Pages

Friday, 15 January 2021

প্রজাতন্ত্রের আত্মনির্ঘোষ!

সুর ভুলে যেই ঘুরে বেড়াই

অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায়

 

রবীন্দ্রনাথ তাঁর গানে লিখেছিলেন, ‘যারা কথা দিয়ে তোমার কথা বলে/ তারা কথার বেড়া গাঁথে কেবল দলের পরে দলে।’ আজকাল এ-গান কেবলই ফিরে ফিরে মনে আসে। ভাবি, এত কথা দিয়ে আমরা কি কেবল কথার বেড়াই গেঁথে চলেছি? যে কথা বলছি, তা মানুষের কানে পৌঁছচ্ছে হয়তো, কিন্তু তার পরে? কান থেকে মন অবধি যে পথটুকু, সেটুকু কি পার হতে পারছে সেই কথা? না কি, যেমন অনেক গ্রামের সীমানা অবধি বিদ্যুতের খুঁটি পৌঁছেছে সেই কোন কালে, কিন্তু সেখান থেকে বাকি সংযোগটুকু আর হয়ে ওঠেনি, অতএব বহু দিন অবধি গ্রামবাসীর ঘরে আলো জ্বলেনি, তেমনই শেষ মাইলে আটকে থাকছে কথাগুলো? ‘একের কথা আরে/ বুঝতে নাহি পারে, / বোঝায় যত কথার বোঝা ততই বেড়ে চলে’— কথার বোঝা বাড়িয়েই চলেছি?

রবীন্দ্রনাথের গান না-হয় ‘তোমার কথা’ নিয়ে, সে-কথা অতি উচ্চমার্গের। কিন্তু যে-সব জাগতিক পথে আমাদের দৈনন্দিন চলাফেরা, সেখানেও তো প্রতি পদে কথার বেড়া একে অন্যের সঙ্গে যোগাযোগের বাধা হয়ে দাঁড়ায়, প্রতিনিয়ত বিস্তর আলোচনা আর তর্ক আর লেখা-পড়ার শেষে আমরা আবিষ্কার করি, নিজের কথা অন্যদের ঠিক মতো বুঝিয়ে উঠতে পারিনি, নিজেও অন্যদের কথা ভাল করে শুনতে পারিনি। দীর্ঘশ্বাস ফেলে নিজের মনে হয়তো বলি: কেহ কারও মন বোঝে না।

বুঝতে হলে শুশ্রূষা চাই, সে-কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। আর সেই গুণটি যে আমরা দিনে দিনে হারিয়ে ফেলছি, তা নিয়েই বা সংশয়ের অবকাশ কোথায়? এখন বেশির ভাগ কথোপকথনে সবাই সব সময় কথা বলে, তাই কোনও সময় কারও কথা শোনার জো নেই। কিন্তু সেটা সত্যের একটি দিক। ঘাটতি তো কেবল শোনার আগ্রহে নয়, বলার সামর্থ্যেও। আমরা যা বলি, মুখের কথায় অথবা লেখার ভাষায়, তার কি সেই শক্তি আছে, যা শ্রোতার চেতনার দ্বার খুলে দিতে পারে? যদি থাকে সেই শক্তি, তবে শ্রোতা সে-কথায় মন না দিয়ে পারবেন কি? সমস্ত শ্রোতার মনের নাগাল পাওয়া যাবে, এমন প্রত্যাশা বিলাসিতামাত্র, কিন্তু যাঁদের কাছে আজ পৌঁছতে পারছি না, কাল যদি তাঁদের অন্তত এক জনকেও আমাদের কথার প্রতি মনোযোগী করে তুলতে পারি, তা হলে তো এক পা এগোনো গেল! এক এক পা করেই তো হাজার মাইলের অভিযান শুরু হয়।

রবীন্দ্রনাথ নিজে তাঁর জীবনের দীর্ঘ পথে এই অভিযানে কখনও বিরত হননি। জনসংযোগকে তিনি বরাবর দেখেছেন মনসংযোগ হিসেবেই, তাঁর কথা মানুষের মন অবধি পৌঁছতে পারল কি না, তা নিয়ে তাঁর সংশয় ছিল দুর্মর। ওই গানটিও সে-প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছে। এবং এক ভাবে উত্তর দিয়েছেও বটে। কথার বোঝা বেড়ে চলার আক্ষেপ জানানোর পরেই তার উজ্জ্বল আশ্বাস: ‘যারা কথা ছেড়ে বাজায় শুধু সুর/ তাদের সবার সুরে সবাই মেলে নিকট হতে দূর।/ বোঝে কি নাই বোঝে/ থাকে না তার খোঁজে, / বেদন তাদের ঠেকে গিয়ে তোমার চরণতলে।’ মুগ্ধ শ্রোতা আশ্বস্ত হয়ে ভাবে, মেলাবেন তিনি, মেলাবেন। কথা যার নাগাল পায় না, সুরে সুরে সেই লক্ষ্যে পৌঁছনো যাবে।

কিন্তু সংশয়ী হয়তো প্রশ্ন তুলবে— ব্যাপারটা ঠিক কী দাঁড়াল বটে? কথা ছেড়ে সুরের সাম্পান বেয়ে ‘তোমার চরণতলে’ পৌঁছনোর সাধনমার্গটি না-হয় সাধকরা বুঝে নেবেন, কিন্তু ওই যে ‘একের কথা আরে বুঝতে নাহি পারে’ গোছের জাগতিক সমস্যাটা উঠেছিল, তার সুরাহা হবে কী করে? এক জনের কথা আর এক জনকে বোঝানো গেল না, অথচ বুঝল কি বুঝল না তার খোঁজে না থেকে সবাই ‘মিলে সুর মেরা তুমহারা’ গাইতে গাইতে অনন্তের পথে চলে গেল? এটা কেমন ফাঁকিবাজি? সংশয়ের দুয়ার পেরিয়ে যাঁরা সর্বজ্ঞতার ব্রহ্মলোকে পৌঁছে গেছেন তাঁরা হয়তো রায় দিয়ে দেবেন: এমন ফাঁকিই তো রবীন্দ্রনাথের স্বধর্ম, তিনি অনেক প্রশ্ন তোলেন, তার পরে উত্তর না খুঁজে একটা হাওয়ার নাড়ু হাতে ধরিয়ে দেন, কখনও জীবনদেবতার কথা বলেন, কখনও সবার সুরে সবাইকে মিলিয়ে দেন।

চাইলে এমন ভাবনা আমরা ভাবতেই পারি, আটকাচ্ছে কে? আবার যাচাই করে দেখতে পারি অন্য একটা সম্ভাবনাও। কথা আর সুরের টানাপড়েনের মধ্যে দিয়ে রবীন্দ্রনাথ কি অন্য কোনও কথা জানাতে চাইছেন? যে-ভাবে তিনি অনেক কথাই অনুক্ত রেখে দেন, বিশেষ করে তাঁর বহু গানেই না-বলা বাণীরা যে-ভাবে নিহিত থাকে, মরমি শ্রোতার অপেক্ষায়? এবং, স্রষ্টা কী চেয়েছেন তার গণ্ডিতে সৃষ্টিকে বেঁধে রাখতে হবে, তারও তো কোনও বাধ্যতা নেই। আমরা আমাদের মতো করে গানের মানে তৈরি করে নিতেই পারি। যেমন ধরা যাক গানের ওই পঙ্‌ক্তিটি: বোঝে কি নাই বোঝে, থাকে না তার খোঁজে। এ-পঙ্‌ক্তি সুরের প্রসঙ্গে এসেছে বটে, কিন্তু তার তাৎপর্য নিছক সেই প্রসঙ্গতেই সীমিত থাকছে কি? না কি, সুর এখানে একটি বৃহত্তর ধারণার প্রতীক হয়ে উঠছে? যে ধারণাকে বোঝা-না-বোঝার ছকে ধরা যায় না? এখানেই ‘কথা ছেড়ে’ সুর বাজানোর একটা গভীরতর অর্থের আভাস মেলে। আমরা যে-ভাবে কথা বলি, ইটের পরে ইট সাজানোর মতোই কথার পরে কথা সাজাই, হিসেব কষে, যুক্তির শৃঙ্খলা অনুসরণ করে বাগ্‌বিস্তার করি, তার প্রয়োজন নিশ্চয়ই আছে, কিন্তু সেই প্রয়োজনের সীমা পেরিয়ে আছে এক অন্য অনুভূতির ভুবন, যে অনুভূতিকে যুক্তি দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায় না, যা জন-মনের অন্তর্নিহিত আবেগকে ধারণ করে মূর্ত হয়ে ওঠে। দর্শনে ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের কোনও কোনও ধারায় তাকে ‘অ্যাফেক্ট’ নামে অভিহিত করা হয়েছে। এখানে সেই তত্ত্বের জটিল বিশ্বে প্রবেশের চেষ্টা করব না। শুধু এইটুকুই বলার যে, যাকে আমরা ‘র‌্যাশনাল’ বা যুক্তিবাদী বিশ্লেষণ বলি, তার সাহায্যে এই আবেগ/অনুভূতির তল পাব না

তার অর্থ এই নয় যে, তা কোনও অলৌকিক প্রক্রিয়ায় গড়ে ওঠে— এই অনুভূতি সামাজিক বাস্তবের জমি থেকেই জন্মায়, সেই বাস্তবই তাকে লালন করে। এমনও নয় যে তাকে যুক্তি-বিরোধী বলে চিহ্নিত করা যায়, কিন্তু যুক্তিবদ্ধ চিন্তার কাঠামোয় তা কাজ করে না, তার জন্ম কর্ম সবই চেতনার অন্য এক স্তরে। সুরের প্রসঙ্গটি এ ক্ষেত্রে বিশেষ উপযোগী বলেই মনে হয়, তার কারণ সুর আমাদের চেতনার যে পর্দায় কাজ করে, তাকে যুক্তির অঙ্কে পুরোপুরি ধরা সম্ভব নয়— স্থান-কাল-পাত্রের হিসেব কষে কোথায় কখন কার কোন সুর ভাল লাগবে তার একটা পাইকারি হিসেব হয়তো কষে দেওয়া যায়, সকালের রাগ, বিকেলের রাগিণী, এফ এম চ্যানেলের ‘মুড ম্যাপিং’, এ-সবেরই নিশ্চয়ই যুক্তি আছে, বিজ্ঞান আছে, কিন্তু ওই যে সুমন তাঁর গানে বলেছিলেন, ‘জানি না কাঁদায় কেন সহজ সুরের শয়তানি’, সে-কথার কোনও মার নেই। অ্যাফেক্ট নামক ব্যাপারটিকে নিয়েও আমাদের যুক্তি বলতে বাধ্য হয়: জানি না। এই না-জানাকে যদি স্বীকার না করি, তা হলে আমাদের সমস্ত শব্দ এবং বাক্য দিয়ে শেষ পর্যন্ত কথার বেড়া গাঁথা হয়, সেই বেড়ার এ-পারে দাঁড়িয়ে জ্যোতিরিন্দ্র মৈত্রের মধুবংশীর গলি-র প্রতিধ্বনি করে বলতে হয়: মন পেলাম কই?

ব্যক্তিগত জীবনের নানা সম্পর্ক, সামাজিক পরিসরে পারস্পরিক আদানপ্রদান, সাহিত্য-সংস্কৃতির ভুবনে সৃষ্টিকর্মের স্বীকৃতি— এমন নানা স্তরেই এ-প্রশ্ন আমাদের ভাবায়। কিন্তু আমরা এখানে একটি অন্য স্তরের কথা ভাবতে চাইব। প্রশ্নটিকে দেখতে চাইব রাজনীতির ভুবনে। একেবারে ব্যবহারিক রাজনীতির দুনিয়ায়। সেই দুনিয়ায় যে সঙ্কট নিয়ে আমরা এখন ভয়ানক ভাবে উদ্বিগ্ন, তাকে এক কথায় বলা চলে ‘রাইট উইং পপুলিজম’ বা দক্ষিণপন্থী জন-উন্মাদনার রাজনীতি। ঘরে ও বাইরে এই রাজনীতির কারবারিদের দাপটে গণতন্ত্র বিপন্ন, বিপন্ন সামাজিক সহিষ্ণুতার কাঠামো, এমনকি সভ্যতাও নিরাপদ নয়। তাদের প্রচার ও কার্যকলাপের বিরুদ্ধে আমরা নানা ভাবে যুক্তি তথ্য সাজাই, মানুষের কাছে সেই তথ্য ও যুক্তি পৌঁছে দিই, এই ভাবে বিপদের মোকাবিলার চেষ্টা করি। সে-চেষ্টা অবশ্যই জরুরি। কিন্তু যথেষ্ট নয়। আমাদের সমস্ত যুক্তি, সমস্ত তথ্য অনেক সময়েই ওই জন-উন্মাদনাকে প্রশমিত করতে ব্যর্থ হয়, বহু মানুষ সব বিচারবুদ্ধি শিকেয় তুলে বিদ্বেষের সওদাগরদের পিছু পিছু দৌড়য়, গণতন্ত্রের প্রচলিত পথটির সুযোগ নিয়েই তার বিপদ ঘোর থেকে ঘোরতর হয়ে ওঠে। ব্যর্থ এবং সন্ত্রস্ত হয়ে আমরা মানুষের নির্বুদ্ধিতাকে দোষ দিই, বলি, ‘লোকে এই ভাবে বিচারবোধ হারিয়ে ফেললে সর্বনাশ তো হবেই!’

কিন্তু যাকে বহু মানুষের নির্বুদ্ধিতা ভাবছি, তা হয়তো আসলে তাঁদের নিরুপায় অস্তিত্বের পরিণাম দক্ষিণপন্থী রাজনীতি-ব্যবসায়ীরা এই অসহায় অক্ষমতার সুযোগ নিয়ে নিজেদের কারবার ফেঁদেছেন, একটা শত্রুপক্ষ খাড়া করে সেই বানানো শত্রুর বিরুদ্ধে বহু মানুষের আবেগ জাগিয়ে তুলে তাঁদের সংহত করছেন নিজেদের শিবিরে। সেই শত্রুপক্ষ কোথাও কালো মানুষ কিংবা অ-শ্বেতাঙ্গ অভিবাসী, কোথাও ধর্মীয় সংখ্যালঘু, কোথাও বা নাগরিক সমাজের ধর্মনিরপেক্ষ উদারপন্থী সদস্যরা। ‘শত্রুজয়ের’ এই অভিযানে নায়কের ভূমিকায় যাঁরা অবতীর্ণ হচ্ছেন, এই আবেগই তাঁদের সবচেয়ে বড় পুঁজি। শুধুমাত্র যুক্তি-তথ্য দিয়ে এই পুঁজির মোকাবিলা করা কঠিন। যেখানে দক্ষিণপন্থী ক্ষমতাবানদের মোকাবিলায় সাফল্য এসেছে, যেমন লাতিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশে, সেখানে প্রতিস্পর্ধী শক্তির প্রধান উৎস হিসেবে কাজ করেছে সামাজিক আন্দোলন। সেই আন্দোলন গড়ে তুলতে জন-আবেগ একটা বিরাট ভূমিকা নিয়েছে। বলিভিয়ার মতো দেশে জনজাতির মানুষ তাঁদের নিজস্ব সমাজ সংস্কৃতি অর্থনীতিকে রক্ষা করতে সংগঠিত হয়েছেন এবং আক্ষরিক অর্থেই যে-ভাবে মরণপণ লড়াই করেছেন, বিপুল আবেগ ছাড়া তা সম্ভবই নয়। তাঁরা ‘অ্যাফেক্ট’-এর রাজনীতিকে এমন একটা জায়গায় নিয়ে যেতে পেরেছেন, যার সামনে মার্কিন রাষ্ট্রশক্তি এবং বহুজাতিক অতিপুঁজির সম্মিলিত শক্তি হার মেনেছে। এই অভিজ্ঞতা একটা খুব সহজ, কিন্তু খুব বড় শিক্ষা দেয়: জন-আবেগের সদ্‌ব্যবহার করে সংগঠিত আন্দোলন গড়তে পারলে সেই আবেগের অপব্যবহারের সম্ভাবনাকে প্রতিহত করা সম্ভব।

তাকানো যেতে পারে ঘরের দিকে। রাজধানী দিল্লির উপকণ্ঠে প্রতিবাদী কৃষকদের যে আন্দোলন ইতিহাস রচনা করেছে, তার অকল্পনীয় শক্তিমত্তায় আমরা স্তম্ভিত। এই শক্তি স্পষ্টতই জন-আবেগের। কৃষি অর্থনীতির হিসেবনিকেশ দাখিল করে আর লাভ-লোকসানের অঙ্ক কষে যাঁরা এই জনজাগরণের সমালোচনা করছিলেন, তাঁরাও ক্রমে সেই আবেগের মহিমা বুঝতে পেরে রীতিমতো ঘাবড়ে গেছেন। একটি বিশেষ অঞ্চলের বিশেষ কৃষি-ব্যবস্থার স্বার্থ রক্ষার দাবিতে শুরু হয়ে এই আন্দোলন যে-ভাবে প্রজাতন্ত্রের আত্মনির্ঘোষ হয়ে দাঁড়াল, ‘অ্যাফেক্ট’-এর ধারণাকে বাদ দিয়ে তার প্রকৃত অর্থ কিছুতেই বোঝা যাবে না। এটা খুবই লক্ষণীয় ব্যাপার যে, জন-আবেগ জাগিয়ে তুলে এবং তাকে কাজে লাগিয়ে ক্ষমতা দখল করতে ও দখলে রাখতে ওস্তাদ শাসকরাও এই আন্দোলনের সামনে সম্পূর্ণ নাজেহাল।

এই পরিপ্রেক্ষিতেই একটি দুর্ভাগ্যজনক সত্য প্রকট হয়ে ওঠে। যে বিপদের কবলে আমরা পড়েছি, তার মোকাবিলায় প্রধান ভূমিকা পালনের কথা ছিল বামপন্থীদের, কিন্তু আমাদের দেশের, বস্তুত পৃথিবীর অনেক দেশেরই, মূলধারার বামপন্থী দলগুলি এখনও জন-আবেগের এই গুরুত্ব যথেষ্ট বুঝে নিতে পারেনি। তারা আজও কেতাবি বামপন্থার ‘যুক্তিবাদী’ কাঠামোর ভিতরে থেকে দক্ষিণপন্থী পপুলিজম-এর সঙ্গে লড়তে চাইছে। এবং হালে পানি পাচ্ছে না। পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন আসছে। বামপন্থীরা কথা দিয়ে কথার বেড়া গাঁথছেন। আবেগের সুর এখনও তাঁদের অধরা। সেটা গভীর দুশ্চিন্তার কারণ বইকি।

4 comments:

  1. লেখাটির প্রথম অংশটি ভাবায়। মাঝেমধ্যে মধ্যে মনে হয় আমাদের সব কথা, লেখালেখি সমমনোভাবাপন্ন মানুষের মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে। সন্দেহ হয় একটা লেখাও কি কোন বিজেপি পাঠক পড়েছে, তাকে দোদুল্যমান করে তুলতে পেরেছে, তার রাজনৈতিক অবস্থান সম্পর্কে সন্দিহান করতে পেরেছে। মনে হয় বিজেপিপন্থী তো বটেই আমরা ওই যাঁরা sitting on the fence বলা হয় তাঁদের কাছেও পৌঁছাতে পারছি না।
    খুবই মূল্যবান লেখা।

    ReplyDelete
    Replies
    1. আমারও তাই মনে হয়। এ ধরণের লেখা পড়লে তোহ আমরা বুঝি, বা না বুঝলে সময় দিয়ে বুঝবার চেষ্টা করি। কিন্তু বিজেপি ভক্তরা তো পড়েই না, তাই বুঝতে পারিনা কি করলে বদল আসবে তাদের মনোভাবে

      Delete
  2. চমৎকার লেখা। সমস্যাটা আসলে সত্যিই ভাববার। আমাদের ভাবনা লেখালিখি বিনিময় সব কিছুই একটা সীমিত পরিসরে ঘুরপাক খাচ্ছে। কোথায় পৌছাচ্ছে তা আমরা ঠাহর করতে পারছি না। সংকট, সত্যি গভীর সংকট।

    ReplyDelete
  3. সামাজিক আন্দোলনের, সামাজিক আবেগের যে বড় একটা ভূমিকা আছে বর্তমানের বামপন্থীরা সেটাকে আজকাল আর গুরুত্ব দেন বলে মনে হয় না।এক সময় শুনতাম শিক্ষা বিস্তারে বামপন্থীরা খুব বড় ভূমিকা পালন করতেন। আজকাল আর শুনতে পাই না। বিপরীতে দক্ষিণপন্থীরা জলে-জংগলে,পাহাড়ে-পর্বতে নানান ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে মানুষজনের পাশে থেকে তাদেরকে সমর্থনের ভিত হিসেবে গড়ে তুলছেন। দক্ষিণপন্থার এটা জোরালো সামাজিক ভিত্তি। ভুল ঠিক বিচার করতে করতেই সব হাতছাড়া বামপন্থীদের।অর্থনীতির পরিচিত সূত্র ধরে সবকিছু ব্যাখ্যা করাটা না হয় একটু কম হল। খুব ক্ষতি হবে কি? বহুবিচিত্র মানুষের চিন্তা এবং তার প্রকাশ।সেখান থেকে শুরু করাই বোধ হয় সঠিক।

    ReplyDelete