Pages

Friday, 26 December 2014

পুরুলিয়া লিটল ম্যাগাজিন মেলা থেকে

উষ্ণতার খোঁজে 

অনিন্দ্য ভট্টাচার্য



১৯ থেকে ২১ ডিসেম্বর ২০১৪ পুরুলিয়ার হরিপদ সাহিত্য মন্দির প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ১৩তম বার্ষিক লিটল ম্যাগাজিন মেলা। বন্ধুবর কবি ঋত্বিক ঠাকুরের সঙ্গে ‘একক মাত্রা’র বেশ কিছু সংখ্যা নিয়ে মেলায় বসেছিলাম দু’ দিন। এবারেই প্রথমবার। কী নিপুণ দক্ষতা ও অসীম আবেগে তাঁরা এ মেলার আয়োজন করেন। বাইরে থেকে আসা সকলের থাকা খাওয়ার ভার নেন এঁরা, তার সঙ্গে মেলার অন্যান্য খরচ তো আছেই, আর তার জন্য সংগঠকেরা সারা বছর ধরে নিজেদের রোজগার থেকে অর্থ জমিয়ে এই কর্মকাণ্ডটি সমাধা করেন। একসঙ্গে বহু তরুণকে এ কাজে দেখে আরও ভাল লাগল। ১৯ তারিখ প্রথম দিন বিকেল ৩-৩০’এ শুরু হওয়া মেলা ও সন্ধ্যে পর্যন্ত তেমন লোকসমাগম না দেখে সংশয় হচ্ছিল কতটা কী দাঁড়াবে। সে ভুল ভাঙল রাত বাড়ার সাথে সাথে ও পরদিন জনারণ্য দেখে। জমজমাট মেলা বলতে যা বোঝায় তারই স্পষ্ট উচ্চারণ। ‘একক মাত্রা’র যে এত পাঠক আছেন পুরুলিয়াতে, সে ধারণাও ছিল না। কথায় কথায় জানলাম, পুরুলিয়া বাস স্ট্যান্ড’এর কাছে কাজল চক্রবর্তী’র ম্যাগাজিন স্টলে নিয়মিত ‘একক মাত্রা’ পাওয়া যায়। তেমন অনেক পাঠক এসেছিলেন যারা আমাদের কিছু সংখ্যা পেয়েছেন, আরও অন্য সংখ্যার খোঁজে।

লিটল ম্যাগাজিন করিয়েদের সকলে মিলে ধর্মশালায় থাকা, সেখানে প্রায় সারা রাত ধরে গান-বাজনা, আড্ডা, আলোচনা। একসঙ্গে খাওয়া। নিমেষের মধ্যে সময়গুলো কোথা দিয়ে যেন ফুড়ুৎ উড়ে যায়। মেলা প্রাঙ্গণের পাশেই সাহেব বাঁধ। চোখ জুড়নো বিস্তৃতি। মেলা তো সেই বিকেলে, তাই সকালগুলো ছড়িয়ে পড়ে পুরুলিয়ার অপার সৌন্দর্যের নয়নাভিরাম অবলোকনে। আমরা আটজন তেমনই এক সকালে দল বেঁধে চলে গেলাম দেউলঘাট। গোরা ও কংসাবতী নদীর সঙ্গমস্থলে আড়াই হাজার বছরের পুরনো দুটি জৈন মন্দির (মতান্তরে, বৌদ্ধ তান্ত্রিক মন্দির) কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সেই প্রাকৃতিক নিসর্গের কালগর্ভে সময় যেন কথা বলছে এক অলৌকিক ছন্দে। মন্দিরের পাশেই পাঠক মহারাজের ছোট আস্তানা ও পুজোর স্থান। এক সাধ্বী বর্তমানে এই আস্তানা চালান। সামান্য জীবনধারণের মধ্য দিয়ে কালের স্থাপত্যকে রক্ষা করে চলেছেন। তিনিই দেখালেন নদীর ধার থেকে উঠে আসা পাথরের সিঁড়ি – যা নাকি আর্য ঋষিরা তৈরি করেছিলেন এখানে তাঁদের তপোবনে সাধনার কালে। মনে হল, জঙ্গল ঘেরা সেই মায়াবী পরিসরে সময় যেন আমাদের নিয়ে আছাড়িবিছারি খেলছে। তিরতির বয়ে চলা কংসাবতীর শরীরে বড় বড় পাথরের চাঁই – সেও তো সময়ের গর্ভে এ গ্রহের আদি সৃষ্টির কালে এইভাবে পড়ে থাকা অনড় স্তব্ধতা।

তিনদিনের মেলায় দু’ দিন থেকেই ফিরব, তেমনই ভেবে গিয়েছিলাম। আশ্চর্য, এই দুদিনেই আমাদের সমস্ত কপি শেষ। এটা ভাবিনি। এই অভাবিত সাড়া সত্যিই আপ্লুত করেছে। ধর্মশালা থেকে বন্ধুদের পিছনে ফেলে যখন স্টেশনের পথে রওনা দিয়েছি তখন মেলা প্রাঙ্গণে শেষদিনের কর্মব্যস্ততা শুরু হয়েছে। হাতে পত্রিকার কোনও কপি নেই তো কী হয়েছে, মেলার ওই উষ্ণতায় দু’ দণ্ড দাঁড়িয়ে থাকা ও ঘুরে বেড়ানোটাও তো পরম পাওয়া।

ছবিঃ ঋত্বিক ঠাকুর।            

Monday, 22 December 2014

ভারত সরকারের ওষুধ নীতি – ২০১৪


কী পাব কী পাব না!

জয়ন্ত ভট্টাচার্য

১৮ই ডিসেম্বর এক-ই দিনে বাংলা সংবাদপত্র “আনন্দবাজার” এবং ইংরেজি দৈনিক The Times of India-তে সমধর্মী দুটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। আনন্দবাজার-এর উত্তর-সম্পাদকীয়র শিরোনাম – মার্কিন চাপ ও মোদীর ওষুধ নীতি। Times of India-র খবরটি হল - 615 drugs under control regime, more steps in offing: Govtপ্রথম প্রবন্ধটিতে ভারতের মেধাস্বত্ব আইনের দিকে মূল নজর রেখে এখানকার বাজারে ওষুধের দাম আমেরিকান ওষুধ কোম্পানিগুলো কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করে এবং ভারতে ওষুধের দাম কীভাবে বাড়তে যাচ্ছে তা নিয়ে পরিচ্ছন্ন আলোচনা করা হয়েছে। Times of India-র খবরে বলা হয়েছে, “Informing that 615 essential drugs have been brought under price control mechanism, government on Thursday told the Lok Sabha that the costs of medicines have reduced over the last six months and more steps are in the offing to check prices.
এ দুটি বক্তব্য আপাতদৃষ্টিতে পরস্পর বিরোধী। কিন্তু দুটোর মাঝেই আংশিক সত্য আছে, যেমনটা আমাদের মনে হয়েছে। খুব স্বল্প পরিসরে আমাদের বক্তব্য হয়তো অন্যভাবে বিষয়টি ভাবতে সাহায্য করতে পারে। মাস চারেক আগে Economic and Political Weekly পত্রিকায় ভারতের ওষুধ নীতি নিয়ে একটি প্রবন্ধে বলা হয়েছিল - Despite the government’s and pharmaceutical lobby’s claims and counterclaims, the Drugs (Prices Control) Order, 2013, which covers only 18% of the total domestic market of Rs. 71,246 crore, has had very little positive effect as a price control policy. (“Pharma Price Control Policy: Unrealistic and Unfair”, EPW, 28 August 2014, pp.13-15)। অর্থাৎ, সহজ কথায় বললে, ভারতের ওষুধের বাজার প্রায় ৭২ হাজার কোটি টাকার। এর ১৮% ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণের নীতির আওতায় আসছে, ৮২% রয়ে যাচ্ছে এই আওতার বাইরে। ফলে, দাম নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি কতটা বাস্তবানুগ হচ্ছে সেটা ভেবে দেখা বিশেষ জরুরি। ভারতে NPPA (National Pharmaceutical Pricing Authority) ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণ করে। একে টেকনিক্যাল পরিভাষায় capping of price বলা হয়। এখনও অবধি যে অবস্থায় রয়েছে ওষুধের দাম এই মুহূর্তে ভয়ানক কিছু বাড়েনি বা বাড়ছে না। অশনি সংকেত রয়েছে আগামী দিনে। 

তার আগে স্মরণ করে নিই যে প্রায় ১৩০ কোটির এদেশে ৭০%-এর বেশি মানুষ দৈনিক ২ ডলার বা ১২০ টাকার কম আয় করে জীবনধারণ করে। ভারতে মোট GDP-র ১% খরচ করা হয় স্বাস্থ্যখাতে। এটা পৃথিবীর সবচেয়ে নীচের দিকে থাকা অংশের মাঝে পড়ে। এটা আমাদের শ্লাঘা করার মতো কোন খবর নয়। ফলে WHO-র ঘোষণা অনুযায়ী “access to universal health care”-এর একটি সামান্য অংশকেও যদি বাস্তব চেহারা দিতে হয় তাহলে লাগামছাড়া ভাবে এখুনি ওষুধের দাম বাড়ানো যাবে না। এর সাথে রয়েছে রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা। তার ওপর যুক্ত করতে হবে বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের তরফে মূল্যবৃদ্ধি ফল নিয়ে সামাজিক পদক্ষেপের কথা।  EPW-তে “Concerns over IP Policy” শিরোনামে বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের স্বাক্ষরিত চিঠি প্রকাশিত হয়েছে ২৭শে সেপ্টম্বর-এ। এসবের কারণে মোদী সরকার এখুনি বিপজ্জনকভাবে ওষুধের দাম বাড়াবে বলে মনে হয় না, যদিও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের সৌজন্যে আমরা অনুমান করতে পারছি কোন কোন ক্ষেত্রে ওষুধের দাম প্রায় ১০ গুণ পর্যন্ত বাড়তে পারে।
আমেরিকান সংবাদ সংগঠন Truthout-এর তরফে মাইক লুডউইগ ১০ অক্টোবর ২০১৪-তে জানিয়েছিলেন যে আমেরিকাতে পেটেন্ট নেবার এক অদ্ভুত পদ্ধতি রয়েছে। প্রথমত, যে কোন বিষয়ে পেটেন্ট নেওয়া যায়। দ্বিতীয়ত, কেবলমাত্র ওষুধ গ্রহণ করার পদ্ধতি পালটে, যেমন একটি ট্যাবলেটকে ক্যাপসুল বা অন্য কোন চেহারায় রূপান্তরিত করে “long lasting” পেটেন্ট নেওয়া সম্ভব। আমেরিকাতে যত জেনেরিক ওষুধ বিক্রি হয় তার প্রায় ৪০% তৈরি হয় ভারতে এবং আমেরিকা HIV/AIDS-এর জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় যে দান-খয়রাতি করে থাকে এর সিংহভাগ জেনেরিক ওষুধের সরবরাহ করে ভারত। এ অবধি আমেরিকার কোন অসুবিধে নেই। কিন্তু আমেরিকার ওষুধ যখন এ দেশে বিক্রির প্রসঙ্গ এসে পড়ে ঝামেলাটা তখন বাঁধে। 

মাইক লুডউইগ অন্যত্র “Big Pharma’s Heavy Hand in Washington” নামে আরেকটি লেখায় জানাচ্ছেন - The latest push from PhRMA and its allies came in late September, as Indian Prime Minister Narendra Modi made his first visit to the United States to meet with President Obama and prominent business leaders. এই PhRMA কে? - PhRMA is a member of the Alliance for Free Trade with India (AFTI), a coalition of manufacturers ranging from the music recording industry to agrichemical companies that also have gripes with India's intellectual property laws… AFTI has spent a total of $240,000 on lobbying Congress and the State Department in 2013 and 2014, according to campaign data from MapLight। আবারও Truthout-এর বক্তব্য উদ্ধৃত করি - PhRMA has spent nearly $132 million lobbying Congress since 2008 and ranks fifth among the top spenders in Washington, according to the MapLight campaign finance database. A Truthout review of the group's lobbying records confirmed that "intellectual property" and "market access" issues related to trade with India have been among the organization's top issues when lobbying Congress, the White House and the Department of Commerce. (নজরটান আমাদের)।
মোদীর আমেরিকা দর্শনের সময়ে “the CEOs of Merck and other drug companies pressed Modi on India's patent laws during a breakfast meeting with US businesses leaders.” 

Truthout-এর একজন কর্মকর্তা একটি প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন তুলেছেন - "Why don't we have a drug for Ebola?" Kavanagh asked, adding that there are plenty of treatments available for erectile dysfunction.” অস্যার্থ, তথাকথিত যৌন দুর্বলতার ওষুধ ভায়াগ্রা যদি ২০০০ কোটি টাকার ওপরে ব্যবসা করতে পারে তাহলে এবোলা-র ওষুধ বেরোয় না কেন? সরল উত্তর নিহিত আছে – একটি ওষুধে ভর্তুকি দিতে হয়, আরেকটিতে মিডিয়া এবং চিকিৎসক সমাজ রোগের পল্লবিত কাহিনী এবং উদবেগ তৈরি করে আর ৫০০% বা তারও বেশি মুনাফা হয়। এ কাজে আমেরিকান সেনেটর Orrin Hatch ২০০৮ সাল থেকে বিভিন্ন ফার্মা কোম্পানির কাছ থেকে ৩৪১,৬০০ ডলার অনুদান পেয়েছেন এর স্বপক্ষে প্রচার চালানোর জন্য। এরকম আরো অন্তত ১ ডজন উদাহরণ দেওয়া যাবে।

এগুলো তত গুরুত্বপূর্ণ নয়, বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ভারতের যে মেধাস্বত্ব আইন ভারতীয় ওষূধের জগতকে বেশ কিছুটা সুরক্ষা দিয়েছে সে ১৯৯০-এর দশকের পরে আমূল রূপান্তরের পথে। এ আইন থাকার ফলে শৈশব লিউকেমিয়ার অনেক পরিমাণে প্রাণদায়ী যে ওষুধ
Gleevec-এর খরচ আমেরিকায় পড়ে বছরে ৭০০০০ ডলার, ভারতে তার খরচ পড়ে খুব বেশি হলে ২৫০০ ডলার। মেধাস্বত্ব আইন তলিয়ে গেলে নোভার্টিস কোম্পানি ৩০ গুণ মুনাফা করতে পারবে! এজন্য মোদীর সাথে ওবামা এবং বহুজাতিক দৈত্য কোম্পানিগুলোর “লবিং” খুব জরুরি হয়ে পড়ে। এসবের চূড়ান্ত রূপরেখা এখনও তৈরি হয়নি, হবার পথে। এজন্য আমাদের এ বিষয়গুলোকে নিয়ে সামাজিক আলোচনায় যাওয়া বড্ড প্রয়োজনীয়! DPCO (Drug Price Control Order)-র ১৯ নং অনুচ্ছেদে রয়েছে - Notwithstanding anything contained in this order, the government may, in case of extraordinary circumstances, if it considers necessary so to do in public interest, fix the ceiling price or retail price for any drug for
such period as it may deem fit.

সমস্ত প্রতিকূলতার মাঝেও সরকারের সদিচ্ছা থাকলে এই চূড়ান্ত রক্ষাকবচটি সরকার প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারে। করবে কি না এ নিয়ে আমাদের গভীর সংশয় থাকার অবকাশ আছে। কিন্তু মেধাস্বত্ব আইন থেকে হতমান হতদরিদ্র, এমনকি সাধারণ মধ্যবিত্ত জনতাও, বঞ্চিত হবার অর্থ আমাদের বেঁচে থাকা, আমাদের স্বাধিকার সব কিছুই বিপন্ন হয়ে পড়বে। এখানে আমাদের মাঝে জীবন্ত সংলাপ চলুক “কালো রাত্রির সুকঠিন অর্গল” ভাঙ্গার জন্য।

Wednesday, 3 December 2014

'মেক ইন ইন্ডিয়া'র ছবি

আত্মহত্যার মিছিল

রানা আলম

মহারাষ্ট্রের বিদর্ভে গত ৫০ দিনে ৪২ জন কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার, ভারতের রক্ষাকর্তা মোদীজী আর মহান মিডিয়া'র কারুর কোনো হেলদোল চোখে পড়ছে না। শুয়োরের পালেরা হিন্দু-মুসলমান নিয়ে কাটাকাটি করছে। অবশ্যি এটা মিডিয়ার হেডলাইন হওয়ার মত খবর নয়। আড়াই হাজার কোটি টাকার স্ট্যাচু নয়, সব ভারতীয় রামের সন্তান গোছের তত্ত্ব কি মোদীজী'র আচ্ছে দিন মার্কা অমৃতবাণীও নয়, একদম পাতি প্রান্তিক কতকগুলো গরিব মানুষের চাষের খরচ না ওঠায় সর্বস্বান্ত হয়ে আত্মহত্যার ঘটনামাত্র। এরা উজ্জ্বল ভারতের 'মেক ইন ইন্ডিয়া'র বিজ্ঞাপন হতে পারে না। অতএব, কেস ক্লোজড।
সেবাগ্রামের কস্তুরবা হাসপাতালের চিকিৎসক রাজদীপ নাথ জানালেন যে তার হাসপাতালেই রোজ গড়ে দুজন চাষী আত্মহত্যার চেষ্টা করে আইসিইউ'তে ভর্তি হচ্ছেন। কাজেই সরকারি তথ্য আর বাস্তবে ক্ষতিগ্রস্তের সংখ্যা পার্থক্য প্রচুর হতে বাধ্য।
রাজদীপের বয়ানটাই হুবহু তুলে দিচ্ছিঃ
'গত জানুয়ারিতে একদিন বৃষ্টি হয়ে চানার ক্ষেত লাটে উঠে। এইবার জুন-জুলাইয়ে বৃষ্টি না হয়ে সবজি আর আখ ভাল হয়নি। তুলার অবস্থাও ভাল নয়। এসব কৃষকদের মুখেই শোনা। যাদের পয়সা আছে তারা ডিপ টিউবওয়েল কিনে আনে, প্রাইভেট সেচের ব্যাবস্থা করে। তবে জলের লেভেল নীচে নেমে যাওয়ায় তাদেরও অনেক অসুবিধা হচ্ছে।
হাসপাতালে কোন কৃষকেরই বিল মাফ হতে দেখিনি, বা এমন কোন স্কিমও নেই। রাজীব গান্ধী বিমা আছে বটে তবে সেটা ৯৯ শতাংশ লোকেই পায় না। অতিরিক্ত বিল আসায় (১০-১৫০০০ এক সপ্তাহ পর, যেটা কিনা খুবই সামান্য বিল মেট্রো সিটির কর্পোরেট আইসিইউর খরচা দেখলে) পেশেন্টকে বাড়ি নিয়ে যেতে বাধ্য হয়। ফেরার পথেই অনেকে মারা যান। কেউ কোন স্কিমের জন্য আজ পর্যন্ত ডেথ সার্টিফিকেট নিয়ে আসেননি।
আমি কোথাও কোন সেচ খাল নির্মাণ হতে দেখিনি। বর্ষার জল ধরে রাখার জন্যও কোন ব্যবস্থা দেখিনি। যাবতমাল আর চন্দ্রপুর জেলার অবস্থা সবচেয়ে শোচনীয়। সেখানে আনড়ি/নকল ডাক্তারদের হাতে পড়েই অনেকে সর্বস্বান্ত হোন।'
সরকার যদি এই আত্মহত্যা বা আত্মহত্যার ঘটনার তদন্ত করে তাহলে দামী কাগজে ছাপা রিপোর্টে পারিবারিক কলহের ফলেই এই আত্মহত্যাগুলো ঘটেছে বলে প্রমাণিত হবে। তদ্দিনে শেয়ার সূচক আরো উপরে উঠবে এবং জিডিপি টিটোয়েন্টিতে ধোনি'র স্ট্রাইক রেটের সাথে পাল্লা দেবে।
মিডিয়া নিউজে সর্বশেষ যে আত্মহত্যাকারী কৃষকের নাম এসেছে তিনি নিজের জমিতে চিতা সাজিয়ে জ্বলন্ত চিতায় উঠে আত্মহত্যা করেছেন। তার নাম 'কাশীরাম ভগবান ইনদারে'।
'ভগবান' তাহলে চিতায় উঠেছেন। আর ভারতবর্ষ ??

13th Purulia Little Magazine Mela


13th Little Magazine Mela
Venue- Haripada Sahitya Mandir, Purulia
Date & Time- 19-20-21 December 2014, 3pm-9pm
Organizer- Purulia Zela Little Magazine Mela Committee