Pages

Tuesday, 10 December 2024

এই বৈঠক জরুরি ছিল

দু’ দেশের সম্পর্কে জনগণই চালিকাশক্তি

অনিন্দ্য ভট্টাচার্য



গত এক মাসে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্কের অবনমন ও কিছু নেতিবাচক টানাপোড়েনের মধ্যে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিস্ত্রীর ৯ ডিসেম্বর ঢাকা সফর, সে দেশের সরকারের সঙ্গে তাঁর আলোচনা ও পরবর্তীতে আশাপ্রদ বিবৃতি প্রদানে মনে হতে পারে যে বহমান চাপা উত্তেজনার এবার কিছুটা অবসান হবে। সবচেয়ে বড় কথা, দুই দেশের আলোচনায় কোনও তিক্ততা উঠে আসেনি, দুই তরফেই কিছু উদ্বেগ প্রকাশ পেয়েছে মাত্র (যার হয়তো কিছু ভিত্তিও আছে) এবং দু’ পক্ষই মার্জিত ও বন্ধুসলুভ বিবৃতি দিয়ে প্রতিবেশিসুলভ আচরণ করেছে। আপাতদৃষ্টিতে এই বৈঠক আগামী দিনের পক্ষে ইতিবাচক।

কিন্তু এ দেশের গোদি মিডিয়া দেখলে মনে হবে, বাংলাদেশ যেন একেবারে উচ্ছন্নে চলে গেছে, সেখানে সংখ্যালঘুরা ভীষণ ভাবে অত্যাচারিত ও বিপন্ন এবং প্রতিনিয়ত গণ্ডগোল ও সংঘর্ষ লেগে রয়েছে। কেউ কেউ বললেন, ‘এবিসি নিরানন্দ’ টিভি চ্যানেল খুললে বোঝাই যাচ্ছে না যে তাদের দফতর কলকাতা না ঢাকায় অবস্থিত; সারাদিন, সারাক্ষণ বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে রুদালি চলেছে। ‘ঢিপাবলিক’ চ্যানেল তো ঢিল ছুঁড়েই ব্যবসা করে, তাদের বাংলাদেশ নিয়ে চিল-চীৎকার যে কহতব্য নয়, তা বলাই বাহুল্য। আর সেই তালেই নেচেকুঁদে এ রাজ্যের বিরোধী নেতা পেট্রাপোল সীমান্তে গিয়ে দু-দেশের ব্যবসা বন্ধের হম্বিতম্বি করে (যদিও প্রায় স্বভাবিক গতিতেই সীমান্ত দিয়ে বাণিজ্য পরিবহন চলেছে), তারপর রণে বঙ্গ দিয়ে এখন হাঁক পেড়েছে যে ‘শেখ হাসিনাই বাংলদেশের বৈধ প্রধানমন্ত্রী’। অথচ তারই দল পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকারের পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশে গিয়ে বৈঠক করে এলেন হাসিনার জমানার বিরুদ্ধে জনঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে যারা ইতিমধ্যে হাসিনাকে গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত করেছে। তাহলে কি পররাষ্ট্র সচিব ঢাকায় এক ‘অবৈধ’ সরকারের সঙ্গে বৈঠক করে ফিরলেন? বিরোধী নেতা অধিকারীবাবুর বক্তব্য কি সে ক্ষেত্রে ভারত সরকার বিরোধী? এই বক্তব্যের জন্য দল বা সরকার কি তার বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে?

উল্লেখ্য, পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিস্ত্রী তাঁর বিবৃতিতে এও বলেছেন যে, দু’ দেশের সম্পর্কে জনগণই চালিকাশক্তি এবং অতীতের মতো ভবিষ্যতেও এই সম্পর্ক গণ-কেন্দ্রিক ও গণমুখি ভিত্তির ওপরেই দাঁড়িয়ে থাকবে। অর্থাৎ, দু’ দেশেই সরকারি ক্ষমতায় যখন যেই আসুক না কেন, উভয় দেশের মধ্যে সুসম্পর্কে কোনও বাধা পড়ার কথা নয়। ফলত, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রকের উপদেষ্টা মহঃ তৌহিদ হোসেন ভারতের মাটিতে গণহত্যাকারী শেখ হাসিনা’র বসবাস সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করতে পেরেছেন, কারণ, তা প্রকারান্তরে সে দেশ থেকে পলাতক এক রাজনৈতিক নেত্রীকে আশ্রয় দেওয়ার সামিল এবং প্রত্যার্পণের নীতিতে তাঁকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোই দস্তুর। বলাই বাহুল্য, বিভিন্ন দেশের মধ্যে সরকারি স্তরে নানা ধরনের কূটনৈতিক আদানপ্রদান ও বার্তালাপ থাকবে, বাণিজ্যরীতি ও যাওয়া-আসারও বিধিব্যবস্থা থাকবে, কিন্তু, মানুষে মানুষে যদি বিশ্বাস ও আস্থার সূত্রটি নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে তার থেকে বেশি বিপজ্জনক আর কিছু হতে পারে না। আর সেই সুযোগটাকেই কাজে লাগায় ধুরন্ধর মৌলবাদী শক্তিসমূহ। আজ বাংলাদেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ফলে এই উপমহাদেশে ঘনায়মান পটভূমিতে তেমনই কিছু ইঙ্গিত যেন স্পষ্ট।

৫ অগস্ট যেদিন শেখ হাসিনা গণ অভ্যুত্থানের ব্যাপ্তি ও বিস্ফোরণে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলেন, সেদিন থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যা কিছু ঘটেছে তা একান্তই সে দেশের আভ্যন্তরীণ ব্যাপার। সেই সব ঘটনাবলীর দিকে সারা বিশ্বের নজর ছিল। প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারতের নজর ছিল আরও নিবিড়; বিশেষত একই ভাষা-সংস্কৃতির কারণে পশ্চিমবাংলার মানুষেরা আরও কড়া নজর রেখেছেন। ভারত-বাংলাদেশ দুই রাষ্ট্র গঠনে যেহেতু দু’ জায়গাতেই ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অবস্থান ও অংশীদারিত্বের প্রশ্নটি একটা কমন ফ্যাক্টর, যার স্পর্শকাতরতা আজও কমবেশি থেকে গেছে, তাই খুব স্বাভাবিক যে বাংলাদেশে হাসিনা পরবর্তী আমলে এই বিষয়টি কতটা হানিকর হল বা হল না, তা নিয়ে তীব্র কৌতূহল ও উৎকণ্ঠা থাকবে। চূড়ান্ত গণ অভ্যুত্থানের পর কিছু কিছু সংখ্যালঘু মানুষের ওপরে যে আক্রমণ নেমে আসেনি তাও নয়, অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গেছে আওয়ামী লিগ’এর সমর্থক হিসেবে বহুজনের ওপর নির্যাতন হয়েছে যারা হিন্দু (তারা হিন্দু বলে তাদের ওপর আক্রমণ হয়নি)। যদিও আওয়ামী লিগের মুসলমান কর্মীরাও বহু জায়গায় আক্রান্ত হয়েছেন কিন্তু হিন্দু সদস্য বা সমর্থকের ওপর আক্রমণকে কোনও কোনও মহল থেকে ‘হিন্দুদের ওপর আক্রমণ’ বলে চিত্রায়িত করা হয়েছে। যদিচ, এই ধরনের রাজনৈতিক হামলাও নিন্দনীয়, কিন্তু সেই অজুহাতে তাকে সাম্প্রদায়িক মোড়ক দেওয়াটা ভয়ঙ্করজনক ভাবে কুৎসিত। অবশ্য, এ ব্যতিরেকে বেশ কিছু জায়গায় সংখ্যালঘু খ্রিস্টান-বৌদ্ধ-হিন্দু এবং কিছু মন্দির-মাজারে সংখ্যালঘু বলেই আক্রমণ হয়েছে, কিন্তু তা তত ব্যাপক নয়। অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হওয়ার পর এই ধরনের ঘটনা ক্রমেই কমে আসে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ছাত্র-যুবদের পাহারাদারিতে তা আরও প্রশমিত হয়। কিন্তু নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে ইস্কনের জনৈক সাধু চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে (যদিও বাংলাদেশ ইস্কন এই সাধুকে বেশ কিছুদিন আগেই শিশু নির্যাতনের অভিযোগে তাদের সংগঠন থেকে বহিষ্কার করেছে বলে প্রেস বিবৃতি দিয়ে জানায়) গ্রেফতারির পর যেন নতুন করে এক হৈচৈ শুরু হয়।

চট্টগ্রামে বাঙালি-পাহাড়ী একটা বিবাদ চলছিল। তার উপর সেখানকার সংখ্যালঘু জোটের মানুষজনও সংঘবদ্ধ হয়ে মিছিল-মিটিং করছিলেন। অভিযোগ, এই মিছিল-মিটিং-বিক্ষোভের সময় চিন্ময় দাস ও তাঁর কিছু সহযোগী বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা করেন এবং একটি গেরুয়া পতাকা তার ওপর টাঙিয়ে দেন। এই অভিযোগে চিন্ময় দাস ও তাঁর কতিপয় সঙ্গীকে পুলিশ ‘রাষ্ট্রদ্রোহের’ অভিযোগে গ্রেফতার করে আদালতে পেশ করে। আদালত চত্বরে চিন্ময় দাসের মুক্তির দাবিতে জনবিক্ষোভের রোষে সাইফুল ইসলাম নামে এক আইনজীবী আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে মারা যান। এই ঘটনা গোটা পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তোলে। চিন্ময় দাসের গ্রেফতারির প্রতিবাদে কলকাতা ইস্কন থেকে নিন্দামূলক বিবৃতি দেওয়া হয় এবং বিবিধ হিন্দু সংগঠন কলকাতা ও অন্যত্র মিছিল বের করে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও প্রতিবাদ জানান, বিজেপি ‘সংখ্যালঘু নির্যাতনের’ অভিযোগ তুলে সর্বশক্তি দিয়ে হৈ-হট্টগোল শুরু করে দেয়। আর ঠিক এই সময় থেকেই ‘এবিসি নিরানন্দ’ ও ‘ঢিপাবলিক’ টিভি আদাজল খেয়ে নেমে পড়ে বাংলাদেশে ‘সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রতিবেদন’ নিয়ে। তবে, তাদের তরফে সব সময় যে তেমন তথ্যনিষ্ঠ খবর বা ভিডিও প্রচার করা গেছে তা নয়, কিছু পুরনো ও ফেক ভিডিও দিয়ে কাজ সারতে হয়েছে। কারণ, খানিক অনুসন্ধান করলেই দেখা যাবে যে, বাংলাদেশে গত দু-তিন মাসে সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ তেমন ব্যাপক ভাবে কিছু হয়ইনি।

পেট্রাপোল সীমান্তে টিভি চ্যানেলের সাংবাদিকরা দাঁড়িয়ে আছেন এই ছবি তুলতে যে সংখ্যালঘুরা সব দলে দলে বাংলাদেশ ছেড়ে পালিয়ে আসছে। সে সব ছবি তো পাওয়া যায়ইনি বরং যে দু-একজন বাসে করে কোনও কাজে ভারতীয় সীমান্তে সবে এসে পৌঁছেছেন, তাঁরাও সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে খুব কিছু বিপদ বা আক্রমণের কথা শোনাতে পারেননি; সাংবাদিকদের চোখা চোখা প্রশ্নের সামনে পড়ে, ‘হ্যাঁ, আশঙ্কা তো একটা আছে’, এই ধরনের অস্পষ্ট কিছু মন্তব্য করে পালিয়ে বেঁচেছেন। সম্ভবত আমাদের কেন্দ্রীয় সরকারও তাদের গোয়েন্দা ও অন্যান্য সূত্রে তেমন কোনও সংখ্যালঘু নিপীড়নের হদিশ পায়নি, ফলে, তারা তড়িঘড়ি পররাষ্ট্র সচিবকে সে দেশে পাঠিয়ে আসলে গোদি মিডিয়ার উন্মাদ আচরণকে ধামাচাপা দিতে চেয়েছে। শোনা যাচ্ছে, পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিস্ত্রী নাকি এ কথাও বলেছেন যে, মিডিয়া কী বলছে তাতে সরকারের কোনও হাত নেই। অনুমান করি, নিপীড়নের তেমন কোনও বিস্তৃত তথ্য থাকলে তা পররাষ্ট্র সচিব নিশ্চয়ই পেশ করতেন।

অথচ, আমাদের দেশে মণিপুর পুড়ছে। সম্বল জ্বলছে (ইতিমধ্যেই সেখানে পাঁচজন সংখ্যালঘুকে হত্যা করা হয়েছে)। উত্তরপ্রদেশ হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সভাতে গিয়ে প্রকাশ্যে বলছেন, এখানে থাকতে হলে হিন্দুবাদীদের কথা শুনেই চলতে হবে। একে একে সব মসজিদের তলা থেকেই নাকি পাওয়া যাচ্ছে শিবলিঙ্গ বা মন্দিরের ভগ্নাবশেষ। অর্থাৎ, ভবিষ্যতে আবার মন্দির পুনরুদ্ধারের রাজনীতিই মুখ্য হবে। তাই, আমরা যদি বাংলাদেশের দিকে নিশানা তাক করতে পারি, তাহলে এ দেশের নিপীড়নের ছবিগুলিকে বেমালুম হাওয়া করে দেওয়া যেতে পারে-- রাজনৈতিক কৌশলটাকে এমন করারই চেষ্টা চলেছে। কিন্তু সমস্যা হল, আজকাল মানুষ আর শুধু টিভি দেখে না, তার সামনে এখন খবর ও বিশ্লেষণের সহস্র সূত্র। উপরন্তু, তারা নিজেরাও এখন বিশ্লেষক ও পাহারাদার। অতএব, মিথ্যা খবর ও গুজব ছড়িয়ে কেল্লা ফতে করা খুবই শক্ত।

মুখ্য কথাটা হল, যদি দেশের সরকার বর্ণ-ধর্ম-লিঙ্গ-জাতি নির্বিশেষে সকল মানুষকে একসঙ্গে নিয়ে রামধনু সমাজের ন্যায্যতাকে মান্যতা দেয়, তাহলে বিপথগামী বা নাশক শক্তি চেষ্টা করলেও খুব বেশি দূর সফল হতে পারে না। বাংলাদেশে বিচ্ছিন্নভাবে যে অন্যায় ঘটনাগুলি ঘটেছে বা ঘটছে, মালুম হচ্ছে, বর্তমানের অন্তর্বর্তী সরকার চেষ্টা করছে সেগুলিকে প্রতিরোধ করার। তার মানে অবশ্য এমন ভাবার কোনও কারণ নেই যে এই সরকারে সকলেই উদার মনোভাবাপন্ন মানুষ। লড়াইটা চলছে, চলবে। কিন্তু আমাদের দেশের সংখ্যালঘু নির্যাতন প্রতিরোধে কেন্দ্রীয় বা বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির সরকার সামগ্রিক ভাবে কতটা আন্তরিক? নাকি, তারা ইন্ধনদাতাও? এখানেও লড়াইটা চলছে, চলবে।

ভারত ও বাংলাদেশ উভয়তই শান্তি ও সম্প্রীতি বিরাজ করুক। স্ব স্ব সার্বভৌমত্ব রক্ষা পাক। প্রতিবেশিসুলভ আত্মীয়তা বজায় থাকুক।               


7 comments:

  1. মুশকিল হলো, তথাকথিত শিক্ষিত মধ্যবিত্ত এই বাস্তবতা জেনেবুঝেও ধর্মীয় উগ্রবাদের ফাঁদে পা দিচ্ছেন। চিন্তাভাবনার অভাবের প্রমাণ দিয়ে 'ওদের জাতটাই এমন বেইমান' — গোছের মন্তব্য করেই চলেছেন।

    ReplyDelete
  2. বেশ ভালো লাগলো

    ReplyDelete
  3. এমন নির্লজ্জ ও ছোটলোকের মতন লেখা আমি আগে পড়িনি। লেখকের মানসিক সুস্থমা কামনা করি আর আশা করবো উনি এফিডেভিট করে ভট্টাচার্য পদবীটা পরিবর্তন করবেন। যখন ইজরায়েল এবং ফিলিস্তিনের যুদ্ধ হয় তখন জান প্রাণ ঢেলে ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়ান আর আজকে বাংলাদেশের হিন্দুরা বিপন্ন আর সেই খবর এবিপি আনন্দ ও রিপাবলিক করছে বলে এতো ক্ষোভ ও রাগ? এতো মুসলমানদের হয়ে কথা বলবার মানসিকতা কেন ভাই? এতো অন্ধ মুসলমান প্রীতি কেন ভাই? আপনারা কী ঠিক করেই রেখেছেন যে মুসলমানদের দোষ ধরাই যাবেনা? শুধুমাত্র ৫ই আগষ্ট থেকে ২০শে আগষ্টের মধ্যে ২০১০টি ঘটনা ঘটেছে হিন্দুদের বাড়িঘর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট আক্রমণ ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের। ৬৯টি হিন্দু মন্দির লুঠ ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এগুলি ছোট ঘটনা? মিডিয়া ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে দেখাচ্ছে? ভাই শরীরে জল বয় না রক্ত? ভারতবর্ষে সংখ্যালঘুদের জন্য ওয়াকফ বোর্ড রয়েছে যেখানে যখন তখন তাঁরা যেকোনও জমি দাবি করতে পারেন। দক্ষিণ ভারতের একটা ১৫০০ বছরের জমি দাবি করে বসে আছেন। বাংলাদেশের হিন্দুদের সেই সুযোগ আছে কী? ভারত হিন্দু প্রধান দেশ হয়ে যদি বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের হিন্দুদের দুর্দশা নিয়ে কথা না বলে তাহলে সংখ্যাগুরু হিন্দু হয়ে লাভ কী? এই একই যুক্তিতে আপনারা ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়ান কেন? ২০২১সালে দুর্গাপুজোর সময়ে ইচ্ছাকৃতভাবে হনুমানের মূর্তির কোলে কোরান রেখে এসে গুজব ছড়িয়ে অসংখ্য দুর্গামণ্ডপ ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা কী ভুলে গেছেন অনির্বাণ ভট্টাচার্য? আপনার লেখা পড়ে তীব্র ঘৃণা ছাড়া প্রকাশ করার আর কিছুই নেই। যাইহোক রিপাবলিক বাংলা ও এবিপি আনন্দের একটা খবর যদি ভুল প্রমাণ করতে পারেন তাহলে বলুন। বাকি ক্রমাগত ভারতের সেভেন সিস্টার দখলের হুমকি এবং ভারতীয় পতাকার অপমান এসব বাদই দিচ্ছি। বামপন্থীরা এমনিতেই দেশদ্রোহী

    ReplyDelete
    Replies
    1. এমন নির্লজ্জ ও ছোটলোকের মতন কমেন্ট আমি আগে পড়িনি। এই সব টক্সিক হিন্দুদের মত-প্রাবাল্যে আমিও আমার 'বন্দ্যোপাধ্যায়' পদবিটা ছুঁড়ে ফেলে কোনও একটা সংখ্যালঘু বা প্রান্তিক পদবি গ্রহণ করতে উদ্যমি হয়ে উঠছি।
      এতো ঘৃণা নিয়ে কী করে এরা সন্তান পালন বা আদর করেন, ভেবে পাই না। তথাকথিত হিন্দুরা যে অধিকাংশ রেসিস্ট আমেরিকান ও জিওনিস্ট ইস্রায়েলীদের মতোই বিবমিষা জাগিয়ে তোলেন, এটা আরেকবার দেখা গেল। কোনও মাটির অভিজ্ঞতা নয়, শুধু টিভির সামনে ড্রয়ইংরুমে বসে বসে কুৎসার জাল বুনে যাওয়া আর আধিপত্যবাদের অন্ধ অনুকরণে নিজের খোকলা মাথাটা বিসর্জন দেওয়াটাকেই এরা স্বদেশ প্রেম বলে মনে করে গর্বিত হয়। কাজেই, হালকা হেসে এদের প্রত্যাখ্যান করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। কেননা, এদের বক্তব্যে কোথাও কোনও যুক্তিগ্রাহ্যতাই নেই যে আপনি সুস্থ বাহাস করবেন। চুলোয় পাঠান এদের দেশভক্তি। আপনি আপনার মতো লিখুন।
      নমস্কার ও শুভেচ্ছা।

      Delete
  4. উপরের চতুর্থ হিংসাত্মক মন্তব্যটি ও তার ঠিক নিচে জনৈক 'বন্দ্যোপাধ্যায়ের' যথার্থ প্রত্যুত্তরটি রবীন্দ্র-রামকৃষ্ণদেব অনুসারী 'যত মত তত পথের' অম্লান ঐতিহ্যকে উর্ধ্বে তুলে ধরেছে। উগ্র হিন্দুয়ানা ও যে কোনও ধর্মীয় উন্মাদনার পতাকাবাহকদের সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়াই এখনকার উপযুক্ত কাজ। এ নিয়ে বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষ মানুষেরাও লড়াই করে চলেছেন। ঢাকার ছাত্রনেতা মেঘমল্লার বসু'র এই অসাধারণ সাক্ষাৎকারটি প্রণিধানযোগ্য:
    https://youtu.be/pXCDiQEBs6c?si=MxGXlAjNjYIz6ণবী

    ReplyDelete
  5. লিঙ্কটি উপরে ভুল ভাবে পড়েছে। সংশোধিত লিঙ্ক:
    https://youtu.be/pXCDiQEBs6c?si=MxGXlAjNjYIz6

    ReplyDelete