Friday 5 March 2021

একুশের ভোট

কিছু বেয়াদপি কথা

অনিন্দ্য ভট্টাচার্য


পশ্চিমবঙ্গের আগামী বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি ও প্রচারে এবারে এমন কিছু নতুন বৈশিষ্ট্য ধরা দিয়েছে যার এক সুদূরপ্রসারী প্রভাব তৈরি হচ্ছে। সারা দুনিয়া এবং এ দেশও যে বিবিধ সামাজিক-রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, এই নবতর বৈশিষ্ট্যগুলি নানা অর্থে তারই স্বাক্ষর বহন করে। যেমন,

এক) এবারে টিভি সিরিয়াল ও চলচ্চিত্র অভিনেতা-অভিনেত্রীদের অতি বেশি পরিমাণে এ দল সে দলে যোগ দিতে দেখা যাচ্ছে। এরা সকলেই কম-বেশি গড় মাপের অভিনেতা, মুখশ্রী দিয়ে পরিচিত এবং ব্যতিক্রমী কয়েকজনকে বাদ দিলে অধিকাংশই প্রার্থী হতে অথবা কোনও পদ অভিলাষে মুখর। একজন তো বেশ জোর গলায় জানালেন যে তিনি সমাজকে বুঝতে বুঝতে ও যুঝতে যুঝতে প্রথমে সিপিএম, তারপর তৃণমূল এবং অবশেষে বিজেপি'তে এসে ভিড়েছেন। এবং ভেড়ার সময়গুলি, খেয়াল করে দেখুন, বেশ মোক্ষম; ঠিক পালাবদলের সন্ধিক্ষণে যখন একটা ধারণা দেওয়ার চেষ্টা চলেছে যে এবারে আরেকটি পরিবর্তন আসতে চলেছে। সে তেনারা তাঁদের মতো হিসেব-নিকেশ বুঝে যা করার করুন, কিন্তু প্রশ্নটা হল, কী এমন সময় বা আবহ এল যে এইভাবে কাতারে কাতারে অভিনেতারা রাজনৈতিক দলগুলির প্রতি এতটা অনুরক্ত হয়ে পড়লেন?

এক সময় শোনা যেত, গ্রামের মানুষেরা নাকি ‘মাছভাত’এর লোভে ব্রিগেডের সভায় ভিড় জমাতেন। এও জানি, এ পোড়া বাংলায় কোনও বাঙালি কাউকে একবেলা দু’ মুঠো খাওয়াতে কখনও কার্পণ্য করেনি। পেটে টান বুঝি, কিন্তু নাড়ি ধরে টান? গরিবের দু’ মুঠো মাছভাত খাওয়ার বাসনায় ‘লোভ’ দেখলে, ‘নীচতা’ দেখলে, কিন্তু কতটা লোভে নাড়ির টান উগড়ে হঠাৎ রামভক্ত হয়ে পড়া, তা দেখলে কী?

এ এখন দিনের আলোর মতো পরিষ্কার যে আজকের দিনে ক্ষমতাধারী পার্টি করা বা কাউন্সিলর, এমএলএ-এমপি হওয়ার অর্থ এমন এক বিপুল ও অকল্পনীয় রোজগার এবং সামাজিক-রাজনৈতিক প্রতিপত্তি অর্জন যা নিজ পেশা থেকে (দু-একজন কৃতী বাদে) সকলে করতে সক্ষম হন না। তাই ইদানীং রাজনৈতিকে দলে ভেড়া ও প্রার্থী হওয়ার এত হিড়িক। কিন্তু আশ্চর্যের হলেও ঘটনা হল, রাজনৈতিক দলগুলির কাছে অভিনয় জগতের মানুষেরা একটা অতি-বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছেন। কেন? সম্ভবত, তাদের গ্ল্যামার, মুখশ্রী ও কারও কারও ক্ষেত্রে কোনও বিশেষ চরিত্রে অভিনয়ের গুণে একটা আলাদা কদর গড়ে ওঠার কারণে। মনে করা হচ্ছে, এই বিশেষ বৈশিষ্ট্য, গুণাবলী ও সুশ্রী মুখায়ব হেতু ভোটের গুনতিতে উর্ধ্বগতি আসবে।

অর্থাৎ, ধরে নেওয়া হচ্ছে, ভোট পাওয়া-না পাওয়া হল এক মায়া-মোহের খেলা। কতটা ইল্যুশন তৈরি করা গেল অথবা কতটা স্বপ্নসম অনুষঙ্গে ধরে ফেলা গেল ভোটারের মন – খেলাটা যেন সেইখানে। কিন্তু বলি কী, যদি সেভাবে কেউ ভেবে থাকেন, তাহলে গুড়ে বালি। যদিচ, আজকের রাজনৈতিক-অর্থনীতির পরিধিতে দলগুলির তরফে কিছু জনকল্যাণমূলক ও সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প দেওয়া ছাড়া বিশেষ কিছু করার নেই (কেন, সে আলোচনায় পরে আসব); বরং, বহু কিছুকে (গণতান্ত্রিক অধিকার, অর্থনৈতিক সুরক্ষা, সামাজিক-সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা) আইনি বা বেআইনি উপায়ে বাতিল করার অভিসন্ধি ও উদ্যোগ রয়েছে, এমতাবস্থায়, রাজনীতির ময়দানকে চটকদার, চমকদার বা ‘রহস্য-রোমাঞ্চে’ ভরপুর করে না তোলা ছাড়া তাদের কাছে কি আর কোনও রাস্তা আছে? কিন্তু এখানেই কিছুটা গোল বেঁধেছে। সাধারণ, শ্রমজীবী মানুষ (যারা ভোটারও বটে) কিন্তু এই রঙ্গ-তামাসা বোঝেন। তাঁদের একটা ভোট-প্রতিক্রিয়া বেশ সজোরে ও সবলে আছে। ২০১৯’এর লোকসভা নির্বাচনে এ রাজ্যে কিন্তু তেমন প্রতিক্রিয়ার আঁচ শাসক নেতারা পেয়েছেন। এসব কেউ কেউ বুঝছেন, কেউ বা হয়তো এখনও নয়! হঠাৎ রাজনৈতিক দলে যোগ দেওয়া অভিনেতাদের দিয়ে শেষ পর্যন্ত কতটা কী হাসিল হবে সে কথাটি কিন্তু আমজনতা সম্ভবত ভালই জানেন।

দুই) প্রশ্ন উঠেছে, যে দলের প্রার্থীকে ভোট দিলাম, তিনি জেতার পর সে দলে থাকবেন তো? ধরা যাক, চরম বিভাজনকারী দল বিজেপিকে হারাতে ভোটাররা তাদের প্রতিপক্ষকে বেশ জোরালো ভাবে ভোট দিলেন, শুধু ভোট দিলেন না, অন্যান্য ভোটারদের মধ্যে প্রচারও করলেন এবং বেশ কিছু ভোট সংগ্রহও করে দিলেন। কিন্তু যিনি জিতলেন, দেখা গেল তিনি ভোটের পর সদলবলে বিজেপি’তেই যোগ দিলেন। তাহলে হাতে কি পেন্সিলটুকুও থাকবে?

দল বদল যখন ছেলেখেলার মতো হয়ে উঠেছে; দলগুলির এক বড় অংশের নেতারা মনে করছেন, এ দল থেকে সে দলে যাওয়া-আসা দুপুরে লাঞ্চ, রাতে ডিনার করার মতো, তখন ভোটাররাই বা তেমন করে ভাবতে গররাজি থাকবেন কেন? অর্থাৎ, দলগুলির মধ্যে কার্যত কোনও ফারাক নেই- যে কারণে কোনও ব্যক্তির দল বদলে কোনও মতাদর্শগত বা রাজনৈতিক সমস্যা হচ্ছে না। এমনকি বামপন্থী দলগুলি থেকেও দল বদল এত আকছার হচ্ছে যে আজ আর তাকে নিতান্তই দু-একটি ব্যতিক্রম মাত্র, বলা যাচ্ছে না।

অতএব, স্পষ্ট করে নিন যে, রাজনৈতিক-অর্থনীতির পরিসরটা এতটাই একীভূত ও নির্দিষ্ট হয়ে উঠেছে, সেখানে এই রাজনৈতিক দলগুলির আর বিশেষ কিছু করার নেই; তা চলেছে এমন এক আপন আত্মহারা গতিতে, তখন খুব স্বাভাবিক, তাদের তরফে একে অন্যের থেকে আলাদা করে নতুন কিছু আর বলার থাকছে না। তাই দল বদলও হয়ে গেছে ডাল-ভাত- যাদের চক্ষুলজ্জা একেবারেই নেই তারা অনায়াসে কাজটি করে ফেলতে পারছেন। অন্যরা রয়ে সয়ে।

তিন) ইতিমধ্যে ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ) নামে একটি নতুন দলের জন্ম হয়েছে এবং তারা বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের সঙ্গে মিলে একটি জোট (সংযুক্ত মোর্চা) তৈরি করেছে। এই দলের আবির্ভাবে এবং বিশেষত এদের মুখ্য কাণ্ডারী ৩৪ বছর বয়সী আব্বাস সিদ্দিকি’কে নিয়ে রীতিমতো সোরগোল শুরু হয়ে গিয়েছে। কেউ বলছেন এরা মৌলবাদী শক্তি- এ কথা বলতে গিয়ে আব্বাস সিদ্দিকি’র কিছু পুরনো ভিডিও-বক্তৃতা তাঁরা সামনে আনছেন। অপর পক্ষ বলছেন, ওনার কিছু বেফাঁস কথাবার্তা আছে বটে, কিন্তু সে সব পুরনো (আর এমন কথা তো বহু রাজনৈতিক নেতারাও বলে থাকেন), নতুন দল তৈরি করার পর তিনি অনেক পরিণত ও সতর্ক এবং তেমন কোনও বিপজ্জনক কথাবার্তা আর শোনা যায়নি। উপরন্তু, যে ভাবে আইএসএফ’কে মুসলমান মৌলবাদীদের একটি দল হিসেবে দেখানো হচ্ছে, তাও যথার্থ নয়। কারণ, এ দল ঘোষিত ভাবে নিপীড়িত দলিত, আদিবাসী ও মুসলমানদের মিলিত একটি দল যাদের অন্যতম মুখ্য উদ্দেশ্য- গরিব মানুষের হক তাঁরা নিজেরাই বুঝে নিক।

আইএসএফ’এর উত্থান নিঃসন্দেহে এ রাজ্যে একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। এই দলের গড়ন ও কার্যাবলীতে হিন্দু উচ্চবর্ণের আধিপত্যকামী মানসিকতা জোর ধাক্কা খেয়েছে বলে মালুম হচ্ছে। এই প্রথম এমন একটি দল এ রাজ্যে তৈরি হয়ে মূলধারার রাজনীতিতে প্রবেশ পেল যাদের সভাপতি একজন আদিবাসী (শিমুল সোরেন) এবং সম্পাদক একজন মুসলমান (নৌসাদ সিদ্দিকি)। স্বাধীনতার ৭৩ বছর ধরে মূলধারার রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃত্বে আমরা বরাবর উচ্চবর্ণ হিন্দুদের একচেটিয়া দখলদারি ও আধিপত্য দেখে এসেছি। তা বামপন্থী দলগুলির ক্ষেত্রেও সমভাবে প্রযোজ্য। যেন, দলিত, আদিবাসী, মুসলমানেরা ততটা শিক্ষিত নন, ততটা পারদর্শী নন, অতশত বুঝবেন না– এমন একটি সর্বজনীন ধারণাকে বহমান রাখা হয়েছে। তার সঙ্গে এই আতঙ্কও প্রসারিত হয়েছে, উচ্চবর্ণ হিন্দুদের হাতে যদি নেতৃত্ব না থাকে তাহলে ‘ঘোর কলি’! আইএসএফ’এর উত্থান এই প্রবল বর্ণাশ্রম-পীড়িত হিন্দুবাদী মানসিকতাকে সজোরে আঘাত করেছে।

ভবিষ্যতে এই নতুন রাজনীতি কোন খাতে, কীভাবে বইবে তা দেখার আছে। কিন্তু এটা মনে করা অমূলক হবে না যে, মূলত কৃষি ব্যবস্থা থেকে উত্থিত ও নিপীড়িত শ্রমজীবী মানুষের অংশগ্রহণে এই নতুন দলের চলমানতায় এ রাজ্যের অর্থনৈতিক বিকাশে কতকগুলি নতুন ধারণার উদয় হতে পারে যা শ্রমদানকারীদের দিক থেকে সদর্থক। এর পাশাপাশি, এক নতুন ধারার সামাজিক-সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনেরও সূত্রপাত হতে পারে যা এ তাবৎকালের বিভাজনকারী রাজনীতির বিপ্রতীপে একটা সবল ধারা হয়ে উঠতে পারে।

চার) শেষে এসে এই কথাটিই বলার যে (উপরে যার ইঙ্গিত রেখেছি), এ দেশ ও রাজ্য জুড়ে এমন এক এক-মাত্রিক রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক ব্যবস্থার উদয় হয়ে চলেছে যার রাশ রাজনৈতিক নেতাদের হাতে সে ভাবে আর নেই। এ নিয়ে অন্যত্র আমি বিশদে আলোচনা করেছি। ভবিষ্যতেও করব। এই ছোট পরিসরে এইটুকুই বলার যে, রাজনৈতিক দলগুলির কাছে এখন দুটি মাত্রই সর্বজনীন আয়ুধ আছে যা দিয়ে তারা নিজেদের গ্রহণযোগ্যতাকে সাব্যস্ত করতে পারে: ১) জনকল্যাণমূলক কর্মসূচি (মুখে বলা আর কাজে করার মধ্যে ফারাক রেখেও) ও ২) রাজনৈতিক বাগাড়ম্বরতা (তা উগ্র রক্ষণশীল কর্মধারা থেকে উদারবাদী কার্যসূচি অথবা যা খুশি হতে পারে)। এই দুই আয়োজনের বাইরে তাদের কারও হাতেই নতুন অর্থনৈতিক নীতিসমূহ গড়ে তোলার কোনও উপায় নেই। যেমন, তারা মনে করলেই কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারবে না। তাদের ইচ্ছে-অনিচ্ছের ওপর ভর করে বহু-চর্বিত তথাকথিত শিল্পায়নের ঘোড়াও ছুটবে না। কারণ, রাষ্ট্র বা শাসন-পরিচালনার গোটা অবয়বটাই আজ সাবেকি ভূ-সামরিক-রাজনৈতিক বলয় থেকে ক্রমেই চলে আসছে ভার্চুয়াল-তথ্যভিত্তিক-প্রযুক্তিগত বলয়ে। এর নিয়ন্ত্রণ পুরনো রাষ্ট্রকর্তাদের হাতে আর নেই, তা প্রায়-সম্পূর্ণতই এখন কতিপয় দৈত্যাকার কর্পোরেটদের হাতে। সাবেকি রাষ্ট্রকে মুছে দিয়ে জন্ম নিচ্ছে এক নতুন রাষ্ট্র। এই দুই রাষ্ট্রের মধ্যে, অতএব, আপাতত এক দ্বন্দ্ব-সমাস বিরাজমান। কিন্তু নিকট ভবিষ্যতে সে দ্বন্দ্বের অবসান হবে যখন আরও উন্নত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় আসীন হয়ে নতুন ভার্চুয়াল রাষ্ট্র তার পূর্ণাঙ্গ দখলদারিকে সম্পন্ন করবে।

তবে এই মুহূর্তে এ দেশের আধা-সাবেকি রাষ্ট্রের শাসনক্ষমতায় অধিষ্ঠিত যে দলটি উগ্র রক্ষণশীল ধর্মীয়-জাতীয়তাবাদের জাঁতাকলে এক সর্বগ্রাসী বিভেদকামী ও অকল্যাণমূলক যাত্রাপথে রয়েছে, তার রথকে পশ্চিমবঙ্গে থামাতে হবে। এ কথা অনস্বীকার্য। কিন্তু সে লড়াই অত সহজ নয়। ‘বিজেপিকে কোনও ভোট নয়’ বলে যারা ভোট নিলেন তারা যেন ভোটে জিতে বিজেপি না হয়ে যায়, সেই বিপদটিকেও মাথায় রাখা অতীব জরুরি।

    

3 comments:

  1. অতীব সত্য পর্যবেক্ষণ। সাবেকি বা অধরা মাধুরী মার্কা জনকল্যাণ মূলক রাষ্ট্রের অস্তিত্ব যখন বিপন্ন, সাধারণ জনগণের এই বোধোদয় কি হয়েছে? জনগনের এই বোধদয়ের জন্য ত আরও অপেক্ষা করতে হবে। যে সব রাজনীতির দূষণের কথা বলেছেন,এসব ত মধ্যবিত্তের , সাধারণ কতটা বুঝল বা বুঝছে সেটাই দেখার।

    ReplyDelete
  2. কর্ম সংস্থান সম্পর্কে ভালো বলেছেন। Neoliberal economy পরিত্যাগ না করা অবধি কর্ম সংস্থান সম্ভব নয়। আর কর্মহীনতা ও বন্ধা ইকোনমি জন্ম দিচ্ছে ফ্যাসিবাদ।

    ReplyDelete
  3. বিজেপি কে ভোট নয় বলে ভোট নিয়ে বিজেপি হয়ে যাওয়ার শংকা অনেকের লেখায় পড়ছি।কিন্তু করবেন টা কি। ত্রিপুরায় বিরোধী দল কংগ্রেস তৃণমুল বিজেপি তে গেল মধ্যপ্রদেশে শাসক কংগ্রেসের বাগীরা। আমার মনে হয় এই প্রক্রিয়ায় একটি Anti fascist Popular front গড়ে ওঠার সম্ভাবনা আছে। দলত্যগ বিরোধী আক্রমণাত্বক প্রচার থাকলে ক্ষমতায় আসা তৃনমুল কে সহজে ভাংগা যাবে বলে মনে হয় না। এ বিষয়ে অনিশ্চয়তা থাকলে বামেদের সমর্থন করা ভাল, অন্তত মানসিক স্বস্তি থাকে।

    ReplyDelete