উপাদান। তাই স্বাভাবিক নিয়ম মেনে শারীরিক সম্পর্ক থেকে একজন পুরুষ যদি বঞ্চিত হয়, তা কি সুস্থ শারীরিক ও মানসিক জীবন যাপনের ক্ষেত্রে সুখকর? তাছাড়াও, একজন পুরুষ যদি তার স্ত্রীর প্রতি সমস্ত দায়িত্ব পালন করে সে কি পিতৃত্বের অধিকার থেকে বঞ্চিত হতে পারে? যদি হয় তাহলে তার করণীয় কী? 

উপরন্তু, আজকের দিনে পৈতৃক সম্পত্তিতে মেয়েদের অধিকার স্বীকৃত কিন্তু বয়স্ক বাবা-মা'র প্রতি কর্তব্যের অধিকার কি স্বীকৃত? যদি কোনও কন্যা তার বৃদ্ধ পিতা-মাতার দায়িত্ব সমান ভাবে ভাগ করে না নেয়, পুত্রের কি কিছু করণীয় আছে? তাছাড়া অবিবাহিত নারী-পুরুষের সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোনও পুরুষ যদি তার সঙ্গিনীকে বিবাহ করতে অস্বীকার করে, আমাদের আইন অনুযায়ী সেই সম্পর্কে সম্মত যৌন মিলন 'ধর্ষণ' বলে সাব্যস্ত হয় (যদিও কোনও কোনও আদালত এ বিষয়ে আজকাল তা বলতে অস্বীকার করেছে)। কিন্তু যদি ঘটনাটি বিপরীত হয়, অর্থাৎ, সঙ্গিনী যদি পুরুষের হাত ছেড়ে দেয়, সে ক্ষেত্রে পুরুষটির মানসিক ভাবে ভেঙে পড়া ও অনেক ক্ষেত্রে লেখাপড়া বা পেশাগত জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ছাড়া আর কোনও উপায়ন্তর থাকে না।

এও দেখা গেছে, পদস্থ পুরুষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যৌন উৎপীড়নের অভিযোগ আসে কিন্তু বহু ক্ষেত্রেই তদন্তে দেখা যায় যে অভিযোগের কোনও সারবত্তা নেই, অন্য উদ্দেশ্যে তাকে ষড়যন্ত্রের শিকার হতে হয়েছে। উলটোদিকে, পদস্থ মহিলা কর্মকর্তা যখন তার অধস্তন পুরুষ কর্মীকে যৌন নির্যাতন করে? এ ধরনের ঘটনা কি আজ যথেচ্ছ নয়? ফলত, আইন যদি ঢালের কাজ না করে তরবারির কাজ করতে থাকে তাহলে এগুলিকে কেন্দ্র করে ক্ষমতার যে নতুন সমীকরণ তৈরি হয় তা লিঙ্গ সাম্যের বিরুদ্ধেই সরব থাকে। তাই, ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স অ্যাক্ট লিঙ্গ নিরপেক্ষ হওয়া বাঞ্ছনীয়। পৃথিবীর বহু দেশে এর উদাহরণ আছে।

এখনও পুরুষদের অধিকার রক্ষার্থে আমাদের দেশে একটিও আইন আছে বলে আমার অন্তত জানা নেই। যা কিছু আছে তা প্রথাগত। যদি পুরুষদের অধিকার মাপার স্কেলটা সত্যিই থাকত তাহলে তারা কতটা বঞ্চিত হচ্ছে বা হচ্ছে না সেটা বোঝা যেত। কেবলমাত্র অধিকার বোধের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা পরিবার বা সমাজ কতটা মূল্যবান বা সহায়ক তা আমার জানা নেই। রবীন্দ্রনাথ তাঁর এক প্রবন্ধে একটি সুন্দর উপমা দিয়েছেন- সমতলের মৃত্তিকা কণার একের অপরের প্রতি টান আছে বলেই তার থেকে সৃষ্ট গাছের ফল রসালো হয় কিন্তু মরুভূমিতে বালুকা কণাগুলির মধ্যে টান কম থাকে বলে এর উপর যে গাছ হয় তা কাঁটাযুক্ত। আমাদের পরিবার ও সমাজ বোধেও ঠিক তেমনি যদি আমাদের একে অপরের প্রতি দায়িত্ববোধ এবং অধিকারবোধ দুটোই থাকে তবেই পরবর্তী প্রজন্মের শিশুদের অন্তঃকরণও রসালো হতে পারে; বিপরীতে, একই পরিবার ও সমাজে আমরা কেবল যদি অধিকারবোধ নিয়েই চলি, একে অপরের সাথে দূরত্ব তৈরি হতে বাধ্য। এতে সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয় শিশুদের মানসিকতা। একটি শিশুর সবচেয়ে প্রিয় পছন্দ হল পরিবারের সবার থেকে ভালোবাসা নিয়ে আনন্দে বেঁচে থাকা।

আমাদের দেশে পুরুষদের কোথাও অভিযোগ জানানোর জায়গা নেই বলেই মহিলাদের থেকে পুরুষদের আত্মহত্যার সংখ্যা দ্বিগুনেরও বেশি। লিঙ্গ নিরপেক্ষ আইন প্রণয়ন করেই হয়তো আগামী দিনে সামাজিক ও পারিবারিক অন্যায়ের হাত থেকে বাঁচা সম্ভব। তবে এবারের 'আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস'এর মূল ভাবনা যেহেতু 'Zero Male Suicide', তাই, একবার দেখে নেওয়া যাক আমাদের দেশে পুরুষদের আত্মহত্যার তথ্যাবলী। এনসিআরবি'র তথ্য বলছে, ২০২২ সালে সারা দেশে ৩০ থেকে ৪৫ বছর বয়সীদের মধ্যে যেখানে ৪০,৪১৫ জন পুরুষ আত্মহত্যা করেছে, সেখানে মহিলাদের আত্মহত্যার সংখ্যা ১১,৬২৯। অনুপাত প্রায় ৪:১। এই ৩০ থেকে ৪৫ বছরই হল কর্মক্ষমতার উচ্চতম শিখর। পাশাপাশি, জীবনে ৪৫ থেকে ৬০ বছর বয়সে যখন কিছুটা থিতু হয়ে বসার কথা, তখন সেই বয়সীদের মধ্যে ২০২২ সালে সারা দেশে ২৪,৫৫৫ জন পুরুষ আত্মহত্যা করেছে, যেখানে মহিলাদের সংখ্যা ৫৬০৭। অনুপাত ৫:১।

এক কাঁধে জীবনের সমস্ত ভার বহন করার হারকিউলিয়ান শক্তি যখন পুরুষদের থেকেই আশা করা হয় তখন আকাশের মতো অমলিন উদার মনও শুধুমাত্র তাদেরই থাকবে তা আর অতিকথা হবে কেন? অতএব, তাদের মরণের কথা কে আর স্মরণে রাখে!


3 comments:

  1. কৌশিক হালদার19 November 2023 at 09:28

    দুর্দান্ত একটি লেখা পড়লাম । লেখাটার অবশ্যই দরকার ছিল । তবে এ লেখা পড়ে অনেকেরই ফাটবে । 🙏🏼🌹👌🏼👌🏼👌🏼👌🏼👌🏼👌🏼👌🏼👌🏼🖕🏼🖕🏼👍🏼

    ReplyDelete
  2. সত্যজিৎ রায় ও নাকি একবার আক্ষেপ করে বলেছিলেন, ছোট থাকতে সবসময় খোঁটা শুনতে হয়েছে, সারাদিন বসে গান শোনে, ছবি আঁকে , খেলাধুলো করে না, মানিকটা ঠিক ব্যাটা ছেলেদের মতো না!


    'পুরুষ' এর এই একমাত্রিক সামাজিক নির্মাণ ও চাপ সৃষ্টি করে বৈকি!

    ReplyDelete