Saturday, 30 November 2013

Little Magazine Mela - 28 Nov 2013

প্রতি মাসের শেষ শনিবার লিটল মাগাজিন মেলা - এবার হল ২৮ নভেম্বর ২০১৩ / কলকাতায় আকাদেমি'র সামনে
একটি ছবি - পথের আলোয় মেলা চলেছে -

Friday, 29 November 2013

সাইকেল চালানো আমাদের অধিকার

কলকাতায় সাইকেল চালানোর ওপর কলকাতা পুলিশের banning নিয়ে কয়েকটি সংগঠন পুলিশের বড়কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে। সেই বৈঠক নিষ্ফল হয়। এ সম্পর্কে একটি রিপোর্ট নিচে দেওয়া হল যা 'http://songbadmanthan.com/'এ প্রকাশ পায়-

২৬ নভেম্বর কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল কমিশনার সৌমেন মিত্র-র সঙ্গে সাইকেল সমাজ সহ কয়েকটি সংগঠনের বৈঠক হয় লালবাজারে। সেই বৈঠকে সাইকেল সমাজের পক্ষ থেকে কমিশনারের কাছে দাবি জানানো হয়, ১) অবিলম্বে কলকাতার সমস্ত রাস্তা থেকে নিঃশর্তভাবে সমস্ত নিষেধাজ্ঞা (সাইকেল সহ সমস্ত অযন্ত্রচালিত যানবাহনের ওপর) প্রত্যাহার করতে হবে। ২) কলকাতার রাস্তায় যানজটের সমস্যার সমাধানে রাজ্য সরকার একটি কমিটি তৈরি করুক, তাতে বিশেষজ্ঞ, কলকাতার রাস্তায় যারা সাইকেল চালায় তারা, এবং ট্রাফিক ডিপার্টমেন্টগুলো থাকুক। এছাড়া সাইকেল সমাজের পক্ষ থেকে বলা হয়, সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের কম সময়ে কলকাতার রাস্তায় এক জায়গা থেকে অন্য জায়গা যাওয়ার একমাত্র মাধ্যম সাইকেল। সেই মাধ্যমটিকে ১৭৪ টি রাস্তায় নিষেধ করা (৪০ এর বেশি রাস্তায় ২৪ ঘন্টার জন্য, ১১৭টি রাস্তায় সকাল ৭টা থেকে রাত ১১টা) মানে কলকাতার রাস্তা থেকে সাধারণ মানুষকে ঠেলে সরিয়ে দেওয়া। সাইকেল সমাজের পক্ষ থেকে এন্টালিতে স্বাক্ষর সংগ্রহের সময় সাধারণ সাইকেল আরোহীরা জানিয়েছিলেন, ণ্ণযদি বড়ো রাস্তায় সাইকেল নিষেধ করে দেয় পুলিশ, তাহলে গলি রাস্তায় গাড়ি নিষেধ করে দেবে জনগণ।’ এই কথাটাও পুলিশ কমিশনারকে শুনিয়ে দেওয়া হয়।
ভবানীপুর যদুবাজার অঞ্চলের সাইকেল আরোহী জীবিকা অধিকার রক্ষা কমিটি-র পক্ষ থেকে গোয়ালা, ছোটো ব্যবসায়ী সহ বিভিন্ন সাইকেলজীবী মানুষেরা ছিলেন বৈঠকে। তাদের পক্ষ থেকে বলা হয় — এই সংগঠনের পক্ষ থেকে দু-বছর আগে কলকাতা পুলিশকে একটি ম্যাপ দেওয়া হয়েছিল, তাতে কোথায় কোথায় সাইকেল লেন হতে পারে, তার বর্ণনা দেওয়া ছিল। এই ম্যাপ তৈরি করার কথা বলেছিল কলকাতা পুলিশই (দিলীপ বন্দ্যোপাধ্যায়)। কিন্তু এতদিনেও সেসব কিছু করা হয়নি। উল্টে ৩৮টি রাস্তায় সাইকেল নিষেধ ছিল আগে, সরকার বদলের পর তা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ১৭৪টি রাস্তায়। অথচ সাইকেল স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীদের জন্য আবশ্যিক একটা পরিবহণ মাধ্যম। তেল সঙ্কট ও মূল্যবৃদ্ধির যুগে সাইকেল অনস্বীকার্য। প্রয়োজনে সাইকেল চালকদের জন্য কলকাতা পুলিশ সচেতনতা সপ্তাহ আয়োজন করতে পারে।
পাবলিক নামক সংগঠনের তরফে প্রদীপ কক্কর বলেন, কলকাতা শহরের হাওয়া বাতাসের যা অবস্থা তাতে সাইকেল-এর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে কোনও তর্কই চলতে পারে না। তাছাড়া কলকাতা পুলিশ রাস্তায় যানবাহনের গতির ভিত্তিতে কলকাতার সড়ক পরিবহণকে ভাগ করছে — সেই ভাগাভাগিতে একদম শেষে আসছে সাইকেল সহ সমস্ত অযন্ত্রচালিত যান। এই ভাগাভাগি সম্পূর্ণ ভুল। কলকাতা পুলিশের সচেষ্ট হওয়া উচিত রাস্তা থেকে প্রাইভেট গাড়ি কমানোর জন্য। কলকাতা যে ফুসফুসের অসুখের রাজধানী হয়ে উঠছে বায়ুদূষণের জন্য, সে ব্যাপারে কলকাতা পুলিশ নিশ্চয়ই অবগত আছে।
রাইড টু ব্রিদ সংগঠনের গৌতম শ্রফ বলেন, কলকাতার সাধারণ সাইকেল ও অযন্ত্রচালিত যানের ওপর নির্ভর করে যারা, তাদের ভাত মারার এই চেষ্টা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। আমি কলকাতাবাসী বলে আমার লজ্জা হচ্ছে।
সুইচ অন সংগঠনের একতা জাজু বলেন, কলকাতা পুলিশ অবিলম্বে নিঃশর্তে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিক।
বৈঠকে চক্র সত্যাগ্রহ মঞ্চের তরফে এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে ইন্টারনেটের মাধ্যমে সংগৃহিত প্রায় ২৫ হাজার স্বাক্ষর কলকাতা পুলিশের হাতে তুলে দেন একতা জাজু। শমীক সরকার সাইকেল সমাজ সংগঠনের তরফে রাস্তায় সংগৃহিত প্রায় আড়াই হাজার স্বাক্ষর জমা দেন।
আন্দোলনকারীদের বক্তব্যের আগে ও পরে প্রায় আধঘন্টা বক্তব্য রাখেন স্পেশাল পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র স্বয়ং। সেই বক্তব্যে তিনি জানান,
১) সাইকেল ও অযন্ত্রচালিত যান নিষেধ করা হয়নি, নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে মাত্র।
২) কলকাতায় রাস্তা তুলনায় কম, ফলে ট্রাফিক চ্যালেঞ্জ বেশি।
৩) প্রতি বছর কলকাতায় চারশ’ সাড়ে চারশ’ লোক অ্যাক্সিডেন্টে মারা যায়। সাইকেল আরোহীদের জন্য দুর্ঘটনা ঘটে। আমরা রাস্তায় সিসিটিভি ক্যামেরা বসিয়েছি, তা থেকে ছবি পাচ্ছি। সেগুলি আমরা ইউটিউবে তুলে দিয়ে দেখিয়ে দেব সাইকেলের জন্য দুর্ঘটনা ঘটে।
৪) কলকাতা পুলিশ রাস্তায় প্রাধান্য দেয় যথাক্রমে মেট্রো, বাস, মিনিবাস; তারপর প্রাইভেট গাড়ি; তারপর হাতে টানা রিকশা প্রভৃতি; তারপর মোটর সাইকেল; তারপর সাইকেল।
৫) সাইকেল করতে পারলে ভালো হত, কিন্তু রাস্তা এত কম যে করতে পারা যাচ্ছে না।
৬) প্রাইভেট গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করার ব্যাপারে কলকাতা পুলিশ ভাবনা চিন্তা করেছে, কিন্তু কিছুই কার্যকর করা যায়নি।
৭) তিন রকম লোকেরা সাইকেল চালায় : ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, সাইকেলপ্রেমী, কাজের জায়গায় সাইকেলে যায় যারা (ক্ষুদ্র সংখ্যক)
৮) কলকাতা পুলিশের পরিকল্পনা : মেইন রাস্তা পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ও বড়ো গাড়ির জন্য (প্রাইভেট গাড়ি সহ); অটো, রিক্সা, সাইকেল, ভ্যান, ম্যাটাডোর — এগুলো রেল বা মেট্রো স্টেশন থেকে বড়ো রাস্তায় নিয়ে যাবে লোকেদের। বড়ো রাস্তায় এগুলো চলতে পারবে না, ক্রসিং পেরোতে পারবে; সাইড লেন বা বাইলেন দিয়ে সাইকেল বা অন্যান্য ধীরগতির যান চলতে পারবে।
সৌমেন মিত্রর বলা শেষ হয়ে গেলে আন্দোলনকারীরা তাঁর প্রতিটি পয়েন্টকে খন্ডন করতে চান যুক্তি দিয়ে, কিন্তু তার কোনও সময় না দিয়ে স্পেশ্যাল পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র মিটিং থেকে বেরিয়ে যান।

Saturday, 23 November 2013

A Painting in Nov 2013 issue of Ekak Matra

একক মাত্রা 'র নভেম্বর ২০১৩ সংখ্যায় প্রকাশিত এই ছবি।
শিল্পী - সৌর্য়েয় চক্রবর্তী

Tuesday, 12 November 2013

মুক্তির সন্ধানে


একটু নিশ্বাস নিয়ে বাঁচি 

রেজাউল করিম 

ভোটের ঢাকে কাঠি পড়তে আর মাত্র কয়েকটি মাস বাকি আছে। চারিদিকে সাজো সাজো রব উঠেছে। ভারতীয় জনতা পারটি নরেন্দ্র মোদিকে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য মনোনীত করেছেন। গুজরাট দাঙ্গার সময় মোদিজির মন্তব্য “আমরা দুই, আমাদের দশ”, “শরণার্থী শিবির না মোল্লা তৈরির আঁতুড়ঘর” বা গুজরাট দাঙ্গা “নিউটনের তৃতীয় সুত্র মেনে” ইত্যাদি মন্তব্য স্মরণ করে বিরোধী দলগুলি তাকে মুসলিম বিরোধী বলে অভিহিত করতে উঠেপড়ে লেগেছে। অপরদিকে, তথাকথিত হিন্দুত্ববাদি দলগুলিও খুব সূক্ষ্মভাবে হিন্দু আবেগ জাগিয়ে মুসলিম বিরোধিতার ধিকিধিকি তুষের আগুনে নতুন জ্বালানি দিয়ে ভোট বৈতরণী পার হতে চাইছেন। মোদিজিও সুবিধামত মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি তার মনোভাব খুব সুকৌশলে ব্যক্ত করতে কসুর করছেন না। তার কথার মারপ্যাঁচে মোহিত জনগণ উদ্বাহু হয়ে নৃত্য করছে, শেয়ারবাজারের সুচকের সাথে পাল্লা দিয়ে তার ব্যক্তিগত সুচকও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। প্রায় সহজেই বলা যায় যে, ষোড়শ লোকসভার নির্বাচকমণ্ডলীর কাছে চেতন বা অবচেতনে মুসলিমরা ভোটের অন্যতম প্রধান ইস্যু। কেউ তাদের “তুষ্ট” করতে চান, আর কেউ সেই তোষণের বাড়া ভাতে ছাই দিতে চান। দুই যুযুধান প্রধান শক্তি তাই ভিন্ন মেরুতে অবস্থান করলেও মনেপ্রাণে “ধর্ম নিরপেক্ষতা”কেই নির্বাচনের ইস্যু করতে চান। 
কেন বারবার সংখ্যালঘুর অধিকার ভোটের ইস্যু হয়ে ওঠে, কেন বার বার তাদের আচার- আচরন চুলচেরা বিশ্লেষণের শিকার হয়, একদল তাদের খলনায়ক সাজান আর একদল অপাপদিদ্ধ শিশু হিসেবে তাদের বর্ণনা করেন, এ প্রশ্নের উত্তর নিহিত আছে ১৯৪৯ সালের ২৪ নভেম্বর তারিখে, যেদিন ভারতের পার্লামেন্ট স্বাধীন দেশের সংবিধান আনুষ্ঠানিক ভাবে গ্রহণ করেছিল। নানা ঐতিহাসিক কারনে সেদিন বিবাহ, উত্তরাধিকার, ধর্মীয় আচার আচরণ সংক্রান্ত ১৮৪০ সালের চালু আইনটিকেই আইন হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল। তার ফলে, দেওয়ানি বিধির ক্ষেত্রে বিশেষত বিবাহ ও উত্তরাধিকার সংক্রান্ত বিষয়ে হিন্দু ও মুসলিমদের জন্য আলাদা আইন গৃহীত হল। অবশ্য, কালক্রমে হিন্দু বিবাহ, উত্তরাধিকার ও পারিবারিক আইন নানারকম ঘষামাজা করে, সংশোধনী নিয়ে যথেষ্ট যুগোপযোগী হলেও এ সংক্রান্ত মুসলিম আইন প্রায় অবিকৃতই রয়েছে। তাতে যা নূতন সংযোজন বা পরিবর্তন হয়েছে, যেমন ডিভোর্স ও প্রটেকশন বিল, ১৯৮৬, তা মুসলিম ব্যক্তিগত আইনকে আরও জটিল ও প্রাচীনপন্থী করে তুলেছে। সংবিধান প্রণেতারা যদিও অবশ্য খুব ভালভাবে জানতেন যে, অখণ্ড ভারতবর্ষ দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে দ্বিখণ্ডিত হয়েছে এবং এই সাম্প্রদায়িক বিভাজন অতিক্রম করে ভারতবর্ষের অখন্ডতার জন্য একটি অভিন্ন আইনই যথাযথ। তা বিবদমান ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করবে। কিন্তু, নেহেরুজি মনে করতেন যে ভারতে বসবাসকারী মুসলিমরা যথেষ্ট আধুনিক নন ও তাঁরা অভিন্ন বিধির জন্য যথেষ্ট প্রস্তুত নন। সেইজন্যে, এই বিধি নির্দেশমূলক বিধির (আর্টিকেল ৪৪) অন্তর্ভুক্ত করে তার অন্তর্ধান যাত্রার ব্যবস্থা করলেন। ভারতের সংবিধান অনুসারে নির্দেশমূলক বিধি অনুসারে ন্যায়ালয় কোন রায় দিতে পারে না। অভিন্ন দেওয়ানি বিধির সেই অন্তর্জলী যাত্রা ভারতবাসির জন্য এক অন্ধকার যুগের সুচনা করল। এ কথা নিঃসংশয়ে বলা যায় যে ভারতের সংবিধানের ১৫(২) ধারায় যে সমানাধিকারের কথা বলা হয়েছে, ব্যক্তিগত আইনগুলি তার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। আবার, মুসলিম ব্যক্তিগত আইন সংক্রান্ত সমস্ত বিষয় নিয়ে বিভিন্ন আদালত নানা সময়ে যেসব মন্তব্য করেছেন (১৯৬২ ও ১৯৬৮ সালে এ সংক্রান্ত নানা মামলায় মাদ্রাজ, বোম্বাই ও পাঞ্জাব হাইকোর্ট) তাতে একটা বিষয় পরিস্ফুট হয়েছে যে, ভারতে প্রচলিত ব্যক্তিগত আইনসমূহ সংবিধানের ৩৭২ নম্বর আর্টিকেলে অন্তর্ভুক্ত নয় বরং এগুলি পরম্পরাগত আইন, এ সংক্রান্ত কোন বিল আইন সভায় পাশ করা হয়নি। মহামান্য আদালত আরও লক্ষ্ করেছে যে, মুসলিম ব্যক্তিগত আইন কোরানে যেভাবে বলা হয়েছে সেভাবে গৃহীত হয়নি বরং তা তথাকথিত শরিয়ত অনুসারী বলে মান্যতা পেয়েছে। প্রকৃতপক্ষে এইসব আইন ইমাম সাফেয়ী (৭৮৭-৮২০) বাগদাদে “আর-রিসালাত” নামক একটি গ্রন্থে সর্বপ্রথম গ্রন্থিত করেন। শাসনকাজ পরিচালনার জন্য উম্মায়িদ ও আব্বাসিয় খলিফাদের যুগে প্রচলিত আইন (ফিকাহ) ও আর-রিসালাত বর্ণিত শরিয়তি আইন নানা সময়ে নানাভাবে পরিবর্তন হয়েছে । এসব পরিবর্তনের মূল উদ্দেশ্য ছিল, খলিফাদের শাসনকে শক্তিশালি করা ও তাদের সব ধরনের রাজকীয় রীতিনীতিকে ধর্মীয় গ্রহণযোগ্যতা দেয়া। যারা এইসব পরিবর্তন মানতে চাননি তাদের কেউ কেউ কারাগারে জীবন দিয়েছেন (আবু হানিফা, ৭৬৭) কেউ সরাসরি খুন হয়েছেন (মনসুর হাল্লাজ আব্বাসিয় খলিফা আল মুক্তাদিরের রাজত্বকালে ৯২২ সালের ২৬শে মার্চ তাকে খুন করা হয়)। সংক্ষেপে বলা যায়, যে প্রচলিত শরিয়তি আইন অতি পার্থিব রাজকীয় প্রশাসনিক ফরমান, কোরান সম্মত কোন ঐশ্বরিক বিধান নয়। ভারতীয় মুসলিমদের কাছে মাননীয় ইমামদের ( যেমন, আবু হানিফা) কাছেও তা গ্রহণযোগ্য ছিল না। এইসব আইন আবার কোরানের ১৫/৯১ আয়াতের সাথে সাযুজ্যপূর্ণ নয়। অথচ, ভারতের পার্লামেন্ট তাকে কোরান সম্মত বিধান হিসেবে মান্যতা দিয়ে এসেছে, তাকে সাদরে দেশের আইন হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। মনে রাখতে হবে, মওলানা আজাদের মত পণ্ডিত ব্যক্তিও সেই সব আইন নিয়ে প্রকাশ্যে কোন সমালোচনা করেননি। এ প্রসঙ্গে স্মরণ করা যেতে পারে যে দক্ষিণ আফ্রিকাতেও প্রায় একই রকম একটি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল ১৯৯৩ সালে নতুন সংবিধান রচনার সময়ে। অবশ্য, ব্যক্তিগত আইনকে তখন সে দেশের আইনসভা গ্রহণযোগ্য বলে মান্যতা দেননি।
যাই হোক, ফিকাহ কথিত আইন ভারতের “অপরিণত” মুসলিম জনগোষ্ঠীর কল্যাণের জন্য তাদের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া হল যেমন ভাবে বলির আগে কোরবানির পশুগুলিকে দাগিয়ে দেওয়া হয়। এই আইন বলে মুসলিমরা কয়েকটি বিশেষ অধিকার লাভ করল- কন্যা সন্তানরা পিতার সম্পত্তির সমানাধিকার থেকে বঞ্চিত হল ,পুরুষরা একাধিক বিবাহ করার বৈধতা ও যথেচ্চ তালাক দেয়ার অধিকার অর্জন করল ও উত্তরাধিকার সংক্রান্ত বিষয়ে “ফারায়েজ” ও আইনসম্মত বলে গণ্য হল। তালাক নিয়ে কোরান শরিফে খুব বিস্তৃত ব্যাখ্যা রয়েছে- তালাক একটি বিশেষ সুযোগ যা অতি সাবধানে ব্যবহার করা উচিত, এটি বৈধ অধিকারের মধ্যে সবচেয়ে ঘৃনিত ও সামান্য কারনে বা একই সাথে তিন তালাক দিলে তা গ্রাহ্য হওয়া উচিত নয়। এমনকি, তালাক উচ্চারিত হলে, খোদাতালায়র সিংহাসন ক্রোধে কাঁপতে থাকে। অথচ, শরিয়তি আইনে সে সব উল্লেখ মাত্র নেই। তালাক সংক্রান্ত মুসলিম ব্যক্তিগত আইনটির আর একটি দুর্বলতা হল এটি ক্রিমিনাল প্রসিডিওর কোডের ১২৫ নম্বর ধারার বিরোধী, যে ধারায় জাতি ধর্ম নির্বিশেষে যে কেউ খোরপোষের জন্য মাজিস্ট্রেটের শরণাপন্ন হতে পারেন। ভারতের পার্লামেন্ট ১৯৫৪ সালে আরও একটি আইন পাশ করেন যার পোশাকি নাম স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্ট। এই আইনে ভারতে বসবাসকারী যে কোন হিন্দু, অহিন্দু ও বিদেশিরা এই আইনের সাহায্যে বিবাহ নথিভুক্ত করতে পারেন। মুসলিম ব্যক্তিগত আইন অবশ্য ১৯২৯ সালের শিশু-বিবাহ নিবারনী আইনের ও পরিপন্থী, কারন, মুসলিম ব্যক্তিগত আইন অনুসারে ১৮ বছরের কম বয়সীদের বিবাহ ও আইনসিদ্ধ। এককথায়, বলা যেতে পারে যে ব্যক্তিগত আইন সমূহ অনেক ক্ষেত্রেই দেশের চালু নিরপেক্ষ আইনের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নেই।
খুব সহজেই অনুমেয়, “মুসলিম জনগোষ্ঠী” বেশ কিছু বিষয়ে তার হিন্দু প্রতিবেশী থেকে আলাদা। তাদের জন্য নির্মিত সর্বনেশে বিশেষ আইন- কানুন তাদের আলাদা হতে বাধ্য করেছে। না হলে, “মুসলিম জনগোষ্ঠী” কোন সুষম-বিন্যস্ত গোষ্ঠী নয় যে তাদের মধ্যে সাধারন সাম্য থাকবে- তাঁদের ধর্ম এক হলেও তাঁরা বহুধা বিভক্ত। তাদের মধ্যে রয়েছে ভাষাগত ও শিক্ষাগত বিভিন্নতা। তাদের আচার-আচরণ, জাতিগত বিন্যাস একই রকম নয়। তাদের মধ্যে রয়েছে বিস্তর সংস্কৃতিগত ফারাক। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, বাঙালি চাষি মুসলিমদের সাথে তাদের দুলে- বাগদি- চণ্ডাল-কৈবর্ত- নমশূদ্র পূর্বপুরুষের যতখানি মিল রয়েছে বিহারী মুসলিমদের সাথে রয়েছে প্রায় ততখানি পার্থক্য।কাজেই, সংখ্যাগুরু ইন্টেলেকচুয়ালরা পার্লামেন্টে আইন পাশ করে মুসলিমদের উপর যে আইন চাপিয়ে দিয়েছেন তাতে তাদের বিড়ম্বনা নানাভাবে বেড়েছে। সেই কথামালার কুমিরের গল্পের মত- ধান চাষ করে সে “গোঁড়ার” দিক আর আখ চাষ করে “ডগার” দিকের অধিকার পেয়েছে!
এইসব আইনে “বলিয়ান” হয়ে মুসলিমরা কতটা লাভবান হয়েছেন তার প্রমান সাচ্চার-রিপোর্টের ছত্রে ছত্রে ছড়ান রয়েছে। তাঁরা শিক্ষা থেকে শত যোজন দূরে থেকেছে। সম্মানজনক জীবিকা তাদের করায়ত্ত হয়নি। প্রায় সব ধরনের সরকারি সাহায্য থেকে তাঁরা বঞ্চিত হয়েছে। তাদের ছেলেমেয়েদের মাত্র ৪ ভাগ মাদ্রাসায় পড়ে অথচ, বাম ডান নির্বিশেষে মাদ্রাসা শিক্ষাকেই তাদের দুর্ভাগ্যের কারন হিসেবে চিহ্নিত করেন। অথচ, প্রকৃত বাস্তব হল, তাঁরা দুটি কারনে মাদ্রাসায় যেতে বাধ্য হয়- ঐসব জায়গায় সাধারন স্কুলের সংখ্যা কম ও বেসরকারি স্কুলে পড়াবার মত সংগতি তাদের নেই। তা সত্ত্বেও শতকরা প্রায় ৩০ ভাগ পরিবার তাদের সর্বস্ব ব্যয় করেও ছেলেমেয়েদের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করেন। তাদের শিশুদের শতকরা ২৫জনই স্কুলে যায় না, গেলেও অষ্টম শ্রেণীতে গিয়েই তাঁরা ঠিক করেন- যথেষ্ট হয়েছে, আর নয়।। তাঁরা ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ হয় পান না বা পেলেও খুব অল্প সংখ্যক ভাগ্যবান তা পান, যদিও ঋণ খেলাপি হিসেবে তাদের বদনাম তুলনামূলক ভাবে কম। তাদের এলাকা গুলিতে রাস্তাঘাট ভাল নয়, পানীয় জলের ব্যবস্থা অপ্রতুল, বিদ্যালয়, পোস্ট অফিস, ব্যাঙ্ক এমন কি বাস স্টপের সংখ্যাও কম। জাস্টিস সাচ্চার রিপোর্টে উল্লেখ করেছেন (২০০৬ :২৩৭) যে, মুসলিমরা ‘exhibits deficits and deprivation in practically all aspects of development’ হর্ষ মন্দার লিখেছেনঃ “একথা খুব সহজেই প্রতিয়মান যে, তথাকথিত মুসলিম তোষণ মুসলমানদের পৃথক সত্ত্বা নির্মাণের যে “অধিকার” দিয়েছে তার ফলে মুসলিম নারীরা একদিকে ভরণ পোষণের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন, বা ইচ্ছা করলেও কেউ কোন অনাথ শিশুকে দত্তক নিতে পারেন না, অন্যদিকে তেমনি তাদের দাড়ি রাখা ও বোরখা পরার অভ্যাস সবার সন্দেহ ও বিরক্তির কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে। মুসলিমরা সারাক্ষণ এক ধরনের নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন, কারন তাঁরা বার বার জাতিগত হিংসা আর গণহত্যার শিকার হয়েছেন। এই নিরাপত্তা হীনতার জন্য তাঁরা বিশেষ বিশেষ জায়গায় সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে থাকতে বাধ্য হন”। তাহলে, যে অক্ষয় স্বর্গের কল্পলোকের স্বপ্নে বিভোর হয়ে মুসলিমরা বিশেষ আইন বলে নিজেদের পৃথগন্ন করেছিল তা ভুল শুধু ভুল, মিছে পরিহাসে পরিণত হয়েছে। অথচ, প্রতিদিনের রাজনৈতিক কুনাট্যরঙ্গের তাঁরাই প্রধান শিকার । কখনো হিন্দুত্ববাদীদের অমৃত ভাষ্য তাদের কংগ্রেসের কোর্টে ঠেলে দিচ্ছে। ভীত ত্রস্ত কংগ্রেস তখন সন্তরণমূঢ় অসহায় বালকের মত ত্রাসে সঙ্কুচিত হয়ে, ‘মুসলিম-তোষণে’ সাময়িক ক্ষান্তি দিয়ে,খড় কুটো আঁকড়ে ধরার মত হিন্দু তোষণের চেনা রাস্তায় হাঁটার চেষ্টা করেছে, যার ফলশ্রুতিতে বন্ধ মন্দিরের দ্বার খুলেছে, মুসলিমরা আবার তালাক দেবার নতুন অধিকার লাভ করেছে। যে সব অধিকার তাঁরা পেয়েছে, তা তাদের পৃথক সত্ত্বা নির্মাণ করেছে ঠিকই কিন্ত তার জৈবিক ক্ষুধা নিবৃত্তির কোন ব্যবস্থা সেখানে নেই। তাই দুষ্টচক্রের মত সেই অধিকার তার প্রতিদিনের জীবন সংগ্রামকে আরও দুর্বিষহ করে তুলেছে। উৎপাদন চক্রের যেখানে তার অবস্থান সেখানে তার পৃথক সত্ত্বা তার কাছে জগদ্দল পাথরেরে মত ভারি হয়ে দাঁড়ায়, সংখ্যাগুরুর রোষে সে আরও বেশী বৈষম্যের শিকার হয়, যা তার আলাদা থাকার জেদ আরও তীব্র করে। তখন সে আরও জোর করে তার পৃথক সত্ত্বাকে আঁকড়ে ধরতে চায়। হিন্দুত্ববাদিরাও তাদের এই জেদ , ঔদ্ধত্ত ও “অধিকারে” আহত হয়ে তাদের আরও তীব্র আক্রমণ করে। যেন, তাদের খুব ক্ষতি হয়ে গেছে, যেন অবাধ তালাকের অধিকার দিলে তাঁরাও খুব “সভ্য” হয়ে উঠতেন, যেন বিশেষ অধিকার খারিজ হয়ে গেলেই রাতারাতি দেশের সব সমস্যার সমাধান হয়ে যেত। অবশ্য, কেউ এই প্রশ্ন তোলেন না যে, মুসলিমদের জন্য তথাকথিত অধিকার প্রণয়নের সময় আইন সভায় কতজন মুসলিম আইন প্রনেতা ছিলেন? কেউ এই প্রশ্নও তোলেন না যে, যখন আইন পাশ হয়েছিল তখন ত বৃহৎ সম্প্রদায়ের মানুষই সংখ্যালঘুর জন্য এই নিদান হেঁকেছিলেন। যতবার তা সংশোধিত হয়েছে, তা হয়েছে পশ্চাৎগামী, আর মুসলিমদের অজ্ঞতা, বিচ্ছিন্নতা তা আরও বাড়িয়েছে। কিন্তু সে পশ্চাৎগামী নাট্যানুষ্ঠানও হয়েছে সংখ্যাগুরুর বদান্যতা ও পৃষ্টপোষকতায়!! নাহলে যারা ফৌজদারি বিধি বিনা বাক্যব্যয়ে মেনে নিলেন তাঁরা দেওয়ানি বিধি মানবেন না এমন কথা গরিষ্ঠ মুসলিম জনগোষ্ঠী বলেন নি, আর বললেও শোনার কোন যথার্থ কারন ছিল না। মুসলমানরা স্বাধীন ভারতের আইন সভায় যে হারে নির্বাচিত হন, তার সাহায্যে নিশ্চিত ভাবে কখনোই “নিজেদের জন্য” বিশেষ “মর্যাদাদানকারী” কোন আইন পাশ করাতে পারবেন না। তাহলে, কেন তাঁরা অন্যায় আক্রমণের শিকার হন, কেন তাঁদের পৃথক সত্ত্বা একের পর এক নির্বাচনে ইস্যু হয় আবার নির্বাচনের পর তাঁরা বিস্মৃতির শিকার হন?
সম্প্রতি জাভেদ আখতার টুইটারে মন্তব্য করেছেন, “জাভেদ আখতার, জাদু!খুব কপাল করে জন্মেছ। কখনো তোমাকে সংঘ পরিবার মুসলমান বলে গাল দেয়, কখনো মোল্লারা “ছদ্ম-মুসলমান” হওয়ার জন্য তোমার মুন্ডুপাত করে”। যেসব মুসলিম নাগরিক সচেতনভাবে নিজেদের ভারতীয়ত্ব জাহির করতে চান তাঁরা কিন্তু এখন সত্যকার “না ঘরকা না ঘটকা”। আপনি খুব যুক্তিবাদি, কিন্তু আপনার নামটি আরবীয় ভাষায়। আপনি যত সেন্সিবল হন না কেন, কোথাও না কোথাও, কারনে-অকারনে আপনি অপমানিত হতে পারেন- হতে পারে ফেসবুকে, হতে পারে টুইটারে, হতে পারে হাটে- বাজারে, রাস্তা ঘাটে বা বাসস্থানে। আপনি লগ্নভ্রষ্টা কনের কপাল নিয়ে জন্মেছেন, অল্প স্বল্প মুখ ঝামটানি অনিবার্য ভাবে আপনাকে সইতে হবে। প্রসঙ্গত বলে রাখি, ভারতীয় স্টেট ব্যাঙ্ক এই লেখককে গৃহঋণ দিতে অস্বীকার করেছিল। তিন তিনবার অনুসন্ধানের পর যখন সে উপরওয়ালাদের শরণাপন্ন হল তখন যে শর্তে তাকে ঋণ দিতে চায় তা নেবার মত প্রবৃত্তি ও আগ্রহ কোনটাই তার ছিল না। বাড়ি ভাড়া নিতে গিয়েও একই অভিজ্ঞতা হয়েছে। সব কিছু ঠিকঠাক হয়ে যাবার পর নাম শুনেই ভদ্রলোকের ভুরু কুচকে উঠল- “বুঝতেই পারছেন। আমার কোন অসুবিধা নেই। আসলে আমার স্ত্রী আবার পুজো আচ্চা...”। তাই, তার স্থির বিশ্বাস, যত নষ্টের গোঁড়া নামটাকে বিসর্জন দিতে হবে। প্রথমতঃ বাঙালি ভাত আর অক্সিজেনে যদি পুষ্টি লাভ হতে পারে তাহলে বাংলা নাম নয় কেন? যে নামগুলি মুসলমানদের কাছে এত প্রিয় সেগুলো আর যাই হোক মুসলমানদের দেয়া নয়। “মুহম্মদ” নাম দিয়েছিলেন তার কাকা ও দাদূ- দুজনের কেউ মুসলিম ছিলেন না। আলি, ওমর, আবু বকর, উসমান এ সব নাম ও পাগান মূর্তি পুজারিদের দেওয়া। বাহারাম, সোহরাব, রুস্তম এসব বীররাও ত ছিলেন পার্সি অগ্নিপূজক। তাহলে, বাংলা নাম অচ্ছুত কেন?
তবে, প্রতিদিনকার যে অনিবার্য গ্লানি, অপমান, হীনমন্যতায় শিক্ষিত মুসলমানরা বেঁচে আছেন, তাদের বার বার দেশপ্রেমের প্রমান দিয়ে বেঁচে থাকার শংসাপত্র যোগাড় করতে হচ্ছে, আমার নামটি “মুসলমান” কিন্ত আসলে আমি তেমন “মুসলমান” নই বলে প্রতিদিন নিজের সাথে নিজেকে লড়তে হচ্ছে- অবমাননাকর সেই বিষবৃক্ষটিকে সমূলে উৎপাটিত করতে হবে। “মুসলিম ব্যক্তিগত আইন” গলায় ফাঁসের মত মুসলিমদের জাগতিক অস্তিত্বকে প্রতি মুহূর্তে বিপন্ন করছে। সেই বিপন্নতাবোধ থেকে মুক্তির উপায় হিসেবে চাই বিছিন্নতার শেকড় থেকে উৎপাটন। বড় ভায়ের চক্ষুশূল হয়ে হয়ত কায়ক্লেশে বাচা যায় কিন্ত মাথা উচু করে বাঁচতে হলে সবার সাথে তাল মিলিয়ে বাঁচতে হবে। না হলে, দেশপ্রেম, দেশাভিমান, দেশের জন্য আত্মত্যাগ কোন বিষয়ে পিছিয়ে না থেকেও কেন বৈষম্যের কৃত্রিম দেয়ালে বার বার সে মাথা ঠুকে মরে। সব বৈষম্য দূর হোক, সব ভুল বোঝাবুঝির অবসান হোক। তার আগে পরিপূর্ণ মুক্তির স্বাদ চাই, চাই অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু হোক, একটু নিশ্বাস নিয়ে বাঁচি।

Monday, 4 November 2013

যে সমস্ত স্টলে 'একক মাত্রা' পাওয়া যায়

এই স্টলগুলিতে না পেলে আমাদের জানান। আপনার কাছাকাছি অন্য কোনও স্টলে যদি পেতে চান আমাদের জানান-