Pages

Wednesday, 11 October 2023

অথর্ব বাম? বামপন্থা দীর্ঘজীবী হোক!

‘আর্বান নকশাল’ কারা?

অনিন্দ্য ভট্টাচার্য


 

জাতীয় নির্বাচন কমিশন দেশের পাঁচটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের নির্ঘন্ট ঘোষণা করেছে। ফলাফল প্রকাশ পাবে ৩ ডিসেম্বর। নবগঠিত ইন্ডিয়া ও এনডিএ’র দ্বৈরথ এবার একপ্রস্থ নিজ নিজ শক্তি পরীক্ষার সুযোগ পাচ্ছে যা হয়তো অনেকাংশে আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে একপ্রকার মহড়া হিসেবে কাজ করবে। এই যুযুধান পরিসরে, যাদের আমরা বাম দল বলে চিনি তাদের সার্বিক অবস্থাটা কেমন? আগামী লোকসভা নির্বাচনেও বা বামেরা কেমন অবস্থায় থাকবে?

এই প্রশ্নের গুরুত্ব এই কারণেই যে, স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী মাত্র কিছুদিন আগে রাজস্থানে বিজেপি’র এক কর্মী সমাবেশে হুঙ্কার দিয়ে বলেছেন, কংগ্রেস ও ইন্ডিয়া জোট ‘আর্বান নকশাল’দের হাতে চলে গেছে এবং তাদের দ্বারাই পরিচালিত হচ্ছে। এই ঘোষণার অল্প কিছুদিন পরেই ‘নিউজক্লিক’ অফিসে ভোররাতে হানা দিয়ে দিল্লি পুলিশ তাদের প্রধান সম্পাদক ও এক কর্মচারীকে গ্রেফতার করে ইউএপিএ ধারায় মামলা দেয় এবং অন্তত ৪৬ জন নামীদামী, পরিচিত সাংবাদিকদের উঠিয়ে নিয়ে যায়। পাশাপাশি, একই সময়ে দিল্লিতে আপ নেতা সঞ্জয় সিং’কে গ্রেফতার করে। রাঘব চাড্ডাকে নোটিশ দেওয়া হয় তাঁর সাংসদ বাংলো ছেড়ে দেওয়ার জন্য। এ রাজ্যেও ইডি-সিবিআই’এর তৎপরতা তুঙ্গে ওঠে এবং তৃণমূলের কিছু শীর্ষস্থানীয় নেতাদের অচিরেই গ্রেফতারের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। সর্বশেষ, ২০১০ সালে প্রদত্ত একটি ভাষণকে টেনে এনে দিল্লির এলজি অরুন্ধতী রায়ের বিরুদ্ধে মামলা সাজাতে নির্দেশ দিয়েছেন। এই পরিস্থিতি কম-বেশি প্রায় সমস্ত বিরোধী শাসিত রাজ্যেই বহমান। তাহলে, এখন পর্যন্ত যারা গ্রেফতার হলেন বা হবেন, তাঁরা কি সকলে ‘আর্বান নকশাল’? যদি হন তাহলে তো বিবৃতি দিয়ে সে কথা ঘোষণা দিলেই হয়! যদি না হন, তাহলে ‘আর্বান নকশাল’ কারা? প্রধানমন্ত্রী কেন তাদের এত গুরুত্ব দিচ্ছেন? তাদের কি তিনি ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করে ফেলেছেন? নাকি, তিনি ভয় দেখাচ্ছেন? অথবা, একটি গল্প তৈরি করছেন। সেই গল্পের মালমশলাগুলো কী?

এই শেষ প্রশ্নটিই আমাদের নিয়ে যেতে পারে ‘আর্বান নকশাল’ বা বামেদের ডেরায় যেখানে তাদের চাক্ষুষ তেমন দেখা যাচ্ছে না বটে, কিন্তু তারা আছে। কতকটা ‘পাঠান আভি জিন্দা হ্যায়’এর মতো। কিন্তু তার আগে, একটি বইয়ের কথা বলে নিতে হবে। 

এই বইটি নিয়ে ইতিমধ্যেই একটি আলোচনা প্রকাশ পেয়েছে। উৎসাহীরা দেখে নিতে পারেন: https://ekakmatra2013.blogspot.com/2023/05/blog-post_25.html  

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক দর্শনের অধ্যাপক মাইকেল জে স্যান্ডেল তাঁর সুবিখ্যাত ‘The Tyranny of Merit’ গ্রন্থে আমাদের নজর টেনেছেন আমেরিকার ডেমোক্রাটিক পার্টি-ঘেঁষা এমএসএনবিসি টেলিভিশনের সঞ্চালক ক্রিস্টোফার হেইস’এর কিছু পর্যবেক্ষণের দিকে। হেইস’এর মতে, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে চিরায়ত বামেরা তেমন তেমন ক্ষেত্রগুলিতেই সাফল্য পেয়েছে যেখানে ‘মেধা’র গুরুত্ব আছে- যেমন, বর্ণ বিদ্বেষের মোকাবিলা, উচ্চশিক্ষায় মহিলাদের আরও বেশি উৎসাহ দান এবং সমকামের অধিকারকে ত্বরান্বিত করা। কিন্তু অন্যান্য বিষয়ে তারা ফেল মেরেছে যেগুলি মেধাতন্ত্রের এক্তিয়ারের বাইরে- যেমন, বৈষম্য বৃদ্ধি। অথচ, এখানেই তাদের মূলত থাকার কথা। অর্থাৎ, যে শোষণ, দারিদ্র্য ও বঞ্চনার অবসানকে বামেরা রাজনীতির মূল লক্ষ্য ধরে এগোয়, সেখানের বাস্তব জমিতে তারা প্রান্তিক।   

উল্লিখিত বইটিতে স্যান্ডেল ছত্রে ছত্রে বিধৃত করেছেন, কীভাবে ভদ্রলোক ও উচ্চশিক্ষিতেরা বাম রাজনীতির কাণ্ডারী হয়ে মেহনতী মানুষের থেকে বাম আন্দোলনকে ক্রমেই বিচ্ছিন্ন করেছেন। তত্ত্বগত আলোচনার আধিক্য, সেমিনার ঘরে আয়েসি বিপ্লব-বিচ্ছুরণ, মাঠঘাটের লড়াই থেকে সমীক্ষা ও পেপার তৈরিতে বেশি মনোনিবেশ এবং ফলত প্রাতিষ্ঠানিক ‘শিক্ষা’র ওপর অত্যধিক গুরুত্ব দেওয়ার কারণে সমাজে অত্যাধিক আয়ের বৈষম্য বৃদ্ধি এক নৈতিক মান্যতা অর্জন করেছে। কারণ, এই ‘শিক্ষার বড়াই’ এমন এক ধারণা গড়ে তুলেছে যেখানে অধিক শিক্ষা অর্জন মানে আরও আরও সাফল্য যার অর্থ আরও বেশি বেশি আয়। ফলে, এমন এক সামাজিক নৈতিকতার ভিত্তি তৈরি হয়েছে যার মূল বার্তাটি হল: ‘আর্থিক অসাম্যের কারণ এই সমাজব্যবস্থা নয়, তোমার ব্যর্থতাই এর জন্য দায়ী’। অতএব, তোমাকে আরও শিক্ষিত হয়ে উঠতে হবে। বাম দলগুলি প্রধানত ভরে গেছে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণি থেকে আসা ডিগ্রিধারী মানুষজনে যারা অনেক বেশি কাতর ‘শিক্ষিত’ জনের চাকরি না মেলায়। বাদবাকী ‘অশিক্ষিত’ মানুষজনের আশা-আকাঙ্ক্ষা যেন তাদের সঙ্গে সমপাটাতনে আর যায় না। গত এক দশকে প্রায় সারা বিশ্বেই দক্ষিণপন্থীদের জনভিত্তি প্রসারিত হওয়া ও তাদের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির কারণ শুধুমাত্র তাদের ঘৃণা-মিশ্রিত উগ্র ধর্মান্ধ-বর্ণান্ধ ভিত্তিক রাজনীতি নয়, উদারবাদী বা বামপন্থা অনুসৃত এই মেধাতন্ত্রের বিরুদ্ধে এক জনরোষও বটে।

ঘটনা হল, গত শতকের ৯০-এর দশক থেকে উদারবাদী অর্থনীতি যত বেশি খোলামেলা ও মুক্তকচ্ছ হয়েছে, তত বেশি করে শিক্ষার ওপরে প্রাধান্য ও গুরুত্ব বেড়েছে। বিশেষ করে তথ্য প্রযুক্তি ও পরবর্তীকালে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সার্বিক উত্থানের ফলে প্রযুক্তির যে বিপুল পরিমাণ প্রয়োগ হয়েছে, সেখানে কারিগরি শিক্ষা ও সেই শিক্ষায় পারদর্শী লাখো লাখো নতুন শ্রমিক-কর্মচারীদের প্রয়োজন বহু গুনে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলত, এমন একটা ধারণা গড়ে উঠতে শুরু করে যে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ‘সব থেকে সেরা ও মেধাবী’রাই সর্বত্র, এমনকি সরকার পরিচালনাতেও বেশি পারদর্শী। স্যান্ডেল বলছেন, এই মনোভাব হল এক অতিকথা যা মেধাতন্ত্রের ঔদ্ধত্য থেকে উদ্গত; আমেরিকার দুই শ্রেষ্ঠতম রাষ্ট্রপতি জর্জ ওয়াশিংটন ও আব্রাহাম লিঙ্কনের কিন্তু কলেজ ডিগ্রি পর্যন্ত ছিল না।

তাহলে কি মেহনতী মানুষের থেকে বামপন্থীদের এমনতর ভাবনাগত ও প্রায়োগিক বিচ্ছিন্নতার কারণে বামপন্থাই আজ নিঃশেষের পথে? কোনও এক রাজার মৃত্যু হলে যেমন রাজতন্ত্রের অবসান হয় না, তেমনই বাম শক্তির ক্ষয়প্রাপ্তি ঘটলেও বামপন্থার ইতি নেই। কেন, সে কথা অন্যত্র আলোচনা করা যাবে। আর, সেই কথাটা বুঝেছেন বলেই মোদি ‘আর্বান নকশাল’ বলে আসলে বামপন্থার মতাদর্শকে আক্রমণ করেছেন; যে মতাদর্শ ভারতের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের উত্থান ও পুনরুত্থানের মধ্য দিয়ে তালেগোলে মিলে আজ প্রবল ভাবে বহমান এবং এক রাজনৈতিক ধারা হিসেবে মোদি শাহের হিন্দুবাদী রাজতন্ত্র ও আদানি কেন্দ্রিক সাম্রাজ্যের সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়িয়ে পড়েছে।

বলাই বাহুল্য, ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র পরে রাহুল গান্ধীর এক রাজনৈতিক পুনর্জন্ম হয়েছে। তিনি নিজেও সে কথা স্বীকার করেছেন। কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর পর্যন্ত হাঁটতে হাটতে, সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিলেমিশে চলতে চলতে তিনি উপলব্ধি করেছেন, প্রজ্ঞা ও বাস্তববোধ সাধারণ মেহনতী মানুষের মধ্যে এমন প্রগাঢ় ভাবে নিবিষ্ট হয়ে থাকে যে তা হাজারও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের থেকে বহু গুনে অনুশীলন, উপলব্ধি ও জ্ঞানের সাপেক্ষে পরিবর্তন ও বিকাশের প্রধান আকর। বিজ্ঞান যেমন নিবিড় ভাবনায় ল্যাবরেটরিতে অনুশীলিত হয়, সেখানে বিজ্ঞানীদের নিরলস সাধনা হল আবিষ্কারের প্রধান দ্যোতক, বিপ্রতীপে, সমাজবিজ্ঞানের অনুশীলন হয় বাস্তব সমাজের মাটিতে, যেখানে মনুষ্য-বিচ্ছিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক সমাজবিজ্ঞানীদের প্রকৃত প্রস্তাবে তেমন কোনও ভূমিকাই নেই। কিন্তু, যে সমস্ত সমাজবিজ্ঞানীরা তাঁদের জ্ঞানচর্চাকে বৃহত্তর সমাজ ও নিজ অবস্থানের মধ্যে গেঁথে নিতে পারেন, তাঁরা নিঃসন্দেহে যুগকাণ্ডারী। তাঁদের সংখ্যা হয়তো স্বল্প।

এমতাবস্থায়, বাস্তব জমিতে দেখা যাচ্ছে, আমাদের দেশে বাম বলে চিহ্নিত দলগুলির জনভিত্তি দু-একটি রাজ্যে ও অন্যান্য রাজ্যের কিছু অঞ্চল ব্যতিরেকে তেমন কিছু আর নেই। এই শতকের প্রথম দশকেও বাম দলগুলির যে জনভিত্তি ছিল, তা অনেকাংশে আজ ক্ষয়প্রাপ্ত। সত্য হল, চিরায়ত বামেদের এই দুর্বলতা সত্ত্বেও বামপন্থার মতাদর্শ কিন্তু বহমান বিভিন্ন আঞ্চলিক দলগুলির নানান কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে। ১৯৫১ সালে কলকাতায় যখন ট্রামের ভাড়া ১ পয়সা বেড়েছিল, তার বিরুদ্ধে উত্তাল গণ আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে বিধানসভায় দাঁড়িয়ে জ্যোতি বসু বলেছিলেন, প্রশ্নটা সামান্য ১ পয়সা বৃদ্ধির নয়, প্রশ্নটা কার পকেট থেকে কার পকেটে পয়সাটা যাচ্ছে! এখানেই বামপন্থার সারবত্তা, যার পিছনে মেহনতী ও শ্রমজীবী মানুষের এক বড় অংশ সমবেত হয়েছিলেন। এই হিস্যা বুঝে নেওয়ার লড়াইয়ে আজ বাম দলগুলি শ্রমজীবী মানুষজনের থেকে ক্রমশই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। বরং, যে দলগুলি পুঁজিবাদ উচ্ছেদের লড়াই করে না কিন্তু শ্রমজীবী মানুষের প্রাপ্তির দিকে নজর রাখতে চায় (যে কারণেই হোক, হতে পারে সংসদীয় রাজনীতির বাধ্যবাধকতা), তেমন তেমন দলগুলির দিকে মানুষের ঢল বেড়ে চলেছে। হয়তো সেও এক আপাত স্থিতাবস্থা, কিন্তু বাস্তবতা তো বটেই।

শিক্ষার বড়াইয়ে নাক-উঁচু বাম দলগুলি নানান আলোচনাসভা করছে, সম্মেলন করছে, তর্ক-বিতর্ক চালাচ্ছে, বাম কর্মী ও সমর্থকেরা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাল-মন্দ মিশিয়ে নানারকম লেখালিখি করছেন, কিন্তু আদতে তাদের পিছনে জনজোয়ার নামার কোনও চিহ্ন দেখা যাচ্ছে না। যে জনকল্যাণের রাজনীতি আজ প্রধান অক্ষ হয়ে উঠেছে, তাকে ধরে বরং আঞ্চলিক দলগুলি বহু ক্ষেত্রে জনমুখি ভূমিকা রাখার চেষ্টা করে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে (যদিও তাদের ভুল-ভ্রান্তি অথবা অন্যায়-অবিচারও কম কিছু নয়, অবশ্য শুধরে নেওয়ার প্রয়াসও থাকছে। সবটাই কি ভোটের চাপ?)। যেমন, ব্রাজিলে লুলা’র দল ওয়ার্কার্স পার্টি ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন করেছে। অথচ, তারা কিন্তু চিরায়ত বামপন্থী দল নয়। আজকের রাজনৈতিক অর্থনীতির প্রেক্ষিতে কি বামপন্থার পুনর্নির্মাণ হচ্ছে নতুন নতুন ধরনের বামপন্থী দলের উত্থানের মধ্য দিয়ে? ইন্ডিয়া জোটের মতাদর্শে কি তাই বামপন্থার ছায়া দীর্ঘতর হচ্ছে? মোদি কি সে গন্ধ পেয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন? কারণ, তাঁর বিভাজনের রাজনীতির সার্বিক ও আসলি পরাজয় তো বামপন্থার হাতেই সম্ভব! ইতিহাসের নবতর পরিহাসে, চিরায়ত বাম দলগুলি কি মরিয়া প্রমাণ করিবে যে বামপন্থা মরে নাই!

                

3 comments:

  1. চমৎকার লেখা ।কিন্তু বামপন্থার বিপন্নতা শুরু হয়েছে বহু আগে ।মার্কসবাদের প্রায়োগিক ক্রিয়াকর্ম যখন গণতন্ত্রের সঙ্গে
    বিচ্ছেদ ঘোষণা করে পার্টি চালিত স্বৈরতন্ত্রকে‌ই সমাজতন্ত্র বলে চালাতে থাকে তখন থেকেই প্রতিবাদ ওঠে।
    রোজা লুক্সেমবার্গ গত শতাব্দীর বিশের দশকেই গণতন্ত্রহীনতায় রুদ্ধশ্বাস বিপ্লবোত্তর রুশদেশের কথা বলেন।
    পোস্টকলোনিয়াল পৃথিবীতে বামপন্থার নামে রুশ বা চিন দেশের দাসত্ব কারী চিন্তাদাস হয়ে ওঠে।
    এখন প্রভুহীন অনুগত কেষ্টা হ‌ওয়া ছাড়া বামদের আর গতি নেই।


    ReplyDelete
  2. মালবিকা মিত্র11 October 2023 at 13:37

    বামপন্থা আর তথাকথিত বামদল এক নয় সেটা খুব স্পষ্ট হয়েছে। ১৯৭৭এ মার্চে সিপিআই দক্ষিণ পন্থী দল, আর জুন মাসে বামপন্থী দল। কি বিচিত্র। গান্ধীবাদী হিমাংশু কুমার যখন কলকাতার জমায়েতে ছত্তিসগড়ের নকশালপন্থীদের সমর্থনে বক্তব্য রাখেন, বলেন : সমাজে বৈষম্য পীড়ন থাকলে প্রতিবাদ থাকবেই। সেই প্রতিবাদ মার্কসবাদ নাকি গান্ধীবাদ সম্মত হলো সেটা বিচার্য না। প্রতিবাদটাই বিচার্য।
    আগ মার্কা বামদল না হলেও বামপন্থা অনুসরণ করার বহু দৃষ্টান্ত পাওয়া যাবে।
    অনিন্দ্য সেই সত্যকে সাম্প্রতিক দৃষ্টান্ত সহ তুলে ধরেছেন। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

    ReplyDelete
  3. লেখাটিতে একটা অন্য প্রয়াস আছে যেটা ভাল লাগল। বামপন্থা বা বাম আন্দোলন সবসময়ই যেন একটি সংগঠন বা পার্টির দ্বারা পরিচালিত ( তাতে হয় মার্কস বা কম্যুনিস্ট ইত্যাদি শব্দ বন্ধের ব্যবহার থাকতে হবে) হতে হবে এমনই একটা ধারনা চালু রয়েছে। সেই ধারনা থেকে সরে এসে অন্য ভাবে বামপন্থার বিকাশ হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে, এটাই এই লেখাটির একটি সফল প্রচেষ্টা।

    ReplyDelete