Friday 19 November 2021

তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার!

আন্দোলনে আশার আলো

নীলকন্ঠ আচার্য



প্রায় এক বছর পূর্ণ হতে চলা ঐতিহাসিক কৃষক আন্দোলনের সামনে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ (১৯ নভেম্বর ২০২১) সকালে দূরদর্শনের মাধ্যমে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে নত মস্তকে ক্ষমা চেয়ে তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার করার কথা ঘোষণা করেন এবং আন্দোলনরত কৃষকদের ঘরে ফিরে যেতে অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, নভেম্বরের শেষে সংসদে শুরু হতে চলা শীতকালীন অধিবেশনে এই তিনটি আইন প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। তাঁর অভিমত, এই তিনটি কৃষি আইনের 'উপকারিতা' কৃষকদের একাংশকে(!) বোঝানোর জন্য যে তপস্যা(!) তিনি করেছিলেন তাতে তিনি ব্যর্থ হলেন। 

প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণা আচম্বিত মনে হলেও দীর্ঘ এক বছর ধরে আন্দোলনকারী কৃষকরা তাঁদের  আত্মবিশ্বাস ও নৈতিক দৃঢ়তায় এ কথা আগেই ব্যক্ত করেছিলেন যে এই সরকারকে তাঁদের  আন্দোলনের দাবি একদিন মানতেই হবে। আগ্রাসী ক্ষমতা ও দম্ভের উপর ভিত্তি করে ফ্যাসিস্ত মোদী-অমিত শাহের  আরএসএস-বিজেপি ও পেটোয়া কর্পোরেটদের অশুভ শক্তি ভেবেছিল এই কৃষক আন্দোলনের কাছে তারা কোনওভাবেই মাথা নোয়াবে না। কিন্তু, কার্যত সেটাই তাদের করতে হল। নিকট ভবিষ্যতে হয়তো আরও পিছু হটতে হতে পারে। বিপরীতে, সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার নেতৃবৃন্দ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন,          যতক্ষণ না পর্যন্ত তিন কৃষি আইন সংসদের অধিবেশনে আইনত ও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাহৃত হচ্ছে এবং ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের গ্যারান্টিকে আইনে পরিণত করা সহ বাকি দাবিগুলোর আনুষ্ঠানিক মীমাংসা হচ্ছে (প্রায় ৫০/৬০ হাজার কৃষকদের উপর থেকে মামলা তুলে নেওয়া, লখিমপুর খেরি'র ঘটনায় গৃহ রাজ্য মন্ত্রী অজয় মিশ্র'র বরখাস্ত ও গ্রেফতার সহ), ততক্ষণ পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে।

 

বস্তুত, এই এক বছরের মধ্যে কৃষক আন্দোলন দুর্বল হওয়ার বদলে দিন দিন ক্রমশই সবল হয়ে উঠেছে যা অবশেষে শাসকগোষ্ঠীর ভিত নাড়িয়ে দিয়েছে। বিশেষত উত্তরপ্রদেশের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে  বিজেপির পরাজয় প্রায় ঘটতে চলেছে এমনটা বুঝতে পেরেই‌ স্বঘোষিত ৫৬ ইঞ্চি বক্ষের অধিকারী প্রধানমন্ত্রীর বাধ্য হয়ে কৃষক আন্দোলনের কাছে এভাবে মাথা নোয়ানোর কথা ঘোষণা করা। আসন্ন নির্বাচনে শোচনীয় ফলাফলের আশঙ্কা থেকে পরিত্রাণ পেতে এবং সাংবিধানিক ক্ষমতা ধরে রাখতে (কারণ, ইউপি হাতছাড়া হলে ২০২৪'এর কেন্দ্রের ক্ষমতা লাভেও সংকট দেখা দেবে) এই ধরনের ঘোষণা ছাড়া এই মুহূর্তে বোধহয় আর অন্য কোনও উপায় এই ফ্যাসিস্ত  শক্তির হাতে নেই।

উল্লেখ্য, তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার, ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের (MSP) গ্যারান্টি, বিদ্যুৎ বিল প্রত্যাহার, কৃষি উপকরণের দাম কমানো, কৃষকদের উপর থেকে সমস্ত মামলা প্রত্যাহার ইত্যাদি দাবি সহ দিল্লির চারটি প্রান্তে দেশের বিভিন্ন রাজ্যগুলো থেকে আসা (প্রধানত পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশ এবং অন্যান্য রাজ্য- বিহার, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, ওড়িষা, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, তামিলনাড়ু, কর্নাটক, মহারাষ্ট্র প্রভৃতি) কৃষকদের যে ধর্ণা অবস্থান গত বছরের ২৬ নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছিল, তার এক বছর পূর্ণ হতে চলেছে। যদিও এই আন্দোলন প্রথমত শুরু হয় পাঞ্জাবে গত ২০২০'র অগস্ট থেকে। 

কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে এই আন্দোলন শুরু হওয়ার পিছনে যে কারণগুলো (শাসক গোষ্ঠী ও তার রাজনৈতিক স্বার্থসমূহ) দায়ী, তার আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতি সবার আড়ালে শুরু হয়ে যায় ২০১৭ সালে মোদী সরকারের 'মডেল ফার্মিং অ্যাক্ট' নামে একটি খসড়া তৈরির মাধ্যমে। এই খসড়াটি ২০১৯'এর জুলাইয়ে কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রী নরেন্দ্র তোমার সহ বিজেপি শাসিত সাতটি রাজ্যের (মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, হরিয়ানা, অরুণাচল প্রদেশ, গুজরাত, উত্তরপ্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশ) মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে গঠিত একটি কমিটিকে চূড়ান্ত করার জন্য দেওয়া হয়। এই কমিটি ২০২০'র জুন মাসে ঐ খসড়া ফার্মিং অ্যাক্টকে তিনটি কৃষি অর্ডিন্যান্সের রূপ দিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভায় পেশ করে যা পরবর্তীতে সংসদের বিরোধী পক্ষের আপত্তিকে গুরুত্ব না দিয়ে এবং বিশেষত রাজ্যসভায় শাসক দল সংখ্যালঘু হওয়া সত্ত্বেও সংসদীয় রীতি অমান্য করে ও ভোটাভুটির নিয়ম অগ্রাহ্য করে অন্যায়ভাবে ২২ সেপ্টেম্বর পাস করানো হয়। এবং অবশেষে কৃষক বিরোধী, জনবিরোধী এবং দেশ বিরোধী এই তিনটি কৃষি বিলকে অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে রাষ্ট্রপতির মোহর লাগিয়ে ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০'তে কুখ্যাত তিন কৃষি আইনে পরিণত করা হয়।

পাঞ্জাবে গত অগস্ট ২০২০'তে শুরু হওয়া আন্দোলনের প্রভাব ঐ সময় থেকেই প্রথমে উল্লিখিত  রাজ্যগুলিতে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ও মোদী সরকারের একরোখা মনোভাবের বিরুদ্ধে গত ৮ ডিসেম্বর ২০২০'তে ঐ রাজ্যগুলির সমস্ত কৃষক সংগঠনগুলো একযোগে এই কৃষি আইনের বিরুদ্ধে ভারত বনধে্র ডাক দেয়। এর পরের ঘটনাপ্রবাহ আমরা সকলে অল্পবিস্তর জানি। কৃষকরা শান্তিপূর্ণভাবে আলোচনার মাধ্যমে তাঁদের দাবির মীমাংসার জন্য বারবার আবেদন জানানো সত্ত্বেও গত এগারো বার দ্বিপাক্ষিক আলোচনাগুলোয় কেন্দ্রীয় সরকার অনড় থেকেছে। আমরা ক্রমাগত দেখেছি, কীভাবে কেন্দ্রীয় সরকার এবং হরিয়ানা ও উত্তরপ্রদেশের সরকারগুলো প্রথম থেকেই এই ন্যায্য শান্তিপূর্ণ পথে চালিত কৃষকদের মিছিল, প্রতিবাদ সভা ও ধর্ণাস্থলগুলির উপর প্রকাশ্যে ও গোপনে অন্তর্ঘাতমূলক দমন-পীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে। প্রথমে দিল্লিমুখি কৃষক মিছিলগুলোতে লাঠিচার্জ, প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় যথেচ্ছ জলকামানের ব্যবহার, প্রধান জাতীয় ও রাজ্য সড়কগুলিতে সরকার দ্বারা আড়াআড়ি ভাবে দশ ফুট গভীর ও পাঁচ ফুট চওড়া পরিখার মতো গর্ত খুঁড়ে রাখা (যা সম্পূর্ণরূপে বেআইনি), দিল্লির চারটি সীমান্তে অভূতপূর্ব কুখ্যাত ব্যারিকেড যা একই সঙ্গে পরপর সারিবদ্ধভাবে সজ্জিত নৃশংস কাঁটাতারের বাধা, ভারি ভারি কংক্রিটের আড়াল, ৮/১০ সারির লোহার খাঁচার ঝালাই করা দেওয়াল ও সন্মুখের রাস্তায় অজস্র প্রাণঘাতী ছুঁচলো লোহার শলাকা পুঁতে দেওয়া। সঙ্গে পানীয় জলের প্রাপ্তিতে বাধা প্রদান।

পাশাপাশি, ধর্ণাস্থলগুলির আশপাশের এলাকাবাসীর মধ্যে বিদ্বেষ সৃষ্টি, আন্দোলন সম্পর্কে পেটোয়া প্রচার মাধ্যমগুলোয় বিভিন্ন রকমের কুৎসা-অপপ্রচার ছড়ানো, সেই সঙ্গে পাকিস্তানী, খালিস্তানী, মাওবাদী, নকশালবাদী, সমাজবিরোধী, আন্দোলনজীবী (স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক উচ্চারিত শব্দ!), বিদেশি শক্তির দ্বারা মদতপুষ্ট, স্বার্থান্বেষী কিছু ধনী কৃষকদের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা ইত্যাদি নানা কুৎসা ছড়ানোর চেষ্টা চলেছে। এর সাথে যে সব অন্তর্ঘাতগুলো ঘটানো হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হল গত ২৬ জানুয়ারি দিল্লির রিং রোড অনুসারী কৃষকদের ঐতিহাসিক মহামিছিলের একটি অংশকে পুলিশ প্রশাসনের চক্রান্তে ইচ্ছাকৃত ভাবে দিকভ্রান্তি ঘটিয়ে লালকেল্লা অভিমুখী রাস্তার দিকে পাঠিয়ে দেওয়া যার সন্মুখ প্রান্তে বিজেপি এবং খোদ মোদী ও অমিত শাহ ঘনিষ্ঠ এক শিখ যুবকের মাধ্যমে (জনৈক সিধ্ধু লাখনা) লালকেল্লায় বিশৃঙ্খলা ঘটিয়ে কৃষক আন্দোলনকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা।

পরদিনই ২৭ জানুয়ারি দিল্লি-গাজিয়াবাদ সীমান্তে অন্যতম জনপ্রিয় কৃষক নেতা রাকেশ টিকায়েতের নেতৃত্বে চলমান ধর্ণাস্থলে পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে শাসক দলের মদতপুষ্ট স্থানীয় বিজেপি বিধায়কের নেতৃত্বে প্রায় ৩০০ জনের দাঙ্গাকারী একটি দল রাতের অন্ধকারে হামলা, গ্রেফতার ও হত্যাকাণ্ড ঘটানোর উদ্দেশ্যে জড়ো হয়, যা অবশেষে রাকেশ টিকায়েতের সুদক্ষ নেতৃত্বে বানচাল হয়ে যায়। এর ফলে কৃষক আন্দোলন আরও উজ্জীবিত হয়ে ওঠে। 

আরএসএস-বিজেপি ও প্রশাসনের এইসব ষড়যন্ত্র এখানেই থেমে থাকেনি। ধর্ণাস্থলগুলোতে ভুয়ো সাংবাদিক পাঠিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করা, সাধারণ মানুষের ছদ্মবেশে কয়েকশো মারমুখি হামলাবাজদের দিয়ে পুলিশ বাহিনীর সামনেই সিঙ্ঘু ও টিকরি সীমান্তের ধর্ণাস্থলে হামলা, হরিয়ানা ও লখিমপুর খেরিতে যথাক্রমে পুলিশের লাঠিচার্জ এবং বিজেপি মন্ত্রী, মন্ত্রী পুত্র ও তাদের গুণ্ডা দলের যোগসাজসে শান্তিপূর্ণ কৃষক মিছিলের উপর চার-পাঁচটি গাড়ির কনভয় চালিয়ে মোট ছয়জন কৃষককে হত্যা করার ঘটনাগুলো ঘটেছে। 

এছাড়াও শিখ নিহাং ‌সন্ন্যাসীদের অন্যতম একটি গোষ্ঠীর প্রধানের সঙ্গে কেন্দ্রের কৃষি মন্ত্রী নরেন্দ্র তোমার, কৃষি রাজ্য মন্ত্রী, জনৈক বিজেপি সাংসদ ও খুনের সাজাপ্রাপ্ত প্রাক্তন আসামী (পুলিশের চাকরি থেকে বরখাস্ত হওয়া) ইত্যাদির সঙ্গে সন্দেহজনক আলাপচারিতা এবং উক্ত নিহাং প্রধানকে কথিত ১১ লক্ষ টাকার বিনিময়ে সদলবলে ধর্ণাস্থল ত্যাগ করতে বলা (যা ঐ নিহাং প্রধান পরে নিজেই বিবৃতি দিয়েছেন) এবং উক্ত নিহাং গোষ্ঠীর দু-তিনজন সন্ন্যাসীর(!) দ্বারা সিঙ্ঘু সীমান্তে জনৈক লখবিন্দর সিং নামক এক যুবককে গুরুগ্রন্থ সাহিবের কথিত অসম্মানের অভিযোগে ধর্ণাস্থলের পাশে‌ হাত-পা ও শিরচ্ছেদের মাধ্যমে নৃশংস ভাবে হত্যা করা- এইসব কিছুই পরিকল্পিত অন্তর্ঘাতের দিকেই স্পষ্ট ইঙ্গিত বহন করছে।

কিন্তু, এত সবের পরেও কৃষক আন্দোলনকে টলানো যায়নি৷ বরং উত্তরোত্তর এই আন্দোলনের শক্তির বিকাশ ঘটেছে। পাঞ্জাব (অমৃতসর, পাতিয়ালা, বারনালা, মোগা, অজনালা, মানসা), হরিয়ানা (কারনাল, কান্ডেলা, হান্সি, পিলভিট), উত্তরপ্রদেশ (মুজফফরনগর, বাগপত, সামলি, জিন্দ, মেরঠ, বিজনৌর, সিসৌলি, লখিমপুর খেরি), রাজস্থান (ডাওসা, জয়পুর, আলোয়ার) ইত্যাদি বেশ‌ কয়েকটি অঞ্চলে অভূতপূর্ব লক্ষ লক্ষ কৃষকদের মহাপঞ্চায়েত ঘটে চলেছে। ২২ নভেম্বর লক্ষ্ণৌতে আরেকটি বিশাল কৃষক সমাবেশ হতে চলেছে। ২৬ নভেম্বর দিল্লির প্রতি চার সীমান্তে বর্ষপূর্তি পালনের  বিশেষ সমাবেশ হবে। ওদিকে, আগামী ২৯ নভেম্বর থেকে সংসদে শুরু হতে চলা শীতকালীন অধিবেশনের দিন দিল্লির প্রতি চার সীমান্ত থেকে ৫০০ জনের ট্রাক্টর মিছিল দিল্লি অভিমুখে যাত্রা করবে বলে শোনা যাচ্ছে।‌

পরিশেষে বলি, চলমান এই কৃষক আন্দোলন কয়েকটি বিশেষ দিককে আমাদের সামনে তুলে ধরেছে:

১) বহু বর্গ, ধর্ম, বর্ণ, ভাষা ও জাতির ভিন্নতাকে একপাশে সরিয়ে রেখে এতগুলো রাজ্যের কৃষকরা একমাত্র তাঁদের কৃষক পরিচিতিকেই সামনে রেখে এক অভূতপূর্ব দীর্ঘস্থায়ী স্থিতিশীল ঐক্য বজায় রেখে চলেছেন;

২) সংঘবদ্ধ এই কৃষক আন্দোলন খুব স্পষ্টভাবেই আন্দোলনের বর্শামুখ ফ্যাসিস্ত আরএসএস-বিজেপি'র মোদী সরকার ও তাদের দোসর কর্পোরেট পুঁজিবাদী শক্তি আদানি-আম্বানিদের দিকে নির্দিষ্ট করে রেখেছে যা তাঁরা খুব স্পষ্টভাবেও ঘোষণা করে চলেছেন;

৩) এই আন্দোলন গোটা গো-বলয়ে আরএসএস-বিজেপি'র রাজনৈতিক ভিতকে টলিয়ে দিয়েছে যা আগামী তিন মাসের মধ্যে উত্তরপ্রদেশ সহ পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলের উপর প্রায় নির্ধারক প্রভাব ফেলতে চলেছে;

৪) এই আন্দোলন ধনী, মাঝারি, গরিব ও ভূমিহীন কৃষক-মজুরদের মধ্যে এক দৃঢ় সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক জোট গড়ে দিয়েছে;

৫) সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা- যা প্রায় ৪০/৪৫টি কৃষক ও কৃষি মজুরদের সংগঠনগুলোর মাধ্যমে গড়ে উঠেছে- খুবই দক্ষতার সঙ্গে এই কঠিন পথের আন্দোলনকে পরিচালনা করে চলেছে। পরিশেষে এটাও বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, আসন্ন বিধানসভার নির্বাচনগুলো যত এগিয়ে আসবে, শাসক গোষ্ঠীও তাদের ডুবন্ত রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতার তরীকে (বিশেষত উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড ও গোয়াতে) বাঁচাতে ততই মরীয়া হয়ে উঠবে। এই অশুভ ফ্যাসিস্ত শক্তি কি অবশেষে তার 'মরণ কামড়ের' পথেও হাঁটবে? বলা যায় না! কিন্তু এর জন্যে কৃষক নেতৃত্ব ও সমাজকে এবং মেহনতী মানুষ সহ সমস্ত সাধারণ মানুষকে যে কোনও কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।

এ লড়াই পুরোপুরি জিততেই হবে।


5 comments:

  1. 3 কৃষি আইন প্রত্যাহার নিয়ে নীলকন্ঠবাবু অসাধারণ এই লেখাটি আমাদের উপহার দিলেন । তাঁকে ও এককমাত্রাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এরকম একটা লেখা এই আনন্দের দিনে আমাদের উপহার দেওয়ার জন্য । 🌾🙏🏼🤝🏼🥳

    ReplyDelete
  2. ধন্যবাদ লেখাটির জন্য

    ReplyDelete
  3. সিঙ্ঘু তে একটা গোটা দিন ছিলাম। কিসান আন্দোলন যে অনেকটাই বিজেপি ও আর এস এসের ভিত আলগা করে দিয়েছে লেখকের সঙ্গে আমি একমত। বেশ কয়েক জন নেতাকে দেখেছি যারা অতীত অকালি।অনেকের মন আবার আপের দিকে।
    রাজনৈতিক দলকে বাদ দিয়ে কিসান আন্দোলনের জয ঐতিহাসিক।
    নন্দীগ্রামের গুলি চালানোর জন্য মানুষের কাছে মাফ চাইলে বামেদের আজ এই দশা হতো না।

    ReplyDelete
  4. Pallab Kumar Chatterjee20 November 2021 at 06:52

    অসাধারণ তথ্যসমৃদ্ধ পক্ষপাতহীন রচনা। আন্দোলনের আড়ালে অনেক অজানা সত্য জানতে পারলাম।

    ReplyDelete