মানুষের শান্তিপূর্ণ ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধে
এনএরসি/সিএএ বিদায় নিক
অনিন্দ্য ভট্টাচার্য
খুব দ্রুত পাস করিয়ে নেওয়া হল নাগরিকত্ব সংশোধনী
বিল। রাতারাতি রাষ্ট্রপতিও সই দিয়ে দিলেন। আর আগেই দিল্লির শাহ হুমকি দিয়ে
রেখেছেন, সারা দেশে এনআরসি হবে। দুয়ে দুয়ে খুব সহজেই মেলানোর নিকৃষ্ট প্রবৃত্তিটিও
অতএব স্পষ্ট হল।
১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনের সঙ্গে ২০১৯’এর
সংশোধনী মারফত তাহলে কী কী যোগ হল? মূলত তিনটি উপাদান। এক, ভারতীয় নাগরিকত্ব পেতে
হলে আগে এ দেশে ১১ বছর থাকার যে ন্যূনতম বিধিটি ছিল তাকে কমিয়ে অন্তত ৫ বছর করা হল। দুই,
আগে কোনও দেশের কথা নির্দিষ্ট ভাবে বলা ছিল না, এবারে তিনটি দেশ– আফগানিস্তান,
পাকিস্তান ও বাংলাদেশ– বিশেষ উল্লেখ ও গুরুত্ব পেল। তিন, বলা হল, এই তিন দেশ থেকে ‘অত্যাচারিত
সংখ্যালঘু’রা (হিন্দু, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ও পারসি) আমাদের দেশে এসে অন্তত পাঁচ বছর
বসবাস করলে নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকারী হবেন।
বেশ। তাহলে সমস্যাটা কোথায়? সমস্যা এক, তিনটি দেশ
থেকে আগত ছটি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের নাম উচ্চকিত ভাবে ঘোষণা দিয়ে তাদের পাঁচ’ বছর
বসবাসেই নাগরিকত্ব পাওয়ার যে অধিকারটির জানান দেওয়া হল, তার পেছনে আসলে আরও এক অনুচ্চারিত
উচ্চনাদ ছিল। তা হল, মুসলমানদের বাদ দেওয়া। এই মুসলমানদের বাদ দেওয়ার বিষয়টি খুব উচ্চৈস্বরে
শোনানোটাই ছিল আসল উদ্দেশ্য; আর তা করা হল সংশোধনীতে এক কঠোর নিরুচ্চারিত উৎপাটনের
মধ্য দিয়েই। সমস্যা দুই, দীর্ঘদিন ধরে অসমে বসবাসকারী শরণার্থী ও স্থানীয় জনজাতিদের মধ্যে এক স্থায়ী সংঘর্ষের বাতাবরণও তৈরি করা হল। এর থেকে নিষ্কৃতির আপাতত আর কোনও পথই রইল না।
ফলত, যারা এই ব্যতিক্রম নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়বেন,
তাঁদের দিকে এরপরেই প্রশ্ন ছুঁড়ে দেওয়া হবে- যে তিন দেশের কথা বলা হয়েছে সেগুলো তো
সব মুসলমান অধ্যুষিত দেশ, সেখানে কীভাবে মুসলমানদের অত্যাচারিত সংখ্যালঘু হয়ে দেশ
ছাড়ার প্রসঙ্গ উঠছে? বেশ। যদি তাই হবে, তাহলে এ দেশে উচ্চবর্ণের হাতে দলিত
নির্যাতনের এত এত ঘটনা ঘটে কেন আর সে কারণে দলিতদের জন্য আলাদা আইন ও রক্ষাকবচই বা
কেন? দলিত ও উচ্চবর্ণ উভয়েই তো হিন্দু ধর্মের অন্তর্ভুক্ত। তার মানে, একটি ধর্মের
মধ্যেও নানারকমের বিভাজন ও গোষ্ঠী থাকতে পারে ও সে ধর্মেও এক অংশের দ্বারা অপর
অংশের নিপীড়ন চলতেই পারে। তেমনই মুসলমানদের মধ্যেও নানান বিভাজন ও পক্ষ আছে যারা
তাদের প্রতিপক্ষকে নিপীড়ন ও অত্যাচার করে। এই কারণেই আহমেদিয়া ও সুফি সম্প্রদায়ের
মুসলমানেরা তাদেরই অপর পক্ষের দ্বারা যথেষ্ট নিপীড়িত হয়ে ভিটেমাটি ছাড়া হয়ে বিপন্ন
জীবন যাপন করেন। সে ক্ষেত্রে এই অত্যাচারিত গোষ্ঠীটির প্রতি সংশোধনী আইনে বেয়াদপি
করা হয়েছে। তারা ব্যাপক অর্থে মুসলমান ধর্মের অন্তর্ভুক্ত বলে, অত্যাচারিত হওয়া
সত্ত্বেও, তাদের উপেক্ষা করে এক চরম বৈষম্যের পরিচয় দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও রয়েছে
প্রচুর নাস্তিক মনোভাবাপন্ন মানুষ যারা তাদের নাস্তিক অবস্থানের কারণেও
অত্যাচারিত হন, অথচ তাদের জন্যও রইল না কোনও বিধিব্যবস্থা। এইসব অযাচিত প্রশ্নে
ক্ষিপ্ত হয়ে এই আইনের হয়ে যারা ওকালতি করছেন, তারা বড়জোর বলে দিচ্ছেন যে পুরনো
আইনে যেভাবে নাগরিকত্ব পাওয়ার কথা সে ভাবেই তারা তা পাবেন। কেন বাপু? তুমি অন্য
ধর্মীয় সম্প্রদায়ের জন্য যে সুবিধা দিলে সেই সুবিধা কেন এনারাও পাবেন না? এই
প্রশ্নই সারা দেশকে উত্তাল করে তুলেছে।
এ তো গেল একটা ছবি। কিন্তু আরও একটি ভিন্ন ছবি এর
সঙ্গে জুড়ে আছে। উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলির তরফে বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও বিজেপি
সরকার কোনও ভ্রূক্ষেপ না করেই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলটিকে আইনে পরিণত করেছে। এই
রাজ্যগুলিতে এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়েছে। কারণ, এর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জুড়ে আছে
নাগরিক পঞ্জীর বিষয়টি। ১৯৫১ সাল থেকে অসম ও পরে উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলিতে নাগরিক
পঞ্জীর রূপায়ন একটি প্রবল দাবি ও সমস্যা। পরে গত শতকের ৮০-র দশকে অসমে উত্তাল ‘বঙ্গাল
খেদাও’ আন্দোলনে ১৯৮৫ সালে তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আসু ও আন্দোলনকারীদের
একটি চুক্তি হয় যেখানে স্পষ্টতই বলা ছিল, ২৪ মার্চ ১৯৭১ সালকে কাট-অফ ডেট করে
নাগরিক পঞ্জীতে ভারতীয় নাগরিকদের নাম নথিভুক্ত করা হবে ও উক্ত তারিখের পরে আসা ‘বিদেশি’দের
অসম ত্যাগ করতে হবে। বুঝতে হবে, ১৯৪৭-এর দেশভাগ (যা সাধারণ জনের ওপর সম্পূর্ণত ওপর
থেকে চাপিয়ে দেওয়া একটি সিদ্ধান্ত ছিল) ও ১৯৭১-এর বাংলাদেশ যুদ্ধ, যার ফলে ওপার
বাংলা থেকে কয়েক লক্ষ শরণার্থী ও উদ্বাস্তু এ দেশে নিরুপায় হয়ে প্রবেশ করেন যার ফলে অসম,
ত্রিপুরা ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে অসম্ভব এক জনস্ফীতি
হয় যা মূলত জনজাতি অধ্যুষিত এইসব এলাকায় ছোট ছোট জাতিসত্তাগুলির পরিচয়, সংস্কৃতি ও
অর্থনীতির ক্ষেত্রে প্রভূত সমস্যা তৈরি করে। এঁদের পক্ষে অনেকটা তা নিজ ভূমে
পরবাসীর মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। যেমন, দেখা যাচ্ছে, ১৯৩৫ সালে ত্রিপুরায় যেখানে
মোট জনসংখ্যার ৯৫ শতাংশ ছিল তিপরা বা তিপরি ও অন্যান্য উপজাতি, সেখানে ১৯৯১ সালেই
তাদের অনুপাত নেমে এসেছে ৩৫ শতাংশে। ফলে, নাগরিকত্ব আইন পাস হওয়ায় এইসব রাজ্যে যে অ-মুসলমান
শরণার্থীরা আছেন তাঁরা নাগরিকত্ব পেয়ে গেলে স্থানীয় জনজাতি অধিবাসীদের কাছে তা
মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো অবস্থা হবে বলে তাঁদের আশঙ্কা। যদিও ইতিমধ্যে এমন বহু
শরণার্থীরা নাগরিকত্ব পেয়ে গেছেন বলেই এনআরসি চালু করাটা আবার তাঁদের অন্যতম দাবি।
এই সত্যকে অস্বীকার করার উপায় নেই। কিন্তু নাগরিকত্ব আইনের বলে অমুসলমানদের ক্ষেত্রে
নাগরিক পঞ্জীর আর কোনও তাৎপর্যই থাকছে না। এই অবস্থাটি তাঁদের কাছে বিজেপির তরফে
বিশ্বাসঘাতকতা স্বরূপ মনে হয়েছে এবং তাঁরা এক দীর্ঘস্থায়ী আন্দোলনে সামিল হয়েছেন।
এই গোটা পরিপ্রেক্ষিতে এবার আমাদের বুঝতে হবে
এনআরসি বা নাগরিক পঞ্জীর রহস্যটিকে। প্রথমেই স্পষ্ট করে নেওয়া যাক, এনআরসি বা
নাগরিক পঞ্জীতে নাম নথিভুক্ত করার বিষয়টি ১৯৫১ সালে শুধুমাত্র অসমের ক্ষেত্রেই
প্রযোজ্য ছিল এবং সেখান থেকেই প্রক্রিয়াটির সূত্রপাত। দেশভাগের পর পশ্চিমবঙ্গে যে
এত বড় জনস্রোত ঢোকে তা সত্ত্বেও কিন্তু এ রাজ্যে নাগরিক পঞ্জীর প্রসঙ্গ ওঠেনি।
কারণ, নানা ভাবে এ রাজ্যের বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে উৎখাত হয়ে আসা বাঙালিদের এক
করুণাঘন সখ্য বজায় ছিল ও দুই বাংলার চিরন্তন জাতিগত শিকড়ের মধ্যে তা অন্তর্লীন
ছিল। কিন্তু অসমের ক্ষেত্রে তা ভিন্নরূপ ছিল। বিশেষত, জনজাতি এলাকাগুলিতে
জনস্ফীতির এই চাপকে গ্রহণ করার ক্ষেত্রে একটা পর্যায়ের পর উভয় জাতির ভাষাগত,
সংস্কৃতিগত, অর্থনীতিগত ও যাপনরীতিগত ফারাকগুলি অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এই সত্যকে
মান্যতা দিতে হবে। উচিত ছিল, সরকারের তরফে, বিশেষত কেন্দ্রের তরফে অসম ও
উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ওপর জনস্ফীতির চাপকে লঘু করতে শরণার্থীদের একটা অংশকে সারা
ভারতে উপযুক্ত ভাবে বসবাস ও উপার্জনের ব্যবস্থা করে দেওয়া। কিন্তু সেদিকে
বিন্দুমাত্র কেউ নজর দেয়নি, উপরন্তু, এই সমস্যাটিকে পুষে রেখে তাকে আজ অগ্নিবলয়ে
পরিণত করেছে। উপায়ন্তর না দেখে, এই বাড়তে থাকা সমস্যাকে অসমের আন্দোলনকারীরা
নাগরিক পঞ্জীর মাধ্যমে সমাধান করতে চেয়েছেন এইভাবে যে ২৪ মার্চ ১৯৭১ সালের পর অসমে
প্রবেশকারী সমস্ত ‘অনুপ্রবেশকারী’ বা ‘শরণার্থী’দের (হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে)
চিহ্নিত করে অন্তত অসমের বাইরে ঠেলে দেওয়া।
কিন্তু এর সঙ্গে সারা দেশে নাগরিক পঞ্জী চালু
করার কোনও প্রয়োজন বা বিধি কোথাও ছিল না। এইখানে এসেই সমস্যাটি আরও ঘোরালো হল ও
বিজেপি’র আসল এজেন্ডাটি ঝুলির বাইরে বেরিয়ে এল। তা হল এই, সারা দেশে নাগরিক পঞ্জী
করে মুসলমান জনসংখ্যার একটা বড় অংশকে অ-নাগরিক হিসেবে চিহ্নিত করা। তা কীভাবে?
যেমন অসমে হয়েছে। অসমে নাগরিক পঞ্জীতে ১৯ লক্ষ মানুষের নাম বাদ গেছে যার মধ্যে
প্রায় ১৩ লক্ষ হিন্দু ও প্রায় ৬ লক্ষ মুসলমান। এঁদের মধ্যে হিন্দু-মুসলমান মিলিয়ে
বহু ভারতীয় নাগরিক আছেন যারা নির্দিষ্ট কাগজপত্র দেখাতে না পেরে নাগরিক পঞ্জীতে
নিজেদের নাম তুলতে পারেননি। ফলে, তাঁরা অনাগরিক বা ‘বাংলাদেশি’ হিসেবে চিহ্নিত
হয়েছেন। কিন্তু নাগরিক
বিলের বদান্যতায় হিন্দু ও অন্যান্য সমস্ত অনাগরিকেরা বা তথাকথিত বাংলাদেশিরা
ভারতীয় নাগরিকত্ব পেয়ে যাবেন (২০১৫ সালের আগে এ দেশে প্রবেশ করে থাকলে ও অন্তত পাঁচ বছর বাস
করেছেন বললেই হবে, কোনও কাগজপত্রও লাগবে না), মুসলমানেরা বাদে। এইটিই ছিল এই আইনের
মুখ্য উদ্দেশ্য। নাগরিক পঞ্জীতে বাদ যাওয়া সমস্ত ধরনের মুসলমানেরা (ভারতীয় নাগরিক
কি বাংলাদেশি) ভারতীয় সমাজে অপাংক্তেয় হিসেবে গণ্য হবেন। এঁদের স্থান হবে ডিটেনশন
ক্যাম্পে এবং যতদিন বিজেপি ক্ষমতায় থাকবে ততদিন এঁরা দেশের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকের তকমা পরে থাকবেন।
তবুও সংশয়বাদীরা প্রশ্ন তোলেন। যেমন, তাহলে এই
আইনের বলে না হয় মুসলমানদের ব্রাত্য করা হল, কিন্তু যে হিন্দু ও অন্যান্য
অ-মুসলমানেরা নাগরিকত্ব অর্জনের অধিকার পেলেন সেটা তো কম কথা নয়। বাধ্যত শরণার্থী
হয়ে আসা এই মানুষগুলির দুর্ভোগের তো অবসান হল! বন্ধু, কথাটা গোলগোল করে দেখলে এক
অর্থে সত্য। কিন্তু তথ্য কী বলছে? ২০১৬ সালে নাগরিকত্ব বিল নিয়ে যে যুগ্ম সংসদীয়
কমিটি হয়েছিল তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে জানতে চেয়েছিল, দেশে নাগরিকত্ব পায়নি
উক্ত তিন দেশ থেকে আসা এমন শরণার্থীর প্রকৃত সংখ্যা কত! ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর
অধিকর্তা উল্লিখিত সংসদীয় কমিটির কাছে জানিয়েছিল যে প্রকৃত সংখ্যাটা হল ৩১,৩১৩ যার
মধ্যে ২৫ হাজারের মতো ছিলেন হিন্দু। যে ‘লক্ষ লক্ষ’ শরণার্থী বা তথাকথিত
অনুপ্রবেশকারীদের কথা বলা হয়, তাঁরা যে কোনও ভাবে হোক এতদিনে পাসপোর্ট কি ভোটার
কার্ড আদায় করে ইতিমধ্যেই প্রকৃত প্রস্তাবে দেশের নাগরিক হিসেবে বিরাজমান। এই
তথ্যটাও ইন্টেলিজেন্স অধিকর্তারই দেওয়া। তাহলে এই আইনটা কি শুধুমাত্র ওই ৩১ হাজার
মানুষের জন্যই আনা হল? এ তো ঢাকের দায়ে মনসা বিক্রির অবস্থা! ১৩০ কোটি জনসংখ্যার
দেশে ৩১ হাজারকে কি দূরবীন দিয়েও দেখা যাবে?
তাহলে হাতে রইল কী? হাতে রইল ছায়ার সঙ্গে যুদ্ধ!
ফলাফল: বিভাজন ও হিন্দু ভোটের অধিক ভাগ। সমস্ত দেশে নাগরিক পঞ্জীতে নথিভুক্তিকরণের
অস্ত্র চালিয়ে ধরা হবে কাগজপত্র নেই এমন ভারতীয় নাগরিকদের। তাদের মধ্য থেকে আলাদা
করা হবে মুসলমান নাগরিকদের। ডিটেনশন ক্যাম্প হবে তাদের পরবর্তী আস্তানা। কারণ,
তথ্য এও বলছে, ২০১১ সালের পর থেকে কার্যত বাংলাদেশ থেকে সীমান্ত পেরিয়ে এ দেশে শরণার্থী
বা তথাকথিত অনুপ্রবেশকারীদের সংখ্যা একেবারেই আর নেই। কারণ, বাংলাদেশ এখন
অর্থনীতির ক্ষেত্রে দ্রুত এগিয়ে চলেছে। তাদের জাতীয় বৃদ্ধির হার ভারতবর্ষের থেকে অনেক বেশি। ভারতে
যেখানে বর্তমান ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধির হার নেমে এসেছে ৪.৫ শতাংশে সেখানে বাংলাদেশে গড়
বৃদ্ধির হার ৭ শতাংশের আশেপাশে। আর শেখ হাসিনার সরকারও সে দেশের সংখ্যালঘুদের
স্বার্থ রক্ষায় অনেক দরদী। এমনকি তাঁর সরকার ভিটেমাটি ছেড়ে এ দেশে চলে আসা শরণার্থীদের
কাছে আবেদনও করেছেন বাংলাদেশে এসে নিজেদের বাপ-ঠাকুর্দার জমির আইনসম্মত দাবি
জানাতে। উপরন্তু, অতি সম্প্রতি বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী আব্দুল মোমেন স্পষ্টতই
জানিয়েছেন, বাংলাদেশের নাগরিকেরা যদি ভারতে বেআইনি ভাবে বসবাস করে থাকেন তাহলে তার
তালিকা ভারত সরকার দিক। বাংলাদেশ সরকার সেই মানুষগুলিকে নিজেদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে
যেতে রাজী। উলটে তিনি বরং এই অভিযোগ এনেছেন যে বাংলাদেশের উন্নতির ফলে এখন ভারত থেকে বহু
মানুষ বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছেন।
তাই, বদলে যাওয়া সামগ্রিক প্রেক্ষাপটে আমাদের আজ
অবস্থান নিতে হবে। পুরনো ইতিহাস ঘেঁটে দ্বন্দ্ব-সংঘাত চাগিয়ে তোলার কোনও অবকাশই
নেই। তবুও স্তিমিত হয়ে আসা সীমান্ত পারাপার, অর্থনীতির স্বপ্ন সোপানে আগামী দিনের
উন্মীলনে ব্যস্ত আধুনিক প্রজন্মের রক্তের মধ্যে ঢেলে দেওয়া হচ্ছে অনুপস্থিত
বিভাজনের কল্পিত বিষ। সমস্ত মানুষকে আজ ঐক্যের পরিচয় দিতে হবে। তা বিপুল, বিশাল গণ
জমায়েতের মধ্য দিয়ে। হিংসাত্মক আন্দোলন করে বিভাজনের বীজকে সমূলে উৎপাটন করা যাবে
না। তাই একই সঙ্গে আওয়াজ রাখতে হবে: CAA প্রত্যাহার কর+NRC বন্ধ করো+উত্তর-পূর্বের
শরণার্থীদের দায় শুধু সেই রাজ্যগুলির নয়, সমস্ত দেশকে নিতে হবে।
ভাল লাগল
ReplyDeleteBojha galo bhalo bhabe.
ReplyDelete