নিজেদের কথা নিজেরাই বলা যাক
উত্তাল ঘোষ
বিধানসভা ভোটের বেশ কয়েক মাস বাকি। কিন্তু এখন থেকেই ভোটের ঢাকে কাঠি পড়ে গিয়েছে। রাজনীতি যে শুধুই ভোটের জন্য এটা তার প্রমাণ। একটা ভোট মিটলেই শুরু হয়ে যায় পরের ভোটের অঙ্ক। ভোটসর্বস্ব এই রাজনীতিতে সভ্যতার বিপদের কথা, সাধারণ মানুষের রোজকার যন্ত্রণার কথা থাকে না। তাই ক্রমশ রাজনীতি সম্পর্কে মানুষের শ্রদ্ধা কমছে। অনেকেই রাজনীতির এই দেউলিয়াপনা বুঝতে পারলেও বিকল্প নেই।
ভোটযুদ্ধের এই রমরমার মধ্যেই কার্যত চুপচাপ কাজ শুরু করেছে একটি সংগঠন: জনমঞ্চ; ঘোষণা অনুযায়ী সাধারণ মানুষের রাজনৈতিক মঞ্চ। ভোটসর্বস্ব রাজনীতির বিকল্প রাজনীতির সম্পূর্ণ এক নতুন পরীক্ষা শুরু করেছেন বিভিন্ন পেশায় যুক্ত কিছু সাধারণ মানুষ।
বলা হয়েছে, সাধারণ মানুষের রাজনৈতিক মঞ্চ। ধারণাটা নতুন। জনমঞ্চ বলছে,
• রাজনৈতিক মঞ্চ হলেও তারা এখনই ভোটে লড়ার কথা ভাবছে না;
• জনমঞ্চ কোনও সরকার বা রাজনৈতিক দলের পক্ষে বা বিপক্ষে নয়;
• তারা পন্থা নিয়ে বিতর্কে যেতে চায় না;
• ওদের ক্যাচলাইন: আমরা যা বিশ্বাস করি তাই বলি, যা বলি তাই করি।
জনমঞ্চের বেশ কিছু দাবি থাকলেও, মূল দাবি দুটো:
কোনও সরকারি অনুদান ছাড়া প্রত্যেক পরিবারের মাসিক আয় অন্তত ২০ হাজার টাকা করতে হবে;
প্রকৃতি, বন্যপ্রাণ ও পরিবেশকে রক্ষা করেই উন্নয়নের কাজ করতে হবে।
কোন রাস্তার কথা বলছে জনমঞ্চ?
এতদিন নানা পার্টি তাদের মঞ্চ থেকে নিজেদের কথা বলেছে। সাধারণ মানুষ নিচে বসে হাততালি দিয়েছেন। এবার সাধারণ মানুষ তাঁদের রাজনৈতিক মঞ্চ থেকে নিজেদের অধিকারের দাবি তুলবেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে ঠিক করতে হবে তারা কী ভূমিকা নেবে।
সাধারণ মানুষের অধিকার কোনগুলো?
অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান, শিক্ষা-স্বাস্থ্য-বিশুদ্ধ পানীয় জল, স্বাস্থ্যকর পরিবেশ, বিষহীন খাবার, যথেষ্ট পুষ্টি, ব্যক্তি ও সমষ্টির নিরাপত্তা, ভয়হীন ভাবে কথা বলতে পারা, নিজের ধর্ম পালনের অধিকার-- এগুলো মানুষের জন্মগত অধিকার। জনমঞ্চের মতে, এই অধিকার আদায়ে সবার আগে দরকার স্বনির্ভর পরিবার গড়ে তোলা। তাহলে আর রাজনৈতিক দলের মুখের দিকে তাকিয়ে বাঁচতে হবে না।
দাবি আদায়ের পথ সম্পর্কে জনমঞ্চের ধারণাতেও নতুনত্ব। বলছে, প্রয়োজনে তারা মিটিং-মিছিল করবে (অবরোধ ইত্যাদি করে সাধারণ মানুষকে বিপদে ফেলবে না), কিন্তু কথার চেয়ে কাজকে বেশি গুরুত্ব দেবে। কী ভাবে পরিবারগুলোকে স্বনির্ভর করা যায়, প্রকৃতি-পরিবেশকে রক্ষা করেই উন্নয়ন করা যায়, সে সব হাতেকলমে করে দেখানোর উপরই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে চাইছে জনমঞ্চ।
প্রশ্ন, বহু সহৃদয় মানুষ, বিভিন্ন সংস্থা মানুষের জীবনমান বাড়ানোর জন্য কাজ করেন। জনমঞ্চ কি সেরকম কোনও সংগঠন? জনমঞ্চের উদ্যোক্তারা বলছেন, তাঁরা সমাজসেবায় নামেননি। তাঁরা কোনও এনজিও নন। কারণ তাতে মানুষের কিছু সুবিধা হলেও সিস্টেম বদলায় না। মানুষের অধিকার আদায়ের লড়াই-ই পারে শুধু সিস্টেম বদলাতে। সে কাজ করার জন্যই তাঁরা জনমঞ্চ তৈরি করেছেন।
কোন সিস্টেম বদলের কথা বলছে জনমঞ্চ?
সে কথায় ঢুকতে গেলে কিছু নিরস তথ্য দিতেই হচ্ছে।
OXFAM-এর রিপোর্ট বলছে,
• ভারতে গরিব ৭০ শতাংশ মানুষের ৪ গুণ সম্পদ আছে সবচেয়ে ধনী ১ শতাংশের হাতে;
• সবচেয়ে ধনী ১০ শতাংশের হাতে আছে দেশের ৭৭ শতাংশ সম্পদ।
World Inequality Lab প্রকাশিত রিপোর্ট আরও ভয়ঙ্কর:
• আজকের ভারতের অবস্থা ব্রিটিশ আমলের চেয়েও খারাপ:
সাল সবচেয়ে ধনী ১ শতাংশের হাতে দেশের মোট আয়ের কত শতাংশ
১৯২২ ১৩
২০২২ ২২.৬ (সর্বকালীন রেকর্ড)
সাল সবচেয়ে ধনী ১০ শতাংশের হাতে দেশের মোট আয়ের কত শতাংশ
১৯৮২ ৩০
২০২২ ৬০
• শুধু গরিবেরই নয়, মধ্যবিত্তেরও হাল খারাপ হচ্ছে। ৯০'এর দশকে ধনী ১০ শতাংশের পরের ৪০ শতাংশের হাতে ছিল মোট আয়ের ৪৪.১ শতাংশ। ২০২২ সালে সেটা কমে হয়েছে ২৭.৩ শতাংশ।
সারা দুনিয়ার ছবিটা কেমন?
২০২৩ সালে প্রকাশিত UBS Global Wealth Report অনুযায়ী, দুনিয়ার ধনী ১ শতাংশের হাতে আছে দুনিয়ার সম্পদের ৪৭.৫ শতাংশ। আর গরিব ৪০ শতাংশের হাতে আছে ১ শতাংশেরও কম সম্পদ। দুনিয়া জুড়ে চলছে বাজার অর্থনীতির দাপট, যার মূল নীতিটাই হচ্ছে, আরও আরও আরও মুনাফা। দেখা যাবে, ১৯৯১ সালে আমাদের দেশে বাজার অর্থনীতি চালুর পর থেকে ধনী-গরিবের আয় ও সম্পদের ফারাক দুদ্দাড় গতিতে বাড়ছে। ২০১৪ সালের পর থেকে ফারাক বাড়ছে রকেট গতিতে।
মুনাফার জন্য বাজার দখল করতে এই মুনাফাবাজদের যুদ্ধ বাঁধাতেও হাত কাঁপে না। International Committee of the Red Cross-এর হিসেব, এখন সারা দুনিয়ায় ১২০টিরও বেশি সশস্ত্র লড়াই চলছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে সবচেয়ে বেশি। অর্থাৎ, আরও লাভের লোভে সভ্যতাকে বলি দিতেও আপত্তি নেই ধনকুবেরদের।
সভ্যতার অস্তিত্বের সামনে আরেক বিপদ পৃথিবীর ক্রমশ গরম হয়ে যাওয়া বা বিশ্ব উষ্ণায়ন। এটাও আরও মুনাফার ধান্দারই একটা ফল। বিপদ বাড়াচ্ছে ধনীরা আর ফল ভুগতে হচ্ছে গরিবদের।
Oxfam-এর রিপোর্ট বলছে,
সবচেয়ে গরিব ৫০ শতাংশের ছড়ানো দূষণের দ্বিগুণ দূষণ ছড়ায় সবচেয়ে ধনী ১ শতাংশ;
১৯৯০-২০১৯ পর্যায়ে সবচেয়ে ধনী ১ শতাংশের ছড়ানো দূষণের ধাক্কায় ২০২৩ পর্যন্ত বিশ্ব অর্থনীতির ক্ষতি হয়েছে ২,৯০,০০০ কোটি ডলার। সেই ক্ষতির ধাক্কা পোহাতে হচ্ছে গরিব মানুষকেই।
বিশ্ব ব্যাঙ্কের পূর্বাভাস, উষ্ণায়নের জন্য ২০৩০ সালের মধ্যে নতুন করে ৭-১৩ কোটি মানুষ গরিবির গাড্ডায় পড়বেন। Earth.Org-র হিসেবে, উষ্ণায়নের ধাক্কায় শুধু ২০২৪ সালে প্রায় সাড়ে ১২ কোটি মানুষ উদ্বাস্তু হয়েছেন। সম্পদের বৈষম্য আর পরিবেশের বিপদ-- এ দুটোই সভ্যতার গোড়ার রোগ। এই রোগ সারাতে না পারলে সভ্যতা টিকবে না।
জনমঞ্চ প্রশ্ন তুলছে, রাজনীতি কি এই বিপদ সম্পর্কে ভাবছে? আর্থিক অসাম্য আর বিশ্ব উষ্ণায়নের বিপদ আটকাতে না পারলে সভ্যতা বাঁচবে না। সভ্যতা না বাঁচলে বিজেপি-তৃণমূল-সিপিএম-কংগ্রেস, মমতা-মোদী-ট্রাম্প, হিন্দু-মুসলিম-খ্রিস্টান-শিখ-ইহুদি, কর্পোরেটের বস্-পরিযায়ী শ্রমিক, কেউ কি বাঁচবে? জনমঞ্চ মনে করে, রাজনীতির নেতারা এই বিপদের কথা ভালই জানেন। কিন্তু সচেতন ভাবেই আসল রোগ আড়াল করে পরিযায়ী শ্রমিক হেনস্থা-NRC-CAA, হিন্দু জাগো-বাঙালি জাগো, ওয়াকফ আইন, সেটিং তত্ত্ব-‘শ্রী’ প্রকল্প-অনুপ্রবেশ-অপারেশন সিঁদুর-দুর্নীতি-গুণ্ডারাজ ইত্যাদি নিয়ে পাবলিককে মাতিয়ে রাখেন। কারণ, সব রাজনৈতিক দলই এই সিস্টেমের অংশ হয়ে গিয়েছে।
জনমঞ্চের ব্যাখ্যা, যে সিস্টেম শেখায় যে করে হোক মুনাফা আরও বাড়াতে হবে, সেই সিস্টেমের অংশ রাজনৈতিক দলগুলিরও তাই একটাই অঙ্ক, যে করেই হোক ভোটে জিততে হবে। ভোটে জিততে দেদার টাকা ছড়ানো-গুণ্ডা ব্যবহার, ধর্ম ও জাতের সুড়সুড়ি, মিথ্যে কথা বলা-বুথ দখল-সরকারি সংস্থাকে ব্যবহার, কোনও কিছুই বাদ যায় না। Centre for Media Studies (CMS)-এর হিসেব অনুযায়ী, লোকসভা ভোটে খরচ:
২০১৯: ৬০ হাজার কোটি টাকা;
২০২৪: ১.৩৫ লক্ষ কোটি টাকা।
এত খরচ করে, অনৈতিক পথে জিতে ক্ষমতায় গেলে অনৈতিক কাজ বাড়বে, সেটাই স্বাভাবিক। এখন রাজনীতির কোনও নীতি-নৈতিকতা নেই। সেই ঘরে দুর্নীতি-লোভ-লালসা-দলবদল-অপরাধের বাসা বাঁধাটাই স্বাভাবিক। তার ছাপ পড়ছে সামাজিক জীবনেও।
জনমঞ্চ মনে করে, সাধারণ মানুষের জীবন-যন্ত্রণা পার্টিগুলোর কাছে গুরুত্বহীন। কিছু ললিপপ ধরিয়ে দিয়ে নেতারা ব্যান্ড বাজান-- আমি এটা দিলাম, আমি ওটা দিলাম। কিন্তু সরকারের টাকা মানে তো সাধারণ মানুষেরই টাকা। অর্থাৎ, মাছের তেলে মাছ ভেজে নেতারা ব্যান্ড বাজান। আর সাধারণ মানুষ সেই কথা শুনে নিজেদের মধ্যে তর্ক-হাতাহাতি-লাঠালাঠি-খুনোখুনি শুরু করে। মারে নয়তো মরে। বেশির ভাগ মানুষের বেঁচে থাকাটা পার্টির উপর নির্ভরশীল হয়ে গিয়েছে।
পরিত্রাণের রাস্তা কী?
রাহুল সাংকৃত্যায়নের কথা: ভাগো নেহি দুনিয়াকো বদলো।
কার্ল মার্কসের কথা: দার্শনিকেরা নানা ভাবে দুনিয়াকে ব্যাখ্যা করেছেন, আসল কথা হল একে পরিবর্তন করা।
বাঙালি সব কিছুতেই নেতিবাচক ভাবনায় অভ্যস্ত। এটা খারাপ-ওটা খারাপ-সেটা খারাপ বলতেই অভ্যস্ত। তাই বাংলার সমাজ-অর্থনীতির মতো রাজনীতিও খারাপ থেকে আরও খারাপের দিকে যাওয়াটাই ভবিতব্য। কিন্তু কোনটা মানুষের রাজনীতি সেটাও শিখিয়েছেন এক বাঙালি, সুভাষচন্দ্র বসু: জনগণের হাতে সব ক্ষমতা। সেই বিকল্প রাস্তাতেই হাঁটতে চাইছে জনমঞ্চ। তাদের মতে, এটাই সব রোগের বিশল্যকরণী। মানুষের অধিকারের লড়াই-ই বিপদ থেকে বাঁচার রাস্তা।
জনমঞ্চ বলে রবীন্দ্রনাথের কথা: মানুষের উপর বিশ্বাস হারানো পাপ। গৌতম বুদ্ধ, গুরু নানক, গান্ধীজী, আম্বেদকার, লালন, চৈতন্য, রামকৃষ্ণ, হরিচাঁদ গুরুচাঁদ ঠাকুর, ভগত সিং, বিবেকানন্দ, পেরিয়ার, রামমনোহর লোহিয়া, জ্যোতিবা ফুলে, বেগম রোকেয়া, বিদ্যাসাগর, বীরসা মুণ্ডা, স্বাধীনতা সংগ্রাম, ভাষা আন্দোলন, নানা ভাবনা, নানা চেতনা মিলেমিশেই তৈরি তাদের ভাবনা। চিত্ত যেথা ভয়শূন্য উচ্চ যেথা শির- এমন দুনিয়ার স্বপ্ন দেখে জনমঞ্চ।
দুঃখ-কষ্টের জন্য কান্নাকাটি-রাগারাগি-অন্যকে দোষ দেওয়া তো অনেক হল। রাজনৈতিক দলগুলোর ভাষায় বলতে গিয়ে নিজেদের মধ্যে তর্কাতর্কি, মারামারি, খুনোখুনি করলাম। তাতে লাভ হয়নি। এবার দুঃখ-কষ্টের জন্য দায়ী সিস্টেম বদলের মতো বিকল্প রাজনীতি তৈরির চেষ্টা করা যাক। কঠিন কঠিন তত্ত্বকথা, রাজনীতির নানা আঁকাবাঁকা কূটকচালি ছেড়ে সরাসরি নিজেদের কথা নিজেরাই বলা যাক।
জনমঞ্চ এখনও খুব ছোট। ৫-৬টি ব্লকে কাজ শুরু করেছে। তাদের ধারণা নিয়ে চলতে রাজি এরকম যে কেউ যুক্ত হতে পারেন, এমনকী তিনি অন্য কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও আপত্তি নেই। ইতিবাচক বদল ঘটাতে সমমনস্ক যে কোনও সংগঠন বা ব্যক্তির সঙ্গে কাজ করতে তৈরি জনমঞ্চ। শুধু আমরাই সব বুঝি বা পারি, একদমই সেটা মনে করে না তারা। শিখতে শিখতেই এগোতে চায় অচেনাকে চিনে চিনে।
মা ভৈ,আপনাদের কথা জানতে পেরে খুব ভালো লাগলো
ReplyDeleteধন্যবাদ। আমার নম্বর 9830870606
Deleteআপনাদের সাথে যোগাযোগ করার ফোন নাম্বার দিন
ReplyDeleteAmi uttal ghosh amar no 9830870606
Deleteপ্রথম বার পড়ার পর আরও কয়েকবার পড়া দরকার মনে হলো। তারপর কমেন্ট করার প্রয়োজন বোধ করলে করবো।
ReplyDeleteএগিয়ে চলুন, সাথে আছি।
ReplyDeleteধন্যবাদ। সঙ্গে চাই
Deleteআমি যুক্ত হতে চাই।
ReplyDeletePlz call 9830870606
Deleteভীষণ ভাল লেখা, এরকম উদ্যোগ কে সাধুবাদ, জনমঞ্চের প্রচার ও কর্মকাণ্ড আরও বিস্তৃত হোক, শুভ কামনা রইল, আমরা সাথে আছি, একক মাত্রা কে ধন্যবাদ এরকম একটি প্রচেষ্টাকে সবার গোচরে আনার জন্য, জনমঞ্চের হাত ধরে আমাদের সবার দিন বদলের স্বপ্ন শুরু হোক
ReplyDeleteসঙ্গে পেলে ভাল লাগবে। Plz call 9830870606
Deleteকবীর সুমনের একটি গান আছে ,... ""আমার কিন্তু স্বপ্ন দেখতে আজও ভালো লাগে... "বা " পাল্টে দেবার স্বপ্ন আমার এখনো গেলো না.. " এখনো পর্যন্ত আপনাদের পরিকল্পনা আশাব্যঞ্জক , আপনাদের সঙ্গে থাকতে পারলে আমার ভালো লাগবে
ReplyDeleteAmi uttal ghosh. No 9830870606. pH korben plz
Delete