Saturday 5 June 2021

গিগ অর্থনীতিই ভবিষ্যৎ

সংকুচিত হচ্ছে মধ্যবিত্ত শ্রেণি

অনিন্দ্য ভট্টাচার্য

 

সারা বিশ্বেই মধ্যবিত্ত শ্রেণি সংকুচিত হচ্ছে। আমাদের দেশেও। করোনা পরিস্থিতি এই সংকোচকে আরও ত্বরান্বিত করেছে। পিউ রিসার্চের একটি প্রতিবেদন বলছে, ২০২০ সালে ভারতে মধ্যশ্রেণি (দৈনিক আয় ১০.১ থেকে ২০ ডলার) থেকে ৩.২ কোটি মানুষ ছিটকে নিচে নেমে গেছে। একই সময়ে দারিদ্র্য হার বেড়ে হয়েছে ৯.৭ শতাংশ এবং দরিদ্র মানুষের (দৈনিক আয় ২ ডলারের কম) সংখ্যা আরও ৭.৫ কোটি বৃদ্ধি পেয়েছে। এই বৃদ্ধি বিশ্বে মোট দারিদ্র্য বৃদ্ধির ৬০ শতাংশ। এটা ছিল গত বছরে কোভিডের প্রথম তরঙ্গের ধাক্কা। দ্বিতীয় তরঙ্গে এই অবস্থা আরও করুণ হয়েছে।

সেন্টার ফর মনিটারিং ইন্ডিয়ান ইকনমি (সিএমআইই)’এর তরফে ইতিমধ্যেই জানানো হয়েছে, ভারতে চাকুরিরত ৮.৫ কোটি মানুষের মধ্যে গত এপ্রিল-মে মাসেই ১.২ কোটি মানুষ কাজ হারিয়েছেন। এছাড়াও ৯.১ কোটি ছোট ব্যবসায়ী ও শ্রমজীবী মানুষ এবং ১.৮ কোটি স্বউদ্যোগী মানুষের কাজ গেছে। গত ৩ জুন দেশে বেকারত্বের হার ১২.৪ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে (শহরে ১৫.১ ও গ্রামে ১১.২ শতাংশ)। মধ্য ও নিম্নমধ্য শ্রেণির এই আর্থিক অবনমনে সামগ্রিক ভাবে চাহিদার ওপর প্রভাব পড়েছে এবং গত ৩০ বছর ধরে যে ভোগবাদী অর্থনীতির বয়ান নির্মিত হচ্ছিল তাতে সজোরে ধাক্কা লেগেছে। এই অবস্থা ভোগ্যবস্তু উৎপাদনকারী শিল্পের অস্তিত্বকেই চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে। মোটা দাগে দেখলে, ভারতীয় অর্থনীতিতে মন্দার অগ্রভাগকে আমরা প্রত্যক্ষ করছি এবং ভবিষ্যতে তা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা বলা মুশকিল। রিজার্ভ ব্যাংকের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস জানিয়েছেন যে, আগামী দিনগুলিতে আমরা পড়তি বৃদ্ধির হার লক্ষ্য করতে চলেছি যা এই আর্থিক বছরের শেষার্ধে (জানু-মার্চ ২০২২) গিয়ে দাঁড়াবে ৬.৬ শতাংশে।

আরও উল্লেখ্য, পিউ রিসার্চের তথ্য দেখাচ্ছে, দরিদ্র মানুষের সংখ্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই তথ্যরাশির গুরুত্বপূর্ণ দিকটি হল, নিম্নমধ্য শ্রেণির (দৈনিক আয় ২.০১ থেকে ১০ ডলার) অন্তর্ভুক্ত মানুষের সংখ্যায় খুব একটা বেশি হেরফের হয়নি, বরং আপেক্ষিক বিচারে (এই বর্গের জনসংখ্যা বিশাল) তা সামান্য কমেছে (৩.৫ কোটি)। কারণ, প্যানডেমিকের আগে (জানুয়ারি ২০২০) নিম্নমধ্য শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত মানুষের সংখ্যা ছিল ১১৯.৭ কোটি যা নেমে এসে দাঁড়ায় ১১৬.২ কোটিতে (প্রথম তরঙ্গের পরে)। অর্থাৎ, মধ্যশ্রেণির যে ৩.২ কোটি মানুষ নিচে নেমে গেলেন (৯.৯ থেকে ৬.৬ কোটি) তাঁরা গিয়ে দরিদ্রদের দল ভারী করেছেন। শুধু তাঁরাই নন, উচ্চমধ্য শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত মানুষের সংখ্যাও ৬০ লক্ষ কমে গেছে। অতএব, এমন হওয়াটাই স্বাভাবিক যে, নিম্নমধ্য শ্রেণি থেকেও বহু মানুষ দরিদ্রদের দল ভারী করেছেন কিন্তু মধ্য ও উচ্চমধ্য শ্রেণি থেকে আবার বহু মানুষ নিম্নমধ্য শ্রেণিতে দলভুক্ত হয়ে সেই শ্রেণির কমবেশি ভারসাম্য আপাতত বজায় রেখেছেন।

এই সামগ্রিক তথ্য বিন্যাস থেকে একটাই সুত্র খুব পরিষ্কার ভাবে বেরিয়ে আসে যে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বিপুল ভাবে বেড়ে যাওয়ায় (৫.৯ কোটি থেকে ১৩.৪ কোটি) দেশের শ্রমজীবী মানুষের গড় আয়ের এক সামগ্রিক অবনমন হয়েছে। এর তাৎপর্য দুটি: এক) কাজের ক্ষেত্রে মজুরি বা আয় কমে যাওয়া এবং দুই) কাজের ক্ষেত্রটিই বদলে যাওয়া। উপরের তথ্য থেকে স্পষ্টতই বোঝা গেল যে, শ্রমজীবী মানুষের গড় আয় কমে গেছে, কিন্তু কাজের ক্ষেত্র বদলে যাওয়ার অর্থ কী? বহু মানুষের চাকরি চলে গেছে, সেও এক বাস্তবতা। কিন্তু কাজের নতুন ক্ষেত্র কি তৈরি হয়েছে? না হলে কেন বলা হচ্ছে কাজের ক্ষেত্রটিই বদলে গেছে?

এই তথ্য এখনও সংগৃহীত হয়নি যে, যত লোকের চাকরি চলে গেছে তাঁরা আবার সকলে কাজ পেয়েছেন কিনা। বহু ক্ষেত্রেই জানি, তাঁরা কোনও কাজ পাননি। অনেকের বাজারে প্রচুর দেনা হয়ে গেছে, গরিব মানুষের অনেকেই নানাবিধ ছোটখাটো কাজকর্ম করে নিজেদের অবস্থাটাকে ঠেকা দেওয়ার চেষ্টা করছেন, কেউ কেউ সরকারি ত্রাণ ও রিলিফের ওপর নির্ভর করে কোনওরকমে নিজেদের রক্ষা করছেন। হতাশা ও বিপন্নতা বাড়ছে, অবসাদ একেকটা পরিবারকে গ্রাস করছে, অপরাধপ্রবণতা, মানসিক বৈকল্য ও হিংসার প্রকোপ সমাজকে জড়িয়ে ধরছে। কিন্তু এর বিপ্রতীপে অন্য একটা ছবিও পরিস্ফুটমান যা অনেকের সাবেকি চোখে ধরা পড়ছে না এখনও; বা কিছুটা ধরা পড়লেও আলোচনার পরিসরে এনে ঠিকঠাক ফেলতে পারছেন না বোঝাপড়ার পিছুটানের জন্য। তা হল, গিগ অর্থনীতির দ্রুতলয়ে প্রসার।

পুঁজিবাদের চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের আবহে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অভিঘাতে গত চার-পাঁচ বছরে বিশ্ব জুড়ে ও আমাদের দেশেও গিগ অর্থনীতির যে প্রসারপর্ব শুরু হয়েছিল তা প্যানডেমিকের কবলে পড়ে আরও দ্রুতগতি সম্পন্ন হয়েছে। এক বিশাল সংখ্যক গিগ শ্রমিকের অস্তিত্ব ও ক্রমপ্রসারমানতা এখন ঘোরতর বাস্তব। রাজনৈতিক অর্থনীতির বয়ান আমূল বদলে যাচ্ছে। এই প্রবণতাকে বুঝতে না পেরে বহু রাজনীতি ও অর্থনীতির পণ্ডিত, মায় রাজনৈতিক দল ও তাদের নেতারা, চোখে সর্ষেফুল দেখছেন। ‘কোথা হইতে কী হইয়া’ যাইতেছে বুঝতে না পেরে তারা ঘটনার পিছু পিছু যন্ত্রের মতো ছুটে হোঁচট খেয়ে পড়ছেন। ‘শিল্প শিল্প’ ও ‘চাকরি চাকরি’ করে যারা নিত্য দাপাদাপি করেন, তাঁরাও ট্যারা চোখে দেখছেন, (আরে), ‘কাজ আছে চাকরি নেই’। চারপাশে অফুরন্ত কাজ, কিন্তু চাকরি নেই। কতিপয় কর্পোরেট চালিত এই ভুবনে কাজের যে নেটওয়ার্ক-সিরিজ, সেখানে কাজের উদয় ও লয়ের কোনও নির্দিষ্ট আঙ্গিক নেই। বেকার ছেলেমেয়েরা অথবা কর্মচ্যুত চাকরিজীবীরা- যারা বুঝতে পারছেন, উদিত কাজগুলিকে ধরে নিচ্ছেন। সে কাজে মজুরি কম, উদয়াস্ত খাটুনি, স্থায়িত্ব নেই, সামাজিক সুরক্ষারও কোনও বালাই নেই (এক কথায় 'চাকরি নেই'), কিন্তু সে ছাড়া আপাতত উপায়ও নেই। উপায়ন্তরহীন মানুষ প্রবেশ করে গেছেন গিগ অর্থনীতির বলয়ে যেখানে কাজের উদয় ও বিদায় চোখের পলকের মতো ক্ষণস্থায়ী, কিন্তু সদাই হাজির পরিবর্তনশীল অফুরন্ত কাজের মেলা। অবশ্য, এই মুহূর্তের বৈশিষ্ট্যে, প্যানডেমিকে ঘরবন্দী মানুষের কাছে সে কাজ হয়ে উঠছে আরও বেশি বেশি ভার্চুয়াল। সাদা-কলারধারী বাবুদের পরিষেবা-ভিত্তিক সফিস্টিকেটেড কাজ থেকে শুরু করে নীল-কলারধারী শ্রমজীবী মানুষের ‘মামুলি’ কাজগুলিও এখন গিগ অর্থনীতির অংশভাক। বাড়িতে খাবার থেকে নানাবিধ পণ্য ডেলিভারি অথবা গেরস্তের কল সারাই থেকে ইলেক্ট্রিক ফিটিং, নয়তো গ্রাহকের কাছে ব্যাঙ্ক বা বীমা পরিষেবার সহায়তা পৌঁছে দেওয়া কিংবা কন্টেন্ট রাইটিং, নিদেনপক্ষে থ্রি-ডি প্রযুক্তিতে উৎপাদন ও এমন আরও বিবিধ, ভৌগোলিক সীমার কাঁটাতার পেরিয়ে, অযূত কাজের সম্ভারে সারা বিশ্ব আজ রোমাঞ্চিত।

বস্টন কনসালটিং গ্রুপ (বিসিজি) জানাচ্ছে, আমাদের দেশে আগামী বছরগুলিতে অ-কৃষি ক্ষেত্রে ৯ কোটি গিগ কাজ তৈরি হয়ে যাবে। প্যানডেমিকের দরুণ বর্তমানের বহু কাজ গিগ কাজে রূপান্তরিত হবে। হচ্ছেও তাই। অনুমান, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে সাদা-কলারওয়ালা পরিষেবা-ভিত্তিক কাজের জগতে ৫০ থেকে ৭৬ শতাংশ কর্মীরা হবেন গিগ কর্মী। অর্থাৎ, এরা কাজ করবেন চুক্তির ভিত্তিতে, নির্দিষ্ট সময়ে জন্য এবং চাহিদা মোতাবেক। এক জায়গায় কাজ ফুরিয়ে গেলে পরে আবার অন্যত্র একইভাবে অন্য কাজের সঙ্গে যুক্ত হবেন। ‘চাকরি’ বলে যে শব্দটিতে আমরা এতদিন অভ্যস্ত হয়ে উঠেছি ও স্বস্তি বোধ করেছি, সে শব্দের বৃহৎ কোনও অস্তিত্বই আর আগামী দিনে থাকবে না। আমরা প্রবেশ করছি ‘কাজ’এর এমন এক নতুন জগতে যেখানে ‘কাজ’ বলতে বোঝাবে স্বল্প সময়ের জন্য চুক্তিভিত্তিক এক অযূত পরিসর- এক খোপ থেকে আরেক খোপে যাতায়াত করেই মানুষের জীবনকাল অতিবাহিত হবে। সেই গতায়াতে বিপদ আছে, কর্মহীনতা আছে, মজুরি কমে যাওয়া আছে, অন্যান্য আরও নানাবিধ অনিশ্চয়তা আছে, আবার হয়তো লাভালাভও আছে। সে যাই হোক, তবে এটাই হয়ে উঠছে আজ ও আগামীকল্যের কাজ ও যাপনের পরিসর। উচ্চমধ্য শ্রেণি থেকে গরিব- সমস্ত শ্রেণির মানুষের জন্যই এই হতে চলেছে অমোঘ নিয়তি।

আর সেই সুবাদে আমূল পালটে যেতে বসেছে রাজনীতি ও রাষ্ট্রের চালচলন। রাজনীতির জগতে অতি দক্ষিণপন্থীরা যতই জাতি-ধর্ম-বর্ণ-জাতপাত-লিঙ্গ ইত্যাকার ধোঁয়া তুলে বিভাজনের রাজনীতির চেষ্টা করে যাক, আর সে আতঙ্কে সাবেকি বামপন্থীরাও এইসব ফাঁদে আটকে পড়ুক না কেন, গিগ অর্থনীতির নব উদয় যে নতুন রাজনৈতিক-অর্থনীতির আঙ্গিক নির্মাণ করছে, সেখানে মানুষের প্রাথমিক পরিচয় হবে শ্রমজীবী মানুষ হিসেবেই। কারণ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অনুশাসিত ভুবনে ব্যক্তি শ্রমের আধুনিকতর দক্ষতা ও প্রজ্ঞা অর্জনের ওপরেই ব্যক্তির কাজের সম্ভাবনা তৈরি হবে, আর সে জন্য তাকে হন্যে হয়ে বারবার নিজেকে পুনর্নির্মাণ করতে হবে। আর এই স্পর্শকাতর, ভঙ্গুর সামাজিক-অর্থনৈতিক অবয়বটিকে রক্ষা দিতে রাষ্ট্রকে সামাজিক সুরক্ষার নিদান নিয়ে হাজির হতে হবে। যেমন, ইউনিভার্সাল বেসিক ইনকাম ও বিনামূল্যে স্বাস্থ্য- এই দুটি হবে রাষ্ট্রের তরফে এমন এক রক্ষাকবচ যে, কোনও গিগ শ্রমিক যখন কর্মহীন বসে থাকবেন তখন তাঁর ন্যূনতম অন্নাভাব যেন না হয়। কারণ, সদা-সতর্ক রাষ্ট্র খেয়ালে রেখেছে, কাজের জগতের এই চূড়ান্ত অনিশ্চয়তা যেন সমাজের বুকে বিদ্রোহের কারণ না হয়ে উঠতে পারে। প্যারি কমিউনের সার্ধ শতবর্ষে এ কথা তাদের আরও বেশি বেশি করে মনে পড়বে।  

যদিও এইসব কঠোর বাস্তবতা থেকে আমরা এই মুহূর্তে এখনও বেশ কিছুটা দূরে। কারণ, চলতি প্যানডেমিকের অবসান না হলে স্বাভাবিক চলমানতার ছবিটা স্পষ্ট হবে না। কিন্তু অতি-দক্ষিণপন্থী ভাবধারা মুক্ত রাজনৈতিক-অর্থনীতি এবং রাষ্ট্র বা সরকার যে সে পথেই এগোতে চাইছে তা ক্রমশ স্পষ্ট। যারা রাজনীতিতে জনপ্রিয়, উদারবাদী ও প্রাসঙ্গিক থাকতে চাইছেন, তাঁরা চেষ্টা করছেন এই পরিবর্তিত বলয়টিকে অনুধাবন করতে এবং নব উদিত অনিশ্চিত ও বিপন্ন শ্রমজীবী মানুষের কাছে নতুন ধরনের ট্রেড ইউনিয়ন, সামাজিক সুরক্ষা ও মুক্ত রাজনীতির বার্তা বয়ে নিয়ে যেতে। কৃষি ক্ষেত্রের বাইরে এই যে বিপুল শ্রমজীবী জনতা, যাদের এক বড় অংশ এক নতুন আঙ্গিকে আজ উদিত হচ্ছে, তাদের সম্যক ভাবে বোঝার ওপরেই রাজনীতির দলগুলির প্রাসঙ্গিকতা নির্ভর করছে। পুঁজিবাদের এই চতুর্থ বিপ্লব যা শ্রমজীবী মানুষকে আরও বেশি বিচ্ছিন্ন ও পদানত যন্ত্রে পরিণত করবে, তার থেকে মুক্তির উপায় কীভাবে, তা অন্বেষণ করে ওঠা আরও বড় চ্যালেঞ্জ।   

 

7 comments:

  1. বড্ড স্কেচি, একটু না ফেনালে মাথার ওপর দিয়ে যাচ্ছে। বড় করে লিখলে ভাল হয়।

    ReplyDelete
  2. Wonderful write up. Very informative and mind blowing.

    ReplyDelete
  3. কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) শ্রমের প্রয়োজনই ঘুচিয়ে দেবে। AI বিশ্ব শাসন করবে এবং মুষ্টিমেয় ধনকুবের AI কে নিয়ন্ত্রন করবে। সামান্য কিছু AI engineer ছাড়া বাকি মানুষ অর্থনীতির বাইরে চলে যাবে। এসব 10/20 বছরের মধ্যেই ঘটে যাবে। মানুষ মুক্তির পথ খোঁজার জন্য অনেক দেরি করে ফেলেছে।

    ReplyDelete
  4. Informative.
    Probably we have already entree in the new economy structure.

    ReplyDelete
  5. চুক্তিভিত্তিক ক্ষণস্থায়ী কাজের সুযোগ বাড়ছে। আজকের শিশুরা ভূমিষ্ঠ হচ্ছে 'পরিশ্রম বেশী রোজগার কম'-এর পৃথিবীতে। স্বাভাবিকভাবেই বাজারে চাহিদাও কমছে, যা অর্থনৈতিক ভারসাম্যের (ভোগবাদী) উপর আগামী কিছুটা সময় অবশ্যই চাপ সৃষ্টি করবে। রাতারাতি চিড়েচ্যাপ্টা না হলেও আর্থ-সামাজিক বৈষম্য প্রকট হতে বাধ্য, হচ্ছেও তাই। গিগ অর্থনীতি বর্তমানের চলমান প্রাকৃতিক বিপর্যয় এবং চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের ক্ষেত্রে কতটা নির্ণায়ক ভূমিকা নেবে তা এখনই নিশ্চিত না হলেও যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করবে, তাতে একশোয় একশো দিয়ে দেওয়াই যায়। এর সাথে অনলাইন প্রযুক্তি ও সাম্প্রতিকতম বিস্ফোরণ, 'কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা',যেন 'সব শেষ হয়ে গেল'র আগুনে ঘৃতাহুতি। এইসবকিছু একসাথে হুড়মুড় করে এসে পড়ায় রাষ্ট্রশক্তিও ধন্দে রয়েছে। নানান পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। আশু সমাধান না পেলেও স্যান্টাক্লজের মত জনগণের পকেটে রাজামশাই টাকা ভরে দিতে ব্যস্ত। অনিন্দ্যদার সাবলীল ভাষা এবং সঠিক শব্দ চয়নে আগামী এইসব দিনের অনিশ্চয়তার ছবিটা পরিষ্কার। তবে ক্রমানুযায়ী লেখকের কলমে আরো বিশ্লেষণ আমরা পাবো এটা কিন্তু নিশ্চিত।

    ReplyDelete
  6. সুইগির কিছু ডেলিভারি বয়ের সাথে কথা বলে দেখেছি এঁদের কিন্তু সংগঠিত হওয়ার কোনো তাগিদ নেই। এঁরা মূলত আরো বেশি ঘন্টা কাজ করে বা সপ্তাহের ছুটি না নিয়ে কীভাবে নিজেদের আয় আরো বাড়ানো যায়। pf নেই, কাজের নিরাপত্তা নেই এসব শুনলে এঁরা খুব একটা পাত্তা দেয় না। এঁরা নিশ্চিত এদের কাজ যাবে না, কারণ চুরি না করলে বা ক্রমাগত উইকেন্ডে ছুটি না করলে কাউকে তাড়ানো হয় না। অবশ্য আমার অভিজ্ঞতা সীমিত। কিন্তু ঘটনা হচ্ছে এঁদের সংগঠিত করা খুব কঠিন।

    ReplyDelete
  7. চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ নতুন আইনে খুব সুষ্পষ্টভাবে বলা হয়েছে। এতে লাভ হবে পূজিবাদি সম্প্রদায়ের, ক্ষতিগ্রস্ত হবে বেশি শ্রমজীবী মানুষ।

    ReplyDelete