Monday 4 January 2021

শিক্ষাব্যবস্থা যখন ঝিমোচ্ছে

শিক্ষকদের কথা

অশোকেন্দু সেনগুপ্ত

 

শিক্ষকদের কথা বলতে হলে নিশ্চয় সবার আগে এসে পড়ে সময় ও সমাজের কথা। কোন্ সময় এবং কোন সমাজে শিক্ষকদের কথা ভাবতে বসেছি তা তো জানতেই হয়।

আমরা নিশ্চয় লক্ষ্য করেছি যে সাংবিধানিক প্রতিশ্রুতি ( Art 45 Directive Principle) বা শিক্ষা অধিকার আইন থাকা সত্ত্বেও এই দেশে এখনও প্রায় এক-পঞ্চমাংশ শিশু নিরক্ষর যা সব কালে সব সমাজেরই কলঙ্ক। আর যারা সাক্ষর তাদের কজন প্রকৃত শিক্ষিত তা নিয়েও ঘোর সংশয়। তবু, সাক্ষরদের শিক্ষা প্রসঙ্গ থাক।

সেই কবে (১৯১১) গোখলে প্রাথমিক শিক্ষায় সরকারি উদ্যোগ চেয়ে প্রস্তাব এনেছিলেন (তা অবশ্য তখনই গৃহীত হয়নি), আর বরোদার মহারাজা গায়কোয়াড তাঁর রাজ্যে অবৈতনিক শিক্ষার আয়োজন করেছিলেন (১৯০৬)। আরও আছে। মূল কথা হল, আমরা পারিনি, কিন্তু তার দায় কার? একালে অনেকে, বিশেষ করে যে সব কর্তাব্যক্তি শিক্ষা প্রশাসনের শীর্ষে, তারা সহজেই ঘাড় থেকে তেমন্ দায় নামিয়ে দেয়, দোষ দেয় শিক্ষকদের। শিক্ষকদের দোষ নিশ্চয় আছে, কিন্তু কতটা? সে সব নিয়ে কিছু বলার চেষ্টা করব।

এমন নয় যে শিক্ষকদের কথা বা তাঁদের সমস্যার কথা বলার কেউ নেই। একটা সময় নিশ্চয় তেমন ছিল, সে সুদূর অতীতের কথা। তারপর দেশে দেশে শিক্ষকরা সংঘবদ্ধ হয়েছেন, তাঁদের হয়ে কথা বলতে এগিয়ে এসেছেন কিছু সংগঠন। সে সব সংগঠনের কথাও বলতে হবে। এমন সংগঠন তো এক নয়, স্তরভেদে অনেক। শিক্ষকদের স্তরভেদটা আমাদেরও বোঝা প্রয়োজন। আলোচনার সুবিধার্থে, রীতি মেনে  আমরা প্রথাগত বা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার তিনটি স্তরের কথা বিবেচনা করব। এক) প্রাথমিক শিক্ষা, দুই) স্কুল শিক্ষা, তিন) উচ্চশিক্ষা (কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় স্তর)।

সব সংগঠনের সামনে মূল আলোচ্য বিষয় হল শিক্ষার সমস্যা কোন সময়ে ও কোন সমাজে? অধিকাংশ স্তরের প্রধান সংগঠনগুলি বিংশ শতাব্দীর প্রায় গোড়াতেই তাঁদের উপস্থিতির জানান দিতে শুরু করেন। আমরা অতটা পিছিয়ে যাব না। আমরা প্রধানত উত্তর-স্বাধীনতা পর্বের ভারতবর্ষীয় সমাজের কথাই বিবেচনা করব।

১৯৩৫ সালে গঠিত নিখিলবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (ABPTA) যে প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রধান মুখ, তাতে সন্দেহ নেই। একটা সময় তো প্রায় ৭৬ শতাংশ প্রাথমিক শিক্ষক এর সদস্য ছিলেন। এই সংগঠনের সাফল্য কামনা করে চিঠি দিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ, নেহরু প্রমুখ দেশনেতারা, বার্ষিক সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেছেন আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র। বক্তা হয়ে এসেছেন শরৎ বসু। ঐতিহ্যের বিচারে অবশ্য মান্য এই সংগঠন, কিন্তু শিক্ষা ক্ষেত্রে ও শিক্ষকদের মানোন্নয়নে এর প্রভাব কতটা?

শরৎ বসু ১৯৩৭ সালে বলেছেন, প্রাথমিক শিক্ষকরা যা পান তা দিয়ে পরিবারের ভরণপোষন তো দূর ঐ টাকায় কুকুর-বেড়ালের পেট ভরানো যায় না। শিক্ষকদের পারিশ্রমিক বা বেতন কেমন ছিল তা বোঝাতেই শরৎ বসুর কথাটা উল্লেখ করলাম। কিন্তু এখনও কি সেই হাল? নিশ্চয় না। সব স্তরেই শিক্ষকরা এখন বেশ আকর্ষণীয় মাইনে পান। আকর্ষণীয় কিন্তু তা যথেষ্ট কিনা তা নিয়ে সংশয় অবশ্যই আছে।

আমরা যদি মানি যে সুশিক্ষা দিতে একেবারে গোড়ায় ফিরতে হবে, তবে মানতেই হয় যে প্রাথমিক শিক্ষাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সে কথা তো সমাজ মানে কিন্তু রাষ্ট্রের আয়োজন তো তা মানে বলে মনে হয় না। কেন মনে হয় না? সরকার তো আজও প্রাথমিক শিক্ষার আয়োজনই সম্পূর্ণ করতে পারেনি। প্রধান কারণ নিশ্চয়ই দারিদ্র ও অপুষ্টি। খালি পেটে অসুস্থ কোনও শিশুকে কে শেখাবে বা তার শিক্ষার দায়িত্ব নেবে কে– সরকার, না সমাজ, না শিক্ষক? সমাজের একাংশের দাবি মেনে শিশুদের জন্য বিনি পয়সায় মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন হয়েছে স্কুলে স্কুলে, দেখাশোনার ভার শিক্ষকদের। কিন্তু যদি বরাদ্দ যথেষ্ট না হয় তবে তাদের করণীয় কী? অনেক জায়গায় সমাজ এগিয়ে এসে শিশুদের জন্য কলাটা, মুলোটা, ডিম বা মাছ জোগাড় করে আনে। কোথাও বাগান বা মাছচাষের আয়োজনও হয়। কিন্তু তা তো সাধারণ চিত্র নয়, আর রাষ্ট্র যে অর্থবরাদ্দ করে তাতে শিশুর পুষ্টি হয় না, হতে পারে না। খিদের প্রাবল্যে যে শিক্ষার্থী অন্যমনস্ক, শিক্ষক তাকে যদি বলে পড়ায় মন দাও, তো সে এক অপরাধ নয় কি?

আমাদের সামাজিক কুঅভ্যাসও কিছু কম নয়। মাঠে প্রাত্যঃকৃত্য বা যত্রতত্র মলমূত্র ত্যাগ করা বা বিশুদ্ধ পানীয় জলের গুরুত্ব না বোঝা যে অন্যায় তা আমরা সবাই বুঝলেও, শিশূদের জন্য টয়লেট বা বিশুদ্ধ পানীয় জলের আয়োজন করবে কে? শিক্ষকরা পরিবেশ রক্ষার গুরুত্ব বোঝানোর শিক্ষা দেবেন না?

পাঠ্যক্রম নিয়েও সমস্যা অনেক। কে দেখে? শিক্ষক না দেখে পারে না। তবু সে কিছু বলে না কেন? রাজনীতির লাঠির ভয়ে, প্রাণসংশয়ে? ওদিকে, প্রয়োজনের চেয়ে কম শিক্ষক হলে তারা কী করে? স্কুলের হাজারও কাজ, শিক্ষাকর্তাদের ঘনঘন মিটিং আর শিক্ষা-বহির্ভূত কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ– কোনওটাই অগ্রাহ্য করতে পারে না তারা। অথচ তাদের শুনতে হয় যে তারা নাকি খিচুড়ি স্কুলের, ম্যাটিনি স্কুলের শিক্ষক। এ তো আর রামনাথের যুগ নয়, এই শিক্ষকদের পেট আছে, পরিবার আছে। অধিকাংশ শিক্ষক চোখ বুজেই থাকেন, গালমন্দ গায়ে মাখে্ন না, তারা অনেকে স্কুল চত্বরের কাছেপিঠে থাকেনও না। তাই অনেক সমস্যা তাদের নজরেই আসে না, অনেকে প্রশাসনিক কর্তা বা রাজনৈতিক কর্তাদের নাকগলানো পছন্দ করেন না, তবু ইচ্ছে না থাকলেও তাদের ঘাঁটাতে সাহস পান না। ফাঁকা স্কুল চত্বরে মদের খালি বোতল তাদের অনেককে গুটিয়ে রাখে।           

অন্য ছবিও দেখেছি। অনেক শিক্ষক প্রতিবাদে মুখর হন, কেউ কেউ বাচ্চাদের জন্য লজেন্স, বিস্কুট থেকে ল্যাপটপও সাথে করে আনেন। ভিক্ষে করে লাইব্রেরি বানান।  

একদল সমীক্ষক শহর থেকে গ্রামে এসে দেখেন শিক্ষার মান নেমেছে। তারা দেখেন না অপুষ্ট শিশুর সাঁতারে দক্ষতা, বা গাছে চড়ার কেরামতি ইত্যাদি। দেখেন কেবল ভাষা শিক্ষা তথা ইংরেজি বিদ্যার দৌড় বা যোগ-বিয়োগ শিক্ষার হাল। তাঁরা খবর নেন না সমাজের বা শিক্ষকদের হালচাল। সে খবর আসে অন্য সূত্রে (প্রধানত রাজনৈতিক দলের কর্মী সূত্রে)। সেই খবরে ভরসা রেখে রাষ্ট্র শিক্ষক নিয়োগের বা তাদের বেতনক্রমের বা শিশুদের পাঠ্যক্রমের সংস্কার করে। শিক্ষা যে তিমিরে সেই তিমিরেই পড়ে থাকে। সরকার কখনও শিক্ষাকর্তাদের বলে উঠতে পারল না– কেন স্বাধীনতার ৭০ বছর পরেও দেশের সব শিশুকে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আনা গেল না বা তাদের কেন ন্যূনতম সাক্ষরতার পাঠ দেওয়া গেল না?

অর্থাৎ, দোষ খুঁজলে সকলেরই কিছু দোষ চোখে পড়বে। তা বলে কি অস্বীকার করতে পারব যে শিক্ষার মান পড়ছে? নাকি তার দায় আদৌ শিক্ষকদের নয়? মানোন্নয়নে মাঝে মাঝে ট্রেনিং'এর আয়োজন হয়। তাতে কী হয়?

একজন ট্রেনারের কথা শুনছিলাম। তিনি বলছিলেন একটা রূপক গল্প। একটা রুগ্ন গরুকে যথেষ্ট খড়, ভূষি খাওয়ানো হল, ক’দিন তার বেশ যত্নআত্তি হল, তাতে সে গরুটার চেহারা ভালো হলেও দুধের পরিমাণ বাড়ল না। কিন্তু কেন? ভাবলাম বুঝি ইমদাদুল মিলনের গল্প শুনছি। তা নয়। শ্রোতা শিক্ষার্থীরা একযোগে বলে উঠলেন– বয়স হয়েছে নিশ্চয়! ট্রেনার বললেন না তা হয়নি। তখন সকলেই প্রায় এক বাক্যে রায় দিলেন যে, এমন গরুর পেছনে খরচ বৃথা। একে অবিলম্বে ভাগাড়ে দেওয়া ভালো আরও যত্নআত্তি না করে।

-   আর এমন যত্ন আত্তি করা জীব গরু না হয়ে যদি হ’ন কোনও শিক্ষক?

এরপর অনেকের মাথা নীচু, তারা চুপ। অনেকে তারপরও অন্য আলোচনায় মত্ত রইলেন। আমি বুঝলাম অনাগ্রহী বা অনুপযুক্ত শিক্ষকদের ট্রেনিং দেওয়া বৃথা যদি না তারা নিজেরা ভেতর থেকে শিক্ষাদানের গুরুত্ব টের পান!

এমন ট্রেনিং কিন্তু উচ্চশিক্ষায় যুক্ত শিক্ষকদের দেওয়া হয় না। ‘রিফ্রেসার্স কোর্স’ ইত্যাদি তো ট্রেনিং নয়, তার আয়োজনের মূল লক্ষ্য হয় শিক্ষকদের জ্ঞানের পরিধি বাড়ানো। কেন ট্রেনিং হয় না? বিদেশে প্রয়োজন হয় না, তাই এ দেশেও? নাকি অন্য কারণ কিছু আছে? কারণ যাই থাক, এ দেশে সর্বস্তরেই সমস্যাগুলির চরিত্র প্রায় অভিন্ন। এখানে শিক্ষার মান ও কাঠামো দুর্বল। আর এক বড় সমস্যা প্রাইভেট ট্যুশন। সমস্যাটা সব স্তরেই– প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষার শেষ স্তরেও। আর, দুধ একবার যে শুয়ে শুয়ে বোতলে খেয়েছে তার অভ্যাস বদল সহজ নয়- সে তো তার আত্মবিশ্বাস খুইয়েছে! তাই সব বিষয়ে সব স্তরে তার প্রাইভেট টিউটর চাইই চাই।

এক ভদ্রলোক তো তাঁর ‘স্কলারদের’ গবেষণাপত্র আর থিসিসও লিখে দিতেন। লক্ষ্যণীয় যে, শিক্ষকরা অর্থের বিনিময়ে এমন সব অনৈতিক কাজেও যুক্ত হতে পারেন! এ কথা বলছি না যে প্রাইভেট ট্যুশন অবৈধ বা কোনও অনৈতিক কর্ম। পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীনতম পেশা এই প্রাইভেট ট্যুশন। কিন্তু পেশাটি বিবর্তিত হয়ে হয়ে একালে এটা হয়েছে নম্বর বাড়ানোর এক কৌশল। আমরা দেখেছি ও শুনেছি যে একদা অফিসের বড়বাবু, শিক্ষিত বেকার, পুরোহিত ইত্যাদিরা হতেন প্রাইভেট টিউটর। তারা বিশেষ বিশেষ বিষয়ে শিক্ষার্থীর সমস্যাগুলি চিহ্নিত করে তা ডিঙ্গোনোর পথ বাতলাতেন। এখন টিউটর চাই সব বিষয়ে, সব ক্লাসে। সংশ্লিষ্ট শিক্ষায়তনের শিক্ষকের চাহিদা বেশি। দোষ তো সমাজেরও। আমরা অনেক অভিভাবক চাই পরীক্ষায় চোখ-ধাঁধানো ভালো ফল, চাই শিক্ষা শেষে সন্তানের ভালো সরকারি চাকরি।  

যদিও শিক্ষকদের পারিশ্রমিক বেড়েছে বহুগুণ, তাতে কী? মানসিকতায় বদল আসেনি। আর কমেনি তুলনা। শিক্ষকদের তুলনায় কে কত বেশি পান সে অঙ্কও শিখে নিচ্ছেন শিক্ষকরা ও কর্তব্যকর্মে মনোযোগ হারাচ্ছেন! তুলনা করার এমন সুযোগ তো সরকারই তাদের দিচ্ছে, তাই সরকার মাঝে পরামর্শ দিয়েই সরে পড়ছে। মাঝে মাঝে সরকার ধমক বা হুমকিও দেয়, তবে শিক্ষকরা বুঝে গেছেন যে সে সব ফাঁকা আওয়াজ। তাদেরও সংগঠন আছে না!

তবে ধমক যথাযথ হলে যে কাজ হয় তা দেখা গেছে ১৯৮৬ সালের নতুন পে-স্কেল প্রবর্তনকালে। আবার এও দেখা গেছে যে সংগঠনগুলি আর্থিক দাবিদাওয়া আদায়ে যত তৎপর, শিক্ষকদের কর্তব্যকর্মে উদবুদ্ধ করায় তত তৎপর নয়। এ যেন এক অলঙ্ঘনীয় বিধি যা সর্বস্তরের সব শিক্ষক সংগঠনের জন্য অবশ্যমান্য।

এসবের মূলে আছে কুশিক্ষা। কুশিক্ষা কেবল নিরক্ষর মানুষে সীমাবদ্ধ নয়, কুশিক্ষার আলো শিক্ষক মহলে, সে অন্ধকার শিক্ষানীতি নির্ধারক থেকে তা রূপায়নে ব্যস্ত সব শিক্ষাকর্তাদের ঘরে ঘরে। অশিক্ষার চেয়ে যেন কুশিক্ষার মূল্য চুকোতে বেশি ব্যস্ত আজকের সমাজ। এমন সঙ্কট মেটাতে শিক্ষকরা এগিয়ে এসে সমাজের হাত ধরে না, অন্ধকার ঘন হয়ে আসছে দেখেও সে তার নিজের তাৎক্ষণিক লাভের অঙ্ক মেলাতে ব্যস্ত। একালে শিক্ষক সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন।

একালে আরও কিছু সমস্যা জুড়েছে জাতীয় শিক্ষানীতি আর কোভিড১৯ পরিস্থিতি। আগেই বলেছি যে, তেমন তেমন ধমকে কাজ হয়। এবার করোনা ভয়ে সরকার দ্রুত বিদ্যায়তনও বন্ধ করে দিল। যখন স্কুল-কলেজ বন্ধ তখন বিদ্যাচর্চা বন্ধ হবে কেন? জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০ তো চেয়েছে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম শিক্ষার বাহন হোক। সমাজও ব্যস্ত হল। সেই চাপে চালু হয়ে গেল ‘অনলাইন’ পড়াশোনা।বাস্তব সমস্যার দিকে তাকালো না সরকার বা সমাজ। দেখল না যে, অন্তত এ দেশে ‘অনলাইন’ পড়াশোনার পরিকাঠামোই নেই। দারিদ্র ডিঙ্গিয়ে শিক্ষার্থী কেমন করে জোটাবে স্মার্টফোন? ক’জন ব্যবহার করবে তা? ক’টা জোটাবে? বিদ্যুৎ সংযোগ পাবে?

আরও সমস্যা আছে। যে শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ের পরিবেশ পাবে না, তার কী হবে? শিক্ষকরা ‘অনলাইন’এ পড়ানো শুরু করলেন, পরীক্ষাও  নিচ্ছেন! তাঁরা প্রশ্ন করলেন না সরকারকে, ‘রাজা তোর কাপড় কোথায়?' বললেন না সমাজকে– ‘এভাবে শিক্ষাদান হয় না। শিক্ষার মানোন্নয়ন হয় না।' শিক্ষা চলেছে, চলেছে ‘অনলাইন’ প্রাইভেট ট্যুশনও। শিক্ষার্থীরা শৈশব হারাচ্ছে, কৈশোর হারাচ্ছে, যৌবনেরও কিছুটা। অভিভাবকরা জানেন না বা মানেন না যে এই শিক্ষা সুশিক্ষা নয়, এই শিক্ষা পেয়ে শিক্ষার্থী চাকরি পাবে না, কাজ পাবে না। তাদের জীবন থেকে আনন্দ হারিয়ে যাচ্ছে, আর এই আনন্দহীন যজ্ঞের পুরোহিত হয়ে ঝিমোচ্ছেন নির্বিকার শিক্ষকরা।  


No comments:

Post a Comment