Pages

Sunday, 31 October 2021

একটি নিবন্ধের প্রত্যুত্তরে

ভয়ঙ্করের পথে

সমর বাগচী



প্রিয় কৌশিক বসু মহাশয়,

আনন্দবাজার পত্রিকায় কিছুকাল আগে আপনার একটি সাক্ষাৎকার পড়েছিলাম। আমার বয়স ৮৯। কোন পৃথিবী রেখে যাব ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্য? আমি এখন একজন বিজ্ঞান শিক্ষা, পরিবেশ ও সমাজ কর্মীকোনও কোনও বিষয়ে আপনার মতামত আমার ভাল লেগেছে। কিন্তু, ভারতের কোটি কোটি নিরন্ন মানুষের একটা সুস্থ ও শান্তিপূর্ণ জীবন দেওয়ার ব্যাপারে কী করতে হবে সে সম্পর্কে কোনও সঠিক দিকনির্দেশ পেলাম না। আপনি প্রথমেই এআই এবং রোবটিক্সের কথা বলেছেন। গত ২০ বছরে ভারতে ১০ থেকে ১২ কোটি লোক কর্মপোযুক্ত হয়েছে কিন্তু কাজ পেয়েছে মাত্র ৩০ লক্ষ মানুষঅথচ, বিলিওনিয়ারদের সম্পদ ১১২ গুন বেড়েছে। গত কয়েক দশকে উন্নয়নের যূপকাষ্ঠে ছয় কোটিরও বেশি মানুষ গৃহহারা হয়েছে। আজ করোনার আক্রমণে গৃহহারা হয়ে রাস্তায় অবস্থান করছে লক্ষ লক্ষ নিরন্ন মানুষ  

পৃথিবীর কোথাও কি ধনীরা তাদের সম্পদ ভাগ করে নিয়েছে গরিবদের সঙ্গে? টমাস পিকেটি তাঁর 'Capital in the Twenty-first Century' গ্রন্থে দেখিয়েছেন, কীভাবে ধনী-দরিদ্রের পার্থক্য ক্রমাগত বেড়ে যাচ্ছে ২০২০ সালের অক্সফামের রিপোর্টও সেই একই চিত্র দেখাচ্ছে। ১৯২৪ সালে রবীন্দ্রনাথ জাপান ভ্রমণকালে দীনবন্ধু এন্ড্রুজকে লিখছেন, 'যদি জীবনের শ্রেষ্ঠ জিনিসগুলি মুষ্টিমেয় কয়েকজনেরই কেবল লভ্য হয়, তাহলে সভ্যতার পুষ্টি হয় না এবং সে যুগই নষ্ট হয়ে যায়দরিদ্রের প্রতি অবিচার দিন দিন বাড়তে বাড়তে চূড়ান্তে এসে পৌঁছেছেতাই সর্বত্রই অশান্তি। সমস্ত জগৎ যেন দুই প্রতিপক্ষে বিভক্ত হয়ে গেছে: ধনী ও নির্ধন, সন্তুষ্ট ও অসন্তুষ্ট, যারা পরিশ্রম করে আর যারা বিশ্রামেই থাকে। এই দুই শ্রেণিতে যতদিন এই বিভাগ থাকবে ততদিন শান্তির আশা নেই।' কবিরা সত্যদ্রষ্টা তাঁরা ভবিষ্যৎকে দেখতে পান।

বিজ্ঞান, যন্ত্র ও প্রযুক্তি কি আমাদের সবাইকে এক সুস্থ ও শান্তিপূর্ণ সমাজ দিতে পারবে? কৌশিকবাবু, আপনি যে দেশে  এখন বসবাস করেন, পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী দেশ আমেরিকা, যেখানে যাবার জন্য আমাদের দেশের মধ্যবিত্ত শিক্ষিত যুবতী-যুবক উন্মুখ হয়, সেখানকার মানুষ কি খুব সুস্থ ও শান্তিপূর্ণ জীবন যাপন করছে? আমি মিউজিয়ামে কাজ করতাম। মিউজিয়াম বিশেষজ্ঞদের একটা আন্তর্জাতিক সংস্থা আছে- ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অফ মিউজিয়ামস। প্রতি তিন বছর অন্তর এই সংস্থার এক আন্তর্জাতিক সম্মেলন হয়। ১৯৮৯ সালে হল্যান্ডের দেন হাগ শহরে এইরকম এক সম্মেলনে, যেখানে আমি উপস্থিত ছিলাম, এক আমেরিকান চিন্তাবিদ, আইটি বিশেষজ্ঞ নিল পোস্টম্যান মুখ্য অভিভাষণ দেন। সেই ভাষণ থেকে একটু উদ্ধৃতি দিচ্ছি: 

'We have already organized our society to accommodate every possible technological innovation. We have deliriously, willingly, mindlessly ignored all consequence of our actions. And have because technology seems to require it, turned our backs on religion, family, children, history and education. As a result of what we have done American civilization is collapsing. Everyone knows this to be true but seems powerless in the face of it. Here is a partial account of our technological dream: by 1995, 85% of our children will live in one parent homes. In our large cities, fewer than 50% of students graduate from high school. This from the culture that invented the idea of education for the masses… one-fourth of our population– sixty million people- is illiterate. Every year, forty million people change residences and millions have no residences at all living in the streets and subways. From 1930 to the present, the incidence of violent crime has increased 11000 percent.' 

বক্তা আমেরিকার সমাজের এক ভয়ঙ্কর চিত্র আঁকেন। প্রায় আড়াই হাজার সদস্যের মধ্যে বিরাট চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। আমার আত্মীয়স্বজন যারা আমেরিকার gated community-তে বাস করে তারা এই আমেরিকাকে চেনে না।

কিছু মাস আগে স্ট্যানফোর্ড, প্রিন্সটন ও বার্কলের বিজ্ঞানীদের বিবৃতি পেলাম যে ষষ্ঠ গণবিলুপ্তি আসছে এবং যে প্রজাতি সব থেকে আগে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হবে তা হচ্ছে মানব প্রজাতি। পৃথিবীর যখন এই অবস্থা তখন ভারতবর্ষকে আমরা কীভাবে নির্মাণ করব ভাবছি, তখন আমার রবীন্দ্রনাথের ১৯০৪ সালে লেখা ‘স্বদেশী সমাজ’ এবং গান্ধীর ‘হিন্দ স্বরাজ'এর কথা মনে হচ্ছে। স্বাধীনতার পরে ভারতের রূপকাররা ওঁদের কথা শোনেননি। গান্ধী নেহেরুকে ১৯৪৫ সালের ৫ অক্টোবর চিঠিতে বলছেন, 'The first thing that I want to write about is the difference of outlook between us. If the difference is fundamental then I feel the people should also be made aware of it. I am convinced that if India is to attain true freedom, and through India the  world also, then sooner or later the fact must be recognized that people will have to live in villages, not in towns, in huts, not in palaces. Crores of people will not be able to live at peace with each other in towns and palaces. They will then have no recourse but to resort to both violence and untruth.'। নেহেরু ৯ অক্টোবর উত্তরে বলছেন, 'It was 38 years since Hind Swaraj was written. The world has completely changed since then possibly in a wrong direction... You are right in saying that the world or a large part of it is bent on committing suicide. That may be an inevitable development of an evil seed planted in civilization.'। নেহেরুজী তাঁর জীবনচরিতে লিখছেন, 'We cannot stop the river of change or cut ourselves adrift from it and psychologically we who have eaten the apple of Eden cannot forget the taste and go back to primitiveness.'। ইডেনের আপেল খেয়ে ভারতের কী অবস্থা হয়েছে তা আগেই আলোচিত হয়েছে। গত কয়েক দশকে লক্ষ লক্ষ চাষি আত্মহত্যা করেছে।

রবীন্দ্রনাথ সেই ১৯০৪ সাল থেকে ভারতে উন্নয়নের এক বিকল্প পন্থার কথা বলেছেন। তিনি ধীরে ধীরে ভোগবাদ, নগর, যন্ত্র ও পশ্চিমি সভ্যতা সম্বন্ধে মোহমুক্ত হচ্ছেন। ১৯২৪ সালে চিনে এক বক্তৃতায় বলছেন, 'We have for over a century been dragged by the prosperous west behind its chariot choked by the dust, deafened by the noise, humbled by our own helplessness and overwhelmed by the speed. We agreed to acknowledge that this chariot drive was progress and that progress was civilization. If we ever ventured to ask 'progress towards what and progress for whom' it was considered to be peculiarly and ridiculously oriental to entertain such doubts about the absoluteness of progress. Of late, a voice has come that is bidding us to take count of not only the scientific perfection of the chariot but also of the depth of ditches lying across its path.'। গান্ধী সেই একই কথা বলছেন, 'God forbid India should ever take to Industrialization in the manner of the west. A tiny island kingdom is today keeping the whole world in chain. If an entire nation of 300 million took to similar kind of economic exploitation the whole world will be bare like locust.'। কী এই মেটাফর ‘chariot’, ‘depth of ditches’ এবং ‘bare like locust’?। আজ যে সমাজ ও প্রকৃতির ভেঙ্গে পড়া দেখছি তারই পূর্বাভাষ দিচ্ছেন ভারতের দুই যুগন্ধর সত্যদ্রষ্টা। রবীন্দ্রনাথ মারা যাবার বছরে ১৯৪১ সালে ‘সভ্যতার সংকট’এ লিখছেন, 'জীবনের প্রথম আরম্ভে মন থেকে বিশ্বাস করেছিলুম য়ুরোপের অন্তরের সম্পদ এই সভ্যতার দানকেআর আজ আমার  বিদায়ের দিনে সে বিশ্বাস একেবারে দেউলিয়া হয়ে গেল।'  

কৌশিকবাবু, আপনি, অমর্ত্যবাবু এবং বিনায়কবাবু- আমাদের বাংলার তিন বড় অর্থনীতিবিদ ও চিন্তক। আপনারা ভারতকে নতুন দিশা দেখান যাতে ভারতের আগামী প্রজন্ম এক সুস্থ, শান্তি এবং সাম্যপূর্ণ জীবন যাপন করতে পারে।          

           

Wednesday, 27 October 2021

স্থান ও বস্তুসমূহ

চার শিল্পীর আলোকচিত্র

তন্ময় সাঁতরা

কোনও নির্দিষ্ট একটি স্থানের সঙ্গে তার পারিপার্শ্বিকের একটা যোগ থাকে। যোগ থাকে কত না কথা কাহিনির। তেমনি কোনও স্থানকে একটি বিশেষ মুহূর্তে কোন আলোকচিত্রী যখন ক‍্যামেরাবন্দি করেন, বা বলা চলে ছবি হিসেবে ধরে ফেলেন, তার গল্প বলার সম্ভাবনা বোধকরি আরও দু'-কদম এগিয়ে যায়। তখন সেই আলোকচিত্রটি কেবল সেই স্থানটির প্রতিলিপি মাত্র আর থাকে না। ভবিষ্যতে দর্শকদের চোখে তার অর্থ আর দ্যোতনাগুলি আরও নতুন পথে পা বাড়ানোর দিকে এগিয়ে যায়। সেই আলোকচিত্র বা ছবিটি হয়ে উঠতেই পারে 'পলিসেমিক', একাধিক অর্থের বাহক। কিংবা 'ইকুইভোকাল', একেবারে অনিশ্চিত অর্থদ্যোতক। যেখানে তার একটি মাত্র নিশ্চিত অর্থ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। ছবিটির মহিমা তাতে বাড়ে বই কমে না।

তেমনি কোনও বস্তুর আলোকচিত্র। স্থির বস্তু- সে সাজিয়ে রেখে তোলা হোক, কিংবা তার স্বাভাবিক অবস্থানেই তাকে ক‌্যামেরাবন্দি করে ফেলা হোক, তা কেবল বস্তুটির প্রতিলিপি মাত্র হতে পারে না। আলোছায়া, সংস্থাপনা ও পরিবেশনার গুণে সেই ছবি বহু-অর্থদ‍্যোতক, কাব‍্যিক, কিংবা পরোক্ষ উপমাব‍্যঞ্জক হয়ে উঠতে পারে। আলোকচিত্রে কাব্যসুষমা, রূপালঙ্কার ও অর্থব‍্যঞ্জনা প্রকাশের কথা মনে করলে অনেক বরেণ্য আলোকচিত্রীর কথা মাথায় আসে। ওয়াকার এভান্স, ম‍্যান রে, আনসেল আ্যডামস। হেনরি কার্তিয়ে ব্রেসঁ। 

এখানে চারজন শিল্পীর ফটোগ্রাফিক ওয়ার্ক বা আলোকচিত্রের চর্চা নিয়ে একটি নাতিদীর্ঘ আলোচনার পরিসর গড়ে তোলা হল। প্রথমজন প্রবন্ধকার নিজেই; এবং চারজনেই মূলত চিত্রশিল্পী। বলা বাহুল্য, চিত্রশিল্পীকৃত আলোকচিত্র মানে যে কথাটা প্রথমে মাথায় আসে তা হল, শিল্পীর কাছে এটি আরেকটি মাধ্যম মাত্র। ক্যামেরা যন্ত্রটির ব্যবহার করে ছবি আঁকার প্রয়াস করা। আঁকাজোকার একটা প্রসারণ ঘটে এতে সন্দেহ নেই। দেখা যায়, পেইন্টিং এবং ফটোগ্রাফি সে ক্ষেত্রে একে অপরের পরিপূরক। এ কথাটি বলতেই এই প্রবন্ধের অবতারণা।

 


আমার হাতে প্রথম এস এল আর ক‍্যামেরা আসে নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি। তখন আর্ট কলেজের প্রথম বা দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। ক‍্যামেরা হাতে পেয়েই (কিনেই) এটা-সেটার ছবি তোলার ঝোঁক। ল‍্যান্ডস্কেপ, বইমেলার ভিড়, স্টুডিওর আনাচ-কানাচ। সমুদ্র, পাহাড়, বন। কত হাবিজাবি ও দরকারি জিনিসের ছবি উঠল তার ঠিক নেই। ফিল্ম-ক‍্যামেরার যুগে প্রিন্ট নিয়ে দেখবার উৎসাহের সীমা থাকত না। তারপর ভাল প্রিন্টগুলি বেছে রেখে দেওয়া। এখন ডিজিটাল ক‍্যামেরা ও তথ্য-প্রযুক্তির অগ্ৰগতির যুগে ক‍্যামেরায় এবং কম্পিউটারে ফটোগ্ৰাফের গুণাগুণ দেখে নেওয়ার অবাধ সুযোগ। এডিট করার পর সঠিক বা ভাল ইমেজটি নিয়ে বাকিগুলি মুছে ফেলা যায়। যত না রাখা হল, বাদ দেওয়া হল তার অনেক গুণ। এভাবেই শেখা, এভাবেই পথ চলা।


ডকুমেন্টেশনের প্রয়োজনে বিভিন্ন ঘটনাবলী ও কার্যক্রমের ছবি তুললেও, মনের মতো বিষয় হিসেবে আসে বিস্তৃত ল্যান্ডস্কেপ বা প্রায় নির্জন গৃহকোণ। জানালা। বাইরের জগৎ এবং গৃহ পরিসরের মাঝখানটিতে থেকে যা হয়ে উঠতে পারে 'দেখার' মেটাফর। একটি ইমেজ। দ্রুত বদলে যাওয়া শহরাঞ্চল বা শহরতলির ছবি আঁকছি বেশ কিছুকাল ধরে। সে কাজে আমার ফটোগ্রাফি চর্চার একটা বিশেষ অবদান রয়েছে। আলোকচিত্রের রেফারেন্স আমার চিত্রকলার চর্চায় বিশেষ কাজে লাগে। এই কাজে লাগার বাইরেও এর অস্তিত্ব খুঁজে পাই। যখন বুঝি ফটোগ্রাফ হিসেবেও এর অস্তিত্ব যথেষ্ট যুতসই। কন্সট্রাকশন সাইটের এরকম অনেক ফটোগ্রাফ তাই আমার ঝুলিতে জমতে থাকে। সেখানে মূল সুর 'নির্মাণ'। দ্রুত পরিবর্তমান জগৎ।



ঋতম নন্দীর শিক্ষা-দীক্ষা চিত্রকলায়। তারপর কর্মসূত্রে সে ডিজাইনার। ক্যামেরার প্রতি ঝোঁক ছোটবেলা থেকেই। তবে বিগত ৪-৫ বছরে তার ফটোগ্রাফির চর্চা আরও প্রগাঢ় হয়েছে। চিত্রকলা ও ডিজাইনের পাশাপাশি আলোকচিত্র আরেকটি মাধ্যম হিসেবেই এসেছে; তার চর্চার প্রাঙ্গণকে প্রসারিত করেছে। বাস্তব তথ্যভিত্তিক আলোকচিত্র রচনাই মূল অভিপ্রায়। ছবি বা ফটোগ্রাফি হয়ে ওঠে একটা স্থান ও সময়ের দলিল। আবার কেবল প্রামাণ্য তথ্যের সাক্ষ্য দেওয়ার বাইরেও কখনও কখনও এর একটা বিস্তার ঘটে যায়। যখন তার আরও আরও অর্থব্যঞ্জনা তৈরি হয়। নতুন গল্পের আঙিনায় সঞ্চরণ ঘটে যায়।


ধানবাদ কয়লাখনি অঞ্চলে তোলা তার একটি সিরিজের কথায় আসা যাক। একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে, একটি খনির পরিত্যক্ত অফিস। ভগ্ন একটি বাড়ির কাঠামো দাঁড়িয়ে রয়েছে। জনমানবহীন এই পোড়ো বাড়িটি মনে করিয়ে দিচ্ছে তার অতীতের কোলাহল-মুখর ও গৌরবপূর্ণ ইতিহাসের কথা। সেখানে এখন কেবলই ধূসর পাণ্ডুলিপির নীরব পাতাগুলি। বাকি দু-একটি ছবিতে সেই অঞ্চলের ভূ-প্রকৃতি ও তাৎপর্যপূর্ণ নৈঃশব্দ।


 


এস বি অভিরাগের আলোকচিত্রেও এক তাৎপর্যপূর্ণ নিস্তব্ধতা বিরাজ করে। ওর পেইন্টিং-এর মতো। বিষয় হিসেবে উঠে আসে বিল্ডিং, করিডোর, নির্জন গৃহ পরিসর। আর তার বেশিরভাগটাই সাদা-কালো। সাদা-কালো বা মনোক্রোমে বক্তব্য যেন আরও বেশি জোরদার হয়েছে।


এমনি একটি আলোকচিত্রে ধরা হয়েছে পরিত্যক্ত একটি পার্কের শিশুদের খেলার জায়গাটি। অতীতের অনেক স্মৃতি নিয়ে পড়ে থাকা খেলার জায়গা। স্থির, বিচ্ছিন্ন, নস্ট্যালজিক। কোলাহলের নাম মাত্র নেই।

 


অনির্বাণ মিশ্র'র ছবি তোলার অভ্যাস ছাত্রজীবন থেকেই। বিভিন্ন বিষয়ে ছবি তোলায় তার আগ্রহ ও অনুরাগ। বিল্ডিং, ল্যান্ডস্কেপ থেকে শুরু করে ফুল পাতার অনুপুঙ্খের প্রতিও তার নজর। এমনই একটি আলোকচিত্রে দেখা যায় একটি ফুলের গুচ্ছ মনোক্রমের আওতায় এসে আরও বেশি প্রকাশব্যঞ্জনা পেয়েছে। হয়ে উঠেছে ফুলের মনোময় প্রতিকৃতি।