Pages

Monday, 28 July 2014

একটি কারখানা বাঁচানোর আন্দোলন



ইলেক্ট্রো মেডিক্যালের শ্রমিক-কর্মচারীদের আন্দোলন 

সঞ্জয় পাঠক




বেশ কদিন হল ইলেক্ট্রো মেডিক্যালের শ্রমিক-কর্মচারীরা গণেশ চন্দ্র এভেনিউ-র সিটি অফিসে অবস্থান-ধর্ণা চালাচ্ছেন। ব্লাড ব্যাগ তৈরীর এই কারখানাটি ২০০৮-এ 'বাম জামানায়' পরিকল্পিত ভাবে উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়। তখনই শ্রমিক-কর্মচারীরা উৎপাদন চালু করার কথা বলেছিলেন। কেউ কথা রাখেননি। নতুন সরকার গঠনের আগে আজকের মুখ্যমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, বন্ধ কারখানা খোলার ব্যাপারে উদ্দ্যোগ গ্রহণ করবেন। মুখ্যমন্ত্রী কথা রাখেননি। উল্টে হিন্দুস্তান মোটর, ডানলপ, জেসপ সহ বেশ কিছু কারখানা বন্ধ তালিকার সংখ্যা বৃদ্ধি করেছে। গত ৩ মাস হল ইলেক্ট্রো মেডিক্যালের শ্রমিক-কর্মচারীরা বেতন পাচ্ছেন না। স্বাস্থ্য দপ্তর বিভিন্ন হাসপাতালের জন্য প্রয়োজন প্রতিদিন ৪৮ হাজার ব্লাড ব্যাগ। সেই ব্যাগ বাইরে থেকে বেশী দাম দিয়ে কেনার প্রচলন যেভাবে 'বাম জামানায়' শুরু হয়েছিল, তা আজও অব্যাহত। শ্রমিক-কর্মচারীদের অভিযোগ, এর পিছনে 'কাট মানি'র গল্প আছে। তাঁরা বলেছেন, উৎপাদন চালু কর, শ্রমিক-কর্মচারীদের স্থায়ী কর, বকেয়া বেতন দাও। প্রশ্ন উঠেছে, ১৯ বছর ধরে কাজ করার পরেও একটি সরকারী সংস্থা কেন স্থায়ী করবেন না। অথচ সরকারী আইন বলছে, ২৪০ দিন কাজ করলে স্থায়ী করতে হয়। এই কারখানার শ্রমিকরা এমন একটি পণ্য তৈরী করতেন, যা যে কোন নাগরিকদের শারীরিক অবস্থা সংকটের সময়ে রক্ত গ্রহণ/দানের প্রক্রিয়াতে একটি অন্যতম প্রয়োজনীয় উপাদান। আজ প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা যেন সিটি অফিসের কর্মচারীদের যাতায়াতে কোন বাধা সৃষ্টি না করেন। অথচ শ্রমিক-কর্মচারীদের দাবীর বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে প্রশাসন। একটি সাধারণ সভায় শ্রমিক-কর্মচারীরা স্বিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যতদিন না পর্যন্ত সরকার কোন ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন, ততদিন এখানেই অবস্থান চলবে। গত তিন মাস ধরে শ্রমিকদের কোন রোজগার নেই, এখানে থাকা-খাওয়া-প্রচার ইত্যাদি নিয়ে প্রচুর ব্যয় হচ্ছে ও হবে। ইলেক্ট্রো মেডিক্যাল কন্ট্রাক্ট লেবর ইউনিয়নের পক্ষ থেকে সমস্ত শুভানুধ্যায়ী বন্ধুদের কাছে সাধ্যমত আর্থিক সহায়তার আবেদন রাখা হয়েছে। চাঁদনি চক মেট্রো স্টেশনের কাছে সিএসটিসি বিল্ডিং-এর নীচে অবস্থান চলছে। আপনারা আসুন, এই মহতি আন্দোলনে সংহতি জানান, সাহায্য করুন এবং শ্রমিকদের পক্ষে প্রচার করুন।

No comments:

Post a Comment