Tuesday, 25 November 2014

কোরপান শাহ'দের সহজেই মারা যায়!

এসো 'শিক্ষিত'রা, 
নিপুণ ভাবে মানুষ মারি

অনিন্দ্য ভট্টাচার্য
 

হোস্টেল ও পারিবারিক জীবনের মধ্যে সব থেকে যে বড় ফারাকটা আমাকে বিচলিত করেছিল তা একমাত্রিকতার ভয়াবহতা। হোস্টেলে প্রায় একই বয়সের সঙ্গী সাথী বন্ধুরা, নানাজনে নানারকম হলেও মৌলিক ভাবে জীবন অভিজ্ঞতায় ও বোধে সকলেই বেশ কাছাকাছি; পরিবারে নানা বয়স নানা রুচি নানা জ্ঞান ও সর্বোপরি অভিজ্ঞতার যে বহুমাত্রিক দ্যোতনা, তার সঙ্গে অবশ্যই  মেলে না। ফলে, মনের পরতে যে বিচিত্র রূপশৈলী গড়ে ওঠার অবকাশ তা হোস্টেল জীবনে অবশ্যই ব্যাহত হয়। স্কুলের ছোট ক্লাসে এই অভাবটা তীব্র হতে পারে, একটু বড় হয়ে গেলে ততটা না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তবে সদ্য স্কুল পাশ করা ছেলেমেয়েদের কলেজ হোস্টেলে ঢোকার পর্বটা অনেকটা স্কুল পড়ুয়াদের মতোই।

স্কুলের ছয়ের ক্লাস থেকেই আমার হোস্টেল জীবন- আর সেভাবেই বড় হতে হতে এই একমাত্রিকতার করালগ্রাস লব্ধ করেছি। জীবন যখন স্বতঃসারিত বৈচিত্র্য থেকে বঞ্চিত হয়, তখন ভাল-মন্দ, সুখ-দুঃখ, সাদা-কালো সব একরৈখিক মাত্রায় জীবনকে ছেঁকে ধরতে থাকে। এর থেকে মুক্তি পাওয়া বড় দায়। তখন আর উপায় থাকে না চরম নিষ্ঠুরতা ও উদগ্র ভালবাসার কোনও মধ্যবর্তী আলো–আঁধারের তল্লাশ নেওয়ার। কারণ, একমাত্রিকতা তাকে বৈচিত্রের হদিশ জানায়নি। সে এক কল্পিত একরোখা কোঠরের বাসিন্দা তখন।

কোরপান শাহের হত্যাকাণ্ড আমাকে এই কথাগুলো মনে পড়াল। এক দুঃস্থ, মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষকে যে এইভাবে পিটিয়ে, তার যৌনাঙ্গ খুবলে ছিঁড়ে হত্যা করা যায় তা দুঃস্বপ্নেও কজন ভাবতে পারে জানি না। কারা এই কাজটি করল? নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজের আবাসিক পড়ুয়া ছাত্রদের একাংশ, যারা ভবিষ্যতের হবু চিকিৎসক। আমরা যখন কলেজে পড়তাম তখন অধিকাংশ হোস্টেলে র‍্যাগিং ছিল এক নিয়মিত মান্য ব্যাধি। হিন্দু হোস্টেলে বহু চেষ্টা করে একটা সময় আমরা র‍্যাগিং বন্ধ করেছিলাম। তখন অন্তত এই কথাটা শুনতাম, মেডিকেল কলেজের হোস্টেলে র‍্যাগিং হয় না। বাস্তবিক হতও না। আমাদের একটা ধারণা হয়েছিল, চিকিৎসার সঙ্গে যেহেতু মানবিকতার একটা গভীর সম্পর্ক আছে তাই ডাক্তারি পড়া ছেলেমেয়েরা অমন নিষ্ঠুর মজায় নিজেদের সামিল করতে পারে না। মনে হয়, এই অনুভবের একটা গ্রাহ্যতা ছিল। কিন্তু কোরপান শাহের হত্যাকাণ্ড আজ সে বিশ্বাসকে চুরমার করে দিয়েছে। হোস্টেল জীবনের একমাত্রিকতা, চরম লোভ, দুর্বোধ্য এলিটিজমের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে গরিব মানুষের প্রতি চূড়ান্ত ঘৃণা ও চিকিৎসাশাস্ত্রের মৌলিক উপলব্ধির সঙ্গে পরিচয়হীন (না হলে মানসিক ভারসাম্যহীন কাওকে এ ভাবে খুন করা যায়?) কতগুলো ‘মেধাবী’ পাষণ্ডের এমন বিকারগ্রস্ততা। সত্যজিতের 'আগুন্তুক' ছবিতে মনমোহন মিত্র বলেছিলেন, 'সভ্য কে? যে আঙ্গুল দিয়ে একটা বোতাম টিপে গোটা শহরকে ধ্বংস করে দিতে পারে।'

মনে আছে, হিন্দু হোস্টেলে প্রথম রাতে বুদ্ধিদীপ্ত র‍্যাগিং’এর নামে কিছু মদ্যপ ছাত্রের হাতে লাঞ্জিত হওয়ার কথা। পরের বছর যারা নতুন এল তাদেরই আবার সেই গতবারের লাঞ্ছিতরা ছেঁকে ধরল একইভাবে। আমরা কেউ কেউ সেখানে উপস্থিত থেকে যথাসম্ভব চেষ্টা করেছি আক্রমণকারীদের প্রতিহত করতে। তাতে ফল হয়েছিল। একেবারে বন্ধ না হলেও র‍্যাগিং’এর মাত্রা অনেকটা কমেছিল। নতুনদের হেনস্থা অনেকটাই লঘু হয়ে এসেছিল। কথা ছিল, পরের বছর থেকে র‍্যাগিং একেবারে বন্ধ হবে। আশ্চর্য, যে নতুনরা আমাদের প্রতিরোধে অনেক কম হেনস্থা হল সেই তারাই পরের বছর সিনিয়র হয়ে গিয়ে নতুনদের র‍্যাগিং’এর উদ্যোগ নিল। আমরা সেই র‍্যাগিং থামাতে গিয়ে তাদের আক্রমণের মুখে পড়লাম। স্পষ্ট মনে আছে, এই র‍্যাগিং’এর মূল হোতা ছিল আগরতলা থেকে প্রেসিডেন্সির অর্থনীতি বিভাগে পড়তে আসা একটি ‘সরল সোজা মেধাবী’ ছেলে যে ত্রিপুরা রাজ্যের উচ্চ-মাধ্যমিক পরীক্ষায় সেবার প্রথম স্থান পেয়েছিল।

অনেক সময় সাধারণ আলোচনায় আক্ষেপ করা হয় মানুষের ‘শিক্ষা’ নিয়ে- আমরা অধিকাংশরা ‘অশিক্ষিত’ তাই আমাদের কত দুর্দশা! সম্ভবত তাই, ‘শিক্ষিত’রা পাশবিক উন্মাদনায় মেতে উঠে নির্দ্বিধায় নৃশংস অত্যাচারে ফালা ফালা করে হত্যা করে ‘অশিক্ষিত’, ‘দরিদ্র’, ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ সহ-নাগরিককে। পাড়ায় ‘চোর’ পিটিয়ে মারা আর হোস্টেলে ‘পাগল’ খুন করা-  মনের ভেতর পোষা সেই ‘র‍্যাগিং’ বস্তুটিই। এর চরমতম বহিঃপ্রকাশ কার মধ্য দিয়ে কীভাবে প্রকাশ পাচ্ছে তার হদিশ কে দেবে? ‘শিক্ষা’ তো একপ্রকার ‘অশিক্ষা’ও বটে!        

               

Thursday, 13 November 2014

সালাহউদ্দীন আহমেদ - শ্রদ্ধা






(২৪ সেপ্টেম্বর ১৯২৪ - ১৯ অক্টোবর ২০১৪)

এক বিরল ঐতিহাসিক 
      
 সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদ 

গত ১৯ অক্টোবর ২০১৪ আমাদের থেকে বিদায় নিয়েছেন বাংলার প্রবীণতম ইতিহাসবিদ সালাহউদ্দীন আহমেদ। তাঁর জন্ম ১৯২৪ সালে। শৈশব কেটেছে উত্তর বিহারের মতিহারিতে। স্কুলজীবন বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর, ফরিদপুর আর কলকাতায়। কলেজ কলকাতার রিপন ও প্রেসিডেন্সি। কৈশোর ও যৌবনে একদিকে বৃহত্তর বাংলার রূপ, অন্যদিকে মহানগর কলকাতার জীবন তাঁর স্বদেশপ্রেম, মানবতাবোধ ও ধর্মনিরপেক্ষতার চেতনাকে গড়ে তুলেছে।
মার্কসীয় ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ হয়ে যোগ দিয়েছিলেন শ্রমিক আন্দোলনে। আবার মানবেন্দ্রনাথ রায়ের বিপ্লবী মানবতাবাদও তাঁকে টেনেছে। যৌবনে মহাত্মা গান্ধী আর প্রৌঢ় বয়সে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর হৃদয়ে বিশেষ স্থান করে নিয়েছিলেন।
শিক্ষকতা করেছেন জগন্নাথ কলেজ(১৯৪৮–৫৪), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়(১৯৫৪–৭২), জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়(১৯৭২–৭৮) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে(১৯৭৮–৮৪)। উচ্চতর গবেষণা করেছেন পেন্সিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, কিয়তো বিশ্ববিদ্যালয় ও সোয়াস-এ। ২০১১ সালে অভিষিক্ত হন বাংলাদেশের জাতীয় অধ্যাপকের মর্যাদায়।
মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান আবু মহামেদ হাবীবুল্লাহর আহ্বানে মঞ্জুরী কমিশনের খণ্ডকালীন গবেষণা পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এমফিল পর্যায়ে গবেষণার প্রস্তাব ও নিয়মকানুন তৈরিতে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭৮ সালে যোগ দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে। তাঁর আগ্রহে এই বিভাগে পিএইচডি পর্যায়ে গবেষণা বিস্তৃতি লাভ করে। ১৯৮৪ সালে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর গ্রহণ করেন। শেষ জীবনে(১৯৯৯) জাতীয় অধ্যাপকের মর্যাদা লাভ করেন; মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত সপ্তাহে দুদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার অব একসেলেনসে কাজ করতেন।
পঞ্চাশের দশক থেকেই জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সেমিনারে বহু প্রবন্ধ পাঠ ও বক্তৃতা দিলেও সালাহউদ্দিন আহমেদের প্রথম বই প্রকাশিত হয় বেশ দেরীতে– Social Ideas & Social Change in Bengal (১৯৬৫)- কলকাতা থেকে। তারপর দীর্ঘ বিরতি দিয়ে বের হতে থাকে তাঁর প্রবন্ধ সংকলনসমূহ – ‘Bangladesh: Tradition & Transformation (১৯৮৭); ‘বাঙালীর সাধনা ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ’ (১৯৯২); ‘বাংলাদেশঃ জাতীয়তাবাদ, স্বাধীনতা, গণতন্ত্র’(১৯৯৩); ‘Bengali Nationalism & Emergence of Bangladesh’ (১৯৯৪); ‘ইতিহাসের সন্ধানে’(১৯৯৫); ‘বাংলাদেশঃ অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ' (২০০০); ‘উনিশ শতকে বাংলার সমাজচিন্তা ও সমাজবিবর্তন'(২০০০); ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্রের সংকট’ (২০০২); 'India, Pakistan, Bangladesh: Perspective on History, Society & Culture' (২০০১, কলকাতা); ‘বরণীয় ব্যক্তিত্ব, স্মরণীয় সুহৃদ’ (২০০৩); ‘বাংলাদেশ কোন পথে’ (২০১২); ‘ইতিহাস, ঐতিহ্য, জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র’ (২০১৩), ‘বঙ্গবন্ধু-বাঙ্গালিঃ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও সমকালীন ভাবনা' (যন্ত্রস্থ)।
ইতিহাস অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে সালাহউদ্দীন আহমেদের প্রধান আগ্রহ বাঙালীর সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশধারার সূত্র অন্বেষণ ও মানচিত্র তৈরি। উনিশ শতকে তাঁর আইকন রামমোহন রায়, বিশ শতকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ভারতীয় মুসলমানদের অনগ্রসরতার কারণও তিনি বিশ্লেষণ করেছেন এবং মুসলমান সম্প্রদায়ের প্রগতিশীল ধারাকে শনাক্ত করেছেন। তাঁর প্রত্যয়ঃ বাঙালী ধর্মীয়-বিবেচনায় বিভক্ত হলেও মূলত সমন্বয়বাদী চেতনার মানুষ। তাঁদের জীবনধারায়, আচরণে লৌকিক বিশ্বাস ও ধ্যান ধারণা প্রবল, ফলে হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রীস্টান এক মোহনায় মিলতে পেরেছে। নানা বিভেদ ও বৈষম্য সত্ত্বেও বাঙালীর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অখন্ডতায় আস্থাশীল ছিলেন তিনি।
বিশ শতকের ষাটের দশক থেকে পূর্ব বাংলায় জাতীয়তাবাদী উত্থানও তাঁর ইতিহাস-গবেষণায় গুরুত্ব পেয়েছে। এ ক্ষেত্রে তাঁর আইকন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান। তাঁর বিবেচনায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রকৃত বিকাশের জন্য অপরিহার্য হচ্ছে গণতন্ত্র ও অসাম্প্রদায়িকতার চর্চা। রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার ধর্ম এবং রাজনীতি উভয়কেই কলঙ্কিত করছে- এ কথা বারবার বলেছেন। তিনি বিশ্বাস করতেন মানবতার উপরে আর কোনো আদর্শ স্থান পেতে পারে না। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর অবদানকে খাটো করে দেখার যে-কোনো প্রয়াসের প্রতিবাদ করেছেন তিনি। সালাহউদ্দীন আহমেদ যে-কোনো সাম্প্রতিক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাকে ইতিহাসের বৃহত্তর পটভূমির ক্যানভাসে স্থাপন করে বিচার-বিশ্লেষণ করতেন। ব্যক্তির অভিজ্ঞতার সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে তার থেকে সমসাময়িক ঐতিহাসিক ঘটনাসমূহের বিবরণ তৈরি করা– মৌখিক ইতিহাস চর্চার এ ধারাটিও বাংলাদেশে প্রবর্তন করেছিলেন সালাহউদ্দীন আহমেদ। ১৯৮৫ সাল থেকে ফোর্ড ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে মুস্তাফা নূর-উল ইসলাম, সরদার ফজলুল করিম ও এনামুল হককে সঙ্গে নিয়ে উক্ত প্রকল্প পরিচালনা করেন তিনি। ১৯৯০-এর মধ্যে ১২০ জন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন তাঁরা। এসব সাক্ষাৎকারে বাংলা ও বাঙালীর রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক ইতিহাসের মূল উপকরণ পাওয়া গেছে। পরে সুকুমার বিশ্বাসের সহযোগিতায় মুক্তিযুদ্ধ চেতনা বিকাশ কেন্দ্রের মাধ্যমে আরও কিছু সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন তিনি।
ইতিহাস-পরিষদ, বাংলাদেশ জাতিসংঘ সমিতি, এশিয়াটিক সোসাইটি, জাতীয় জাদুঘর, বাংলা একাডেমি প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। বঙ্গবন্ধু জাদুঘরের স্থাপনা থেকে তাঁর নিজের শেষ দিন পর্যন্ত ওই ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ছিলেন সালাহউদ্দীন আহমেদ।

Saturday, 8 November 2014

A Tribute to Dr Manu Kothari by EPW

A tribute to Dr Manu Kothari (1935-2014), Emeritus Professor of Anatomy, Seth G S Medical College, Mumbai, a pioneer of the propagation of fundamental truths about cancer.

Published in Economic & Political Weekly (Vol. 49, Issue No.45, November 8, 2014)


by Sthabir Dasgupta (sthabir@yahoo.com) (one of Kolkata’s leading oncologists)

One of the pioneers of the propagation of the fundamental truths in medicine, and cancer treatment in particular, a prolific writer, eloquent orator, a teacher of teachers and a medical-philosopher colossus, has passed away at his residence in Mumbai at a “viable, die-able age”, in peace.
The inevitable has happened, but all who came across this gentle colossus as students, as colleagues, as patients or even as simple acquaintances are destined to cherish his memory, his evergreen smile and sharp wit. His profound knowledge and yet, his simplicity, his uncanny interest in exploring an uncharted sea, his humour, his enviable grasp of the philosophy of medical science would certainly enthuse his students for decades to come. Unconventional as he was in thinking, after having qualified as a surgeon with flying colours, he opted for a post of a teacher in anatomy in his Alma Mater, for anatomy was for him, akin to the science of Atma (An-atmi).
His long, uninterrupted, 60 years of association with Seth G S Medical College, Mumbai, first as a student and finally as Professor Emeritus in anatomy, has enriched everyone around. His brilliance as a mere student took even Dr Hamilton Bailey, the world famous author of textbooks in surgery, by pleasant surprise. In December 1955, while still an undergraduate student, he wrote to Bailey about his own observation that in inflammations of the hip, how the deformity could be measured visually without moving the patient’s painful limb as was advised. The great author had appreciated it in the 13th edition of his Demonstrations of Physical Signs in Clinical Surgery in 1960.
This humane approach remained the leitmotif all his life. He was a pioneer from the eastern world to challenge the then US President Richard Nixon’s call for a war against cancer by publishing his huge tome as early as 1973, The Nature of Cancer. In this work of research he had unmistakably shown, even with the help of the conventional literature that cancer is a normal stage of a dividing cell that has a “cancer genome”. A cell endowed with the cancer genome pushes it into the cancerous state and therefore, the only sustainable difference between a normal and a cancer cell is in its behavioural pattern. Having proved this, he had exposed the myths around cancer, its early detection, the methods of treatment and the results thereof. This led him to declare not to trouble this trouble of cancer, unless trouble troubles us, and to trouble our trouble only to the extent that it troubles us.
Ivan Illich, the famed philosopher and maverick social critic, while saying that Dr Kothari’s work was a “revolution within the politics of health”, suggested a condensed version of this book. Thus, Cancer: Myths and Realities of Cause and Cure was published in English, German and Dutch in 1979, and in Gujarati in 1988. The same version was edited and published in 1994 as The Other Face of Cancer which has been translated in a number of Indian languages till date, for its immense popularity and appeal to the lay and the learned alike.
Needless to say, despite respectful reviews of these books, the cancer establishment has chosen to remain blissfully unaware of the concept of “cancerrealism”. It has never rejected the thoughts and arguments of Dr Kothari with counter­arguments either. It has simply ignored him. However, it is interesting to note what in 1977 the then director of the famed Sloan Kettering Institute, New York, Dr Lewis Thomas, an equally famed bio-philosopher, had to say after having a long discussion with Dr Kothari: “You are largely right about cancer. But we are so politically committed to the cure of cancer that we have no courage to tell the truth to the public.”
It is more interesting to note that today various cancer experts from the western world are admitting the basic tenets of Dr Kothari, saying for instance, that the war on cancer was misplaced, surgery triggers the spread of cancer, early detection is a myth and a hoax and cancer is a social obligation, for one in five persons in the human herd runs the lifetime risk of having cancer. We are amused to see that Dr Kothari’s name has still remained conspicuously absent in these western literatures. We are more amused to see that the so-called Indian experts are still keeping themselves ignorant with contemptuous silence. However, we also know that they are destined to accept him, in time, because for them whatever emanates from the West is the best.
It is true that today’s shifting winds of fashion will fail to measure the stature of this archaeologist of ideas, but those who are fortunate to have worked with him will now find it hard to replenish the void. His numerous students spread all over the globe will always remember that anatomy is not just a study of the structure of the human body, but a study of a work of Art of nature. His teachings must have been engraved in their minds that “bipolar harmaphroditism” is the very nature of a somatic cell and “the basis of its being and becoming”. His erudite editorials in various medical journals remind us of Richard Feynman who said: “Science is the belief in the ignorance of experts.”
The Himalayan contribution that he has made to the intellectual, medical mind while travelling through the various terrains of medicine with ease was only possible because of his simplicity and the happiness that emanated from the core of his heart. He used to say off and on that “truth is simple while falsehood is extremely complex”. In the same tone he used to tell his students: “Don’t strive to be happy; be happy”. This happiness, despite the grieving experiences in his personal life, drove him to write dispassionately with a scientific temper and speak endlessly and untiringly on life, disease and death. Thus Death: A New Perspective on the Phenomenon of Disease and Dying was published in 1986 from the UK and the US. Its Indian version, published in 1992 as Living, Dying, drove home the point that death and disease are independent: while death is a function of time, disease is a function of body.
Humane Approach
Any serious reader, while going through these books, will understand how disease and death have been commercialised in the modern world, in the name of scientific achievement. They will understand the utter falsehood of the medicos and medical writings which portray disease as a conquerable enemy, and death as an avoidable nuisance. He successfully exposed this paranoia of over-investigation and overtreatment, producing astronomical bills and “iatrogeny”, that is, disease caused by treatment, and thus causing further disease and ultimately, a painful death.
This humane approach, along with a critical, scientific mind, drove him to write books like Revisiting High Blood Pressure, HIV-AIDS Revisited, Immunology Revisited, The Fourth Gender, and Gaia’s Will: The Dying Declaration of Mother Earth. All these writings have opened the windows of newer, intellectually sounder orientation and put the laymen into the position to use expert advice rather than to be used by the experts. It is to be mentioned, however, that most of his writings were co-authored with his student and later colleague, Dr Lopa A Mehta, while a few are also by Dr Atul Goel, Dr Vatsal Kothari and Dr Jyoti Kothari.
The present writer has always regretted for not having a teacher like him in his entire medical career, but felt most fortunate at the same time, for being able to be associated with him very closely for the last 10 years or so, academically and also professionally. It seems difficult to forget his words that a good death, a happy one at that, is “a crowning glory to a good, happy life”. He has indeed lived a happy life and enjoyed it to the hilt with his wife, a gynaecologist, his son, a well-known physician, his daughter-in-law, a paediatrician, and his most lovable, five-year-old granddaughter.
One is aware of T S Eliot saying “Where is the Life we have lost in living? Where is the wisdom we have lost in knowledge? Where is the know­ledge we have lost in information?” Dr Manu Kothari, however, was a typical antithesis who said, “At birth, the cosmic completeness takes shape as a carnal being, which at death once again merges into the cosmic completeness. Completeness IS.”

Wednesday, 5 November 2014

কোচি থেকে কলকাতা




মারের বদলা চুমু!

পল্লবী বন্দ্যোপাধ্যায়

চুমু খাওয়া কি একটা ব্যক্তিগত কাজ? যা ঘরের জানলা দরজা বন্ধ করে, আলো নিভিয়েই করা উচি? মূত্রত্যাগ করাও কি একটি ব্যক্তিগত কাজ? যা নিজের বা জনগণের ব্যবহারের জন্য তৈরি বাথরুমে করা উচি? অদ্ভুত ব্যপার হল, ভারতের সামাজিক প্রেক্ষাপটে প্রথম প্রশ্নের উত্তর ‘হ্যাঁ’ এবং দ্বিতীয়টার উত্তর নীরবতা। আর তাই কোচিতে ছেলেবুড়ো নির্বিশেষে একজোট হয়ে রাস্তায় চুমু সমাবেশের আয়োজন করলে জোটে পুলিশের ঘাড়ধাক্কা। কলকাতার ‘কিস অফ লাভ’ ইভেন্টের ফেসবুক পেজ মরাল পুলিশদের ক্রমাগত ‘রিপোর্ট’এর ফলে উধাও হয় আন্তর্জাল থেকে। এবারে আসুন প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজা যাক।

একদল মানুষ এই প্রতীকী চুম্বন প্রতিবাদের সূত্র ধরে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে, যদি রাস্তায় চুমু খাওয়া যায় তাহলে অন্যান্য কাজে মানুষ সারমেয়সুলভ আচরণ করবে কিনা; উলঙ্গ হয়ে ঘুরবে কিনা, ইত্যাদি। এ সব কিছুর শুরু কোঝিকোড-এর একটি কফি শপে বিজেপি পতাকাধারী মানুষদের তান্ডব, ভাঙচুর। কেন? কারণ, ঐ কফি শপটি নাকি প্রায় বৃন্দাবনের আকার ধারণ করে স্থানীয় যুবক যুবতীদের প্রেমের আখড়া হয়ে উঠেছিল। অতএব, সমাজের শুচিতা রক্ষার পবিত্র কর্তব্য যাঁরা নিজেদের বলিষ্ঠ কাঁধে তুলে নিয়েছেন, তাঁরা পতাকা হাতে মাঠে নেমে নখ দাঁত বের করে ফেললেন। অর্থাৎ কিনা আপনার আমার জীবনযাপনের যে যে অংশ তাঁদের পছন্দ হবে না, সেগুলোকে তাঁরা অবলীলায় অপসংস্কৃতির মোহর লাগাবেন এবং নিজেদের সংস্কৃতির, শালীনতার সংজ্ঞা আমাদের ওপর চাপিয়ে দেবেন। সাধারণ মানুষের সমস্ত স্বাভাবিক প্রবৃত্তিকে চাপা দিয়ে একটা দমবন্ধ পরিবেশ তৈরি করা হবে এবং সেই পরিবেশের গায়ে ঐতিহ্যের তকমা লাগানো হবে। যে কোনওদিন হয়তো দেখা যাবে চর্যাপদ, বৈষ্ণব পদাবলী অথবা কামসূত্র অশ্লীলতার দায়ে ভারতে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে একটা দম বন্ধ করা অবদমনের পরিবেশ তৈরি হবে যা ক্রমাগত জন্ম দেবে একের পর এক ঘৃণ্য যৌন অপরাধের।

অনেকে এমনটাও বলছেন, যে এসবই হল পশ্চিমি সভ্যতার প্রভাব। যাঁরা এটা বলছেন, খোঁজ নিয়ে দেখা যাবে তাঁদের অনেকেই শনিবার পশ্চিমি পোশাক পরে ম্যাকডোনাল্ডস-এর বার্গার খেতে যান সপরিবারে। বিদেশি ছবিও নিয়মিত দেখেন। অর্থাৎ, জলে না নেমে মাছ ধরে নিজেদের সংস্কৃতি বজায় রাখতে হবে। ছেলেমেয়েদের পড়তে পাঠাতে হবে বিদেশে, নিজেদের ভাষা সুবিধে মতো ভুলে যাওয়া যাবে, মার্কিন ব্র্যান্ডের জিনস ছাড়া পরা যাবে না, কিন্তু পাবলিক প্লেসে প্রতীকী চুমু প্রতিবাদ ঘটতে দেখলেই রে রে করে তেড়ে গিয়ে সংস্কৃতি কপচাতে হবে।

মরাল পুলিশেরদের বলিঃ
'সন্তানের মুখ ধরে একটি চুমো খাবো
যাবো ..কিন্তু, এখনি যাবো না
তোমাদেরও সঙ্গে নিয়ে যাবো
একাকী যাবো না অসময়ে।'