সব আন্দোলনেরই নিজস্ব বৈশিষ্ট্য থাকে
অনিন্দ্য ভট্টাচার্য
দেখা গেল, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর পরই ও অভয়া'র মা-বাবার অনুরোধে জুনিয়র ডাক্তারবাবুরা আমরণ অনশন প্রত্যাহার করে নেওয়ায় বেশ কিছু রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তিত্ব যারপরনাই বিরক্ত ও হতাশ হয়েছে। বোঝা ভার, তারা ঠিক কী চাইছিলেন জুনিয়র ডাক্তারদের এই সংঘবদ্ধ আন্দোলন থেকে। তবে কেউ কেউ যে এর মধ্যে এক ঘোরতর বিপ্লব সংগঠিত করে ফেলার যথেষ্ট উপাদান পাচ্ছিলেন, তা অমূলক হলেও দৃশ্যত অস্পষ্ট ছিল না। কেউ কেউ আবার দিবাস্বপ্ন দেখছিলেন যে, বাংলাদেশ স্টাইলে নবান্ন'র ছাদ থেকে হেলিকপ্টারে চড়ে মুখ্যমন্ত্রী পগার পার হবেন। এইসব অপরিণত, বালখিল্য আচরণে তিলোত্তমার সুবিচার ও লিঙ্গ সাম্যের দাবি এবং জুনিয়র ডাক্তার আন্দোলনে উত্থাপিত-- যদিচ কিছুটা প্রচ্ছন্নে থাকা-- জনস্বাস্থ্যের লক্ষ্যে স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে পুনর্গঠনের দাবি কতকটা যেন আড়ালে চলে যাচ্ছিল।
অথচ, ৯ অগস্ট পরবর্তী ঘটনাবলী কিন্তু গোটা রাজ্য জুড়ে তিনটি অভিমুখকে বর্শাফলকের মতো ক্ষুরধার করেছিল:
এক) অভয়া'র নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পরিণতিতে জনমানসে এক তীব্র অভিঘাত সৃষ্টি হেতু নাগরিক ক্ষোভের স্বতঃস্ফূর্ত বিস্ফোরণ;
দুই) আরজিকর ও অন্যান্য সরকারি স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে চূড়ান্ত দুর্নীতি ও অপকর্মের বিরুদ্ধে মেডিকেল ছাত্র-ছাত্রী ও জুনিয়র ডাক্তারদের দীর্ঘদিনের তীব্র অসন্তোষের এক ব্যাপক ও সুসংগঠিত আত্মপ্রকাশ;
তিন) এই দুই গণবিক্ষোভের আবহে নাগরিক ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলির তৎপরতা।
এ কথা অনস্বীকার্য যে, একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান, যেখানে নিরাপত্তার সর্বোচ্চ গ্যারান্টি কাম্য, সেখানে এক কর্মরত চিকিৎসকের ওপরে এমন এক নিদারুণ অত্যাচার ও হত্যাকাণ্ডে সরকার ও তার প্রশাসনের কাঁধেই নৈতিক ও রাজনৈতিক দায় এসে পড়ে। সে অর্থে যে কোনও ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশও শাসক ও সরকারি দলের বিরুদ্ধেই প্রাথমিক ভাবে ধাবিত হয়। আর এ ব্যাপারে, বিশেষত দুর্নীতি প্রসঙ্গে এ রাজ্যে শাসক দলের যে বেশ দুর্নাম আছে, তাও অস্বীকার করার উপায় নেই। তাই, ১৪ অগস্টের মধ্যরাতে যখন রাজ্য জুড়ে অন্তত ৩৫০'এরও বেশি জায়গায় লক্ষাধিক সাধারণ মানুষের, বিশেষত মহিলাদের তীব্র রোষ রাজপথে আছড়ে পড়ল, তা ড্যাবড্যাবে চোখে দেখা ছাড়া সরকারপক্ষ ও শাসক দলের আর কোনও উপায়ও ছিল না। তারা ইতিমধ্যে দেওয়াল লিখনও পড়ে ফেলেছে, আর তা যে একেবারেই তাদের পক্ষে স্বস্তিদায়ক নয়, তা বুঝতেও তাদের দেরি হয়নি। ইতিমধ্যে আরজিকরের জুনিয়র ডাক্তারেরাও সংগঠিত হয়ে ময়দানে নেমে পড়েছেন, তাদের পাশে অন্যান্য হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তারেরা ধীরে ধীরে সামিল হতে থেকেছেন। নিহত চিকিৎসকের মা-বাবা কলকাতা হাইকোর্টে সিবিআই তদন্তের দাবি করে তার মঞ্জুরি পেয়েছেন আর এসবের মাঝেই, আইএমএ'এর দৃষ্টি আকর্ষণ হেতু শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি গোটা বিষয়টিকে স্যুয়ো-মোটো নিজেদের এক্তিয়ারে নিয়ে এসেছেন।
তখন চারিদিকে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে আরজিকর নিয়ে উত্তপ্ত আলোচনা। মেইনস্ট্রিম ও সোশ্যাল মিডিয়া ভরে উঠছে কিছু সত্যের সঙ্গে মিথ্যার নানা অতিকথনে, এমনকি পাগলের প্রলাপেও। মানুষ কিছুটা ক্ষিপ্ত ও বিভ্রান্ত। শাসক দল নিজেদের দায়কে হাল্কা করতে নানারকম প্রশাসনিক পদক্ষেপ সহ দলীয় স্তরেও নানা উদ্যোগ নিতে শুরু করেছে। তবে তদন্তভার সিবিআই'এর হাতে চলে যেতেই শাসক আস্তে আস্তে নিজেদের কিছুটা গুটিয়ে নেয় এবং মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা দেন যে, আরজিকর বিষয়ে সরকারের তরফে যা বলার তা একমাত্র তিনিই বলবেন। পাশাপাশি, ১৪ অগস্টের 'রাত দখলের' অভূতপূর্ব সাফল্যের পর 'নাগরিক সমাজ' ও বিবিধ সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নামে ইতস্তত আরও কয়েকটি 'রাত দখল' এদিক ওদিক সংগঠিত হয়, কিন্তু ক্রমান্বয়ে দেখা যায়, জমায়েত ও গণ অংশগ্রহণের গুনতি কমে আসছে। কিন্তু নাছোড়বান্দা কিছু বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি সোশ্যাল মিডিয়ার কয়েকজন ইউটিউবারদের দিয়ে রাতারাতি এক 'ছাত্র সমাজ' বানিয়ে ২৭ অগস্ট 'দফা এক দাবি এক/ মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ' শ্লোগান তুলে 'নবান্ন দখলের' ডাক দেয়; যদিও, পর্বতের মূষিক প্রসবের মতো কলকাতা শহরের ইতিউতি কয়েকশো লোকের বিচ্ছিন্ন দাঙ্গা-হাঙ্গামা ও পুলিশের টিয়ার গ্যাস, জলকামান সহযোগে তার অকাল প্রয়াণ ঘটে। ইতিমধ্যে দানা বেঁধে ওঠা জুনিয়র ডাক্তার আন্দোলনকারীরাও জানিয়ে দেন যে, তাঁরা ওই 'নবান্ন দখল' অভিযানে একেবারেই নেই।
তবে ইতোমধ্যে, জুনিয়র ডাক্তাররা এই কদিনে নিজেদের বেশ সংগঠিত করে ফেলেছেন এবং ১৪ অগস্ট আরজিকরে মধ্যরাতে বহিরাগত দুষ্কৃতীদের তাণ্ডবের পর পাঁচ দফা দাবি নিয়ে এক সর্বাত্মক আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন; শুরু হয় অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি। সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা এক চ্যালেঞ্জের মুখে এসে পড়ে। তাদের আন্দোলনের পাশে এসে দাঁড়ায় সর্বস্তরের চিকিৎসক সমাজ। কর্পোরেট ও বেসরকারি হাসপাতালগুলি এতে উৎসাহ পায় এবং কর্মবিরতির কারণে সরকারি চিকিৎসা অপ্রতুল হয়ে পড়ায় অল্প কয়েক দিনেই তাদের ব্যবসা প্রায় ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে যায়। এ কথা স্বীকার করে নেওয়া ভাল, এ রাজ্যে গত কয়েক বছরে সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা আগের থেকে কিছু উন্নত হয়েছে, নিখরচায় সে পরিষেবা পাওয়ার নানাবিধ ব্যবস্থাদিও গড়ে উঠেছে, ফলে, স্বাস্থ্য দুনিয়ার মুনাফাবাজদের একটা মতলবই ছিল এই সরকারি ব্যবস্থাদিগুলিকে পঙ্গু করে দেওয়ার। জুনিয়র ডাক্তার আন্দোলন ও তাদের কর্মবিরতি তাদের সামনে সেই সুযোগকে 'পড়ে পাওয়া চোদ্দ আনা'র মতো এনে দিল। ফলে, কর্পোরেট হাসপাতাল, ফার্মা লবি ও স্বাস্থ্য বীমা কোম্পানিগুলি এই সুযোগকে ষোলোআনা উশুল করতে কোনও চেষ্টারই কসুর করতে বাকী রাখল না। সরকারি হাসপাতালে রোগী পরিষেবার ঘাটতি ও হয়রানি উত্তরোত্তর বেড়েই চলল। বিনা চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগও উঠল।
কিন্তু এমন কঠোর পরিস্থিতিতেও, এমনকি শীর্ষ আদালতের নির্দেশে জুনিয়র ডাক্তারেরা কর্মবিরতি না তুললে সরকারের তরফ থেকে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হলে আদালতের কিছু করার থাকবে না-- এই মোতাবেক হুকুম থাকা সত্ত্বেও রাজ্য সরকার আলাপ-আলোচনার পথকেই বেছে নিল এবং দু-তিনবারের ব্যর্থ চেষ্টার পর সে আলোচনা প্রথম দফায় মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে সম্পন্নও হল। পাঁচ দফা দাবির প্রায় সবই মেনে নেওয়া হল (স্বাস্থ্য সচিবের অপসারণের দাবি ব্যতীত)। জুনিয়র ডাক্তাররা কর্মবিরতি তুলে নিলেন। কিন্তু আবারও দশ দফা দাবি সহ তারা ফিরে এলেন এবং কলকাতার কেন্দ্রস্থল ধর্মতলায় আমরণ অনশনে বসে পড়লেন। সেও কয়েকদিন গড়াল। তারপর আমরা জানি, ওই দশ দফা দাবির মধ্যেও (এক-দেড়খানা বাদ দিলে) প্রায় সবকটি মেনে নেওয়া হয়েছে এবং জুনিয়র ডাক্তাররা অনশন প্রত্যাহার করে আবারও কাজে ফিরে গেছেন।
কিন্তু প্রশ্ন হল, এত সব কিছুর পর, সব মিলিয়ে সাধারণ মানুষ (বা রোগী) ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে কর্মরত স্বাস্থ্যকর্মী-- উভয়ে উভয়ের দিক থেকে কি কিছু আদায় করতে পারলেন? অবশ্যই কিছু পারলেন; হয়তো সে পারা বা পাওয়ার মধ্যে সব-পাওয়া নেই, কিন্তু বেশ কিছু নতুন ও উল্লেখযোগ্য পাওয়া আছে বৈকি! আসুন, এক এক করে খানিক দেখে নেওয়া যাক:
১) নাগরিক সমাজ ও জুনিয়র ডাক্তারদের এই লাগাতার আন্দোলনের ফলেই তো সিবিআই আরও বেশি তৎপর হয়েছে এবং ৫৮ দিনের মাথায় শিয়ালদহ আদালতে প্রাথমিক চার্জশিট জমা দিয়েছে। ৪ নভেম্বর এই মামলার চার্জশিট পরবর্তী প্রথম শুনানি;
২) শীর্ষ আদালতের স্বতঃপ্রণোদিত হস্তক্ষেপে জাতীয় ও রাজ্য স্তরে বিশেষ টাস্ক ফোর্স গঠিত হয়েছে যারা স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে কর্মরত সমস্ত কর্মীদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা বিষয়টিকে দেখভাল করবে। ২১ অক্টোবর মুখ্যমন্ত্রী ও জুনিয়র ডাক্তারদের বৈঠক থেকেও রাজ্য টাস্ক ফোর্সে ডাক্তারদের প্রতিনিধিত্বকে সুনিশ্চিত করা হয়েছে (জুনিয়র ডাক্তারদের জোরালো দাবিতে) এবং ইতিমধ্যেই সরকারের তরফে সে সম্পর্কে নির্দেশাবলীও প্রকাশ পেয়েছে;
৩) সব থেকে বড় পাওনা, যা জুনিয়র ডাক্তারদের দশ দফা দাবির মধ্যে ছিল, কেন্দ্রীয় রেফারেল ও ডিজিটাল বেড ভ্যাকেন্সি ব্যবস্থার প্রবর্তন। এই দ্বি-ব্যবস্থা শুধু ডাক্তারদের তরফে সুচিকিৎসা প্রদানকেই সুনিশ্চিত করবে না, রোগীদের অযথা হয়রানি ও ভর্তি সংক্রান্ত নানান দুর্নীতিকেও প্রতিরোধ করবে। সরকারের তরফে জানানোও হয়েছে, এই দুই ব্যবস্থা ইতিমধ্যেই পাইলট আকারে পরীক্ষামূলক স্তরে রয়েছে, যা ১ নভেম্বর থেকে গোটা রাজ্যে চালু হয়ে যাবে;
৪) স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে দুর্নীতি রোধে আরও একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জুনিয়র ডাক্তারদের তরফে তোলা হয়েছিল-- কলেজে কলেজে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রবর্তন, অর্থাৎ, নির্বাচনের মাধ্যমে ছাত্র সংসদ সহ সমস্ত গণতান্ত্রিক কাঠামোয় প্রতিনিধি চয়ন। এ বিষয়েও উভয় পক্ষ সহমতে পৌঁছেছে এবং মার্চ ২০২৫'এর মধ্যে নির্ধারিত নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে বলে সরকারের তরফে প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে;
৫) স্বাস্থ্য পরিষেবায় সমস্ত শূন্য পদগুলি পূরণ করাও ছিল একটি অন্যতম দাবি, যা নীতিগত ভাবে সরকার মেনে নিয়েছে, কিন্তু ওবিসি সংক্রান্ত আদালতের একটি নির্দেশ ও তার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে দায়ের করা মামলায় ব্যাপারটা আপাতত আইনি গেরোয় ফেঁসে আছে। আইনি জট খুলে গেলে এ ক্ষেত্রেও সদর্থক পদক্ষপ দেখা যাবে বলে উভয় পক্ষ আশা রেখেছে বলে মনে হয়।
নির্দিষ্ট ভাবে এই প্রাপ্তিগুলো কিন্তু কম কিছু নয়। যে সমস্ত উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত সমাজের একাংশ, যারা কোনওভাবেই সরকারি হাসপাতালের দোরগোড়া অবধিও যান না, অর্থের জোরে স্বাস্থ্য পরিষেবা কিনে গর্ব প্রকাশ করেন, তাদের কাছে এই দাবিগুলির হয়তো কোনও অর্থই নেই। কিন্তু সাধারণ মানুষ ও নিত্যভোগী যারা সরকারি পরিষেবায় চক্কর কাটেন, তাদের কাছে এই প্রাপ্তি অমূল্য। এই প্রাপ্তিগুলিতে (বিশেষত উপরে উল্লিখিত ৩ নং প্রাপ্তিটি) সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থা আরও উন্নত হবে বলে আশা করা যায়।
তবে এর মধ্যেও দুটি কাঁটা যেন রয়ে গেল:
১) 'থ্রেট কালচার'এর নামে কলেজ একাডেমিক কাউন্সিলের নির্দেশে কলেজ থেকে ডজন ডজন ছাত্র বা জুনিয়র ডাক্তার বহিষ্কারের নীতি-নৈতিকতার এক্তিয়ার কতটা, তা নিয়ে ২১ অক্টোবরের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তুলেছেন শুধু তাই নয়, পরের দিন কলকাতা হাইকোর্টও আরজিকর থেকে ৫১ জন শাস্তিপ্রাপ্ত ছাত্র ও জুনিয়র ডাক্তারের ওপর শাস্তি রদ করে একই প্রশ্ন তুলে রাজ্য সরকারের কাছে তা বিচার ও সিদ্ধান্তের জন্য পাঠাতে নির্দেশ দিয়েছে;
২) জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির সময় তাদের যে ৫৬৩ জন বেসরকারি হাসপাতালে কাজ করে অর্থ কামিয়েছেন, তথ্য হাতে মুখ্যমন্ত্রীর তোলা এই অভিযোগের জবাব এখনও কিন্তু জুনিয়র ডাক্তারদের তরফ থেকে পাওয়া যায়নি।
এ ব্যতিরেকে, অভয়ার সুবিচারের দাবিতে জনসমাজের সোচ্চার আওয়াজ, কাজে নিরাপত্তা, গণতান্ত্রিকীকরণ ও রোগীদের সুচিকিৎসার দাবিতে জুনিয়র ডাক্তারদের জোরদার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন, অন্যদিকে, আন্দোলনের প্রতি সরকারের ধৈর্য, নিজেদের গাফিলতির দায়কে প্রকারান্তরে স্বীকার করে নমনীয়তা অবলম্বন ও কোনওভাবেই দমন-পীড়নের পথে না হেঁটে গণতান্ত্রিক উপায়ে সমস্যা নিরসনের চেষ্টা-- উদ্ভুত সমস্যাকে কিছুটা হলেও সমাধানের দিকে এগোতে সাহায্য করেছে।
কিন্তু তার মানে এও নয় যে, সব কিছু মিটে গেল। আন্দোলনের যেমন শুরু ও বিরতি থাকে, নানাবিধ ওঠানামাও থাকে, শাসকের তরফেও তাকে মোকাবিলার নানান তরিকা থাকে; প্রশ্নটা হল, বিপরীত দিক থেকে ধাবিত শাসক ও শাসিতের এই দুই প্রক্রিয়া কি উভয়ের পক্ষে ক্রমেই অসহনীয় হয়ে উঠছে, নাকি, সেখানে বোঝাপড়ার জায়গা থাকছে। এই দ্বান্দ্বিক নিয়ম যারা বোঝেন না, তারাই 'থ্রেট কালচারের' আসল তল্পিবাহক হন এবং 'ট্রোলিং' ও 'বুলিং'এর মাস্টারমাইন্ড হিসেবে জনবিচ্ছিন্ন মানসিক বিকারগ্রস্ত হয়ে নিজেদের এজেন্ডাকে কোথাও অনুমোদন না করাতে পেরে খিস্তিখেউড় আর হিংসাকে অবলম্বন করে হতাশায় দিন কাটান।
লেখাটি অতীব সুললিত , বোধগম্য। লেখকের পর্যবেক্ষণ ক্ষমতাকে প্রশংসা জানাতেই হয়।
ReplyDeleteদৃশ্যত হয়ত নানা অনিবার্য রাজনৈতিক কারণে এই প্রসঙ্গ অনেক জটিল হয়ে গেছে।লেখক তার দক্ষতায় তার অনেকটাই পরিচ্ছন্নতা এনেছে তার সঠিক বিশ্লেষণে।একটা ধোঁয়াশা আর হতাশা আর কিছুটা দিশাহীনতার বাতাবরণে কিছু প্রয়োজনীয় আলো ফেলতে সক্ষম হয়েছে।। সব যেমন সমাধান হয় নি, কিছু প্রাপ্তির লেখকের ভাবনাকে আমি সাধুবাদ জানাই।
ReplyDelete