Saturday 31 July 2021

বিগ মিডিয়ায় বামপন্থীদের টিউটোরিয়াল!

নিছক সেবা নয়, শ্রমজীবী মানুষের পক্ষে নীতির লড়াই

অনিন্দ্য ভট্টাচার্য


পশ্চিমবঙ্গে গত বিধানসভা নির্বাচনে বামফ্রন্ট-কংগ্রেসের আসন শূন্যে নেমে আসায়, দেখা যাচ্ছে, সামগ্রিক ভাবে বামশক্তিকে কেউই ছেড়ে কথা বলছেন না। সে তুলনায় কংগ্রেসের দুরবস্থা নিয়ে তেমন সোরগোল খুব একটা কিছু নেই। বিশেষ করে বিগ মিডিয়ায় তো বামেদের প্রতি নানারকম টোটকা ও পরামর্শের ছড়াছড়ি। যেন টিউটোরিয়ালের আসর বসেছে। ‘আনন্দবাজার’ বা ‘এই সময়’এ এ বিষয়ক ঘন ঘন উত্তর-সম্পাদকীয়গুলি পড়লে মনে হবে বামেদের এই ভরাডুবির কারণে তারা যারপরনাই চিন্তিত এবং কী উপায়ে আবারও বাম-উত্থান হতে পারে তার জন্য নানাবিধ পরামর্শ ও উপদেশ দিতে তারা কসুর করছে না। অমর্ত্য সেন থেকে শুরু করে প্রণব বর্ধনের মতো বিদ্দ্বজ্জনেরা বহু শব্দ ব্যয় করে লিখছেন বা বলছেন। মোদ্দা কথায়, সকলেই বাম বিধ্বস্ততায় কাতর। আর তাঁদের এই যাতনায় প্রধানত একটি অভিমুখই খুব স্পষ্ট করে পাচ্ছি- তা এই যে, বামেরা মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছেন, কারণ, তাঁরা মানুষের কথা শুনতে অনাগ্রহী এবং পরিস্থিতির বিচারে রণকৌশলগত ভাবে নানারকম ভুলভ্রান্তি করে চলেছেন।

আমি অবশ্য জানি না, এ দেশে কোন দল মানুষের কথা শুনে কাজ করে! ভোটের আগে তারা কথা শোনার ভান করে, কিছু কিছু জনমুখি উদ্যোগ নেয় এবং এমন একটা হাওয়া তৈরির চেষ্টা করে যে ক্ষমতায় এলে তারা মানুষের নানাবিধ উপকারে লাগবে ও তাদের সরকার আপেক্ষিক বিচারে মানুষের পক্ষে কাজ করবে। মানুষও সময়ের নিরিখে ভোটের মুখে একটা অদৃশ্য যূথবদ্ধতা গড়ে তোলে- সমর্থন ও বিরোধিতার একটা ম্যাট্রিক্স তৈরি হয় এবং সেই সুবাদেই খুব নিকৃষ্ট ধরনের সরকার চালানো দলটির পরাজয় ঘটে। কখনও কখনও সরকার ততটা নিকৃষ্ট না হলেও, বিরোধী দল এমন একটা সম্ভাবনাময় পরিবেশ-পরিস্থিতির রূপকল্প হাজির করে যে মানুষ তাতে বিশ্বাস করে নতুন সরকারের অভিষেক ঘটায়। তবে হ্যাঁ, মানুষের কথা শোনার একটা আলতো প্রক্রিয়া থাকে, তা এই অর্থে যে, কোন কোন বিষয় নিয়ে জনতা ক্ষুব্ধ ও তাদের সমস্যার মুল জায়গাগুলিকে তারা কীভাবে দেখছে- সেই সব বুঝে নির্বাচনী রণকৌশলকে সাজাতে হয়। তবে এইসব সমস্যার উপাদানগুলিকে বোঝার জন্য নানাবিধ সমীক্ষারও প্রচলন আছে এবং পেশাদার সংস্থার সাহায্যেও তার আঁচ পাওয়া যেতে পারে। যেমন, এবারের ভোটে জনমতকে বুঝতে তৃণমূল দল আই-প্যাক’এর সাহায্য নিয়েছিল।

উপরন্তু, নির্বাচনী রণাঙ্গণে ‘কোর্স কারেকশন’ বলে একটি কথা আছে। যে কোনও দলই একগুঁয়েমি ছেড়ে যদি জনতার রোষের কারণগুলিকে অনুধাবন করতে পারে এবং সেই মোতাবেক নিজেদের পরিমার্জন করে নিতে সক্ষম হয়, তাহলে নির্বাচনী বিপর্যয়কে হয়তো এড়ানো যায়। এর জন্যও পেশাদার সংস্থার সাহায্য নেওয়ার চল শুরু হয়েছে। কারণ, দলের নিচুতলা থেকে আসা ফিডব্যাকগুলি সব সময় নির্ভরযোগ্য হয় না।

পেশাদার সংস্থার সাহায্যেই হোক অথবা নিজ দলের কর্মীদের ফিডব্যাকের ভিত্তিতে- আসল জায়গাটা হল বাস্তবতাকে অনুধাবন করা এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষাগুলিকে প্রতিফলিত করতে পারা। এক বড় সংখ্যক মানুষ যদি মনে করতে শুরু করে যে অমুক দলটির ওপর নির্ভর করলে তাদের দাবি-দাওয়া কিছুটা পাত্তা পেতে পারে, তবে সেই দল লড়াইয়ের ময়দানে কার্যকরী প্রতিপক্ষ হয়ে উঠতে পারে। জেতা-হারা তো পরের প্রশ্ন। এবারের রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে বামফ্রন্ট কোনও প্রতিপক্ষই ছিল না- সেটি বোঝার জন্য নির্বাচনী ফলাফল অবধি অপেক্ষা করার দরকার পড়েনি। তা খালি চোখে গত কয়েক বছরেই বেশ বোঝা যাচ্ছিল। এর কারণ আর কিছুই নয়, বামপন্থার নীতিগত অবস্থান থেকে তাদের বিচ্যুতি ও কৌশলগত দান ফেলে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার অলীক (কু) বাসনা। একে ‘অতি চালাকের গলায় দড়ি’ বললে অত্যুক্তি হয় না। মনে হয় না, বাম বিপর্যয়ের এই মৌলিক দিকটি (নীতিগত বিচ্যুতি) নিয়ে বিগ মিডিয়া বেশি অগ্রসর হতে চাইবে। তাদের বেদনাবোধের একটা বড় কারণ সম্ভবত বিজেপি’র মতো একটি ভয়ঙ্কর ফ্যাসিস্ট শক্তির এ রাজ্যে প্রায় শূন্য থেকে প্রধান বিরোধী পক্ষ রূপে উত্তরণ। সেই বেদনার যাথার্থ্য আছে এবং বামপন্থীদেরও উচিত এই ধরনের ফ্যাসি-বিরোধী সরব রাজনৈতিক উদারবাদীদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলার। কিন্তু তার অর্থ এই নয়, বামপন্থীদের বিপর্যয়ের কারণগুলিকে বিগ মিডিয়ার উত্তর-সম্পাদকীয়র প্রান্তরে বেঁধে রাখা। তাহলে আরও বড় বিপর্যয় বামপন্থীদের জন্য অপেক্ষা করছে। বিগ মিডিয়ার বিশ্লেষণকে অতিক্রম করে বামপন্থীদের বুঝতে হবে তাদের নীতিগত অবস্থান থেকে স্খলনের তাৎপর্যকে। এক কথায়, শ্রমজীবী শ্রেণির পক্ষে থাকার যে রাজনীতি দিয়ে বামপন্থার পরিচয়, তার থেকে শত যোজন দূরে সরে যাওয়ার তাদের যে বিচ্যুতি আর সে বিচ্যুতির কারণে তাদের ফেলে যাওয়া পরিসর-হরণের কাহিনিকেও বুঝতে হবে।

অতএব, অল্প কথায়, বামপন্থীদের (বামফ্রন্টকে গণ্য করে) গৌরব হারানোর পেছনে দুটি বড় কারণকে গভীর চর্চায় নিয়ে আসা উচিত। এক, একুশ শতকের পরিবর্তিত রাজনৈতিক-অর্থনীতির পরিসরে শ্রমজীবী মানুষের বিবর্তনকে অনুধাবন না করার চেষ্টা করে উদারবাদী পুঁজিবাদের পক্ষে জোরালো ভাবে দাঁড়িয়ে পড়া এবং দুই, ফলত শ্রমজীবী মানুষের পরিসরটি অন্যের দ্বারা দখলিকৃত হওয়া।

প্রথম কারণটির ক্ষেত্রে বলতেই হয়, আজও বামফ্রন্ট সম্যক ভাবে বুঝে উঠতে পারেনি, সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামে জোরপূর্বক কৃষিজমি অধিগ্রহণ ও কর্পোরেট কারখানা স্থাপনের মধ্য দিয়ে মধ্যবিত্ত সমাজকে চাকুরি জোগানের যে খোয়াব তারা দেখেছিল তা এক অলীক কুনাট্য ব্যতীত আর কিছুই ছিল না। কারণ, এ সত্য প্রায় সর্বজন স্বীকৃত যে আধুনিক কর্পোরেট শিল্পে চাকরি হয় খুব স্বল্পজনের। বরং, দখলিকৃত কৃষিজমির ওপর নির্ভরশীল শ্রমজীবী মানুষের যে কর্মচ্যুতি হয় তা ওই সামান্য কর্মসংস্থানের থেকে অতি বহুল পরিমাণে বেশি। এই কথা শীর্ষ আদালত তাদের রায়েও পরিষ্কার ভাবে বলেছিল। সিপিএম’এর তাত্ত্বিক নেতা প্রভাত পট্টনায়ক এবং বামফ্রন্টের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অশোক মিত্র মহাশয়ও এই কথাগুলি স্পষ্ট ভাবে লিখেছিলেন। কিন্তু কর্পোরেট বিগ মিডিয়া দ্বারা প্রশংসিত ও উদারবাদী পুঁজিবাদে আচ্ছন্ন বামফ্রন্ট তখন কর্পোরেট শিল্প স্থাপনার লক্ষ্যে আন্দোলনরত কৃষকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। তারপরের পরিণতি আমরা জানি। আর সেই পতন থেকে বামফ্রন্ট তো উঠে দাঁড়াতে পারলই না বরং আরও ক্ষয়প্রাপ্ত হল নিজেদের সেই পুরনো অবস্থানকে আঁকড়ে ধরে থাকায়; এবং গোদের ওপর বিষফোঁড়া হল এবারের নির্বাচনে সিঙ্গুরে গিয়ে সিপিএম প্রার্থীর প্রতীকী শিলান্যাস করে সেই পুরনো খোয়াব দেখানোয়। সবটা মিলিয়ে তাদের নীতিগত অবস্থান প্রকারান্তরে দাঁড়িয়ে গেল শ্রমজীবী মানুষের বিরুদ্ধ শক্তি হিসেবে। তাই প্রশ্নটা নীতি ও অবস্থানের। এই জায়গাটা যতদিন না তাঁরা বুঝতে পারবেন, ততদিন তাঁদের ‘ঘুরে দাঁড়ানো’র কোনও আবহই তৈরি হবে না। তাঁরা তাঁদের যথার্থ সমালোচকদের যত ইচ্ছে গালমন্দ করতে পারেন, কিন্তু আখেরে ক্ষতিটা যে তাঁদেরই হচ্ছে সেটা তাঁরা যত তাড়াতাড়ি উপলব্ধি করবেন ততই মঙ্গল।

আর দ্বিতীয় কারণটি স্বতঃসিদ্ধ। পরিত্যক্ত ভূমি কখনও পড়ে থাকে না। গরিব শ্রমজীবী মানুষকে পরিত্যাগ করে যে ‘উন্নয়ন’এর রথ ছোটানোর কথা ভাবা হয়েছিল, সেই পরিত্যক্ত গরিব কৃষকের পাশে রাজনীতির কারণেই তৃণমূল দল দাঁড়িয়ে গেল। নিছক দাঁড়ালেই তো চলে না, বামপন্থী ভূষণকেও তারা শিরোধার্য করল। তাদের বলতে আটকালো না যে তারাও একটি বামপন্থী দল। তারা জোর করে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আইন পাশের পক্ষেও কাজ করল। ক্ষমতায় এসে এক নতুন ধরনের জনপ্রিয়মূলক ও জনমুখি কার্যক্রমের ধারা প্রবর্তন করে তারা গরিব ও শ্রমজীবী মানুষের অনেকটা আস্থাও অর্জন করল। তাদের নানারকমের নেতিবাচক কাজের ধারাগুলিকে তারা সেই জনমুখি কর্মসূচি দিয়ে কিছুটা আড়াল করতেও সক্ষম হল। অর্থাৎ, এখানেও সেই নীতিগত প্রশ্নেই তৃণমূল কিন্তু জনমুখি একটা অবস্থান গ্রহণের প্রচেষ্টা নিল যা সংখ্যাগরিষ্ঠ জনের আস্থা অর্জনে কিছুটা সফল হল। অথচ, বামফ্রন্টের বাইরে যে বামপন্থীরা রয়েছে, তারা কিন্তু বামফ্রন্টের ফেলে যাওয়া জমিতে দাগ কাটতে পারল না। সেও বামপন্থার এক সংকটই বটে!

তাই, মনে হয় না, বামপন্থীরা নিছক সুবোধ বালক হয়ে জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারবে। নীতির প্রশ্নে, শ্রমজীবী মানুষের অধিকার ও জীবন-জীবিকার প্রশ্নে তাদের স্পষ্ট অবস্থান নিতে হবে যা কর্পোরেট পুঁজির সঙ্গে দ্বন্দ্ব আহ্বান করবে। বুঝতে হবে, বামপন্থীরা থাকুক বা না থাকুক, শ্রমজীবী মানুষের আন্দোলন কিন্তু থেমে থাকে না। গত দশ মাসেরও বেশি সময় ধরে দিল্লির উপকন্ঠে কৃষকদের দীর্ঘস্থায়ী আন্দোলন সে কথা আরও একবার স্মরণ করিয়ে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট (অবশ্য এই আন্দোলনে অন্যান্য শক্তির সাথে সাথে নানাবিধ বামপন্থীদের উপস্থিতিও লক্ষণীয়)। সেখানে বিগ মিডিয়ার সমালোচনাকে ভয় করলে চলবে না। নানা ধরনের বুদ্ধিজীবী, অ্যাকাডেমিশয়ানদের ‘পেপার’ উৎপাদনের তাগিদে বিচিত্র গবেষণা অনুসারী নানা ধরনের একাডেমিক মাত্রাধারী উপাদানে ভরপুর তর্জায় প্রভাবিত হয়ে বিভ্রান্ত হলেও চলবে না। শ্রমজীবী জনতার সঙ্গে নিত্য যোগাযোগ রাখলেও তা কাজে দেবে না যদি না নীতিগত ভাবে তাদের পক্ষে দাঁড়িয়ে আওয়াজ তোলা যায়। আর সে নীতি হল, শ্রমজীবী শ্রেণির পক্ষে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে রাজনীতির পথকে নির্ধারণ করা। সে কাজে ঝুঁকি আছে, আশঙ্কা আছে। ভুললে চলবে না, এই ঝুঁকিপূর্ণ অনুশীলনের মধ্য দিয়েই বামপন্থীরা শুধুমাত্র এ রাজ্যেই নয়, সারা দেশের বহু জায়গায় প্রবল ভাবে শক্তিশালী হয়েছিল।

আজ বামপন্থার পুনরুত্থানের প্রশ্নকে তাই নবউত্থিত রাজনৈতিক-অর্থনীতির বাতাবরণে শ্রেণি অবস্থান নেওয়ার পথ ধরেই এগোতে হবে। তেভাগা, তেলেঙ্গানা, নকশালবাড়ি আন্দোলনের প্রভাব ও প্রসার কিন্তু বাস্তব শ্রেণি সংঘাতের জমি থেকেই উদ্ভুত হয়েছিল। তাই, বামপন্থীরা যদি শ্রেণি দৃষ্টিভঙ্গি ও তৎ-অনুসৃত অনুশীলন থেকে বিচ্যুত হয় তাহলে তাদের শৃঙ্খল ব্যতীত সব কিছুই কিন্তু খোয়াতে হবে; এ রাজ্যে কফি হাউস, কর্পোরেট মিডিয়ার উত্তর-সম্পাদকীয় ও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিনার আর পেপারেই আবদ্ধ হয়ে থাকতে হবে। আশাকরি, সকলে না হলেও অনেকেই, এই প্রগাঢ় সত্য ও প্রখর বাস্তবতাকে অনুধাবন করতে সক্ষম। 

               

4 comments:

  1. অত্যন্ত সাহসী সৎ এবং সময়োপযোগী বিশ্লেষণ। এখন প্রশ্নটা হল, বেড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধবে কে? বাজানোর লোক প্রচুর। বাঁধার লোক দূরবীন দিয়েও দেখা যাচ্ছেনা। তার উপর ইঁদুর খুঁজতে খুঁজতে বেড়াল নিজেই গর্তে ঢুকে গেছে, আর বেরোচ্ছে না। যাইহোক ঠিক সময়ে ঠিক তার ধরে টান দেওয়ার অভ্যাস অনিন্দ্যদার গেল না, আর পাঠক হিসেবে চাইব, কখনো যেন না যায়।

    ReplyDelete
  2. জনহিতকর বিশ্বাসযোগ্যতা নেতৃত্ব
    ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর লড়াই ছাড়া বামপন্থা ঘুরে দাঁড়ানো মুসকিল।

    ReplyDelete
  3. 💥

    কড়া পাকের ডোজ, তাই অনেকেরই হজম করতে অসুবিধা হবে ।

    👌🏽👌🏽👌🏽👌🏽👌🏽🥊❣️💐

    ReplyDelete
  4. এই টিউটোরিয়ালটিও অসম্পূর্ণ মনে হলো। পথ কি তবে বিপ্লব?

    ReplyDelete