Pages

Friday, 28 August 2020

শিক্ষার হনুকরণ?

পিছনদিকে এগিয়ে যান

ভাস্কর গুপ্ত 

 

করোনা মহামারীতে যখন সারা ভারতবর্ষ চরম উদ্বিগ্ন ও উদ্ব্যস্ত ঠিক সেই সময়ে হঠাৎ বিনা প্রস্তাবনায় ঘোষিত হল নতুন শিক্ষানীতি (New Education Policy), 2020। মাত্র 66 পৃষ্ঠার একটি নথি। কিন্তু প্রশ্নের জন্ম দিল অনেক। প্রশ্ন, সংশয়, উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ, অবিশ্বাস- এত সম্ভাবনাময় একটি রাষ্ট্রের জাতীয় শিক্ষানীতি যেগুলো থেকে শতহস্ত দূরে থাকা উচিত তারই যেন চাষ হল। কেন এমনটা হল? স্বাধীনতার পর থেকে শিক্ষা কমিশন তো অনেক হল। 1948-র রাধাকৃষ্ণন কমিশন, 1954-র মুদালিয়ার কমিশন, 1966-র কোঠারি কমিশন, 1986-র জাতীয় শিক্ষানীতি, 1992-তে আচার্য রামমূর্তির নেতৃত্বে শিক্ষা কর্মসূচি (Program of Action) তারা কি প্রত্যেকটি এমনই বিতর্কিত? তা না হলে বর্তমান শিক্ষানীতি ভিন্ন হল কিসে? 

হল তার চরিত্রে। তার মূলগত দৃষ্টিভঙ্গিতে এবং সেটা হবারই ছিল। লক্ষ করে দেখুন, এই শিক্ষা কমিশনের নেতৃত্বে ছিলেন শ্রী কস্তুরীরঙ্গন। বিখ্যাত বৈজ্ঞানিক সন্দেহ নেই, কিন্তু শিক্ষাক্ষেত্রের সঙ্গে কোনওদিন কোনও সম্পর্কই তাঁর ছিল না। এর আগে প্রতিটি শিক্ষা কমিশনেরই শীর্ষে ছিলেন অভিজ্ঞ এবং সুপ্রতিষ্ঠিত শিক্ষাবিদরা। কারণ, সংস্কৃতে 'অব্যাপরেষু ব্যপারঃ' কটাক্ষপাতেরই বিষয় হয়ে থেকেছে চিরকাল। বাংলা প্রবাদটা তো আরও সোজা। 'যার কাজ তার সাজে, অন্যজনে লাঠি বাজে।' এই প্রথম এই সহজ জ্ঞানকে ইচ্ছা করে কাঁচকলা দেখানো হল। ফলে যা হবার ছিল তাই হয়েছে। এমন শিক্ষানীতি এল যার মূল কথা মিনিবাস চলার মন্ত্র- 'পিছনদিকে এগিয়ে যান'। 

অথচ প্রত্যাশা ছিল বিশাল। প্রত্যাশার কারণটা ভারতবর্ষে শিক্ষার বর্তমান চালচিত্রটা দেখলেই বোঝা যাবে। এত কমিশন, এত সুপারিশের পরেও সেটা যথেষ্ট হতাশাব্যঞ্জকই রয়ে গেছে। সাম্প্রতিক অতীতে তা আরও খারাপ হয়েছে উত্তরোত্তর। 2015-য় ভারত সরকারের বাজেটে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ ছিল 4.14%, 2019-এ তা নেমে এসে দাঁড়িয়েছে মাত্র 3.60%-তে। অথচ শিক্ষায় বরাদ্দ এই মুহূর্তে কিউবায় জাতীয় মোট সম্পদ (GDP)-র 12.9% বা নরওয়েতে 8.0%। দুটি মাত্র দেশের উদাহরণ এখানে দেওয়া হল। কিন্তু তাতেই পরিষ্কার যে সার্বজনীন শিক্ষায় আমরা ঠিক কতটা পিছিয়ে আছি। স্বাধীনতাপূর্ব শিক্ষা কমিশনগুলোকে আমরা আলোচনার আওতায় আনিই নি। কিন্তু ইতিহাসের খাতা খুললে দেখতে পাব যে 1944-এ সার্জেন্ট কমিশন ভারতে 100% সাক্ষরতার জন্য লক্ষ্যবর্ষ স্থির করেছিল 1984। তারপর আরও ছত্রিশ বছর কেটে গেছে। এখনও আমাদের দেশে সাক্ষরতার হার 74.04%। মহিলাদের মধ্যে তা আরও করুণ, মাত্র 65.46%। অর্থাৎ, এক-চতুর্থাংশের উপর নাগরিক আজও নিরক্ষর। এই পরিপ্রেক্ষিতে নয়া শিক্ষানীতির কাছে চাহিদা ছিল অবশ্যই বিশাল। 

বেশ কিছু মনভোলানো চটকদারি কথাও বলেছে এই শিক্ষানীতি। যেমন প্রত্যেকটি কমিশনই যে শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যয়বরাদ্দ বাড়িয়ে 7 থেকে 10% করার কথা বলেছে অরণ্যে রোদন করে, তা স্বীকার করে এই নীতিতেও সরকার কর্তৃক শিক্ষাব্যয়কে GDP-র 6% (তাই তো! GDP-র কিন্তু কেন্দ্রীয় বাজেটের নয় কেন?) করতে হবে বলা হয়েছে। 'লাও তো বটে, কিন্তু আনে কে?' শরৎচন্দ্রের এই প্রশ্নটাই আবার করতে ইচ্ছে করছে। কারণ, কেমন করে কোথায় কোন্ কোন্ খাতে কী পদ্ধতিতে এই বাড়তি বরাদ্দের লক্ষ্যভেদ করা যাবে তার কোনও দিশাই নেই এই গুরুগম্ভীর নথিতে। এমনি করেই পরতে পরতে অনেক আপাতমুগ্ধকর ঘোষিত উদ্দেশ্যের পিছনে এই নীতিতে লুকিয়ে আছে এক গভীর ষড়যন্ত্রের আভাস। আপাত অর্থহীন বাগাড়ম্বরের চেয়েও যা ভয়ানক। ভাবা দরকার আসলে কি এই নীতি প্রণেতাদের উদ্দেশ্য তবে সাধু ছিল? অভিজ্ঞতার অভাবে শিব গড়তে বাঁদর হয়ে গেল? আসুন না একটু তলিয়ে দেখি। দেখলে মনে হচ্ছে যে তা কিন্তু নয়। এই অসময়ে এই নীতি নিয়ে আসার পিছনে অনেক গভীর অসাধু উদ্দেশ্য রয়েছে। কথাটা কেন বলছি বুঝতে এবার একটু গভীরতর আলোচনায় যাব। প্রসঙ্গত বলে নিই, অতীত কমিশনগুলো যে সব প্রগতিশীল সুপারিশ করেছিল (যেমন কোঠারি কমিশনের আনা 'Neighbourhood School'-এর ধারণা) তাদের রূপায়ণ কেন হল না সে সম্বন্ধে কস্তুরীরঙ্গন মশাই হিরণ্ময় নীরবতার পথকেই শ্রেয় মনে করেছেন। 

প্রথমেই দেখা যাক এই নথির মূলনীতি প্রসঙ্গে যে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে সে দিকে। স্কুল ও কলেজ শিক্ষার পর্যায়ভাগ এতদিন ছিল 10+2+3 বছর। 10 বছরের মাধ্যমিক বিদ্যালয় শিক্ষার প্রথম 4 বছর প্রাথমিক আর 10 বছরের শেষে 2 বছরের উচ্চমাধ্যমিক (যখন ছাত্র নিজের শিক্ষার মূল ধারাকে বেছে নেয়)। নতুন প্রস্তাবে স্কুল শিক্ষা হবে প্রাক প্রাথমিক স্তর থেকে শুরু করে 5+3+3+4 বছর ধরে। একেবারে হুবহু মার্কিন মডেল Kindergarten Elementary-Middle School- High school। অতিরিক্ত দু-বছরের পরিকাঠামো তৈরির সংস্থান কোথা থেকে আসবে সে প্রশ্ন না হয় বাদই দিলাম অবান্তর বলে। মার্কিন মডেলকে এখানে নির্বিচারে গ্রহণ করা হয়েছে দাঁড়ি কমা সমেত। মুজতবা আলীর ভাষায় অনুকরণ নয় - হনুকরণ। কিন্তু পাব কী তার বিনিময়ে? 

এটা প্রায় সর্বজনবিদিত যে মার্কিন শিক্ষা ব্যবস্থার জোর বিস্তারের (breadth) উপর, গভীরতার (depth) উপর নয়। তাই মার্কিন দেশে পল্লবগ্রাহী তৈরিতেই স্কুল শিক্ষায় দায়িত্ব শেষ হয়ে যায়। উচ্চশিক্ষা দেখা যায় মূলত অভিবাসী ছাত্রদের উপর নির্ভরশীল, অন্তত উচ্চশিক্ষায় উৎকর্ষ তো বটেই। এই পদ্ধতিতে কোনও বিষয়ের প্রাকপ্রস্তুতি (prerequisite) সম্পর্কে ধারণার মান্যতা নেই। মুদি দোকানে কেনাকাটার মতো যে বিষয় খুশি খামচা মেরে কিনলেই হল। এ ব্যবস্থার অবশ্যম্ভাবী পরিণতিতে আমেরিকায় functionally literate মোট পূর্ণবয়স্ক জনসংখ্যার 21%, অর্থাৎ এই বিশাল সংখ্যক মানুষ সাধারণ লেখাপড়ার কাজটুকু করতেও অসমর্থ। (সূত্র: National Centre for Educational Statistics, USA)। আমাদের দেশে এবার ধরা যাক, একটি ছেলে স্কুল পাশ করল সংস্কৃত, রসায়ন ও সঙ্গীত নিয়ে। তার জীবনে অতঃ কিম্? সে তো না ঘরকা, না ঘাটকা। শুধু তাই নয়, এই নীতির মধ্যে ধারাবাহিকতা (continuity) ধারণারও মূলে কুঠারাঘাত করা হয়েছে। স্কুলে সেমেস্টার প্রথা আনা হচ্ছে সমস্ত নমনীয়তা সমেত। ফলে কোনও ছাত্র হয়তো ছ' মাস সংস্কৃত পড়ে, পরের ছ' মাস তার বদলে শিখল ছবি আঁকা। কোনও বিষয়েরই গভীরে পৌঁছল না সে - সর্ববিষয়ে অর্ধপক্ক জ্ঞান (!) নিয়ে সে দরকচা মেরে গেল। এই প্রক্রিয়াতে এবং এতগুলো ধাপের মাধ্যমে এসে যে স্কুলছুট (dropout) কত বেড়ে যাবে তা কি কেউ বুঝতে পারছেন না? না কি বুঝতে চাইছেন না, কারণ সেটা সুনিশ্চিত করাই এই নীতির উদ্দেশ্য? অর্থাৎ শিক্ষা প্রসার নয়, শিক্ষা সংকোচন! 

আরও আছে। খুব সুন্দরভাবে বৃত্তিমূলক শিক্ষাকে মূল শিক্ষাধারার অঙ্গীভূত করার কথা বলা হয়েছে এখানে। শুনতে অতি ভালো। কিন্তু যদি ভাবি যে ছুতোরের সন্তানকে ইতিহাস বা বিজ্ঞান না শিখিয়ে বলা হল যে তার বংশানুক্রমিক দক্ষতা এবারে কাগজে-কলমে স্বীকৃতি পেল তবে তাকে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত করা হল কি হল না? আসলে এই মানুষদের বেশি শিক্ষিত করার একটা ভয় আছে যে! তাই প্রচলিত বৃত্তিমূলক শিক্ষাতে গুরুত্ব না বাড়িয়ে এইসব সূক্ষ্ম খেলা! 

হনুকরণ তো শিক্ষায় তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারে এত উৎসাহ দেওয়ায়ও। যে দেশে 18.2% মানুষের কোনও স্মার্টফোন নেই, 2 কোটি 30 লক্ষ বাসস্থানে নেই এমনকি বিদ্যুৎ সংযোগ - সে দেশে শিক্ষায় প্রযুক্তির ব্যবহারের কথা বলা শুধু বদ রসিকতা নয়। এটা আসলে সুপরিকল্পিত ভাবে তৈরি Digital Divide-কে আরও চওড়া করে শ্রেণি বিভাজনকে আরও বাড়িয়ে তোলার একটা ঘৃণ্য চক্রান্ত। 

দ্বিতীয়ত, এই শিক্ষানীতি ভারতবর্ষের যুক্তরাষ্ট্রীয় চরিত্রের বিরোধী এবং তাকে সুস্পষ্টভাবে আঘাতকারী। যেভাবে একে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা মানল তাতেই তা পরিষ্কার। সংসদের কোনও কক্ষে, কোনও রাজ্যের বিধানসভায় এই শিক্ষানীতি আলোচিত হল না। কোনও রাজ্য সরকারকে করা হল না এই প্রক্রিয়ার অংশীদার, অথচ শিক্ষা না কি কেন্দ্র ও রাজ্যের যৌথ তালিকাভুক্ত বিষয়! ঘুরপথে হিন্দি সাংস্কৃতিক সাম্রাজ্যবাদকে চাপিয়ে দেওয়াই তো মনে হচ্ছে এই নীতির অঘোষিত উদ্দেশ্য। স্কুলে অনুসৃত হবে যে ভাষানীতি তাতে তো আমরা এই আশ্বাসও পাচ্ছি না যে উঁচু ক্লাসে মাতৃভাষাকে এখনকার মতোই শিক্ষা বা পরীক্ষার মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করা যাবে। বিপরীতে পাচ্ছি 'light but tight' (!) কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণের কথা, যার জন্য HECI, PARAKH ইত্যাদি অনেক নয়া ব্যবস্থাপনার কথা বলা হয়েছে। এদের মাধ্যমে কেন্দ্রীভূত পাঠক্রম, কেন্দ্রীভূত পরীক্ষণ ইত্যাদি আনা হচ্ছে অর্থাৎ ঝোঁক থাকছে সার্বিক কেন্দ্রীকরণের। শুধু স্কুল শিক্ষায় নয়, উচ্চশিক্ষা সম্পর্কেও এ নথির বক্তব্যে তা স্পষ্ট প্রতীয়মান। উচ্চশিক্ষা প্রসঙ্গে আরও বিস্তারিত আলোচনার ইচ্ছা রইল বারান্তরে। আপাতত এটা দেখেই যথেষ্ট হাসি পাচ্ছে যে দেশের ধ্রুপদী ভাষার তালিকায় শ্রী কস্তুরীরঙ্গন ওড়িয়াকে (যা কিনা বিতর্কসাপেক্ষে বাংলার একটি উপভাষাও হতে পারে) ঠাঁই দিয়েছেন, কিন্তু জাতীয় সঙ্গীতের ভাষা বাংলা সেখানে জায়গা পায়নি। এত বাঙালি বিদ্বেষ কেন? 

প্রসঙ্গান্তরে না গিয়ে বরং জাতীয় শিক্ষানীতি ও উচ্চশিক্ষা প্রসঙ্গে যৎকিঞ্চিৎ আলোচনা করা যাক। কলেজ পর্যায়ের সময়সীমা নিয়ে কমিশনের সুপারিশ 3 থেকে 4 বছর। যদিও পছন্দ 4 বছরই। আবার সেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হনুকরণ। শিক্ষা যেখানে দারিদ্র্যমুক্তির পথ হিসাবেই পরিচিত সেই দেশে এক বছর অতিরিক্ত শিক্ষার জন্য অর্থ ব্যয়ের দায় দরিদ্র বা স্বল্পবিত্ত পরিবারে চাপালে যে তা শিক্ষা সংকোচনকেই ত্বরান্বিত করবে তা বুঝতে মস্ত মেধার দরকার হয় না। পছন্দের কথা বলে সুবিধামতো ব্যবস্থাকে কৌশলে চাপিয়ে দেবার ভড়ং এই নীতিতে আরও বহু জায়গায় আছে। আসলে এই নীতির প্রধান উদ্দেশ্যই হচ্ছে বেনামে শিক্ষার পণ্যায়ন (commercialization) এবং প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ (corporatization)। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন থেকে কলেজকে বার করার কথা বলা হয়েছে, তাই বলা হয়েছে শিক্ষায় বেসরকারি বিনিয়োগে জোর দেবার কথা। এমনকি বিদেশের বাছাই বিশ্ববিদ্যালয়দের ক্যাম্পাস খোলার এবং কোনও নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই নিজেদের শিক্ষাক্রম বেলাগাম চালানোর অনুমতিও না কি দেওয়া হবে। এটা কি সাংস্কৃতিক সাম্রাজ্যবাদের নতুন চেহারা নয়? সেখানে যদি ভারত বিরোধিতার চর্চা হয় তবে ঠিক কী হবে কেউ বলতে পারেন? 

এমনভাবে যে তিন ধরনের বিশ্ববিদ্যালয়ের (শিক্ষা, শিক্ষা/ গবেষণা ও গবেষণাভিত্তিক) কথা অবতারণা করা হয়েছে তাতে সন্দেহ করার সঙ্গত কারণ আছে যে গবেষণাকে ক্রমেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে মুক্তি দিয়ে নবরূপধারী উন্নত (?) মানের গবেষণাকেন্দ্রগুলোর ওপর নির্ভরশীল করে তোলা হবে। শিক্ষার সার্বিক উন্নতি বিধান ভিন্ন বিচ্ছিন্নভাবে এরকম উৎকর্ষ কেন্দ্র গড়ে তোলা যে কোনও সুষ্ঠু ফল দিতে অপারগ তা ঐতিহাসিকভাবে বহুবার প্রমাণিত হয়ে গেছে। সর্বশেষ উদাহরণ জেলাওয়ারি নবোদয় বিদ্যালয়। তবুও কেন শেষ পর্যন্ত আবার একই পথে চলা? 

আসলে যে সত্যটা আমরা এতক্ষণ বলিনি আরও পাঁচটি আঙ্গিকের মতো শিক্ষানীতিতেও তাই বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের চালিকাশক্তি। অর্থাৎ গৈরিকীকরণ। গৈরিক শিবিরের সমস্ত তাত্ত্বিক ধারণা আর তার প্রয়োগের রূপ দেবার চেষ্টা হয়েছে এই নীতিতে। তাই ভারতীয় সংস্কৃতির নামে হিন্দু সংস্কৃতিকে সর্বত্র সর্বস্তরে চাপিয়ে দেবার আকাঙ্ক্ষা এর ছত্রে ছত্রে অথচ পরিবেশ শিক্ষা নিয়ে, মানবাধিকার নিয়ে, দারিদ্র্যের সঙ্গে শিক্ষার আন্তঃসম্পর্ক নিয়ে বা এমনই আরও অনেক অপরিহার্য বিষয় নিয়ে এই নথিতে একটি শব্দও ব্যয়িত হয়নি। অলমিতি বিস্তরেণ। 

 

5 comments:

  1. ভালো লাগলো। চুলচেরা বিশ্লেষণ।

    ReplyDelete
  2. অল্প কথায় বিশ্লেষণ। সার সত্য টি লেখক সবাইকে অনুধাবন করতে সাহায্য করেছেন

    ReplyDelete
  3. খুব ভালো। সহজ, সরল ও সাবলীল । এমন লেখা জনমত গঠন করে। কল্যাণ রুদ্র।

    ReplyDelete
  4. এই নীতি তে ১৫ বছর‌ পর কোন‌ প্রকৃত শিক্ষক থাকবেন‌ না‌ হয়তো।

    ReplyDelete